#মি টু
#মি টু


একা মেয়ে নিরাপদ নয়,তাই মা বন্দনা সঙ্গে করে কাজের বাড়ি নিয়ে যেত তার মেয়ে ১২ বছরের মিনাকে। তার কদিন আগেই সে সদ্য ঋতুমতী হয়েছে। তিনমাস আগে হঠাৎ করে ইলেকট্রিশিয়ান স্বামীকে হারিয়ে অকূলপাথারে পড়ল সে মেয়ে নিয়ে। তেমন কিছু সঞ্চয় ছিল না আর নিজেরও তেমন কোনো বিদ্যে নেই যা দিয়ে দুটো পেট চলতে পারে। অতঃপর লোকের বাড়ি কাজ নিতে বাধ্য হয় সে। একা মানুষ অকৃতদার,তার সমস্ত কাজ করতে হবে সকাল দশটার মধ্যে। তাই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে যেত সে,তাতে মেয়েও চোখে চোখে রইল আবার কিছুটা কাজে সাহায্যও হত। কিন্তু নিমেষের চোখের আড়ালে যে কত কী ঘটে যেতে পারে তা ভাবতে পারেনি বন্দনা।
মালিক বিশিষ্ট অধ্যাপক রমেনবাবুকে ভগবানের চোখে দেখত বন্দনা আর মেয়েকে বলত,"এতগুলো টাকা মাইনে দেয় বলেই তো দুটো পেট যেমন চলে তোর লেখাপড়াটাও বন্ধ হয়নি"। মিনা লেখাপড়ায় খুব ভাল, কাজের ফাঁকে ওবাড়িতে বসে পড়াশোনাও করত সে। বন্দনা মেয়েকে দিয়ে চা-টা,জলখাবারটা রমেনবাবুর ঘরে পাঠালে তিনি মেয়েকে আদর করে কাছে বসাতেন,নিজের খাবার থেকে খাইয়ে দিতেন। মা তো খুব খুশি বাপের আদরে বঞ্চিত মেয়ের আদর দেখে,কাজে গিয়ে মন দিত খুশি মনে। মিনাকে তখন একা পেয়ে রমেনবাবু তাকে জড়িয়ে ধরে কোলে বসাতেন,জামার ভেতর দিয়ে তার বুকের সদ্য উন্মোচিত পুষ্পকোঁড়ক দুটিতে হাত দিতেন,গোপনাঙ্গে হাত দিতেন,মিনার হাতটা তার উত্থিত পুরুষাঙ্গে চেপে ধরতেন। ভয়ে মিনার মুখ পাংশুবর্ণ হয়ে যেত। কি খাবে,পড়াশোনা চলবে কিভাবে এই ভয়ে মাকে কিছু বলতে পারেনি সে মায়ের ভগবানের বিরুদ্ধে। লুকি
য়ে লুকিয়ে কেঁদেছে কেবল। পড়াশুনায় বরাবরই খুব ভাল ছিল মিনা,সেই সুযোগটাও রমেনবাবু ছাড়েননি। প্রতিসন্ধ্যায় মায়ের অনুপস্থিতিতে তাকে পড়ানোর নামে শ্লীলতাহানি করেছেন তার পিতৃতুল্য রমেনবাবু।
বুকের ভেতর অসহ্য যন্ত্রণা,মনের ভেতর দুর্দমনীয় ক্রোধ,তবু মিনা পড়াশোনাটা মন দিয়ে করেছে। পরে বড় হয়ে সে ও বাড়িতে যাওয়া বন্ধ করেছে তবু ক্ষতটা যেন দগদগে হয়ে রয়েছে বুকের ভেতর। পড়াশোনা শেষ করেই চাকরি করে মাকে ওখান থেকে বার করতে হবে আগে। না জানি মায়ের সঙ্গে কি করে ওই দুশ্চরিত্র লম্পট লোকটা। ওর ভেতরের জেদ ওকে এগিয়ে নিয়ে চলল। মুখে হাসি নেই,লক্ষ্য কেবল একটাই চাকরি,টাকা রোজগার। ওর সেই অদম্য জেদ ওকে নিয়ে গেল অনেক দূর,টিউশন করে নিজের পড়ার খরচ জোগাড় করেছে আর মা খাওয়া খরচ। ইকোনমিক্সে এমএ পাস করে এক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জয়েন করেছে মিনা,মা তার ভগবানকে মিষ্টি খাইয়ে এসেছে।
মনের ভেতর রাগ পুষে রাখতে রাখতে মিনার মন বিদ্রোহ করে ওঠে। আজ ওর প্রথম স্যালারি হাতে এসেছে,এখন ও স্বাধীন। মাকে আর লোকের বাড়ি কাজ করতে দেবে না ও। তারপর ওই শয়তান নোংরা লোকটার মুখোশটা টেনে খুলে দেবে,নাহলে ওর শান্তি নেই। দেশে বিদেশে আন্দোলন চলছে,মনের সঙ্গে অহরহ যুদ্ধ করতে করতে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দিল #মি টু। অধ্যাপক রবিনবাবুর নামে তার সমস্ত ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল সেখানে। মায়ের কানে কথাটা এসেছে কোথাও থেকে,"কি লিখেছিস,কেন লিখেছিস?" মিনা গম্ভীর স্বরে জবাব দেয়,"কাল থেকে আর ও বাড়ি যাবে না"।