Simanta Nandi

Tragedy Inspirational Others

4.0  

Simanta Nandi

Tragedy Inspirational Others

ফাইল রহস‍্য

ফাইল রহস‍্য

7 mins
359



(নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধানের তত্বকে উড়িয়ে দেশের শীর্ষ এক স্তর থেকে দিনের পর দিন চেষ্টা হয়েছে তাঁর মৃত‍্যু প্রমাণের। বিমান দুর্ঘটনা, চিতাভস্ম......এমন অনেক কিছুই খাড়া করার চেষ্টা চলেছে। যে ক'টি গোপন ফাইল এতদিন পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে তেমন গোপন কিছু নেই। তা সত্বেও বিভিন্ন চিঠি চালাচালি এবং হাতে আসা তথ‍্য প্রমাণ করে, নেতাজি বেঁচে ছিলেন বিমান দুর্ঘটনার পরেও। ঝুলির মুখ ফাঁকা হচ্ছে........,বেড়াল বেরিয়ে পড়লে অনেকের সুনামে দাগ আসবে না তো ?)


ঠিক তিন বছর আগের কথা প্রায় ৭৫ বছরের পুরনো আবেগ ভারতবাসীকে স্পর্শ করেছিলো। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কিত যাবতীয় গোপন ফাইল প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই মতো এক বছর আগে ফাইল প্রকাশের সূচনা করেছিলেন তিনি। পাবলিক ডোমেনে অর্থাৎ জাতীয় মহাফেজখানার ওয়েবসাইটে বিশ্বময় ছড়িয়ে গেলো প্রথম পর্যায়ের বেশকিছু নেতাজি-নথি। গনমাধ‍্যম সক্রিয় হলেও সেদিন জনমানস উত্তাল হলো না। কারন সঠিক মূল‍্যায়নের অভাব। বেশ কিছু জানা, অল্পজ্ঞাত তথ‍্য প্রথম দিককার ফাইলগুলোতে প্রকাশিত হয়। অবশ‍্য তার কয়েকমাস আগে সেপ্টেম্বর মাসে রাজ‍্যের মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা ব‍্যানার্জী নেতাজি সংক্রান্ত ৬৪ টি ঝাড়াই-বাছাই করা ফাইল 'কলকাতা পুলিশ' মিউজিয়ামে প্রকাশ করেছিলেন। সে ক্ষেত্রেও অতি সক্রিয় কোনো কোনও সংবাদমাধ‍্যম গভীরে প্রবেশ না করে স্রেফ 'অশ্বডিম্ব প্রসব' আখ‍্যা দিয়ে বিষয়ান্তরে যেতে দ্বিধা করেনি।

এ পর্যন্ত কেন্দ্র মোট ৩০৩ টি ফাইল প্রকাশ করেছে। এখনো গোপনীয় বা অতি গোপনীয় বহু ফাইল কিন্তু প্রকাশের আলো দেখেনি। রাজ‍্য ও কেন্দ্র প্রকাশিত নেতাজি ফাইলগুলোর মধ‍্যে প্রত‍্যাশামতোই নানবিকৃতকরনের পাশাপাশি পৃষ্ঠা সংখ‍্যার এদিক-ওদিক ও পাতা উধাও এর স্পষ্ট প্রমান ধরা পড়েছে। কার আমলে, কে, কেন--এইসব প্রশ্নের উত্তর লিপিবদ্ধকরন হয়নি। ইতিহাস রক্ষার প্রতি হয়েছে চরম অবিচার যা অন‍্য কোনো জাতীয় নেতার ক্ষেত্রে ঘটেনি।


*(নেতাজি কোনও মানচরিত্র ছিলেন না। তিনি আসলে একটি একক অস্তিত্ব)*



গত তিন বছরে কেন্দ্র প্রকাশিত ফাইলগুলির হাজার হাজার পৃষ্ঠার নেপথ‍্যে রয়ে গিয়েছে অজস্র চাঞ্চল‍্যকর তথ‍্য ও তথ‍্যসূত্র--যা শুধু নেতাজীর জীবনগাথাকে আরও উজ্জ্বল করেছে তাই নয়, আজাদ হিন্দ আন্দোলনসহ ভারতের মুক্তি সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস নতুন করে লেখার দাবী রাখে। ১৯৫৪ সালে রাজ‍্য ও কেন্দ্র প্রকাশিত এমিলি সংক্রান্ত ফাইলগুলি থেকে একটা সত‍্যসন্ধানী দৃষ্টি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ১৯৪৫ এর ১৬ আগস্ট তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনার সাজানো গল্প কে সত‍্য বলে ব্রিটিশ সরকার যেমন আদৌ মানেনি ঠিক তেমনি ভারতের শাসক সম্প্রদায় প্রকাশ‍্যে 'ছাইভস্ম' নিয়ে নানা উদ‍্যোগ নিলেও গোপনে নেতাজি সত‍্য যাতে প্রকাশ‍্যে না আসে, তার জন‍্য কেউ কেউ, কোনও প্রভাবশালী গোষ্ঠী আজীবন চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। কিন্তু 'সত‍্য যে কঠিন'। অনেক দেরীতে হলেও প্রকাশ‍্যে এসে গিয়েছে চীন ও রাশিয়াতে নেতাজীর অবস্থান ও সক্রিয় থাকার তথ‍্যসূত্র এবং অবশ‍্য তা 'বিমান দুর্ঘটানায় মৃত‍্যু'--র অনেক পরে।

'মৃত ভূত' সুভাষের কন্ঠস্বর তিনবার আন্তর্জাতিক বেতারে ভেসে এসেছিলো এমন কথা 'অলীক' কল্পনাবলে একসময় উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলেও রাজ‍্য ও কেন্দ্রের ফাইলে সে সবের স্বীকৃতি মিলেছে। নেতাজির মেজদা শরৎ বসু নিশ্চিত হয়েই তাঁর সংবাদপত্রের ব‍্যানার হেডলাইন করেছিলেন 'নেতাজি ইন রেড চায়না'। কিন্তু অন‍্যতম চাঞ্চল‍্যকর তথ‍্যটি মিলেছে বিদেশ মন্ত্রকের পশ্চিম এশিয়া দপ্তরের একটি ফাইলে। ফাইলটি ২০/৮/৬৯--এ লোকসভার প্রশ্ন-উত্তর সংক্রান্ত বিষয়বস্তুর অন্তর্গত। ঐতিহাসিক তাসখন্দ চুক্তির সময় মস্কো রেডিও থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ভাষন সংক্রান্ত প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন সংসদ সদস‍্য সমর গুহ। ফাইলটির কভারে ১৯৮৩ সাল ও ১৮৯৬ সালের উল্লেখ থাকে এবং কয়েক বছর আগে তাঁকে আটকে রাখার নোট দেওয়া আছে। নেতাজি তদন্তে নিযুক্ত মুখার্জি কমিশন তাসখন্দ চুক্তির সময় মস্কো রেডিও থেকে সুভাষচন্দ্র বসুর ভাষন সংক্রান্ত ফাইলপত্তর বারবার দাবি করলেও সে সময় ভারত সরকার তা প্রত‍্যাখান করেছিলো। প্রকাশিত ফাইলে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, মস্কো রেডিওর। হিন্দি বিভাগের গ‍্যালিনা একটি চিঠিতে স্পষ্টভাবে লিখেছে যে সুভাষচন্দ্রের অনুমতি ছাড়া তাঁর ঠিকানা কাউকে জানানো সম্ভব নয়।


'We are unable to farnish the address of Subhas Chandra to any one without obtaining his permission kindly excuse.'


*(দেশ ও বাংলার স্বার্থ সামান‍্যতম ক্ষুন্ন হবে এরকম কোনও ইস‍্যুতেই আপস করেননি সুভাষচন্দ্র)*


উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে ১০ জানুয়ারি রাশিয়ার তাসখন্দে রুশ রাষ্ট্রপ্রধান পেজিগিন, পাক প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান, জুলফিকর আলি ভুট্টো ও ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর উপস্থিতিতে যে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিলো, সেদিন তার ভিডিও ফুটেজে রহস‍্যময় ব‍্যাক্তির ছবি দেখা গিয়েছে। ব্রিটেনের ফেসম‍্যাপিং বিশেষজ্ঞ জন মেরিল তাঁর ফরেনসিক রিপোর্টে জানিয়েছেন যে, ভারতীয় নেতা সুভাষচন্দ্র বসুর মুখবায়বের সঙ্গে প্রচুর মিল রয়েছে তাঁর। শাস্ত্রিজীও নাকি সেখানে ভারতের নিখোঁজ দেশপ্রেমিকের খোঁজ সেদিন পেয়েছিলেন এবং দেশে ফিরে যে ঘোষনা তিনি করবেন এমনটাই সাম্প্রতিককালে শাস্ত্রিজীর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের রাতেই রহস‍্যময় পরিস্থতিতে হঠাৎ শাস্ত্রিজী প্রয়াত হন।


আরও রহস‍্যময়, আজও তাঁর মৃত‍্যুর প্রকৃত কারন অজানা। ভারতের ফেরার আগেই তাঁকে সরিয়ে দিতে হল কেন ? তা অনুমান করা যায়। তাসখন্দম‍্যান নেতাজি রহস‍্যের এক অন‍্য অধ‍্যায়। কিন্তু যারা সাম্প্রতিককালেও রুশ কারাগারে কখনও ফাঁসিতে, কখনও গুলিতে, কখনও বা অত‍্যাচারে সুভাষচন্দ্রের নিহত হবার তত্ত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন তাঁরা তাঁদের দাবির সপক্ষে একটি নথিও প্রকাশ করতে পারেননি আজ পর্যন্ত। উল্লেখ্য, এক সময় মস্কো রেডিও থেকে জনৈক সুভাষ নামধারী কোনও ভারতীয় ছাত্র হয়তো ভাষন দিয়েছে এমন কথাও বলা হয়। গোপন অনুসন্ধানে যা ফাইলে প্রকাশিত নথিতে দেখা গিয়েছে যে, তিনজন সুভাষ নামধারী ছাত্র সেসময় রাশিয়াতে পড়াশোনা করতে গেলেও তাঁদের কারওরই পদবি বসু ছিল না। সে সময়ের সোভিয়েত রাশিয়ায় কমিউনিস্ট কঠোরতার মধ‍্যে জনৈক সুভাষ নামধারী ছাত্র হঠাৎ মস্কো রেডিওতে ভাষন দেবেন তা শুধু অবাস্তবই নয়, স্রেফ হাস‍্যকর।


*(নেতাজির চাপেই বন্দেমাতরম্--কে প্রদেশ সরকারগুলি বাধ‍্য হয়েছিল স্থায়ীভাবে গ্রহন করতে)*


নেতাজী সম্পর্কে গড়ে তোলা নানা মিথ‍্যার ভিত তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে সরকারী ফাইলগুলির দৌলতে। আজান্দ হিন্দ সরকারের কোটি কোটি টাকা, অর্থ, সম্পদ লুট হয়ে যায়। দেশের প্রথম ফ্রধানমন্ত্রী নিজের ব‍্যাক্তিগত অ‍্যাকাউন্টে ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব‍্যাংকে আজাদ হিন্দ ফান্ডের প্রচুর অর্থজমা করেন এমন নথির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে মহাফেজখানার সংরক্ষিত ফাইলগুলিতে। দেশের প্রথম আর্থিক কেলেঙ্কারি শুধু নয়, নেতাজীর চরিত্র হননের সুগভীর চক্রান্তের হদিশ মিলেছে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬তাড়িখে 'নেতাজি পেপারস্ ডট গভ ডট ইন' (netajipapers.gov.in) এই ওয়েবসাইটে।


নেহেরুজি একদা সুহৃদ সুভাষচন্দ্রকে 'যুদ্ধাপরাধী' তকমা দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন যে, রাশিয়া সুভাষচন্দ্রকে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সেই নেহেরুজি শুধু বসু পরিবার নয়, নেতাজির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকের উপর নজরদারী চালিয়েছিলেন। বাংলার মুখ‍্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের সঙ্গে গোপন চিঠিপত্র চালাচালি করেছেন। কীভাবে 'চিতাভস্ম' ভারতে আনা যায়, অ‍্যানিটা ব্রিজেট সেঙ্কেলকে দ্বৈত নাগরিকত্ব প্রদান করা এবং বসু পদবী কীভাবে দেওয়া যায় ইত‍্যাদি বিষয় নিয়ে চিঠিতে পরামর্শ করার নথি পাওয়া গিয়েছে। বিদেশে গিয়ে সুভাষের 'স্ত্রী' এমিলির সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেন এবং মাসে মাসে টাকা পাঠানোর ব‍্যাবস্থাও করেন। একটি দীর্ঘ হিসাবও পাওয়া গিয়েছে। একটি ফাইলে এমিলি সেঙ্কেলকে ৩২ হাজার টাকার উপর দেওয়া হয়েছে উল্লেখ রয়েছে। এত কান্ডের পরেও আসল বেড়াল ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়েছে। গোপনে সুভাষচন্দ্রের ভাইপো এমিলির ম‍্যারেজ সার্টিফিকেট ও অ‍্যানিটার বার্থ সার্টিফিকেটের সন্ধান করছেন এমন চিঠি পাওয়া মিলেছে। ১৯৮০ সাল বাংলার তৎকালীন রাজ‍্যপাল ত্রিভুবন নারায়ন সিং গোপনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছেন এমিলির পরিচয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে যে, তাঁদের দপ্তরে সুভাষচন্দ্র কোনও বিদেশিনীকে বিবাহ করেছেন বা কোনও কন‍্যা সন্তান আছে এমন কোনও তথ‍্য নেই। তাহলে কীসের ভিত্তিতে জওহারলাল নেহেরু ও পরবর্তীকালেও লক্ষাধিক টাকা এমিলিকে দেওয়া হতো ? এ প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না মিললেও বিস্ফোরক তথ‍্যের সন্ধান মিলেছে নেতাজি ফাইল প্রকাশের ধারাবাহিকতার সূত্রে। ভিয়েনায় নেতাজি কন‍্যা বলে কথিত অ‍্যানিটার জন্মের শংসাপত্রের ইংরেজি অনুবাদ পাওয়া গিয়েছে। ভিয়েনার রেজিস্টার অফিস ৪ ডিসেম্বর ১৯৪২ সালে দেওয়া অ‍্যানিটার বার্থ সার্টিফিকেটে কন‍্যার নাম অ‍্যানিটা ব্রিজেট সেঙ্কেল (Anita Brigitte Schenkl)--এর জন্মের তাড়িখ ২৯ নভেম্বর, ১৯৪২।


মায়ের নাম এমিলি ক‍্যারোলিন সেঙ্কেল (Emilie Karoline Schenkl)। পোস্ট অফিস কর্মী বলে লেখা হয়েছে। ওই ইংরেজি অনুবাদ করা শংসাপত্রে 'চেঞ্জ অব এন্ট্রি' স্থানটি ফাঁকা রাখা হয়েছে। কন‍্যার বাবার নাম নেই। অ‍্যানিটার পদবীতে 'সেঙ্কেল'--এর সঙ্গে রহস‍্যময়ভাবে 'ব্রিজিট' পদবীটি এসেছে। উল্লেখ্য, অতি গোপনীয় ওই ফাইলে রাজ‍্যপাল ত্রিভুবন নারায়ন সিং--এর কাছে তৎকালীন স্বাধীনতা সংগ্রামী সংগঠনের প্রধান অরুন ঘোষ অ‍্যানিটার বাবার নাম কর্নেল পি ব্রিজিট বলে উল্লেখ করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। আরও একটি ভিয়েনার ভাইস কনস‍্যুলেটে একটি আবেদনপত্র লিখেছেন যে, অ‍্যানিটাকে 'বোস' পদবী দেওয়া হোক ও সুভাষ বোসকে তার বাবা হিসাবে নথিভুক্ত (রেজিস্টার) করা হোক। তার দাবীর সপক্ষে তিনি পিতৃপরিচয় অনুল্লেখ করা অ‍্যানিটার বার্থ সার্টিফিকেটের ইংরেজি কপিটিও বাংলা ভাষায় মেজদা শরৎচন্দ্র বসুকে সুভাষচন্দ্রের লেখা বলে কথিত সন্দেহজনক চিঠির প্রতিলিপি পেশ করেন, সুভাষচন্দ্র জীবনে কখনো মেজদা শরৎচন্দ্র বসুকে বাংলা ভাষায় চিঠি লেখননি, এমনকি ওই চিঠিটির বয়ানেও কোথাও স্ত্রী এমিলি বা কন‍্যা অ‍্যানিটার নাম উল্লেখ নেই। যে কোনও মহিলায় ওই চিঠিটি নিজের স্বার্থে ব‍্যবহার করতে পারতেন। আইনি ভিত্তিহীন ওই দু'টি সূত্রকেই চিঠিতে জুড়ে দিয়েছিলেন। বিস্ময়কর ভাবে ওই আবেদন পড়ে এমিলি শুধুমাত্র ইনিশিয়াল করেছেন। পরিচিত এমিলির স্বাক্ষর নেই।


১৯৬৮ সালের ১৯ এপ্রিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধিকে একটি গোপন চিঠি লিখেছেন নেতাজির ভাইপো ও তৎকালীন নেতাজি রিসার্চ ব‍্যুরো প্রধান শিশিরকুমার বসু। জানতে চেয়েছেন কলকাতা থেকে তাঁর কাকা সুভাষচন্দ্র কীভাবে ইউরোপে গেলেন। ফাইলে ইন্দিরা গান্ধীর উত্তর পাওয়া না গেলেও ১৯৭০ সাল থেকে তিনি বলেন এবং'মহানিস্ক্রমন' বই লিখে বলেন তিনিই ১৯৪১ সালের ১৬ জানুয়ারি মধ‍্যরাতে ছদ্মবেশী সুভাষচন্দ্রকে বাড়ি থেকে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যান। প্রশ্ন উঠবেই--এতদিন উনি চুপ ছিলেন কেন ? এমনকি রাজ‍্য সরকার প্রকাশিত কোনও ফাইলে শিশিরকুমারের মহান স্বার্থের ব‍্যাপারে কোনও ভূমিকার ইঙ্গিত মাত্র নেই। অথচ ব্রিটিশ গোয়ান্দারা সেই সময় এলগিন রোডের বাড়িতে আসা- যাওয়া করা প্রতিটি গাড়ির খুঁটিনাটি লিপিবদ্ধ করে রাখতো তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও কেন্দ্র প্রকাশিত ফাইলগুলিতে তথাকথিত নেতাজির চিতাভস্ম সংরক্ষণ এবং কীভাবে ভারতে নিয়ে আসা যায় সে সংক্রান্ত অজস্র চিঠিচাপাটির সন্ধান মিলেছে। সরকারি ফাইলে সুভাষচন্দ্রের সংগ্রামী জীবনের নানা দিক উঠে এসেছে। ফৈজাবাদে চলে আসা সাধুর ওপর ১৯৭৪ সালে গোয়েন্দা নজরদারির উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে, যা এই স্বল্প পরিসরে উল্লেখ সম্ভব নয়।

আজ নেতাজির প্রতি ফাইল প্রকাশের পর একটি কথায় মনে আসে---"ক্ষমা করো নেতাজি !"

বন্দেমাতরম্

জয় হিন্দ !

সত‍্যমেব জয়তে....


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy