মেজদা
মেজদা
পাগলা নদীর তীরে করিমগঞ্জ গ্রাম। গ্রাম টি ছোট। চারদিক তাল, নিম, বাঁশ বনে ঘেরা। আশি বছর আগে এই গ্রামে জমিদারদের রাজস্ব আদায়ের অফিস ছিল। নিমতিতার জমিদার চারশো বিঘা জমি এখন কার অফিস এর কর্মচারী সদরুজ্জামান খান কে দিয়ে যান। সদরুজ্জামান এর সাত সন্তান। মেজো ছেলে এখানকার শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন।
রশিদ আলি খান সদরুজ্জামান এর নাতি। পিতার মৃত্যুর পর পড়াশোনা খুব একটা হয়নি, পরিবারের দায়িত্ব গ্রহণ, চাষ জমি দেখা শোনা, ছোট ভাই বোনেদের মানুষ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সাত বছরের ছোট ভাই কে নিয়ে মনে বহু স্বপ্ন দেখতেন। হাজার কষ্ট হলেও তাকে ভালো ভাবে পড়াবে। ছোট ভাইকে ডাক্তার বানাবে। মেজদা নামটি খুব পরিচিত ,ভাই সম্পর্কের লোকেরা নাম ব্যবহার না করে মেজদা বলেই ডাকতো। ইন্টার পর্যন্ত গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা করে, তারপর মেডিকেল কলেজ এ পড়াশোনা করার জন্য কলকাতায় যাবে। জীবনে কখনো কলকাতায় যায়নি রশিদ আলি খান ভাইকে ভর্তি করাবার জন্য সেবার প্রথম বার । মনে অনেক আশা, অনেক স্বপ্ন, অনেক প্রত্যাশা। মুখ ভরে লোকের সামনে বলা শুরু হয় রশিদ আলির " গ্রামের লোকের চিকিৎসার চিন্তা দূর হলো, দু চার বছর পর আর সাত মাইল পথ যাওয়ার দরকার নেই। ছোটকা বড়ো জায়গায় শিকচে"।
চার বছর পর ডাক্তরি পাশ করে গ্রামে ফিরে আসে ফিরোজ আলি। সাধারণ মানুষ অসুখ দেখাতে এসে ভীড় করেছে তাদের বাড়িতে। ফিরোজ দু চার দিন রুগী দেখার পর বিরক্ত হয়ে উঠলো। কারণ মেজদার কথা মতো বিনামূল্যে তাকে রুগী দেখতে হয়। সমাজ সেবা করার জন্য কি কষ্ট করে পড়াশোনা করে এসেছে। তবে দাদার কথা অমান্য করা উচিত হবেন। সুতরাং চালাকি করে বাড়িতে জানায় কলেজে জরুরি কাজ থাকায় কলকাতা গমন করবে। রশিদ সরল মানুষ এত বিষয় বুঝে উঠতে পারে না।
বিয়ের কথা উঠলো, কাজীপুর এর মুসারোফ ডাক্তার এর মেয়ে কলকাতায় থাকে। রশিদ আলি শহুরে মেয়ে কে বধু করে আনতে অমত।
বাকি অংশ