পূর্নিমাতে পুনর্মিল।
পূর্নিমাতে পুনর্মিল।
দীর্ঘদিন ওরা একসাথে পড়াশোনা করেছে। কলেজ জীবন থেকে ওদের ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ধীরে ধীরে তা পরিণতির দিকে এগোয়। সমীক একটা বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি পায়। সুমনার পরিবার থেকে আর কোন আপত্তি করে নি তখন। ওদের দুজনের বিয়ে বাড়ির মত নিয়েই হলো ধূমধাম করে।
সুমনাও বিয়ের পর একটা বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি পেল। দুজনের রোজগারে সংসারে এলো যথেষ্ট স্বচ্ছলতা।দুবছর পরে সুমনা এক কন্যা সন্তানের জন্ম
দেয়। তারপর, থেকেই শুরু হলো সুমনার ওপর শাশুড়ির মানসিক অত্যাচার। সমিক ও সুমনার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকলো। সুমনা মেয়েকে নিয়ে চলে গেল বাবার বাড়িতে।
সুমনা ডিভোর্সের মামলা ফাইল করলো সমিকের বিরুদ্ধে। মামলার হেয়ারিং চলছে। কাঠগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে সমিক। সমিক হাওমাউ করে কেঁদে উঠলো সুমনা ও মেয়ে দেখে। সুমনার চোখে জল চিকচিক করছে।বিচারক বুঝতে পারলেন সমস্যাটা অন্যজায়গায়। তিনি সময় দিলেন দুজনকে এবং অর্ডার দিলেন তিনমাস একসাথে কোথাও বেড়াতে যেতে হবে ওদের। এক সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে কোথায় ওরা যেতে চায়।
সমিক আদালত থেকে বেরিয়ে সুমনাকে জিজ্ঞেস করে কোথায় ও যেতে চায়। ঠিক হলো ওরা যাবে গাড়োয়াল পাহাড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই দুজনে নিজেদের আইনজীবীকে জানিয়ে দিল।
ওরা হরিদ্বারে নেমে একরাত বিশ্রাম নিয়ে সোজা গেল কেদার নাথ দর্শন করতে। সেদিনটা ছিল কোজাগরী পূর্ণিমা। রাতে মেয়ে হোটেলের রুমে ঘুমাচ্ছে। ওরা বের হলো হোটেলের বাইরে। জ্যোৎস্নার আলোয় স্নান করতে করতে কিছু দূর গিয়ে ওরা দেখলো বরফের ওপর চাঁদের আলো পড়ে মনে হচ্ছে যেন চারিদিক সোনার চাদরে মোড়া। পাশে মন্দাকীনিতে সোনা রঙের জল। আনন্দে বিহ্বল হয়ে ওরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো ক্ষুদার্ত আলিঙ্গনে। বাইরেটা সোনা রঙের বরফে মোড়া রইল, কিন্তু, ওদের ভিতরের সব বরফ গলে জল হয়ে গেল। ওরা আবার দুই তনু এক করে ফিরে এলো হোটেলে। মেয়েকে মাঝে রেখে দুপাশে দুজন অপার শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়লো।