Krishna Banerjee

Romance Classics

4  

Krishna Banerjee

Romance Classics

প্রথম গোলাপ

প্রথম গোলাপ

3 mins
38


প্রথম গোলাপ

                           তৃতীয় -পর্ব

                   কলমে - কৃষ্ণ ব্যানার্জী

                 সমর্জিৎ সেদিন রাতে আর ঠিক ঠাক ঘুমাতে পারলোনা। বেশ কিছুটা সময় জানালার কাছে দাঁড়িয়ে রইলো সে । আবার ফিরে সোফাতে বসে একমনে গোলাপটার দিকে তাকিয়ে রইল কিছুটা সময়,আবার ডোয়ার থেকে চিঠি গুলো বারকরে চোখ বুলিয়ে নিলো চিঠি গুলোতে । এই করতে করতে অনেকটা রাত কেটে গিয়েছিলো , রাতে আহার তখন সারেনি সমর্জিৎ , ঘড়ির দিকে চোখ যেতে সে দেখলো রাত সারে বারোটা । সোফাথেকে উঠে সেই জিনিস গুলোকে গুছিয়ে রাখলো আলমারির ভিতর । তারপরে আলমারির দরজাটা লাগিয়ে ডাইনিং টেবিলের কাছে গিয়েও খেতে ইচ্ছে করলনা , টেবিলের উপর থেকে একটা জলের বোতল থেকে খানিকটা জল খেয়ে , বোতলটাকে আবার জায়গামতো রেখে , খাবার গুলো ফ্রিজে রেখে বিছানায় গিয়ে দেহটাকে এলিয়ে দিলো সে । ঘুমাবার অনেক চেষ্টা করলেও চোখ বুঝলেই তার চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগলো রচনার মুখ , যতই হোক রচনাই তার জীবনের প্রথম আর শেষ প্রেমিকা । প্রথম প্রেমকে কি সহজে ভোলা জায় । রচনার বিয়ে হয়ে গিয়েছে ভেবে নিজেকে সামলে নিয়েছিলো সে কিন্তু রচনাকে এখানে এভাবে দেখতে পাবে সেটা আশা করেনি কোনোদিন।সমর্জিতের মায়ের খুব পছন্দের ছিলো রচনা । কয়েকবার রচনা তাদের বালির বাড়িতে গিয়েছিলো , মায়ের সাথেও বেশ কিছু সময় কাটিয়েছে রচনা । সেই স্মৃতিগুলো আজ খুব মনে পড়ছে সমর্জিতের । একদিন দুপুরে সমর্জিৎ বাড়িতে ছিলোনা , ওকে ফোন না করেই রচনা চলে আসে তাদের বাড়িতে , সময়টা ছিলো শিতকাল , সামরজিতদের বাড়ির সামনে কিছুটা ফাঁকা উঠান , দুপুরে সেখানে মা বসে রোদ পোহান , সেদিনটা তেমন হয়নি সামর্জিৎ তাকিয়ে দেখে সেখানে তার মা আর রচনা দুজনে বসে আচার খাচ্ছে আর একে অপরের কথাতে হাসাহাসি করছে ,  তাদের দেখে বেশ ভালো লাগছিল তার , কারণ বাবার মৃত্যুর পরে কতদিন সে তার মাকে হাসতে দেখেনি , সেদিন মাকে মন খুলে হাসতে দেখে মনে মনে বেশ খুশি হয়েছিল সে , তারপরেও নিজের ওজন বাড়াতে উঠানে গিয়ে রচনাকে বলে কিরে কোনো খবর না দিয়ে তুই এখানে ? রচনা জানালো কেনো আসতে নেই বুঝি ? তাছাড়া আমিতো আজ তোর সাথে দেখা করতে আসিনি আমি এসেছি মাসিমার সাথে গল্প করতে আর মাসিমার হাতের আচার খেতে তাই তোকে ফোনে করার প্রয়োজন বোধ করিনি । সমর্জিৎ বলে বেশ তাহলে মায়ের সাথেই কথা বল আমারসাথে কথা বলবার দরকার নেই , এমনিতেই আমার প্রচন্ড খিদে পেয়েছে , মা তুমি আমাকে খেতে দেবেতো ? মা একটু হেঁসে বলে খাবার টেবিলে রাখা রয়েছে হাত মুখ ধুয়ে খেয়ে নে , আমি এখন উঠতে পারছিনা । সামর্জিৎ সেদিন রাগ করতে পারলোনা । এতগুলো বছর পর মাকে হাঁসতে দেখে মনে মনে একটা আনন্দের ঢেউ খেলে গেলো সামর্নিতের আর একটাও কথা না বলেই কাঁধে ঝোলানো শান্তিনিকেতনী ব্যাগটা নিয়ে ঘরে ঢুকে গেলো সে ।

               সারাদিন ছাপাখানা গুলোর দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে কোনো সহানুভূতি না পেলেও , বাড়ি ফিরে মায়ের হাঁসি মুখ দেখে সকল অভিমান কেমন জানো ম্লান হয়েগেলো তার মুখ থেকে । দরজার সামনে গিয়ে আড়চোখে মাকে আর রচনাকে এক ঝলক দেখে সে ঢুকে গেলো ঘরের ভিতরে ………….

                                   চলতে থাকবে …………


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance