Ushri Chatterjee Bandyopadhyay

Drama Romance

3  

Ushri Chatterjee Bandyopadhyay

Drama Romance

প্রিয় অসম্পূর্ণতা (পর্ব ১০)

প্রিয় অসম্পূর্ণতা (পর্ব ১০)

15 mins
271



Roy Villa, Go Down :

----------------------------------

উত্তীয় : আপনার সব প্রশ্নের উত্তর নিহিত আছে পনেরো বছরের আগের এক চক্রান্তে... তার থেকেও বছর পনেরো আগে, ছোট্ট গ্রাম কুসুমপুর থেকে দু'চোখ ভর্তি স্বপ্ন নিয়ে মা আশাপূর্ণা দেবীর হাত ধরে কলকাতায় পা দিয়েছিল হরিহর আত্মা দুই বন্ধু - নীহার চ্যাটার্জি ও উদয় ব্যানার্জি... দিনরাত এক করে দুজনে গড়ে তোলে Chatterjee & Banerjee Company.... কিন্তু উদয় ব্যানার্জি ছিলেন প্রচার বিমুখ... এই Company-র মেরুদন্ড হয়েও তিনি Company থেকে নিজের নাম তুলে নেন... Company-র নাম হয় 'Chatterjee & Chatterjee Company'... অনাথ উদয়ের কাছে তার প্রাণের বন্ধু নীহার ও নীহার মা আশালতা দেবীই ছিলেন জগৎ... কিন্তু হঠাৎই গানের রিনরিন সুর তুলে আসে বসুন্ধরা... নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তাদের বিয়ে দেন উদয়ের যশোদা মা আশাপূর্ণা দেবী... বসুন্ধরার প্রাণের সখী ছিল রাগিনী... মাতৃহীনা দুই বোন রাগিনী আর রোহিনী মামার বাড়িতেই থাকত... উদয় আর বসুন্ধরার বৌভাতের দিন রাগিনীর গানে মুগ্ধ হলেন আশাপূর্ণা দেবী... রোহিনীর দৃষ্টি তখন সুদর্শন তরুণ নীহার-এর দিকে... কি ঠিক বললাম তো রোহিনী দেবী ??? মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক... নীহার-এর তখন ধ্যান জ্ঞান Business... তাই মায়ের পচ্ছন্দ করা মেয়েকে না দেখেই বিয়ে করে নিলেন... তখন ব্যবসা দাঁড়ায় নি ঠিক করে... মামাবাড়ির আশ্রয় ছেড়ে বোনকে নিজের কাছে নিয়ে এসে রাখলেন রাগিনী, যাতে বোনের পড়াশোনাটা বন্ধ না হয়... একদিকে ব্যবসা দাঁড় করানোর সংগ্রাম, অন্যদিকে বোনের পড়াশোনার চাপ... নিজের ভালোবাসা, সখ-আহ্লাদকে জলাঞ্জলি দিয়ে নীহার বাবু আর উদয় বাবুর পাশে দাঁড়ালেন রাগিনী... বসুন্ধরা আর রাগিনী মিলে গানের স্কুল খুললেন- 'গীতবিতান'... তখন বসুন্ধরার কোলে তার সদ্যোজাত পুত্র.... দুই বন্ধু আর বান্ধবীর দিনরাতের পরিশ্রমে মহীরুহে পরিণত হলো ছোট্ট অঙ্কুর Chatterjee & Chatterjee Company... উদয় আর বসুন্ধরার ভালোবাসার ছোট্ট টিনটিন তখন বছর পাঁচেকের... এবার আশাপূর্ণা দেবী তার কন্যাসম পুত্রবধুর কাছে আব্দার জুড়লেন তার ছোট্ট গোপাল এর জন্য একটি ছোট্ট 'রাধিকা'র ... প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলে উঠলো শিক্ষিতা, আধুনিকা রোহিনী !!! রাগিনী দেবীর গর্ভে তখন ছোট্ট নদী... ডাক্তার রাগিনীকে বললেন, এই সন্তান রাখলে তার প্রাণসংশয় হতে পারে... এদিকে আশাপূর্ণা দেবী তখন সেই ছোট্ট প্রাণের আগমনের জন্য দিন গুনছেন... রাগিনী গিয়েছিলেন, নীহার বাবুর কাছে... কিন্তু সেইদিনই উনি জানতে পারলেন, নীহার বাবু তার বোনের মোহে আসক্ত... রাগিনী দেবীর সবকিছু যেন অন্ধকার হয়ে গেল... আত্মত্যাগের এতবড় প্রতিদান কেউই বোধহয় আশা করে না... সবচেয়ে বড় কথা, সেই প্রতিদান দেবার মালিক যদি নিজের সবচেয়ে কাছের উল্টোদিকের মানুষটা হয়... আর এক্ষেত্রে তো সাথে তার নিজের সহোদরা উপস্থিত... মূহুর্তের নিজের কর্তব্য স্থির করে নেন রাগিনী... তার সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখিয়ে নিজে স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নেন... উদয়-বসুন্ধরার শত বারণ তাকে টলাতে পারে নি... নিজের প্রাণাধিক প্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে তার একমাত্র স্মৃতি ছোট্ট সুরকে আঁকড়ে ধরে বসুন্ধরা- অভিরী যাকে বলতো সুর-এর 'Governess'... নিজের সন্তানের থেকেও ছোট্ট সুর বসুন্ধরার কাছে বেশি আপন হয়ে ওঠে.... আশাপূর্ণা দেবী আর বসুন্ধরার অপত্য স্নেহের ছায়ায় বড় হতে থাকে ছোট্ট উত্তীয় আর সুর, মানে টিনটিন আর নদী...

নীহার : তু... তুই টিন... টিনটিন !!! আমার টিনটিন !!! আমার উদয়ের টিনটিন !!! ছোটবেলায় আমার কোল ছাড়া তোর ঘুম আসত না.... অফিস থেকে বাড়ি ফিরলেই তুই এক ছুটে আমার কোলে উঠেই হাতটা বাড়িয়ে দিতিস- 'টফি দাও... এত্তা... দুতোওওও... তিনতে...' আর খুব হাসতিস... মনে আছে তো 'টফি' !!!

উত্তীয় : তোমার 'টফি' যে কিছুই ভোলে নি টফি আঙ্কেল... শুধু ভুলে গেছো তুমি... আসলে আর আমরা ছোটো নয় কি না !!! তাই এই ছোট ছোট সরলতাগুলো জটিলতার দুর্বিপাকে চাপা পড়ে ঢাকা পড়ে গেছে... কিন্তু সেজন্যই বোধহয় বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে এসে নিতে পারলাম না... তোমাকে, সুরকে ভালো না বেসে ঘেন্না করতেই পারলাম না....

সূর্য : আর ঘেন্না করবেই বা কেন !!! আপনার তো কোনো দোষ ছিল না... আপনি তো জানতেনই না উদয়ের সাথে ঠিক কি হয়েছে !!! আপনি রোহিনী দেবী মোহে তখন আসক্ত... রাগিনী দেবীর মৃত্যুর এক মাস পার হয় নি, আপনি রোহিনী দেবীকে বিয়ে করলেন... আপনার ঘর থেকে এক লক্ষ্মীর বিদায় হলো... আরেক লক্ষ্মী তখনো স্মৃতি আঁকড়ে ঘর আগলে বসে... আপনার ব্যবসায় প্রথম ঘুন ধরালেন রোহিনী দেবী... তার Kitty Party-র বান্ধবীর Husband দেবতনু রায়কে আপনার Business Partner করে... দেবতনু বাবু প্রথমেই বুঝলেন, আপনি মাটির মানুষ হলেও ওনার পথের কাঁটা কঠিন মানুষ উদয় বাবু... খুব সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করে উনি আপনাকে মরিশাসে পাঠালেন Business Trip-এ... বাবার তত্ত্বাবধানে দৈবিক ছোট্ট থেকেই ঈর্ষাকাতর... উত্তীয় আর সুর-এর নিখাদ বন্ধুত্ব সে কোনোদিনই ভালোভাবে নেয় নি... সুর বয়সে ওদের থেকে একটু ছোট হওয়াতে কিশোর টিনটিনের বন্ধুত্বের আড়ালে নিহিত ভালোবাসা সে অনুভব করতে পারত না, যদিও ভালোবাসার বাঁধন তখন থেকেই তাদের অটুট ছিল...কিন্তু কিশোর দৈবিক-এর তা দৃষ্টি এড়ায় নি... দৈবিক-এর এই ঈর্ষারই সদ্ব্যবহার করেন দেবতনু বাবু.... উদয় বাবুর চোখে বেশকিছু দিন ধরেই ব্যবসায় হিসেবের গড়মিল, টাকা তছরূপ চোখে পড়ে... আপনার অনুপস্থিতিতে উদয় বাবু খুবই গোপনে IPS Officer অম্বর রায়চৌধুরীকে নিয়োগ করেন এই টাকা তছরূপ-এর তদন্তের জন্য... কিন্তু তার আগেই ছোট্ট টিনটিনের উপর এসে পড়ে টাকা সরানোর অভিযোগ... সহজ, সরল উদয় বাবু ক্রুদ্ধ হয়ে তার সন্দেহের কথা বলে ফেলেন দেবতনু বাবুকে.... বসুন্ধরা দেবী এই অভিযোগ মেনে নিতে পারেন নি... প্রায় এক বস্ত্রে স্বামী সন্তানকে নিয়ে Chatterjee Mansion ছেড়ে বেরিয়ে আসেন... আর তাদের আটকাতে গিয়েই ছোট্ট সুর সিঁড়ি থেকে পড়ে যায়... Sorry, পড়ে যায় বলা ভুল- দৈবিক তাকে ঠেলে ফেলে দেয়, যাতে উত্তীয়দের ও আটকাতে না পারে... কিন্তু ওই যে বলে না, অপরাধীরা অপরাধ করলেও তার ছাপ কোথাও না কোথাও রেখে যায়... এই ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয় নি... সেই মূহুর্তে জানতে না পারলেও পরে কোনো সময় সে জানতে পারে যে এই ঘটনাটা থামের আড়াল থেকে লুকিয়ে একজন দেখেছিলো... যদিও ছোট থেকেও প্রচন্ড ঈর্ষাপরায়ণ হওয়ায় সে খুব খুশি হয় সুর-এর এই পরিণতিতে... এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন সে কে ছিল !!! None Other than Miss Abheri Chatterjee ..

কথাটা শুনেই সুর জলভরা চোখে ছোটো বোনের দিকে তাকায়... তার সেই দৃষ্টিতে আজ অভিরীর প্রতি অনেক প্রশ্ন...

সূর্য : তবে একটা ছোট্ট ভুল থাকে দু'জনের... তারা নিজেদের তাৎক্ষণিক জয়ে এতটাই মত্ত ছিল যে লক্ষ্যই করে নি যে একজন তৃতীয় ব্যক্তিও তাদের কুকীর্তির সাক্ষী হিসেবে অলক্ষ্যে সবই লক্ষ্য করলো... তিনি আর কেউ নন, চ্যাটার্জি পরিবারের বিশ্বস্ত ভৃত্য রামু কাকু... আজ তিনি তার আদরের টিনটিনবাবুকে সব খুলে বলেন... অপরদিকে প্রাণপ্রিয় নাতনীকে এইভাবে রক্তাক্ত হতে দেখে দিশেহারা আশাপূর্ণা দেবী ফোন করেন তার পালক পুত্র উদয় বাবুকে... উদয় বাবু আর বসুন্ধরা উত্তীয়কে অম্বর-এর বাড়িতে রেখে ছুটে যান হসপিটালে... উত্তীয়কে আটকে রাখা যাবে না ভেবে তারা ওকে সুর-এর Accident-এর ব্যাপারে কিছুই জানান নি... আর সুর-এর প্রতি ভালোবাসার এক নিদারুণ পাহাড় প্রমাণ অভিমান থেকে কিশোর টিনটিন কোনোদিন তার মায়ের কাছ থেকে জানতেও চায় নি সুর-এর কথা... মানুষের মনের উপর নিয়ন্ত্রণ যদি কখনও মনের সূক্ষ্ম অনুভূতিকে ছাড়িয়ে যায়, তবে তা হয় দুঃসহ... কিন্তু সম্পর্কে কি হিসেব-নিকেশ চলে !!! আবেগ আর অনুভব দিয়ে সম্পর্ক হয়.... টিনটিনের মনের অবস্থা তখন তেমনই ছিল... অবশ্য তখন তার বয়সই বা কতটুকু ছিল, মাত্র পনেরো.... নিজের প্রথম ভালোবাসা সুরকে হারিয়ে ব্যথিত উত্তীয়র আঁকড়ে ধরে তারই সমবয়সী অম্বর-এর ছেলে সূর্যকে....

সুর তখন কোমায়... আপনারা দেশের বাইরে... হঠাৎই এক রাতে উদয় বাবুকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ দেখানোর নাম করে ফোন করে স্টেশনে ডাকেন দেবতনু বাবু... হসপিটাল থেকে বেরনোর আগে অম্বরকে শেষ ফোন করেন উদয় বাবু... অম্বর আর উদয় একসাথে স্টেশনে যান... সেইরাত এক কালবৈশাখীর রাত... IPS Officer অম্বর রায়চৌধুরী সেদিন দেবতনু বাবুর against-এ সব প্রমাণ যোগাড় করে ওনাদের arrest করতে গিয়েছিলেন... আমার মাকে করা শেষ ফোনে বাবা সেটাই বলেছিল.... আর...

আর বলেছিল চিন্তা না করতে, ওনারা সব অপরাধ শেষ করে খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবেন... একসাথে Dinner করবেন বলে রান্না করতে বলেছিলেন... কিন্তু আমার বাবা তার কথা রাখতে পারেন নি... ওনারা আর ফেরেন নি... আমার কাছে... আমাদের পরিবারের কাছে... নিজেদের সবচেয়ে প্রিয় সন্তানদের কাছে... তাই তো আমরা দুই বন্ধু জীবন যুদ্ধ করতে করতে আমাদের দুই পিতার ইচ্ছেপূরণ করেছি... বলা ভালো, আজও করছি... উদয় কাকুর ইচ্ছে ছিল তার টিনটিন 'ডক্টর' হয়ে মানুষের সেবা করবে... আর আমার বাবা তার অপূর্ণ সাধটা পূরণ করতে চেয়েছিলেন আমাকে, এই সূর্য রায়চৌধুরীকে IPS Officer-এর Uniform-টা পরে সম্মানের সাথে নিজের দায়িত্বটা আজীবন পালন করতে দেখতে... মানুষ চলে গেলেও তার ইচ্ছে, তার সাধটুকু তো আমাদের মাঝে রেখে যায়... তাই হয়তো তারা চাক্ষুষ করতে পারেন নি আমাদের সাফল্যটা, কিন্তু আমরা আজো মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি তারা দু'জনেই পরপার থেকে দুই হাত তুলে আর্শীবাদ করেন প্রতিনিয়ত তাদের স্বপ্ন দেখানো পথে আমরা হেঁটে যাচ্ছি বলে.... সবচেয়ে বড় কথা, আমরা আমাদের বন্ধুত্বে কিন্তু এতটুকুও মলিনতার আঁচ লাগতে দিল নি... বরং দিন বাড়ার সাথে সাথে তা আরো মজবুত হয়েছে কংক্রিটের মতো... যাই হোক, যেটা বলছিলাম...

চোখের কোলে আসা জলকে তড়িঘড়ি মুছে ফেলে আবারও বলতে শুরু করে সূর্য....

সূর্য : পরেরদিন স্টেশনে ওনাদের ছিন্নভিন্ন দেহ পাওয়া যায়... বলা হয়, উদয়বাবু আত্মগ্লানি থেকে আত্মহত্যা করেন... এবং উদয়বাবুকে বাঁচাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় অফিসার অম্বর রায়চৌধুরীর...

হঠাৎই ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে সুর... আর সহ্য করতে পারছে না সে, নিজের বুকটা আঁকড়ে ধরে অঝোরে কেঁদে ফেলে সুর... উত্তীয় দৌড়ে এসে সুর-এর মুখটা নিজের দু'হাতের মুঠোয় তুলে নেয়... সূর্যও এসে সুর-এর সামনে বসে ওর কাঁধে হাত রাখে...

সুর : আর বলো না... আর বলো না সূর্যদা.... আমি আর সহ্য করতে পারছি না...

সূর্য : এখনই এত উতলা হলে হবে রে... এখনো কত মানুষের চরিত্র চেনা বাকি আছে... ভদ্রতার মুখোশের আড়ালে শত্রুতার গল্পটা শুনতে হবে না তোকে... নিজেকে শক্ত কর বোন... এখনো অনেকটা পথ চলা বাকি আছে রে... এখনো তো আমাদের দৈবিক বাবু তেমনভাবে খেলা শুরু করেন নি... রোহিনীদেবীর মেয়ে ঠিক তার মায়ের মতোই হয়েছিল... সে সব জায়গাতেই সুর-এর কাছে জিততে চাইত... 'নিজের জয়' -টাই ছিল তার কাছে শেষ কথা... কিন্তু তার সমস্যা হলো, শান্ত নম্র সুর-এর জন্য সে তার জয়টাকে ঠিক উপভোগ করতে পারত না... সে সুর-এর কাছ থেকে সবকিছু ছিনিয়ে কেড়ে নেবার আগেই সুর নিজেই অবলীলায় নিজের অধিকার ছেড়ে দিয়ে অভিরীকে জিতিয়ে দিত... আর অভিরী !!! কোথায় যেন জিতে গিয়েও জীবনের কাছে, সুর-এর কাছে চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়ে যেত... কথায় আছে পাপ তার বাপকেও ছাড়ে না... দৈবিক, দুই বোনের ঠিক এই সমীকরণটাকেই কাজে লাগালো... প্রথমে সুর-এর পরম বন্ধু টিনটিনকে ওর জীবন থেকে সরিয়ে ওর সাথে ভালোবাসার নাটক করলো... তারপর দৈবিক বাবু অনুভব করলেন, আরে না... Game Plan-এ তো একটু ভুল হয়ে গেল... এই মেয়ে তো তার বোনের জন্য সবকিছু ছেড়ে দিতে পারে... তাহলে এর বোনের থেকে ভালো টোপ তো আর কিছু হতেই পারে না... এদিকে অভিরীর তো তার দিদির সবকিছু চাই, এমন কি প্রথম ভালোবাসাও... দুই-এ দুই-এ চার হয়ে গেল... যার ফল এই বিয়ে হতে চলেছিল... এই বিয়ের দিনই সবকিছু পরিকল্পনা মতোই হতো- দেবতনু বাবু সহজ, সরল সুর-এর কাছ থেকে নিজের বোনের খুশির মূল্যস্বরূপ এই Property চেয়ে নিতেন, আর সুর-ও হয়তো না বুঝেই.....

জীবনে প্রথমবারের জন্য অভিরীর লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে আসে... কতটা বোকা সে !!! নিজের রূপ নিজে এতটাই মুগ্ধ ছিল যে, রূপের পেছনের কদর্যতা কালো ছায়া আর অন্যায়গুলো চোখে পড়ে নি তার....

উত্তীয় : (সুর-এর চোখে চোখ রেখে) কিন্তু সব হিসেব, এত বছরের এতবড় পরিকল্পনা সব তছনছ করে দিন সুর-এর অপহরণ... কারণ টিনটিন কোনোদিনও তার সুরকে একা করে দূরে চলে যায় নি.... মেঘনাদের মতো মেঘের আড়াল থেকে সবসময়ই সুর-এর সুরক্ষার উপর তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছিল... হ্যাঁ, সামনে আসতে চায় নি কখনো... কারনটা শুধুই নিজের বা নিজের বিপদ তা নয়, বা উপযুক্ত সময়ের অভাব সেটাও নয়... আসলে নিজের ভালোবাসার প্রতি এক তীব্র অভিমান... অপেক্ষা কবে ভালোবাসা নিজেই চিনে নেবে নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে.. তবে অভিমানে সে বহুবার সুরকে ঘেন্না করতেই চেয়েছে... কিন্তু প্রতিবারই আরো বেশি করে ভালোবেসে ফেলেছে... উঠে এসো সুর...


সুর-এর হাত ধরে দৈবিক-এর সামনে দাঁড়ায় উত্তীয়...

দৈবিক : তাহলে টিনটিন, এতগুলো বছর পর তোমার এক তরফা ভালোবাসা পূর্ণতা পেল !!! ঠিক কতগুলো বছরের ফল বলো তো এই দিনটা !! ঠিক কতগুলো বছর তোমার কাছ থেকে কেড়ে নিলাম আমি !!!


উত্তীয় : আমার ভালোবাসার কোনোদিন সমাপ্তি ঘটে নি দৈবিক যে আজ পূর্ণতা পাবে... আমার ভালোবাসার কোনোদিন কোনো সমাপ্তি ঘটবে না দৈবিক, কারণ আমি সুর-কে যতই ভালোবাসি না কেন, সেটা ওকে ভালোবাসার নিরিখে 'অসমাপ্ত'ই থেকে যাবে... কারণ সুরকে ভালোবাসার কোনো সমাপ্তি নেই... আর কি যেন বললে, তুমি আমার কাছ থেকে আমার ভালোবাসার সময় কেড়ে নিয়েছো !!! না দৈবিক, তুমি বরং আমাদের ভালোবাসার অন্তর্নিহিত অর্থটা বুঝিয়েছো.... হয়তো না জেনেই... সুরকে দূরে সরিয়েছিলে বলেই তো আমাদের মধ্যেকার এই অনাম্নী সম্পর্কটার গভীরতা বুঝেছিলাম, বা আজো বুঝি... ভালোবাসা অন্তহীন- তাকে দিন, মাস, বছরের হিসেবে গোনা যায় না...

সুর : আর পূর্ণতাও এখনো পাবে না, কারণ উত্তীয়কে আমাকে ছেড়ে এখন বিদেশ যেতে হবে, ওর Research শেষ করতে...


উত্তীয় : তুমি আমাদের দু'জনের ভালোবাসাকে অসম্পূর্ণ করে রেখেছিলে দৈবিক... সুর আর আমি দু'জনেই প্রথম ভালোবাসা হারানোর যন্ত্রণায় এক অসম্পূর্ণতা নিয়ে অনেক বছর কাটিয়েছি... হয়তো এখনো কিছু বছর আরো কাটাবো... কিন্তু কোথাও আমাদের মনের মধ্যে এই ভরসাটা থাকবে যে, আমরা দু'জনে দু'জনেরই... গাণিতিক স্থানিক দূরত্ব কখনোই মানসিক দূরত্বকে অতিক্রম করতে পারে না দৈবিক... মনের টানটাই ধ্রুবক আমাদের... অবশ্য ভালোবাসার এই মানেটা তুমি কখনোই বুঝবে না... তোমার জন্য আমার বড্ড করুণা হয় জানো তো... বড্ড করুণা...


সূর্য এসে দৈবিক আর দেবতনুর হাতে হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে তোলে... এতক্ষণ নিজেদের খেলা শেষ জেনেও দৈবিক-এর মনে এতটুকু আশা ছিল যে তার হাতে হাতকড়া পরাতে দেখলে সুর নিশ্চয়ই বাঁধা দেবে... কিন্তু সুরকে নিশ্চল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়ে যায় দৈবিক... Inspector-এর হাত ছাড়িয়ে আস্তে আস্তে এগিয়ে যায় সুর-এর দিকে, শেষবারের মতো চেষ্টা করে নিজেকে বাঁচানোর...

দৈবিক : সুররররর !!!! ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে সুর... তুমি কিচ্ছুটি বলবে না !!! আমাদের একসাথে কাটানো সব মূহুর্তগুলো কি তবে মিথ্যে হয়ে গেল তোমার কাছে !!! তুমি তো আমাকে ভালোবাসো বলো !!! হ্যাঁ, আমি জানি আমি তোমায় ঠকিয়েছিলাম কিন্তু তুমি আমায় কি একবারের জন্যও ক্ষমা করবে না !!! তুমি পারবে আমায় ছাড়া থাকতে !!! PLEASE, সুর কিছু বলো... টিনটিনও কিন্তু সম্পত্তির আশাতেই তোমায় মিথ্যে ভালোবাসার কথা বলেছে...


সজোরে চড় মারার শব্দে গোটা গোডাউন গুঞ্জরিত হয়ে ওঠে... দৈবিককে ঠাটিয়ে একটা চড় মেরে উত্তেজিত সুর বলে ওঠে,


সুর : যে কাজটা আজ থেকে অনেকদিন আগে করা উচিত ছিল, সেটা আজ করলাম... সবাই তোমার মতো সম্পত্তির লোভে লোভী নয়, দৈবিক... কিছু মানুষের কাছে নিজের কাছের সম্পর্কগুলো সম্পত্তির চেয়েও বেশি দামী হয়... আর কি যেন বলছিলে, আমি তোমায় ভালোবাসি এখনো !!! তুমি ভুল জানো... আমি তোমায় ভালোবাসতাম... সবটাই এখন আমার কাছে অতীত হয়ে গেছে... আর যে মূহুর্তগুলোর কথা বলছিলে না, সেইগুলো আমার জীবনের ব্যর্থতা ছিল দৈবিক, ব্যর্থতা ছিল... একজন ভুল মানুষকে ভালোবেসে নিজের মূল্যবান সময় এবং চোখের জল নষ্ট করে আসলে আমার নিজের আত্মসম্মান বিসর্জন দেওয়া ছিল... আর কি জানো তো, আঘাত লাগার জায়গায় যদি আবার আঘাত লাগে না, তাতে সাময়িক রক্তক্ষরণ হয় ঠিকই... তবে ব্যাথা আর অনুভব হয় না... তাই এখন আমার নিজের ভুল শুধরে সামনের দিকে পা বাড়ানোর সময় এসেছে... সময় এসেছে আবার আমার সত্যিকারের প্রথম ভালোবাসার কাছে ফিরে যাবার, যা আমি এতগুলো বছর ধরে সকলের অজান্তেই এক অব্যক্ত অজানা কষ্ট রূপে বয়ে নিয়ে চলেছি... আর একটা কথা বোধহয় টিনটিনদা নিজেও বুঝতে পারে নি, ওর কাছে থাকার সময় ওর সান্নিধ্যে আমার ধীরে ধীরে সমস্ত পুরোনো স্মৃতি মনে পড়ে গেছে- তাই ওকে দিয়ে একপ্রকার জোর করেই ওর সিঁদুরে নিজের সিঁথি রাঙিয়ে নিই.... আসলে টিনটিনকে আমি ভুলি নি কখনোই... শুধু স্মৃতিভ্রংশের কারনে সাময়িক পলিচাপা পড়ে গিয়েছিল... স্মৃতি হারালেও আমি আর ঠাম্মি কিন্তু অনেকভাবেই টিনটিন, উদয় কাকু, আর বসুধা মাকে খোঁজার চেষ্টা করেছিলাম... অত খোঁজার পরও যখন কোনো খবরই পাওয়া গেল না, তখন নিজের পুত্রসম... না না... পুত্রসম কেন বলছি !!! বলা ভালো নিজের ছেলে উদয় কাকু, কন্যাসমা বসুধা মাকে হারানোর শোকটা ঠাম্মি আর বেশিদিন নিতে পারে নি... আমাকে চিরতরে একা করে দিয়ে চলে গেল... আসলে আমি আর ঠাম্মি সেদিন বুঝি নি যে, যারা নিজেরাই লুকিয়ে থাকে তাদের খুঁজে পাওয়া অত সহজ নয়...

উত্তীয়র চোখে তখন তীব্র এক অভিমান, সে সুর-এর থেকে মুখটা ঘুরিয়ে নেয়...


সুর : তবে কিছু প্রশ্নের উত্তর অজানা ছিল, আজ সেই উত্তর পেয়ে না মেলানো হিসেবগুলো মিলে গেছে এই যা... যাও দৈবিক, নিজের কৃতকর্মের ফল ভোগ করো... পারলে এই কারাগারের যন্ত্রণা শেষে একজন খাঁটি মানুষ হয়ে ফিরে এসো... বলা যায় না তখন তোমার মানসিক শুদ্ধতার জোরে আমরা আমাদের বন্ধুত্বও তোমাকে ফিরিয়ে দিলাম... যাও... পুলিশ তোমার অপেক্ষা করছে...

চারিদিকে তখন এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোকে ঘিরে ধরেছে... সূর্য ফিরে এসে নীহারবাবুর উদ্দেশ্য বলে,

সূর্য : কাকু, আপনি আসুন... আপনাদের আমি বাড়িতে Drop করে দিই... আপনাদের একটু Rest দরকার...


নীহার : ওরা দু'জন যাবে না !!!

সূর্য : বহুদিনের অসম্পূর্ণতা আজ সম্পূর্ণ হলো.... ওরা একটু একা থাক... আপনি আসুন... আমার সাথে আপনার অনেক কথা আছে... আপনি হলেন গিয়ে কন্যাপক্ষ, কনের বাবা আর আমি বরের একমাত্র দাদা...

নীহার : হ্যাঁ... চলো.... বসুন্ধরার কাছেও আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে...


নীহারবাবু বেরিয়ে গেলে পায়ে পায়ে সুর-এর সামনে এসে দাঁড়ায় অভিরী... লজ্জায় আজ কথা জড়িয়ে যেতে চাইলেও ইতস্ততঃ কন্ঠে বলে ওঠে,

অভিরী : দিদিভাই, পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিস... যদিও তোর সামনে দাঁড়ানোর মুখ নেই আমার... তাও বলছি, তোর তুলনা তুই একাই রে... সেই কোন ছোট্টবেলা থেকে তুই সব কষ্ট, যন্ত্রণা নিজের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলিস... তুই সবসময়ই ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিস সব বিপদে... আর তার প্রতিদান হিসেবে শুধু মানসিকভাবে রক্তাক্ত হয়েছিস বারবার... আমরা কেউ সেই মূহুর্তগুলোয় তোর পাশে দাঁড়ানো তো দূরে থাক, তোর দিকে ফিরেও তাকায় নি... আসলে জিততে জিততে ভুলেই গিয়েছিলাম, জীবনযুদ্ধের আসল লড়াই-এ প্রাপ্তি শুধুই শূন্য... ভুল করেছি রে... মস্ত বড় অন্যায় করেছি.... যার শাস্তি আজ থেকে পাওয়া শুরু হলো আমার... নিজের সাথে নিজে আজ চাইলেও চোখ মেলাতে পারছি না... তোদের অসম্পূর্ণ ভালোবাসা আজ যাদুকাঠির ছোঁয়াতে সম্পূর্ণ হোক, এটাই চাই... তোদের দু'জনের নতুন পথে হাঁটার জন্য শুভেচ্ছা জানাই... আশা করি তোরা ভালোই থাকবি... আসি রে এবার... সাবধানে থাকিস... আর বাড়ি ফিরে যাস Please... ওটা তোর বাড়ি... তোর নিজের... মাসিমনির স্মৃতি বিজরিত.... তোকেই তো এখন স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব নিতে হবে... আসছি....

দুই বোনের চোখেই তখন জল... সুর বোনকে জড়িয়ে ধরে... দিদিভাই-এর কাছে নিজেকে মেলে ধরে অভিরী নিজেও খানিকটা ঋণমুক্ত... দু'জনকে পেছনে ছেড়ে এবার বাড়ির পথে এগিয়ে যায় অভিরী...

ওদের গাড়ির চলে যাওয়ার আওয়াজ হতেই দূরে দাঁড়ানো উত্তীয়র সামনে ধীর পায়ে এসে দাঁড়ায় সুর... সুর-এর উপস্থিতি টের পেয়ে উত্তীয় মুখ ফিরিয়ে দাঁড়িয়েছে... সুর বোঝে, তার ভালোবাসার আজ বড্ড অভিমান হয়েছে.... আসলে এতগুলো দিন দূরে সরিয়ে রেখেছে তো তাই... আজ যে তার অভিমান ভাঙাতে হবে সুর-কেই... যেমন পার্বতী ভাঙিয়েছিল তার মহাদেব-এর... দুই হাত দিয়ে উত্তীয়র অভিমানী মুখটা নিজের দিকে ফেরায় সুর... লক্ষ্য করে উত্তীয়ও আপ্রাণ চেষ্টা করছে নিজেকে সামলে ওই কষ্টমাখা চোখদুটোকে আড়াল করার... নরম স্বরে ছোট্টবেলার মতো বলে ওঠে,

সুর : টিনটিন, আমার সাথে Adventure-এ যাবে !!! Where is Snowy ???

কথাগুলো বলেই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে সুর... টিনটিন-এর মনে হয় দীর্ঘ দাবদাহের শেষে একজন পশলা বৃষ্টি নেমেছে এবার... আর নিজেকে সামলাতে পারে না উত্তীয়... উত্তীয় সুরকে নিজের খুব কাছে টেনে আনে... সুর-এর ক্ষতস্থানের উপর আলতো করে হাত রেখে বলে,

উত্তীয় : (অভিমানী স্বরে) এইজন্যই আমার দিকে ধেয়ে আসা মৃত্যুকে এক লহমায় নিজের বুকে টেনে নিয়েছিল তুমি, নদী... আর আমাকে বুঝতেও দাও নি... খুব দুষ্টু তুমি নদী... খুব খারাপ... সেদিন তোমার কিছু হয়ে গেলে আমি....

সুর : আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও চলে যেতাম না টিনটিন... আর তুমি তো ছিলে সেদিন আমার পাশে... আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, মৃত্যু তোমার বুক থেকে আমাকে কেড়ে নিতে পারবে না... তুমি নিয়ে যেতে দেবে না... তুমি আমাকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে থাকবে... এত সহজে তোমাকে ফাঁকি দিয়ে আমাকে যেতে দেবে না তুমি...

এ যে ভালোবাসার অমোঘ আকর্ষণ... অস্বীকার করবে কার সাধ্যি !!! কথা বলতে বলতেই চুপ করে যায় সুর... আজ সুর অনেক কিছু বলতে চায় উত্তীয়কে, কিন্তু পারে না... ওর সব কথাগুলো বড্ড ভাষাহীন হয়ে পড়েছে... হারিয়ে ফেলেছে দিক... জলভরা চোখে মুখ তুলে তাকাতেই উত্তীয় সুর-এর চোখের জলে তার অন্তরটা পড়ে ফেলে... মৃদু হেসে ধীরে ধীরে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় সুর-এর নরম উষ্ণ দুটোর ঠোঁটে... দু'জোড়া ঠোঁট প্রবল আবেগে, মৃদুতায়, কিংবা আদরে গলিয়ে দিল বহু বছরের জমে থাকা অভিমানের বরফ, জবাব দিল না কত না বলা প্রশ্নের... এই স্পর্শে নেই কোনো পাপ, নেই কোনো যৌনতার গন্ধমাখা আদিম কামনা... এই পরশ প্রেমের, সারাজীবন পাশে থাকার এক নীরব প্রতিশ্রুতি, আর পরস্পরকে ভালো রাখার আগাম শুভেচ্ছা বার্তা... উত্তীয় আর সুর দু'জন দু'জনের ঠোঁটে নিবন্ধ... সময়ও যেন আজ কয়েক মূহুর্তের জন্য এই স্থান, কাল, পাত্র ভুলে প্রেমিক যুগলকে দেখে থেমে গেছে... এ যেন সেই বহু বছর আগে আঁকা Leonid Aframov-এর আঁকা তৈলচিত্র- 'The Moment of Love'...

তবে কিছু কথা সময়ের গর্ভে হারিয়ে যায়... কিছু কথা অব্যক্তই রয়ে যায়... প্রিয় মানুষটাকে হয়তো বলা হয়ে ওঠে না... ঠিক যেমন সুর-এর কত না বলা কথা অসম্পূর্ণ রয়ে গেল উত্তীয়র বহুকাঙ্খিত ছোঁয়ায়... পৃথিবীর বুকে এইরকম বহু অসম্পূর্ণতা রয়ে যায়, সম্পূর্ণ হবার অপেক্ষায়...

                                                             (সমাপ্ত)



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama