Rima Goswami

Drama Romance Fantasy

3  

Rima Goswami

Drama Romance Fantasy

পাত্রবদল ডিউ টু ভার্জিনিটি

পাত্রবদল ডিউ টু ভার্জিনিটি

28 mins
639


উইপ্ৰ তে জব করেন বছর একচলিশের সায়ন্তন গুহঠাকুরতা । গতকাল ছেলে অয়নের ব্যাচেলর পার্টি ছিল , আগামীকাল বিয়ে । প্রচুর কাজ এখনো বাকি আর এদিকে অফিসের কাজে ফেঁসে যাচ্ছেন নিয়ত । কি হবে কে জানে ! সুদীপ্তা যদি আজ থাকত তা হলে এত কিছু ভাবনাই ছিল না সায়ন্তনের । কত কম বয়স তখন সায়ন্তনের কুষ্টিতে দোষ আছে আর বিয়ে দিলে দোষ নিবারণ হবে জ্যোতিষী বাবাকে বললেন । একগুঁয়ে , প্রাচীনপন্থী বাবা ও কথামত সতেরো বছরের ছেলেকে একটা সদ্য পিউবারটি হওয়া চোদ্দ বছরের মেয়ে সুদীপ্তা র সাথে বিয়ে দিয়ে দিলেন । সুদীপ্তা ছিল মায়ের বান্ধবী র মেয়ে । মা কথা দিয়েছিলেন তার ডিভোর্সি বান্ধবীকে সুদীপ্তা কে মেয়ের মতো আগলে রাখবেন , পড়াশোনা করাবেন , আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যতদিন না সুদীপ্তা সাবালিকা হচ্ছে ওকে স্বামীর সঙ্গে এক ঘরে থাকতে হবে না , মানে ও একরকম কুমারী মেয়ের মতোই থাকবে । বান্ধবী র কথা মনে ধরে মেয়ের মায়ের , বড়লোকের একমাত্র ছেলে র বউ হবে মেয়ে আর পড়াশোনা ও শশুর বাড়ী থেকে হবে মানে মেয়ের খরচা ও বইতে হবে না । সেভেনে পড়া সুদীপ্তা বউ হয়ে এলো ক্লাস ইলেভেনের সায়ন্তনের । প্রথমে খুব লজ্জা লাগতো সায়ন্তনের , বাবার ডিসিশনের জন্য রাগ হত । তার পর স্কুলের ছেলেরা বুদ্ধি দিল , হাতে লাড্ডু থাকতেও সায়ন কেন তা চেখে দেখছে না ! ওর বিয়ে করা বউ তবু ফুলশয্যা কেন হয়নি ? সদ্য যৌবন আসতে শুরু হয়েছে তখন সায়নের ওরও কৌতূহল হতো । তবু মা যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঠিকই আছে এই ভেবে সে কোনোদিন সুদীপ্তার দিকে তাকিয়ে পর্যন্ত দেখত না । মা বাবা ও ওকে খুব ভরসা করতো ওদের একা বাড়িতে রেখে এদিক ওদিক যেত । ওরাও লক্ষী ছেলে মেয়ে হয়ে যে যার মতো থাকত । তবে যখন বিয়ের তিন মাস পরেও সায়নের সাথে কোনো সম্পর্ক হয়নি ওর বউয়ের এ কথা বন্ধুরা জেনে এবার সায়ন্ কে না না ভাবে খ্যাপাতে লাগলো । ওকে রাগতে লাগলো ওর মধ্যে প্রবলেম আছে , ও নপুংসক । রাজা বলে ওর এক বন্ধু বললো যদি সায়ন তুই না পারিস আমাকে বলিস । প্রচন্ড রাগ হত ওর , শেষে ও ভেবেই নিল একবার সুযোগ পেলেই ও প্রমান করে দেবে ও নপুংসক না । সেদিন সায়ন্তনের দিদিয়ার হটাৎ বাড়াবাড়ি র খবর এলো , বাবা মা ওদের বাড়িতে রেখে মুর্শিদাবাদ চলে গেল । মা বলে গেল পাশের হোটেল থেকে খাবার এনে যেন রাত টুকু ওরা দুজন পার করে দেয় । সকালেই উনি ফিরে আসবেন । মা বাবা চলে গেল , ঘরে সায়ন আর সুদীপ্তা । সন্ধ্যার সময় সন্ধ্যা প্রদীপ দিয়ে সুদীপ্তা সায়নকে চা দিল । তার পর নিজের ঘরে গিয়ে পড়তে বসলো । বিয়ের পর ওদের দুজনার মধ্যে দরকার টুকু ছাড়া কোনো কথা হতো না , আজও তাই হলো । কিন্তু সায়ন্তনের মধ্যে অন্য ঝড় উঠেছে তখন । কিছুক্ষণ উসখুস করে ও পাশের হোটেল থেকে খাবার এনে নেয় ।


তার পর সেই খবর দেওয়ার অছিলায় সুদীপ্তা র ঘরে ঢোকে । সুদীপ্তা খাতায় কিছু লিখেছিল , ওকে দেখে জানতে চায় 'কিছু বলবে সায়ন '? কোনো উত্তর না দিয়ে ওর উপর ঝাপিয়ে পড়ে সায়ন্তন । প্রথমে অপটু হলেও আস্তে আস্তে ওর উদ্দীপনা চরমে পৌঁছে যায় । ভয়ে অতর্কিত ঘটনায় যেন বাধা দিতেও ভুলে যায় সুদীপ্তা । ইন্টারকোর্স করতে শুরু করে সায়ন তখন যন্ত্রণা তে চিৎকার করে ওঠে সুদীপ্তা । ভয় পেয়ে যায় সায়ন্তন কিন্তু কি এক অদ্ভুত নেশা যেন ওকে পেয়ে বসেছে তখন , ও থামতে পারে না । তবু ওই অবস্থাতেই জিজ্ঞেস করে ' তোমার কষ্ট হচ্ছে সোনা '? সুদীপ্তার শরীরও সাড়া দিতে শুরু করে ছিল । ও বলে না কোনো কষ্ট নেই । খাবার রান্নাঘরেই পরে থাকে রাত পেরিয়ে যায় ওদের কামের আগুনে পুড়ে । ওই শুরু তার পর ওরা সুযোগ পেলেই শুরু হয়ে যেত আর দুজনে একে অপরকে ভালোবেসে ও ফেলেছিল । মা বাবা কিছুই জানতে পারছিল না । কিন্তু কিছুদিন পর সুদীপ্তা অসুস্থ হয়ে পড়ল । অসুস্থতা ক্রমে ক্রমে বাড়তে লাগল ডক্টর দেখানো হলে উনি টেস্ট করাতে দিলেন । টেস্টের রেজাল্ট নিয়ে বাবা ঘরে এসেই ধপ করে চেয়ারে বসে পড়লেন । মা হাজার বার জিজ্ঞাসা করলেও কোনো উত্তর দিলেন না । সায়ন্তন আর সুদীপ্তা কে ডাকলেন । উনি জিজ্ঞাসা করলেন ' সুদীপ্তা তুমি কি জানো তোমার কি হয়েছে ?' মাথা নাড়িয়ে না সংকেত দিল সে । উনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন সায়ন্তনকে ' তুমি কি বৌমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ফেলেছ '? এবার সায়ন্তনের মা রেগে গিয়ে বললেন ' হেঁয়ালি না করে আসল কথা বল , সুদীর আমার কি হয়েছে ? তুমি বাবুকে কি বলছ ! তুমি তো জানো ওরা যতদিন পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ না করছে অপেক্ষা করবে । '

সায়ন্তনের বাবা সুদীপ্তা র টেস্ট রিপোর্ট টা ছুঁড়ে দিলো স্ত্রীর মুখে । রিপোর্ট এ পরিস্কার লেখা সুদীপ্তা গর্ভবতী । সায়ন আর সুদীর সব কিছু ধরা পড়ে যায় । সামনে সায়নের পরীক্ষা , সুদী ও ক্লাস এইটে এসব ভেবে গর্ভপাতের কথা বলে সায়নের মা । কিন্তু একে তো নাবালিকা গর্ভবতী তার পর নানা আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে এসব ভেবে ওরা সিদ্ধান্ত নেয় বাচ্চা রেখে দেওয়ার । সায়ন্তনের উচ্চ মাধ্যমিক এর রেজাল্টের দিন সকালেই হসপিটালে ভর্তি হয় সুদীপ্তা । সায়ন্তনের দুটো রেজাল্ট একসাথে প্রকাশিত হয় , স্টার মার্কস নিয়ে সায়েন্স এ উচ্চ মাধ্যমিক আর পুত্র সন্তানের জনক । তার পর ওদের অয়নের দায়িত্ব সায়নের মাই নেয় । জয়েন্টে চান্স পেয়ে সায়ন পড়তে চলে যায় বাইরে আর সুদীপ্তা ও পড়তে শুরু করে আবার । দিন গুলো হু হু করে পেরিয়ে যায় তার পর দিল্লি তে চাকরি সুদীপ্তা অয়ন কে নিয়ে আসা সুদীপ্তা র ব্যাচেলর ডিগ্রি লাভ ।


আঠের বছরে বাবা হওয়া সায়ন্তনের ছেলে আজ তেইস বছরের । সুদীপ্তা মারা গেছে তিন বছর আগে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে । আবার অয়ন ও MBA পাস করে রিসেন্ট সেটল হয়েছে । ও নিজেই পছন্দ করে টিকলি কে ওর সাথেই জব করে । জীবনের এত গুলো বছর পার করে মাত্র একচলিশেই শশুর হবে সায়ন্তন , বিপত্নীক হয়েছে মধ্যত্রিশে । এসব ই চিন্তা করতে করতে রাত পার কখন হয়ে গেছে সায়ন জানে না ।


বিয়ে করতে যাচ্ছে ছেলে সাথে বন্ধুর মতো বাবা । গাড়ি থেকে নামলো ওরা । বিয়েতে বসার আগে একবার নতুন কনেকে দেখতে ইচ্ছুক অয়ন । ও রুমে গেল । কিছু ক্ষণ পর বেরিয়ে এলো আর জানলো এ বিয়ে হচ্ছে না ।

হাজার বার সায়ন্তন বোঝালো কিছুতেই অয়ন মানছে না । কারণ যা দিলো সেটা খুবই ঠুনকো এই একবিংশ শতাব্দীতে । টিকলি কনফেশন করেছে আজ ওর কাছে যে ও ভার্জিন না । ভার্জিনিটি কি কোনো মেয়ের চরিত্রে র ডিপ্লোমা হতে পারে অয়ন ? সায়ন্তন বললো । কিছু তেই কিছু শুনবে না সে , চলে গেল একাই ড্রাইভ করে । হতভম্ব হয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলো সায়ন । পাশে এসে দাঁড়িয়েছে টিকলি , অয়নের সমবয়সী টিকলি বললো 'আপনি যদি ভার্জিনিটি কে ক্যারেক্টার সারটিপিকেট না মনে করেন তা হলে আপনি আমাকে বিয়ে করুন !' । সায়নের রাগ হলো সে বলল ' তুমি আমার থেকে অনেক ছোট টিকলি , আমি দুঃখিত আমার ছেলের জন্য আজ তোমার বিয়ে ভেঙে গেছে , আমি তোমার শশুর হতে এসেছিলাম আর এখন তোমাকে নিজের স্ত্রী বানিয়ে নিয়ে বাড়ি ফিরব ? \" টিকলি বলল আঠের বছরের ডিফারেন্স অনেকটা তবে সায়ন্তন গুহঠাকুরতা এখন সিঙ্গল আর মোস্ট এলিজেবেল তো বটেই । একচলিশ টা কোনো বয়স না । যদি সায়ন্তনের মধ্যে গিল্ট থাকে নিজের ছেলের জন্য তাহলে টিকলী র ইচ্ছাকে তাকে সন্মান দিতে হবে । বিয়েটা হলো , সকালে টিকলিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো সায়ন্তন । সদ্য ঘুম থেকে ওঠা অয়ন টিকলিকে বাবার সাথে বিবাহিত দেখে অবাক ।

পুত্রবধূ আনতে গিয়ে বাবা বধূ নিয়ে এলো । অয়নের gf এখন তার স্টেপ মম হয়ে গেল । আর এদিকে টিকলি খুব খুশি অয়নের থেকেও হ্যান্ডসাম বর পেয়ে থাকনা তার বাড়িতে একটা সৎ ছেলে ।


একবিংশ শতাব্দীর বিয়েতে সব হতে পারে । 

বিয়ে করে টিকলি আর সায়ন্তন ফিরল । অয়ন মানে কাল অবধি যে পাত্র ছিল সে আজ টিকলি র স্টেপ সন । জাস্ট আর নেওয়া যাচ্ছে না , মনে মনে ভাবল অয়ন । বাড়ি ফিরেই সায়ন্তন নিজের রুমে গিয়ে নিজেকে লক করে নিলো । কি হবে এবার ? কি ভাবে সামলাবে সায়ন ছেলেকে আর কাল অবধি ছেলের প্রেমিকা থাকা এই মেয়েটাকে ?


দরজার বাইরে ঠক ঠক করেই করেই যাচ্ছে টিকলি । বলছে "খোল না , আমাকেও তো চেঞ্জ করে একটু রেস্ট নিতে হবে নাকি ? সায়ন প্লিজ খোল হানি "। লজ্জায় , দ্বিধায় মরে যাচ্ছে সায়ন্তন । হানি ! এইটুকুন মেয়েটা দুর্ঘটনাবসত ওর স্ত্রী হয়েছে আর আজ থেকেই হানি না কিসব ছাতার মাথা । দূর দরজাটা না খুলে দিলে আরও যে কি সব বলবে , ছেলেকে একেই মুখ দেখাতে পারছে না সায়ন এর পর আর ও ভাবতে পারছে না । দরজাটা খুলে বাইরে চলে গেল । অয়ন রুমে একাই বসে আছে গেম খেলতে খেলতে কি একটা গুণ গুন করছে । সায়ন ভাবে আচ্ছা এই জেনারেসন কি কিছু সিরিয়াসলি নিতে পারে না ! কিন্তু কিন্তু করে ছেলের রুমে ঢুকে পড়ে সায়ন । "আরে বাবা এস এস , কিছু বলবে ? ডোন্ট ওয়ারি ডিয়ার আমি দুঃখ পাচ্ছি না "। 'শি ইস আ বিচ ....যা: সরি কি সব বলে ফেলছি আফটার অল শি ইস ইউর ওইফ নাও '।'অয়ন আমার কিছু করার ছিল না , আমি চাইনি এটা '। সায়ন্তন বললো । বিয়ে পন্ড হয়েই গেছে যখন কোনো অনুষ্ঠান আজ আর কাল হচ্ছে না , আমি ডেকোরেটর , ক্যাটারিং এসবকে মানা করে দিচ্ছি । আমার অফিসে অনেক কাজ বাকি আমি আজই জয়েন করে যাবো । তোমার বিয়ে উপলক্ষে কাল পর্যন্ত লিভ নেওয়া ছিল বাট ক্যান্সেল করে দেব । এসব করে তুমি কি প্রমান করতে চাইছো বাবা ? অয়ন বললো । তোমার অনুষ্ঠান ক্যান্সেল করলে অফিস লিভ ক্যান্সেল করলে কাল যা হয়েছে তা তো মিথ্যা হয়ে যাবে না ? তুমি আর মৃতা সুদীপ্তা গুহঠাকুরতা র হাজবেন্ড নও । শি ইস নাও মাই মম অনলি , ইউ আর নাও অনলি দা ফাকিং হাসবেন্ড অফ টিকলি । অয়ন ডোন্ট ক্রস দা লিমিট , সায়ন বললো । এগেইন আই এয়াম সরি বাবা তবে শোনো তোমার এটা প্রথমবার বিয়ে না হলেও টিকলি মানে আমার এক্স গার্ল ফ্রেন্ড আর বর্তমান মম এর প্রথম বিয়ে , হলেই বা সে ভার্জিন না , বিয়ে তো প্রথম করছে । সব প্রোগ্রাম করতে হবে না অফেন্ডেড লাগবে তোমার তবে কাল রিসেফসন টা হোক আর ফুল.... । ওকে ওকে চুপ করে যা বেটা , যতই হোক আমি তো তোর বাবা , একটু মুখটা বন্ধ রাখ । সারাটা দিন এদিকে ওদিকে করে কাটিয়ে দিলো সায়ন্তন , নিজের রুমেও যাওয়া যাচ্ছে না , মেয়েটা ওখানেই আছে গেলেই আবার যে কি কি বলবে তার ঠিক নেই । রাতে র বেলা ড্রইং রুমের সোফা- কাম -বেড টাই সায়ন্তনের শেষ আশ্রয় হয়েছে । সায়নের সারা দিন পেটে কিছু পড়েনি । বাড়িতে সায়ন , অয়ন আর টিকলি কে কি খেয়েছে জানে না তবে খিদের জ্বালায় ঘুম আসছিল না ওর । রাত এগারোটা রান্নাঘরে টুং টাং শব্দ ভেসে আসছে । কিছু ক্ষণ পর সায়ন দেখে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে টিকলি । একটা হলুদ হট প্যান্ট আর কেমন একটা কার্টুন দেওয়া গেঞ্জি পরে হাতে একটা থালা । কি চাই ? ঘরে যাও । সায়ন বললো । কথার মাঝেই আর চোখে অয়নের রুমটা ও দেখে নিলো । "ওর রুমের দরজা বন্ধ , মালটা সারাদিন এক হাজার বার লাঞ্চ ডিনার হাবি জাবি খেয়ে ঘুম দিচ্ছে" , টিকলি বললো ।


এবার সায়ন তুমি খেয়ে নাও , সারাদিন কিছু খাও নি । তোমার জন্য একটু টোস্ট করে আনলাম । না আমার লাগবে না , তুমি কিছু খেয়েছ ? সায়ন বললো । হ্যা খেয়েছি অত স্বামী ভক্ত স্ত্রী হতে পারবো না , যে স্বামী প্রাণীটি না খেলে আমিও খাবো না , টিকলি বলে । তুমি খাও আর খেয়ে অয়নের বেডে শুয়ে পর ওর সাথে । মা ফোনে বললো আজ কালরাত্রির দিন তুমি আমি একসাথে শুতে পারবো না । ভিমরি খেয়ে গেল একচলিশের সায়ন্তন , বলে কি মেয়েটা ! বাবা মুখে কোনো লাগাম নেই ! 


সারারাত এই সোফা তে শুয়ে কোমর ব্যথা করবে যে , কাল ফুলশয্যা মনে আছে তো ? টিকলি বলে । ও প্লিজ তুমি যাও টিকলি খাবারটা আমি খেয়ে নিচ্ছি । সায়ন্তন ওকে ভাগাতে চাইলো । ক্ষিদে ও ছিল আর মেয়েটাকে ও ভাগাতে হবে তাই খেয়ে অয়নের রুমে ঢুকে গেল সে । ছেলেটা ঘুমিয়ে আছে , মুখটা হাঁ করে আছে । সুদীপ্তা র মতো দেখতে হয়েছে অয়ন । ওর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে সুদীপ্তা কে খুব মনে পড়তে লাগলো সায়ন্তনের ।

সকালে ঘুম থেকে উঠে বাবাকে পাশে পায় অয়ন । ঘুমাচ্ছে মানুষটা , মা সুদীপ্তা চলে যাওয়ার পর থেকে বাবা তো ওকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে ছিল । এত কম বয়সে এত দায়িত্ব পারতো নিজে অয়ন ! নিজেকেই প্রশ্ন করে সে । আর সত্যি তো অন্যায় করে ফেলেছে সে , ভার্জিনিটি তো কারও চরিত্রের ডিপ্লোমা হতে পারে না । সে যদি টিকলিকে বিয়ে করত বাবাকে আজ এই আতান্তরে পড়তে না ।


কোনদিন বাবা তো কিছুতেই জোর করেইনি অয়নকে । বাবার মাত্র সতেরো বছরে বিয়ে আর আঠের তেই অয়নের জন্ম তার পর আটত্রিশে ই বিপত্নীক কি । তেইশ বছর ! বিয়ের জন্য আজকের দিনে বয়স টা খুবই কম তবু ওর ইচ্ছায় সম্মতি দিয়েছিল বাবা আর অয়ন কি করলো ! বাবা কে অসম্মান করে টিকলিদের বাড়িতে ফেলে রেখে নিজে বাড়ি ফিরে এলো । চোখ দুটো ভিজে উঠেছে অয়নের বাবার জন্য । না শুয়ে থাকলে হবে না যে ডিসিশন টা বাবা নিয়েছে সেই দিকে এগিয়ে যেতে ওই সাহায্যে করবে । মনের মধ্যে দুটো সত্ত্বা র বাস যার একটি অয়নকে বলছে বাবা আর টিকলিকে আলাদা করে দাও , হাউ কুড হি ডু ডিস উইথ মি ?টিকলি ইস আ ফাকিং হোর । আর এক সত্বা বলছে বাবাকে এগিয়ে যেতে দাও , সেটা টিকলির সাথে হলেই বা ক্ষতি কি ?

আজ রিসেপশন অয়ন বেরিয়ে এলো রুম থেকে অনেক কাজ আছে , সন্ধ্যায় গেস্ট আসবে বাড়ির লনে প্যান্ডেল হচ্ছে । বাড়িতে আত্বিয় স্বজন কেউ নেই সবাই সন্ধ্যায় এসে যখন সায়ন্তনের সাথে টিকলিকে দেখবে কি হবে সেটা নিয়ে খুব হেসিটেশন হচ্ছে ওর ।

সকাল আটটায় ঘুম ভেঙ্গে সায়ন্তন দেখে পাশে ছেলে অয়ন নেই । তাড়াহুড়ো করে বাইরে এসে দেখে , অয়ন আজকের পার্টির জন্য প্রিপারেশন করছে । কিন্তু টিকলিকে দেখা যাচ্ছে না কোথাও । এক প্রকার বাধ্য হয়েই নিজের কাপড় জামা নিতে ঘরে ঢুকল সায়ন । টিকলি শুয়ে আছে বিছানায় , ঘুমাচ্ছে । পরনে সেই হলুদ হট প্যান্ট আর কার্টুন টপ । এসি টা একদম লো , গায়ে চাদর না থাকায় শীতে কুঁকড়ে আছে মেয়েটা । ওকে কি চাদরটা টেনে দেবে সায়ন ? এক বার ভাবে তার পর সংকোচ বোধ হয় । এসি টা বন্ধ করে রুমের এটাচ বাথরুমে ঢুকে যায় ।

টিকলির ঘুম ভাঙে বাথরুমে জলের আওয়াজে । ধড়মড় করে ওঠে ও , ঘড়িতে সাড়ে আটটা । বাথরুমে সায়ন্তন আছে বুঝতে পারে ও । অপেক্ষা করতে থাকে ওর বাইরে বেরোনোর । প্রায় পাঁচ মিনিট পর বেরিয়ে আসে সায়ন । অনেকদিনের অভ্যাসবশত খালি গায়ে শুধুমাত্র তোয়ালেটা কোমরে জড়িয়ে বেরিয়ে এসে মনে পড়ে যায় ওর যে রুমে আর একজন ও আছে ! কিন্তু আর কিছু করার নেই সামনে বসে আছে তার নব বিবাহিতা হাঁটুর বয়সী স্ত্রী । সায়নকে দেখে ইচড়ে পাকা টিকলিও একটু লজ্জা পায় । তবে সেটা বেশি ক্ষণ স্টে করে না । এগিয়ে আসে ওর দিকে ....


সুদীপ্তা র হাসবেন্ড সায়ন্তন গুহঠাকুরতা তুমি আমারও হাসবেন্ড হয়েছ , টপ টা খুলতে খুলতে এগিয়ে এল টিকলি । তার পর সায়নের একদম কাছে এসে হট প্যান্ট টাও খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিলো , বেজ রঙের অন্তর্বাসে টিকলি জড়িয়ে ধরলো সায়নকে । এমনিতেই হাই প্রেসার সায়নের তার পর এই উটকো পরিস্থিতি গল গল করে ঘেমে গেল সে । কি হচ্ছে টিকলি আমাকে ছেড়ে দাও , আমার ভালো লাগছে না । কেন ! তোমার ভালো লাগছে না সায়ন তুমি তো গে না ? এক ছেলের বাবা । তবে কেন ভালো লাগছে না । উম আর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারছি না প্লিজ ফাক মি জান , আই নীড ইউ । অসভ্য মেয়ে তুমি টিকলি , ঠিলে ফেলে দিলো ওকে অয়ন । হতভম্ব সায়ন দেখল সামনে অয়ন দাঁড়িয়ে , আসলে দরজা বন্ধ রাখার অভ্যাস ও ওর আজকাল নেই । বাইরে থেকে কিছু আন্দাজ করে ছেলে ঘরে ঢুকে এসেছে । উঠে দাঁড়ায় টিকলি পাস থেকে হাউস কোট টা জড়িয়ে নেয় কোনোমতে । তার পর অয়নকে বলে হাউ ডেয়র ইউ রাসকেল ! তুমি কেন ঘরে ঢুকেছ ? জানো না নক করে আসতে হয় । অয়ন খেঁকিয়ে ওঠে বলে , তুমি দেখতে পারছ না বাবা কেমন ঘেমে নেয়ে গেছে ? বাবার হাই প্রেসার আছে টিকলি । তুমি বাবাকে সময় দাও তোমার সাথে সহজ হতে । তুমি ইনটিমেসন এর জন্য এ ভাবে কেন চাপ দিচ্ছ ? সত্যি সায়ন ভিজে একাকার হয়ে গেছে ঘামে , লজ্জিত হয়ে পড়ে টিকলি । সায়ন ওয়ার্ডরোব থেকে একটা জামা র সেট নিয়ে বেরিয়ে যায় । অয়ন ও বেরিয়ে আসে , ওর আর হক নেই টিকলি র সাথে রুমে থাকার । লজ্জা পায় টিকলি কিন্তু আজ এসব ভাবলে চলবে না ওর । পারলর এর মেয়ে ডাকতে ফোন করে , সাজগোজ করতেও তো হবে । অয়ন বুঝতে পারে বাবা সামলাতে পারছে না , মানতে পারছে না , গিল্ট ফিল করছে তাই ওই অবস্থায় টিকলিকে দেখেও বাবা সাড়া দিতে পড়ছিল না । সুদীপ্তা র ছবিটাকে ফ্যাল ফ্যাল করে দেখছে সায়ন । অয়ন সামনে এসে দাঁড়ায় । বলে , বাবা আমার কৃতকর্মের ফল যখন তুমি নিজের ঘাড়ে নিয়েছ আর তো কিছু করার নেই ,তুমি ফ্রী হয়ে যাও টিকলী র সাথে । ওর কি দোষ , ও তো নিজের হক চাইছে আর তোমার এমন কিছু বয়স হয়নি যে তুমি ওকে ওর হক দিতে পারবে না । বি ফ্রী উইথ হার ড্যাড , আসলে অভ্যাস নেই তো তাই তোমার অসুবিধা হচ্ছে তাই না ? নট টু ওআরী আই উইল ম্যানেজ এ ভাইয়াগ্রা ফর ইউ । কিছু চাইনা আমার , একটু একা থাকতে পারি ? সায়ন বলে ওঠে । হমম ঠিক আছে কিন্তু আমার কথাটি মনে রেখো আমার হ্যান্ডসাম ড্যাড । হাসতে হাসতে বেরিয়ে যায় অয়ন । পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে কি না দেখতে বেডরুমের দরজায় উঁকি দেয় সায়ন , টিকলি ফোনালাপ করছে কারও সাথে । দুপুরে অয়ন জোর করে নিজের রুম থেকে বের করে নিয়ে আসে বাবাকে পাঞ্জাবি পাজামা পরিয়ে । অয়নের হাতে একটা ভাতের থালা তার সাথে একটা থালা তাতে শাড়ি আলতা সিঁদুর আর সুদীপ্তা র একটা নেকলেস । কোনোমতে একটা হলুদ লাল শাড়ি কে পুটলি করে জড়িয়ে ডাইনিং এ দাঁড়িয়ে আছে টিকলি । অয়ন বাবার হাতে থালা দুটো ধরিয়ে দেয় আর ওগুলো টিকলি র হাতে দিয়ে বলতে বলে আজ থেকে তোমার ভাত কাপড়ের দায়িত্ব নিলাম । কথা না বাড়িয়ে কাজটা করে সায়ন । টিকলি থালা দুটো নেয় । তার পর হঠাৎ হরররিয়ে বলে ফেলে এই চ্যামরা অয়ন তুই এসব কোথা থেকে শিখলিরে ? কথাটা বলেই ও লজ্জা পেয়ে যায় অয়ন ও একটু অপ্রস্তুত হয়ে যায় তার পর সামলে নিয়ে বলে , আমি সব জানি কত দেখেছি বিয়েবাড়িতে । ও সব ভাবতে হবে না এবার শাড়িটা চেঞ্জ করে নে তুই পুরো মনে হচ্ছে মমি । শালা শাড়িও পড়তে পারে না । হেসে ফেলে সায়ন ও , ঠিক মমিতে যেমন কাপড় জড়ানো থাকে তেমনি শাড়িটা জড়িয়েছে টিকলি । বাবাকে হাসতে দেখে ভালো লাগে অয়নের । যাক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে । শুধু চিন্তা রাতের বেলা সব ঠিক থাকবে তো ? 


বিকালে সাজাতে এসেছে বিউটি পার্লার থেকে টিকলিকে , দরজার বাইরে নক করলো অয়ন । ভিতরে এলো অয়ন একটা সাদা লাল করিয়াল বেনারসী দিলো ও টিকলি র হাতে । বললো দেখ তোমাকে জোর করতে পারি না কিন্ত বাবার সাথে তোমাকে মনে হয় লেহেঙ্গা র থেকে এই শাড়ি তেই বেশি মানাবে , এটা নতুন শাড়ি মায়ের জন্য এনেছিল বাবা বেনারস থেকে । মায়ের আর পড়ার সুযোগ হলো না । চোখ মেরে টিকলি বললো -কেন অয়ন খারাপ কেন লাগবে ? তোমার সাথে বিয়ে হলে রিসেপশনে এটা পড়ার কথা ছিল আর কিছু নেইও তেমন আমার কাছে আজ পড়ার মতো , তাই এটাই পড়ছিলাম । এখন এত সুন্দর একটা শাড়ী তুমি যখন আমাকে দিলে নিশ্চই আমি আজ এটাই পড়বো । অয়ন বললো আসলে বাবার র সাথে তোমাকে এটাতে অড লাগতে পারে তাই আর কি ! ও বেবি কিন্তু কিন্তু করো না আই এয়াম ওকে উইথ দিস । বাই দা ওয়ে তোমার ড্যাড কি পড়ছে আজ ? তোমার ব্লেজারটা তো ওকে ফিট হবে না হি ইস মাচ টলার দ্যান ইউ । হমম জানি আর বাবার আমার থেকে ঢের ভালো কালেকসন আছে । তবে সে ওসব কিছু পড়তে এখন আগ্রহী নয় , একটা সাদা লক্ষনৌ চিকনের পাঞ্জাবি অনেক সাধ্য সাধনা করে পরিয়েছি । সন্ধ্যায় পার্টিতে সবাই এসে সব কিছু দেখল , শুনলো । কেউ ভালো বললো কেউ বা বাঁকা চোখে দেখলো সমস্ত টা । এত ডিফরেন্স সত্বেও খুব মানিয়েছে ওদের , সাদা লাল করিয়াল বেনারসী তে টিকলিকে দেখে সায়নের সুদীপ্তা র কথাই মনে পড়তে লাগলো । তখন ক্যান্সারের লাস্ট স্টেজ সুদীপ্তার এত কম বয়সেই ওকে চলে যেতে হবে সেটা সায়ন বুঝেই গেছিলো । তবু কনফারেন্স মিট করতে বেনারস গিয়ে শাড়ীটা এনে সুদীপ্তা র হাতে দিয়ে বলেছিল ' সুদী এটা অয়নের বিয়েতে পড়বে কেমন ' ? সুদী হেসে বলেছিল 'অত দিন সময় দেবে না আমাকে ঈশ্বর সায়ন '। সত্যি দেয়ও নি তার কিছুদিন পরই সুদীপ্তা চলে গেল । আর কত বড় প্রহসন ভাগ্য র যে ওর জন্য আনা শাড়ী যেটা ও অঙ্গে পর্যন্ত ঠেকাতে পারলো না আজ ওর ছেলের বউ হতে হতে সতীন হয়ে যাওয়া টিকলি পরে আছে । গেস্ট রা চলে গেল বাড়ি আবার ফাঁকা পার্টি শেষ । রুমে এসে টিকলি দেখলো পুরো রুমটা ফুলে ফুলে ভর্তি , সারা খাট সাজানো রজনীগন্ধা আর গোলাপে বেডে একটা বক্স রাখা । এগিয়ে যায় টিকলি , বক্সটা খোলে একটা ব্ল্যাক নাইট সুট আর চকলেট ফ্লেবর কনডম । পাশে টেবিলে স্যামপেন রাখা । টিকলি অবাক হয়ে যায় কে করলো এত আয়োজন সায়ন্তন ! কখন করলো এসব ? না ও এসব করবে না গত দুইদিন ধরে যা দেখছে স্বামী টিকে সে এসব করার পাত্র নয় । হমম ওই মনস্টর অয়নের কাজ এগুলো । যাক অয়ন তা হলে ওকে একসেপ্ট করছে একটু একটু করে । রাত দুটো স্টিল ওই ব্ল্যাক নাইট সুটটা পরে অপেক্ষা করছে টিকলি কিন্তু সায়ন কই ? 


টিকলি অস্থির হচ্ছিল রুমে আর ও দিকে অয়ন ও রুমে বসে আছে ও জানে বাবা বাড়িতে নেই । কোথায় গেছে এত রাতে বাবা ? টিকলি কে কি গিয়ে বলবে ? হোয়াট টু ডু নেক্সট ....

টিকলি বেডরুম থেকে বেরিয়ে এলো হাউস কোটটা চাপিয়ে কিন্তু সারা বাড়িতে কোথাও নেই ওর সায়ন্তন । অয়নের রুম বন্ধ , তবে কি ওর রুমে এই শুয়ে পড়ল ? ডাকবে কি ডাকবে না ভাবছিল টিকলি । তখনই অয়ন বেরিয়ে এলো । টিকলি অয়নকে বেরিয়ে আসতে দেখে কনফার্ম হলো সায়ন্তন বাড়িতে নেই । ওরা ফোনটাও নট রিচবল পেল । আর অপেক্ষা করা টা ঠিক হবে না ভেবে অয়ন ডিসাইড করলো বাবাকে খুঁজতে বেরোবে । তা ছাড়া লনে দাঁড় করানো অস্টিন টাও নেই ।



অয়ন নিজের অডি টা স্টার্ট দিচ্ছে এমন সময় সায়ন্তনের অস্টিন টা এসে দাঁড়ালো । গাড়ি থেকে নেমে আনমনা বাড়িতে ঢুকতে গেল আশে পাশে কোনদিকে তার নজর নেই যেন ক্লান্ত বিধ্বস্ত । ডাকতে গিয়েও ডাকলো না অয়ন বাবাকে । সে গাড়ি পার্ক করে ঘরে চলে গেল । এদিকে টিকলি বাথরুমে ঢুকে শওরের তলায় ভিজিয়ে দিচ্ছে নিজেকে জলের সাথে অশ্রু মিশে যাচ্ছে একাকার যাচ্ছে কষ্ট , রাগ , অভিমান । ব্ল্যাক লেসের নাইট ড্রেসটা ভিজে লেপটে গেছে শরীরে । তবে কি সায়ন্তনের কোনো বিপদ হলো ? ও কি টিকলিকে মেনে নিতে পারছে না ? ওর হিসাবে কি গোলমাল হয়ে যাচ্ছে ? এসব ভাবতে ভাবতে কত সময় পার হয়ে গেছে জানে না । প্রচন্ড দ্বিধা নিয়ে এক প্রকার বাধ্য হয়ে বেডরুম এ ঢুকে সায়ন্তন দেখে সারা ঘর ফুলে সাজানো , টেবিলে শ্যাম্পেন পরে টিকলি নেই । ওয়াশরুমে ক্রমাগত জলের শব্দ প্রায় আধ ঘন্টা পরেও যখন টিকলি বেরিয়ে এলো না সায়ন ওয়াশ রুমে নক করতে গেল , মেয়েটা ঠিক আছে কি না দেখতে । নক করতে গিয়ে দেখল দরজা টা ভেজানো , ভিতরে জলের তলায় দাঁড়িয়ে কেঁদে চলেছে টিকলি । ভিতরে ঢুকে গেল সায়ন ভিজে একাকার টিকলিকে একটা তোয়ালে দিয়ে জড়িয়ে বাইরে বের করে নিয়ে এলো । সায়ন কে দেখে জড়িয়ে ধরল টিকলি আরও ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো । 



টিকলি বললো ' সায়ন আই উইল লিভ ইউ টুমরো , ডোন্ট ওয়রি তোমাকে বাধ্য হয়ে থাকতে হবে না আমার সাথে ' । সায়ন টিকলি র চিবুক টা তোলে নিজের দিকে ওর চোখ দুটো জলে ভিজে কান্নায় লাল হয়ে গেছে । টিকলি তুমি ফুলশয্যার দিন তোমার বরকে ছেড়ে চলে যাবো বলছ ! আঠের বছরের ডিফরেন্স টা তাহলে বদর করছে তোমাকে ? এত প্ল্যান এত প্রোগ্রামিং কেন করেছিলে তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে বলে ? না সায়ন আসলে তুমি ! মানে তোমার জন্যে ই বলছি , আমি তো তোমাকে ভালোবাসি হানি । কথাটা বলেই লজ্জায় মুখ ফিরিয়ে নেয় টিকলি । ভিজে কাপড়ে ঠান্ডা লাগবে চেঞ্জ করে নাও , সায়ন বলে । চেঞ্জ করে টিকলি একটা হলুদ কাফতান পরে আসে ভিজে চুল ড্রাযার দিয়ে শুকিয়ে নেয় লাল সিঁদুরে সিঁথি রাঙিয়ে এসে দাঁড়ায় বেডের কাছে । সায়ন শুয়ে আছে বেডে ওকে টেনে নেয় নিজের কাছে । জড়িয়ে ধরে নিজের বাহু ডোরে । প্রথম টা অবাক হলেও টিকলি ভাবে সায়ন্তন স্বীকার করে নিচ্ছে ওকে । তবে একটা খটকা মনে রয়ে গেল , সায়ন কেন বলল ওকে এত প্ল্যান এত প্রোগ্রামিং কেন করেছিলে তুমি ? কি বলতে চাইছিল সায়ন ? 


মনে হাজার প্রশ্ন ভিড় করে আসছে , তবে এখন সময় নয় ওসব নিয়ে ভাবার । আজ এই মুহুর্তে র অপেক্ষায় ,এই ডাকের অপেক্ষায় তো ছিল টিকলি । ওসব নিয়ে পড়ে ভাবা যাবে নিজেকে সে সপে দিলো সায়নের কাছে । সায়ন নিজের ঠোঁট দুটো চেপে ধরল টিকলি র ঠোঁটে , এক এক করে শুকনো ঝরা পাতার মতো পোশাকগুলো খুলে এদিক ওদিক পড়তে লাগলো । সম্পূর্ণ নির্বসনা টিকলিকে এক মনে জরিপ করছে সায়ন কিন্তু ওর চোখে যেন বিধ্বস্ততার ছায়া । একটা লাল ভেলভেটের বক্স সায়ন আলমিরা থেকে বার করে আনলো সেটা খুলে একটা সোনার সরু কোমর বন্ধনী নিরাভরণ টিকলির কোমরে পরিয়ে দিল । সায়ন টিকলি র কানের লতিটা কামড়ে ফিস ফিস করে বললো ' বাঁধন তুমি আপনি বেঁধেছ , ছিড়তে নাহি পারিবে । কোমর বন্ধনী দিয়ে আমি অমর করিলাম তারে '। তার পর যেন প্রবল আক্রোশ নিয়ে যুদ্ধ করার মতো শরীরের খেলায় মেতে উঠল সায়ন । ইউ আর হার্টিং মি সায়ন , আমার লাগছে টিকলি ডুকরে উঠল । সায়ন এক কামুক পুরুষ , অতিরিক্ত সেক্সের কারণেই সে সেই কিশোর বয়সেই এক প্রকার জোর করে সুদীপ্তা র সাথে ইন্টারকোর্স করে । তার পর থেকে সুদীপ্তা র ক্যান্সার ধরা র আগের দিন পর্যন্ত সায়ন এক ভাবে ওর সাথে ব্রান্টলি সেক্সউয়াল রিলেশন করে গেছে । ডক্টর বলেছিলেন অতিরিক্ত ওভারি তে চাপ পড়ায় ভিতরে ক্ষত হয়ে গিয়েছিল সুদীপ্তা র , সেটা থেকেই ক্যান্সার । তার পর আরোও দু বছরের মতো বেঁচে ছিল সুদীপ্তা , ওর মৃত্যু হয়েছে তিন বছর আগে । মোটামুটি পাঁচ বছর ধরে শারীরিক সুখ থেকে দূরে ছিল সায়ন আর ইচ্ছা ও ছিল না । তবে আজ ওর মন মস্তিষ্ক কিছুই ওর বসে নেই । সারা রাত ধরে ওর হাত থেকে নিস্তার পায় না টিকলি , ইভেন অন্যাল সেক্স ও করে ওর সাথে সায়ন । তার পর এক সময় ঘরের মধ্যে চলা ঝড় থেমে যায় । টিকলিকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকে সায়ন । ক্লান্ত বিধ্বস্ত টিকলি বলে তুমি এত এগ্রেসিভ কেন সায়ন আই কান্ট হ্যান্ডেল ইট ! তির্যক হাসে সায়ন , বলে তুমি তো এর আগেও কারও সাথে এক্সপীরিয়েন্স করেছ আফটার অল ইউ আর নট আ ভার্জিন , ওটাই বলার জন্য তো অয়নের সাথে তোমার বিয়েটা ভেঙে যায় তাই না ? আমতা আমতা করে ওঠে টিকলি বলে 'হমম মানে আমি ভার্জিন না তবু তোমাকে একটু সফট হওয়া উচিত '।

ওকে ঘুমিয়ে পর কাল সকালে ঘুম ভেঙ্গে আবার একটা চমক অপেক্ষা করছে তোমার জন্য ,সায়ন বলে । ইতিমধ্যে সে গোটা স্যাম্পেনটা টিকলির বডিতে ঢেলে ঢেলে উদরোস্ত করে ফেলেছে । টিকলি ঘাবড়ে যায় , আবার সকালে উঠে ই বাঘের শিকার হতে হবে নাকি রে বাবা ! সাড়া শরীরে ব্যথাতে একসাথে সহস্র ছুচ ফোটাচ্ছে ওর অন্তঃত কাল রাত পর্যন্ত রেস্ট চাই । এসব ভাবতে ভাবতে ও ঘুমিয়ে পড়ে ।


সকাল নটা : ঘুম ভেঙ্গে যায় টিকলি র পাশে সায়নকে পায় না । এত বেলা হয়েছে সায়ন উঠে পড়েছে আর টিকলি পরে পরে ঘুমাচ্ছে ! এই ভেবে তড়াক করে উঠে আসে সে , সারা শরীরের অসংখ্য দাগ আর ব্যাথা প্রমান দিচ্ছে ওর জিতে যাওয়ার । আয়নায় নিজেকে দেখতে থাকে টিকলি । ব্যাথা যেন আনন্দ দিচ্ছে ওকে , মন চাইছে আরও ব্যথার পরশ পেতে । সত্যি ওর আন্দাজের থেকেও অনেক বেশি সুন্দর , হ্যান্ডসাম সায়ন্তন । কেউ ওকে দেখে ত্রিশের বেশি বয়সে র বলবেই না । এসব ভাবতে ভাবতে মনে পড়ে গেলো কি একটা চমক দেবে বলেছিল সায়ন । রুম থেকে বেরিয়ে দেখতে যায় ও সায়ন কোথায় । হটাৎ একটা বক্স আর এনভলপ দেখতে পায় টেবিলে রাখা । নিশ্চই স্বামী টি এই বক্সে কিছু রেখে গেছেন এই ভেবে টিকলি বক্সটা খোলে আর তার পরই ওর মাথা ঘুরে যায় , কালকের সায়নের হেঁয়ালি গুলো কি তা স্পষ্ট হয়ে যায় টিকলির কাছে ।


বক্সটাতে রাখা আছে তার সব চালের ঘুঁটি , সেই ডাইরিটা আর পেপার কাটিং এর এলবাম টা । আর দেরি না করে এনভলপ টা খুলে ফেলে টিকলি তাতে একটা চিঠি , সায়ন লিখেছে টিকলিকে :

আমার নবপরিনিতা টিকলি ,

                                          তুমি সত্যি খুব বুদ্ধিমান , সুন্দরী । তবে তোমার থেকে প্রায় আঠের টি বসন্ত আমি বেশি দেখেছি তো কিছুটা হলেও আমি তোমার থেকে বেশি এক্সপীরিয়েন্সড । ঘুঁটি ভালোই সাজিয়েছিলে তবে তীরে এসে তোমার তরী ডুবলো । কাল তোমার ছোট কাকা যে একসময় আমার কলেজের সিনিয়র ছিল সে মদের ঘোরে আমায় সবটা জানিয়েছেন । তুমিতো কোনোদিন আমার অয়নকে চাউইনি তুমি ওকে বিয়ে করতেই চাউনি । প্রথম দিন থেকে তুমি আমাকে চেয়ে ছিলে , আর সেই চাওয়া কে বাস্তবায়ন করতে শিখন্ডি সাজিয়ে পরিবেশন করেছ আমার সন্তানকে । প্রথমে বিস্বাস করি নি ভাবলাম নেশার ঘোরে দীপ্ত দা ভুল বকছে , সেটা প্রকাশ করাতে দীপ্ত দা রেগে আমাকে সঙ্গে নিয়ে যায় তোমার বাড়ি পর্যন্ত সেখানে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে বাড়ি ঢুকে যায় । ফিরে আসে সাথে নিয়ে তোমার ডাইরি আর পেপার কাটিং এর এলবামটা । ওগুলো নিয়ে কৌতূহল বসত খুলে দেখি নিজের অস্টিন টার ভিতরে বসে । ডাইরির পাতায় পাতায় লেখা আমার প্রতি তোমার আকর্ষণের কথা । কি ভাবে তুমি হাজার ইন্টারভিউ দিয়ে অয়নের কোম্পানি জয়ন করো , ওকে নিজের জালে জড়িয়ে নাও , ওর ভার্জিনিটি র ট্যাবু সমন্ধে জেনে ওর সাথে বিয়ে ঠিক করো । আর ডিসাইড করো বিয়ের দিন ওর ট্যাবুকে কাজে লাগিয়ে ওকে দিয়ে বিয়েটা ভেঙে দেবে । আর সন্তানের করা অন্যায় এর গিল্ট এ থাকা আমায় বিয়ে করতে বাধ্য করবে । পরিকল্পনা কে বাস্তবাইত করেও ফেল । তোমার গাদা গাদা পেপার কাটিং এ শুধু মাত্র আমি। নিউজ পেপার ম্যাগাজিন এ উইপ্ৰ র সি ই ও সায়ন্তন গুহঠাকুরতা র ছবি বিগত কয়েক বছর ধরে তুমি কলেক্ট করে যাচ্ছ । আর বিশ্বাস করে তুমি সে সব কাকাকে বলে দাও । তুমি খুব ভালো করেই জানতে ডিরেক্ট জানালে আমি না করে দেব তাই ঘুরিয়ে পথ বেছে নিলে গিল্ট এর মধ্যে দাঁড় করিয়ে আমাকে তুমি জিতে নিলে । তবে সব কিছু জেনে আর কোনো মানে হয় না তোমার সাথে থাকার । তাই চলে যাচ্ছি উইপ্ৰ র চাকরি , শহর , তোমাকে সব কিছুই ছেড়ে । আমার ছেলে ঠিক ম্যানেজ করে নেবে ওর চিন্তা করি না । কানাডার ফ্লাইট বুক করেই কাল বাড়ি ফিরে ছিলাম । তোমার মনে এখন কি প্রশ্ন চলছে আমি জানি , তুমি ভাবছ সব যদি জেনেই গেছিলাম তাহলে কাল তোমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক কেনই বা স্থাপন করলাম ? তুমি আমাকে পাওয়ার জন্য এত পরিশ্রম করলে , এত হিসাব করলে তোমার কাল রাত টুকু তো প্রাপ ছিলই তাই না । কাল রাতেই তোমাকে কোমর বন্ধনি পরিয়ে ছিলাম তাই না ? ওটা শিকল তোমাকে বেঁধে দিলাম গিল্ট এর বেড়া জালে । সব জেনে ছেলেটার জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে । এই দুদিনের মধ্যেই হয়ত সুদীপ্তা র জায়গা টা একটু হলেও দিয়ে ফেলেছিলাম তোমাকে । আর হ্যাঁ তুমি কাল ইন্টারকোর্স এর সময় এত কষ্ট পেলে তবু একবার স্বীকার করলে না তুমি স্টিল ভার্জিন ।


কাল রাতটা কেন জানিনা ভুলে যেতে ইচ্ছা করছে না , ওটা থাক স্মৃতি হয়ে পাত্র বদল ডিউ টু ভার্জিনিটি হয়ে । যোগাযোগ করার চেষ্টা করে লাভ নেই । ভালো থেকো ।

                                   ইতি , তোমার সায়ন

চিঠিটা পড়তে পড়তে টিকলি খেয়াল করে নি পিছনে দাঁড়িয়ে আছে অয়ন । অয়ন তুমি ? আই এয়াম সরি প্লিজ হেল্প মি , আমি বাঁচব না অয়ন আমি তোমার বাবাকে ছাড়া এই গিল্ট নিয়ে বাঁচব না । অয়ন খেঁকিয়ে ওঠে বলে তুমি যা করেছ ভুল করেছ ঠিক তার হিসাব পরে নেব তোমার থেকে । কিন্তু বাবা আরও ভুল করতে চলেছে , আগে বাবাকে আটকাতে হবে চলো । আমি যাবো তোমার সাথে ! নিয়ে যাবে আমায় ! টিকলি অয়ন কে জিজ্ঞাসা করলো । এই তুই আর আমার ধৈর্য র ইয়ে মারিস না তো চল । শালা সৎ মা তো যতই হোক না হলে না গালে ভরিয়ে দিতাম । চ আর দেরি করলে মাল টা পালাবে । ওরা দুজন রওনা দিলো বিমান বন্দরের দিকে ।


অডি টা ছুটেছে চলেছে বিমানবন্দরে র দিকে । টিকলিকে এসি র মধ্যেও ঘেমে নেয়ে একসা , মাথা কাজ করছে না । অয়ন এক নাগাড়ে বকে যাচ্ছে কিন্তু ওর মাথার উপর দিয়ে সব বেরিয়ে যাচ্ছে । পেয়েও হারাতে হবে তোমাকে ? সায়ন তুমি কি করে এত নিষ্ঠুর হতে পার ? অয়ন ওকে যদি খুঁজে পাই ভালো নচেৎ আমি সুইসাইড করে নেব । আমি আর পারছি না অয়ন ! এই এয়ার পোর্ট টুকু রাস্তা আমি আর পার করতে পারছি না , ডুকরে উঠলো টিকলি । অয়নের ও চিন্তা হচ্ছে কিন্তু এখন একটা ই টার্গেট সায়ন্তন গুহঠাকুরতা কে পাকড়াতে হবে । এত ইমসোনাল ফুল বাবা এটা অয়ন বুঝতে পারে নি কোনোদিন । যাক একটা শান্তি কানাডার ফ্লাইট দিল্লি থেকে । আর কলকাতা থেকে বাবাকে এখন দিল্লির ফ্লাইট নিতে হবে । ওরা ভাগ্যিস এখন কলকাতাতে থাকে তাই এইটুকু সময় পেলো বাবাকে ধরতে । এই অয়ন কি রে ! সায়নের ফ্লাইট টা টেক অফ করে যায়নি তো ? টিকলি বলে । এই তুই গাড়িটা চালাতে দিবি কি ? বললাম তো বাবা আগে দিল্লী র ফ্লাইট নেবে ওখান থেকে কানাডার ফ্লাইট , আর সেটাও দেড় ঘন্টা পর টেক অফ করবে মালটা এখন এয়ার পোর্টে ই বসে আছে । ভেবে ছিল আমরা সকাল দশটার আগে উঠবো না আর তার পর চিঠি পরে দুজনে মিলে ঝগড়া লেগে যাবো আর সেই তালে মাল পালাবে । 


দমদম এয়ারপোর্ট :

সায়ন : ঘড়িতে সাড়ে নটা , ওরা নিশ্চই ঘুম থেকে উঠে পড়েছে । টিকলি র সাথে অয়নের ঝামেলাও হতে পারে , ছেলেটা সব জেনে নিশ্চই খুব রেগে যাবে । টিকলির মুখটা মনে পড়তেছে কেন বারবার ? সিদ্ধান্ত টা কি ভুল ? বুকের মরুভূমি তে দুদিন ধরে যে বসন্তের আগমন হয়েছিল তা নিজের রঙে রঙিন করে দিয়েছে সায়নকে । হোক না তা ক্ষনিকের মরীচিকা ! সুদীপ্তা র স্মৃতির মরুদ্যান আর কি সামলাতে পারবে ওকে ? নোনা জলের ধারা অব্যাহত দুই চোখ দিয়ে , বুকের ভেতর যেন কেউ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত করে দিচ্ছে প্রতি নিয়ত । নাহ এবার এগিয়ে যেতে হবে অজ্ঞাতবাসে ।

টিকলি : কই তুমি সায়ন ? তুমি আমাকে ক্ষমা করতে পারবে না ? সেই কবে থেকে তোমাকে মনের সিংহাসনে বসিয়ে রেখেছি , কাকার কাছে শুনতাম তোমার সমন্ধে । তুমি আর কাকাই এক কলেজের ছাত্র , কাকাই সিনিয়র ছিল তবু তোমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল । কাকাই বলেছিল তুমি তখনই এক সন্তানের বাবা আর হিসাব মত তার বয়স আমারই মতো । তার পর তোমার স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে কাকা দুঃখ করে আমাকে বলেছিল যে বয়সে মানুষ সংসার শুরু করে সেই বয়সে তুমি বিপত্নীক হলে । তোমার কষ্ট গুলো যেন ফিল করতে পারতাম , তোমার জীবন নদীর কান্ডারি হতে চাইতাম । ভালোবেসে ফেলেছি তখন তোমাকে । কাকাই বলতো পাগলামি, এভাবে কি ভালবাসা হয় ! অয়ন কে চিনতাম না , তখন ড্যানিয়েল বলে এক বন্ধুর কাছে খবর পাই যেখানে আমি জব ইন্টারভিউ দেব সেই ম্যাক্স ইন্টারন্যাশনাল এ জব করে আমার স্বপ্নের রাজকুমার সায়ন্তনের ছেলে অয়ন যে কিনা ড্যানিয়েল এর কমন ফ্রেন্ড । আর দেরি করি নি ইন্টারভিউ টাতে জান লাগিয়ে দিলাম, লাভ হলো না । পেলাম না জব ওখানে , তার পর মোট পাঁচবার চেষ্টায় জয়ন করলাম ওখানে । চাকরি না উদেশ্য ছিল অয়ন কে ফাঁসানো , সময় লাগেনি পেরে গেলাম । বিয়ে বিয়ে করে বায়না জুরলাম , এত কম বয়সে বিয়ে ? অয়ন রাজি হচ্ছিল না , রাজি তো ওকে হতেই হত তাই একদিন আমার জেদের কাছে নতি শিকার করতে হলো । জানতাম ভার্জিনিটি ওর কাছে একটা ট্যাবু । দুয়ে দুয়ে চার করে তোমাকে বিয়ের মণ্ডপে জয় করে নিলাম । যা যা করেছি তোমাকে ভালোবাসি তাই করেছি । আমি তো অয়নের দোষী আমার বিচার টা ওই না হয় করতো ? তুমি কেন আমায় এত বড় শাস্তি দিলে ?

অয়ন : বাবা তুমি আমাকে এত ভালোবাসো ! তবে তুমি আমাকে মূর্খ ও ভাবো । না হলে আমার সাথে একটা আলোচনা করতে পারতে তুমি । কি লাভ মেয়েটাকে কষ্ট দিয়ে বাবা ? যে তোমার জন্য এত দূর যেতে পারে সে তোমাকে হারিয়ে ফেলে কি কি করতে পারে তুমি বুঝতে পারছ না ! আমি আসলে টিকলিকে কোনো দিন ভালোবাসি নি ও আমার বন্ধু ই রয়ে গেছিলো তাই তো সময় চেয়ে ছিলাম বিয়ের জন্য । ও দেয়নি, কেন দেয়নি সময় তা আজ আমাদের সবার কাছেই স্পষ্ট । তোমাকে ফিরে পাবো তো বাবা ? ই মিস ইউ ড্যাড , উই অল নীড ইউ ।

চিন্তার রেশ কাটল গাড়িটা ঢুকে গেছে বিমানবন্দরে র পার্কিং এ । টিকলি পাগলের মত ছুটছে ভিতরের দিকে ,অয়ন ওর পিছু পিছু । হেল্প ডেস্কে ইনফরমেশন পাওয়া গেলো এখনো চেক ইন হয় নি । ওরা খুঁজতে লাগলো ভিড়ে সায়নকে । এদিক ওদিক ছুটতে ছুটতে হটাৎ আর স্ট্রেস নিতে না পেরে সেন্স লেস হয়ে যায় টিকলি । ওকে সামলাতে ফিরে আসে অয়ন । ভিড় জমে যায় ওদের ঘিরে । হটাৎ একটা জটলা , কেউ অসুস্থ ? সায়ন এগিয়ে দেখতে যায় কি হয়েছে । একি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে টিকলি একটা ব্লু ডেনিম আর একটা ছোট টপ , যেটা উঠে গেছে আর সেখানে উকি দিচ্ছে একটা সোনার সরু কোমর বন্ধনী ।


অয়ন জল দিচ্ছে মুখে চোখে । কান পাতল সায়ন । অয়ন কিছু একটা বলছে -তুমি কোথায় বাবা ? তুমি যদি আমাদের দেখতে পাচ্ছ ? দেন উইল ইউ প্লিজ হেল্প মি ? এ মরে যাবে বাবা তোমায় ছাড়া মরে যাবে । আমি যদি ওকে ক্ষমা করতে পারি তুমি কে ওকে শাস্তি দেয়ার ? এরই মধ্যে ঘোষণা হয়ে গেছে যাত্রীদের প্লেনে উঠে যেতে বলা হচ্ছে । আস্তে আস্তে ভিড় কমে এলো প্রায় সবাই সেদিকে চলে গেছে , এখন ফাঁকা হয়ে গেছে জায়গাটা । জ্ঞান ফিরে এসেছে টিকলির । এই অয়ন সায়নের খোঁজ পেলি ? কি হলো ? কি করে খুঁজব তুই তো অজ্ঞান হয়ে গেলি । চেক ইন হয়ে গেল আর চান্স নেই , ফিরে চল । আবার ডুকরে উঠল টিকলি , হাত পা কাঁপছে । অয়ন ওকে ওঠাতে চাইছে কিন্তু পারছে না । ও হেল্প ডেস্কের দিকে এগিয়ে গেলো । "টিকলি !" সামনে এসে দাঁড়িয়েছে সায়ন্তন । তুমি হানি ! তুমি এসেছ ? পা দুটো জড়িয়ে ধরে টিকলি । সায়ন ওকে তুলে নেয় কোলে । কপালে চুমু দিয়ে সায়ন বলে , কেঁদো না টিকলি আমি পারলাম না চলে যেতে , আমি হেরে গেলাম তোমার জেদের কাছে , চলো ফিরে যাই আমাদের খেলাঘরে । হেল্প নিয়ে ফিরে আসে অয়ন কিন্ত এ কি ! বাবা তো ! হ্যাঁ বাবাই টিকলিকে কোলে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এয়ার পোর্টের বাইরের দিকে । 



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama