Kumar Archita

Drama Romance Tragedy

3.4  

Kumar Archita

Drama Romance Tragedy

মার্গারেটের ডায়েরি ------ শারদ সংখ্যা

মার্গারেটের ডায়েরি ------ শারদ সংখ্যা

22 mins
1.0K


আজও মনে পড়ে সেই লাস্যময়ী দিনের কথা যখন প্রথমবার আমি তোমায় সদূর বড় ঘড়ির তলায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলাম। তোমার পরনে ছিল একটা বাদামি রঙের প্যান্ট আর গায়ে ছিল একটা সাদা রঙের শার্ট আর তার উপর ছিল আকাশী রঙের একটা জ্যাকেট তুমি একটা কালো রঙের চোখে চশমা পড়ে ছিলে যেটা তোমার প্রথম বান্ধবি তোমায় তোমার জন্মদিনে উপহার হিসেবে দিয়েছিল। তুমি তোমার হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বোধহয় সময়টা কটা হল দেখছিলে আমিও হঠাৎ করে বড় ঘড়িটার দিকে না তাকিয়ে আমি আমার একটা লাল রংয়ের ছোট হাত ব্যাগে হাত ধুকিয়ে তার মধ্যে থেকে আমার একটা ছোট পেন্ডুলাম ঘড়ি টা বের করলাম।এই ঘড়িটা নাবিকেরা ব্যবহার করত সময় বোঝার জন্য যখন তারা জাহাজে চড়ে ব্যবসা-বানিজ্যের কাজে যেত। আমার বাবাও একজন নামী চামড়ার ব্যাবসায়ী ছিলেন। তিনি মাঝেমধ্যেই ব্যবসার কাজে জাহাজ নিয়ে দেশ-বিদেশে যেতেন তখন তিনি এটা নিজের সাথে নিয়ে যেতেন কিন্তু এখন তো আর যেতে পারেন না আমার বড় ভাই লুইস সেই কাজে যায় কারণ বাবার শরীরটা এখনো ভালো থাকে না তার ভালোই বয়স হয়েছে প্রায় আশি ছুঁই ছুঁই। সেইবার যখন ভাই কাজ থেকে ফিরে ছিল আমার জন্য একই ধরনের ঘড়ি এনেছিল কারন আমি একবার বাবাকে বলেছিলাম যে আমার এরকম ঘড়ি খুব পছন্দ আমাকে একটা এরকম ঘড়ি এনে দেবে যদিও তখন কিছু হ্যাঁ কিনা বলেনি কিন্তু আমার মনে হয় ওনার মনে ছিল তাই লুইস এর হাত দিয়ে এই ঘড়িটা আমার বিবাহ বার্ষিকীর উপহার হিসেবে পাঠালেন।


আমাদের এর প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতে আমি এই ডাইরি লিখতে শুরু করেছি অবশ্য এটা বলাই বাহুল্য যে আমি ছোটবেলায় ডাইরি লিখতে খুব ভালবাসতাম কিন্তু পড়াশোনার চাপে হয়তো এই লেখাটা বন্ধই হয়ে গিয়েছিল প্রায় কিন্তু অনেক বছর বাদে আমাকে আমার এই খুশির দিন এর কথা আবার এই ডাইরি লিখতে বাধ্য করলো এটা এক ধরনের বাধ্যতা নয় ডাইরি লিখতে আমি ভালবাসতাম আর এখনোও আমি ভালোবাসি কিন্তু নানা কারণে হয়ে ওঠে না।কিন্তু আমি এখন অনেক সময়একা  আমার স্বামী ড্যানিয়েল তো ব্যবসা কাজে মাঝেমধ্যে বিদেশযাত্রা করে তাই বেশিরভাগ মাস আমি একলা কাটাত তাই আমার এই নিঃসঙ্গতা কাটাতে আমি আমার পুরনো বন্ধুকে আমার কাছে টেনে নিলাম আমার পুরনো বন্ধু হলো আমার পছন্দের ডাইরি। যেটাতে আমি আমার মনের সব কথা লিখতাম তাই আজ আমাদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী তে আমি আবার করে ডাইরি লিখতে শুরু করলাম।আজ এই বিবাহ বার্ষিকী দিনে ড্যানিয়েল আমার সঙ্গে নেই কিন্তু আমার মনে আছে তাকে একটা ব্যবসার কাজে দু'দিন আগেই চলে যেতে হয়েছে আমেরিকায়।যদিও তার যাওয়ার একদম ইচ্ছে ছিল না কিন্তু কিছুটা অসহায় হয়ে তাকে কাজে যেতে হলো কিন্তু আমি তাকে মনে অনেক সাহস যুগিয়ে ছিলাম যাতে সে দুঃখ না পায় আর যাতে তার কাজটা সফল হয় কিন্তু বিয়ের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী বলে কথা তাই তার বেশ অনেকটাই মন খারাপ ছিল। আমাকে যাওয়ার আগেই সে আমার বিবাহ বার্ষিকীর উপহার টা দিয়ে গিয়েছিল সেই উপহারটা আমি স্নান সেরে পড়ে নিয়েছি। উপহারটা হলো একটা মুক্তোর হার। মুক্তটা সোনার চেইন দিয়ে গাথা ছিল আর মুক্তর ধরনটা একটু আলাদা মানে একটু বেশি রোমান্টিক ধরনের।মুক্ত টা হৃদয়ের আকৃতির মতন ছিল।আমার পছন্দটা ও বেশ ভালোভাবেই জানে তাই বোধ হয় এরকম একটা সুন্দর উপহার আমায় এই বিশেষ দিনে দিয়েছে।আমি ডায়েরির প্রথম পাতাটা খুলতেই নজরে পড়ল পাতায় কোণে তারিখটার দিকে।তারিখটা ছিল দোসরা নভেম্বর।এই দিনেই আমি ডায়েরিটি পেয়েছিলাম আমার কাকার কাছ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথম হওয়ায়। আমাকে এই ডায়েরি দেওয়ায় বেশ অদ্ভুত লেগেছিলো । আমি আমার কাকার কাছে জিজ্ঞেস করাতে আমাকে সে বলল এটা তোর বন্ধু। কিন্তু আমি মানি নি। সেই সময় আমি সদ্য সদ্য প্রেমে পড়েছি তাই তার অনুভবটা বেশ অন্যরকম। প্রেমে পড়ার আগে আমাকে এই প্রেম শব্দটি খুব ভাবাতো।আমি ভাবতাম যে প্রেম কি বা প্রেমে পড়া কি হয় বা প্রেমে পড়লে কি কি হয়।প্রথম প্রেমে পড়ার উত্তেজনা জনাটা কিরকম পরিমাণের হয় সেটা প্রেমে না পড়লে বোধহয় বুঝতে পারতাম না। আমার এখনো ঠিক মনে আছে আমাদের দুজনের একসাথে একটা জায়গায়ে যাওয়ার কথা ছিল।দিনটি ছিল চোদ্দোই ফেব্রুয়ারি মানে ভ্যালেন্টাইন্স ডে আমি একটা লাল রঙের লম্বা গাউন পড়েছি গলায় একটা লাল রংয়ের রুবির নেকলেস আর কানের রুবির পুতি বসানো ছোট ছোট পাতা দুল। আমি একটা ছোট লাল রংয়ের ঝোলানো ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম আমাদের দেখা করার জায়গায় যাওয়ার


জন্য আমাদের দেখা করার সময়টা ছিল বিকেল পাঁচটায় ডোনাল্ড কফি শপে। আমি ঠিক সময় মতো পৌছে গেছিলাম তখন বাজে প্রায় সাড়ে চারটে ওর তার আধ ঘণ্টার মধ্যেই আসার কথা ছিল তাই আমি একটা কোণায় রাখা শুধুমাত্র দুইজনের জন্য চেয়ারওলা টেবিল দেখে বসে গেলাম আর ওর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।অনেকক্ষণ হয়ে গেছে আমি তো এসে গেছি আর অনেক কেটে গেছে কিন্তু ও এখন আসেনি আমি তাই ওকে ফোন করে জেনে নিলাম ও কোথায় আছে ও বলল ও কফি শপের একটু দূরেই আছে আর কিছুক্ষনের মধ্যেই এসে পড়বে আমি ভাবলাম ঠিক আছে। তাহলে আমি একটু ফোনটা ঘাটাঘাটি করি ততক্ষন এর মধ্যে এসে যাবে আমি আমার ফোন খুলে দেখতে লাগলাম।হঠাৎ তখনই মনে হলো কেউ আমার পিঠে একটা হাত রেখেছে তবে হাতটায় পুরুষের ছোঁয়া আছে তাই আমি ঘুরতেই দেখতে পেলাম ও মানে স্যামুয়েল।আমার প্রথম প্রেম যাকে আমি আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ আমার বাবার পরে ভালোবাসি এসে গেছে ।আমি ঘুরে উঠতেই দেখতে পেলাম যে ওর সঙ্গে একটা অন্য মহিলা ওর পাশে দাঁড়িয়ে আছে আমি ওর সব বন্ধু বান্ধবীদেরকে চিনি কিন্তু একে চিনি না তাই আমি জিজ্ঞেস করলাম যে ওই মেয়েটা কে। ও আমার নতুন বান্ধবী হেলেনা। স্যামুয়েল বললো যে ওদের বন্ধুত্ব ফেসবুক থেকে হয়। হেলনা মেয়েটি চেহারা বেশ একটু কাঠির মতন মেয়েটি পড়েছিল আমার মতনই একটা গাওন কিন্তু নীল রংয়ের কিন্তু গাওনটা ছিল ওর হাঁটুর একটু ওপরে। স্যামুয়েল আমার হাতটা নিজের হাতের মুঠোতে মধ্যে ধরে বললো মার্গারেট সরি আমি আর আমাদের এই সম্পর্ক টা কে ধরে রাখতে পারছিনা।আমি আমাদের এই সম্পর্কটা থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছি তাই তুমি আমায় এই সম্পর্কের বাঁধন থেকে মুক্ত করো।

স্যামুয়েল" what are you saying "

তুমি একথা বলছ কেন।আমরা একে অপরকে খুব ভালোবাসি তাহলে তুমি মুক্ত হতে চাইছো কেন। আমিতো তোমায় কোনদিনও ধরে রাখিনি কোনদিনও কিছুতে বাঁধা দিই নি কোনদিন বারণ করিনি কিন্তু কেন তাহলে।

 মার্গারেট আমি মানছি তুমি আমাকে কোনদিনও কিছুতে বারণ কর নি বাধা দাওনি। কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছি যে আমাদের সম্পর্কটা আর আমি টিকিয়ে রাখতে পারব না আমি এটা বুঝতে পারি যখন আমাদের সম্পর্কটা আরও ঘনিষ্ঠ হতে থাকে।

আমি তোমাকে প্রথম দেখার পর ভেবেছিলাম যে

 "we are made for each other"।

 কিন্তু সময় যতই গড়াতে থাকে আমি বুঝতে পারি যে লোকেরা বলে যে পূর্বজনমের একটা কানেকশন থাকে সে কানেকশনটা আমি তোমার আমার মধ্যে আমি অনুভব করতে পারছিলাম না মনে হচ্ছিল আমার কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। আর এই ভুলটা আমাদের দুজনের পক্ষে খুব ক্ষতিকর হয়ে যেতে পারে তাই এটা আমার করা উচিত না। প্রথমে ভাবছিলাম তোমাকে এ কথা বলব কি করে কিন্তু আমাকে বলতে সাহস যুগিয়েছে আমার এই নতুন বান্ধবী হেলেনা। আমি বুঝতে পেরেছি যে আমার সেই হারিয়ে যাওয়া প্রেম যাকে আমি এতদিন ধরে খুজছিলাম সে হল হেলেনা তাহলে" আমি কে?" তুমি আমার সঙ্গে এতদিন কেন ছিলে,? কেন আমার সঙ্গে আমার মনের সঙ্গে এরকম করলে কেন তোমার এটা করা একদমই উচিত হয়নি।তুমি জানো না আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি আর তুমি আমার হৃদয় নিয়ে আমার মন নিয়ে আমার সবকিছু নিয়ে ছিনিমিনি খেলে গেলে। আমি ভাবিনী তুমি আমার সঙ্গে এরকম একটা ঘৃণ্য কাজ করতে পারবে।

স্যামুয়েল

 why why why?

 মার্গারেট তুমি অশান্ত হয়েও।

না প্লিজ,

please sit down here।


 মার্গারেট চুপ করে বসে পরলো। তখনও স্যামুয়েল ওর হাতদুটো নিজের হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে আছে মার্গারেট আমি জানি তুমি খুব ব্যথা পেয়েছো কিন্তু আমার কাছে এছাড়া আর কোন উপায় ছিল না আমি যদি এই কথাটা তোমাকে লুকিয়ে যেতাম যে আমি এখন তোমাকে ভালোবাসি না তাহলে তোমার সঙ্গে ভুল করা হতো তোমাকে ঠকানো হতো আর 

আমি এই ভালোবাসার নাটকটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছিলাম না আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল।আমি বুঝতে পারছিলাম যে আমি যদি তোমায় সত্যিটা বলি তাহলে তুমি খুব কষ্ট হবে কিন্তু তাও আমি অনেক সাহস করেই কথাটা তোমায় বললাম যাতে তুমি নিজেকে সামলাতে পারো নিজেকে বোঝাতে পারো।আমি বলছি না যে আমি তোমায় ভালবাসতাম না ভালবাসতাম অবশ্যই খুব ভালবাসতাম আমাদের এক সঙ্গে কাটানো প্রত্যেকটা মুহূর্ত প্রত্যেকটা সময় সত্যি আর সেইসব মুহূর্ত চিরকাল আমাদের দুজনের হৃদয় স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি চাইছি তুমি তোমার জীবনে এসব পুরানো কথা ছেড়ে নতুনভাবে জীবন টাকে এগিয়ে নিয়ে যাও। আমি জানি তুমি পারবে তাই তো আমি এই টুকু সাহস করে সত্যিটা জানিয়ে দিলাম মার্গারেট।তুমি ভালো থেকো আমি চললাম এই বলে হেলেনার হাত ধরে কফি শপের বাইরে পা বাড়িয়েছে।এমন সময় মার্গারেট চেঁচিয়ে বলে উঠলো তুমিও ভালো থেকো স্যামুয়েল। পুরনো স্মৃতিতে মনে পরতেই চোখের এক কোনায় জলে ভরে উঠলো আর চোখের জলটা ধরে না রাখতে পেরে তার চোখের জল জলধারা তার গাল দিয়ে কোলে রাখা তার দুটি নরম হাতের ওপর পড়তে থাকল।


সে তার স্বামী ড‍্যানিয়েলকে খুবই ভালোবাসি কিন্তু কোথাও হৃদয়ের ছোট্ট এক কোটরে স্যামুয়েল ভালোবাসার আজও রয়ে গেছে। প্রথম ভালোবাসাকে কি সহজে ভোলা যায় না কেউ ভুলতে পারে। তাই মার্গারেট আজ ও স্যামুয়েল কে ভুলতে পারেনি সে তার চোখের জল মুছে আবার ডাইরির পাতা টা পাল্টাতে থাকলো পাল্টাতে পাল্টাতেই সে দেখল ডায়েরির মধ্য পাতায় একটা ছড়া লেখা আছে। সে ছড়াটা দেখে তার মনে পড়ল এই ছড়াটা তার মা তাকে খুব ছোটবেলায় শোনা তো যখন সে ঘুমাতে চাই তো না এই ছড়াটা এখানে কি করে লেখা থাকতে পারে ও মনে পড়েছে। একবার আমার খুব জ্বর হয়েছিল তখন জ্বরের তারণায় মাথাটা খুব ব্যথা করছিল মা সারাক্ষণ জলপট্টি দিচ্ছিল আমি ঘুমোতে পারছিলাম না দেখে মা সেই ছোটবেলাকার ছড়াটা আমাকে শোনাচ্ছিল আমি সেই ছড়া যখন আমার শরীরটা ভালো হয়ে গেছিল আমি মার কাছ থেকে জেনে আমি লিখে রেখে দিয়েছিলাম কারন আমার ছড়াটা খুব 

পছন্দ হয়েছিল।


ছোটবেলার এমন অনেক মিষ্টি স্মৃতি আমার মনে পড়ে গেল। যেমন ছোটবেলায় মা আমায় চুল বেঁধে দিত। যদিও আমি চুল বাধা পছন্দ করতাম না। আর আমি সব সময় চুল খোলা রাখতেই পছন্দ করতাম।কিন্তু মা আমাকে জোর করে চুল বেঁধে দিতো।মায়ের সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি আছে যেমন আমি আর মা ঘুরতে যেতাম বিকেলবেলা পার্কে কোন গার্ডেনে আর খুব খেলাধুলা করতাম খুব মজা করতাম আর হাওয়াই মিঠাই খেতাম। ছোটবেলাকার মজাটাই আলাদা ছিল সেটা কোনদিনও ভোলা যায় না।ছোটবেলাকার কথা ভাবতে ভাবতেই মার্গারেট আবার করে পাতা উল্টাতে শুরু করলো পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে তার মনে হলো যে তার ঘরের প্রধান দরজাটা কেউ খুলছে আর তারপরে সেটা বন্ধ করে দিলো। মার্গারেট উঠে পরল চেয়ার থেকে আর তার রুমের দরজার দিকে এগোতে থাকলো দরজা খুলতেই দেখল তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে তাদের সবসময়ের কাজের জন্য রাখা লোকটি দাঁড়িয়ে আছে আর তার হাতে একটা খাম আর খামের উপরে লেখা আছে।


 "টু মাই ডারলিং মার্গারেট"।

মার্গারেট জিজ্ঞেস করল এই চিঠিটা কোত্থেকে পেলে সে। জন বললো একজন কমবয়সী লাল রঙের উনির্ফম পরে দিতে এসেছিল আপনার জন্য। আমি আপনাকে বিরক্ত না করে চিঠিটা নিয়ে নিলাম আর এখন আপনাকে দিতে এসেছি।

লান্চ রেডি আছে তো।আমার খুব খিদে পেয়েছে ও বললো 

হ্যা লাঞ্চ রেডি' আছে ম্যাডাম।

 আপনি যদি বলেন তাহলে আপনার ঘরে পাঠিয়ে দিয়ে আসি।


মার্গারেট বললো না এখন দরকার নেই আমি একটু পরে খাব তখন পাঠিয়ে দিস। ওকে ম্যাডাম ঠিক আছে।

লোকটা আর কিছু না বলে মাথা নিচু করে রান্নাঘরের দিকে চলে গেল।আমি তাড়াতাড়ি দরজাটা বন্ধ করে খামটা বুকের মধ্যে কিছুক্ষণ আটকে ধরে বসে থাকলাম তারপর খামে ভরা চিঠিটা খুলতেই একটা মিষ্টি গন্ধ মার্গারেটের সুন্দর টিকালো নাকে এল।এখনও পাল্টালো না ড‍্যানিয়েল যখনি সে আমায় চিঠি লেখে তখনই ওর ফেভরিট পারফিউম টা খামের উপরে লাগিয়ে দেয় যাতে আমি ওর হাতের স্পর্শ বা আমার মনে হয় ও আমার সাথেই আছে কোথাও দূরে নেই। আমি চিঠিটা খুলে পরতে লাগলাম চিঠির প্রথমেই লেখা আছে

" মাই লাভ মাই লাইফ, মার্গারেট"


 চিঠিতে ড্যানিয়েল জানিয়েছে যে ও ঠিক ভাবে সুস্থ ভাবে পৌঁছে গেছে। আমি যাতে চিন্তা না করি আর নিজের খেয়াল রাখি। আমি যাতে ঠিক সময়ে খাই ঠিক সময় ঘুমোই সবকিছু যেন ঠিক ভাবে করি।এই কথাই ড‍্যানিয়েল চিঠিতে বার বার লিখেছে আর অনেক কিছু লেখা আছে যেটা আমি পড়ে বলতে পারব না কারণ সেটা অত্যন্তই গোপনীয়।সে আবার নিজের ডাইরি আমি হাতে নিয়ে অনেকগুলো পাতা উল্টানো পর একটা নতুন পাতায় লিখতে শুরু করলো। যে তার স্বামী ব্যবসার কাজে আমেরিকায় গেছে। সে এখন সুস্থ ভাবে পৌঁছে গেছে তাই মার্গারেট খুব খুশি আর শান্তি অনুভব করতে পারছে। সে লিখলো যে তার স্বামী তার কত খেয়াল রাখে সেই সব কথা যেইটা ড‍্যানিয়েল চিঠিতে লিখেছে তার জন্যে। মার্গারেট এইও লিখল যে ড‍্যানিয়েল জানতে চেয়েছে সে ভালো আছে কিনা। চিঠির সব কথা ছোট ছোট টানা টানা অক্ষরে লেখা।চিঠিটা ডাইরির ভেতরে রেখে দিলো ঢুকিয়ে তারপর ডায়েরিটা বন্ধ করে জনকে ডাকলো তার লাঞ্চ পাঠাবার জন্য। জন হলো সেই লোকটা যে একটু আগে তাকে চিঠিটা দিতে এসেছিল জনের পুরো নাম জন বাটলার সে মার্গারেট আর ড‍্যানিয়েলের বাড়িতে প্রায় ছয় বছর ধরে কাজ করছে। সে রান্নাবান্না সবকিছুর দেখাশোনার জিম্মায়। প্রত্যেকটা কাজ শেখা ওর নিখুঁত ভাবে পরিপাটি করে নামায়। আজপর্যন্ত মার্গারেট আর ওর স্বামী ড্যানিয়েলের জনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই যখনই যেই কাজটা জনকে করতে বলা হয় সে খুব ভালোভাবে এবং সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে দেয়। প্রত্যেকটা কাজ এমনভাবে করে মনে হয় ওই কাজেই ওর মাস্টারি আছে। পনেরো মিনিটের মধ্যে জন মার্গারেটকে লাঞ্চটা দিয়ে গেল।তারপরই মার্গারেট খেতে বসল। খাবার খেতে খেতে মার্গারেটের মনে হল যে ওর একটা মস্ত বড় ভুল হয়ে গেছে যেই ভুলটা হল ও খাওয়ার আগে ওর ভিটামিনের ট্যাবলেট টা খেতে ভুলে গেছে।মাঝে কিছুদিন আগে মার্গারেট খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিল ডাক্তারকে দেখে বলেছিল যে ওর ভিতামিনের দেফিশিয়েন্সি হয়েছে তাই ওকে অনেক কটা ভিটামিনের ট‍্যাবলেট দিয়ে গিয়েছিল আর বলে গেছিল সময় মত খাওয়ার আগে খাওয়ার পরে খেয়ে নিতে। ড্যানিয়েল যখন ছিল এখানে ছিল সেই এই দিকে খেয়াল রাখতো। যেহেতু ড‍্যানিয়েল এখানে নেই মার্গারেটের দায়িত্ব ছিল দেখেশুনে ভিটামিনের ট্যাবলেটটা খাওয়ার। আর সে খেতে ভুলে গেছে তাই ও জনকে আবার ডাকল আর বলল তার ভিটামিনের ট্যাবলেট টা আর একটা জলের বোতল তাকে দিয়ে যেতে ।জন সেই মতো কাজ করল ট্যাবলেটটা আর জলের বোতলটা মার্গারেটকে দিয়ে গেল। ভিটামিনের ট‍্যাবলেটটা অনেকটা লজেন্সের মত দেখতে। ভিটামিনের পিছনের দিকটা গোলাপি আর সামনের দিকটা হলুদ। মার্গারেট আর দেরি না করে ওষুধটা মুখে পড়ল আর তারপরে গ্লাসে জল ঢেলে খেয়ে নিল ওষুধ খাওয়ার পর আবার লাঞ্চ করতে শুরু করল। খাবার খাওয়ার পর ও ভাবল যে ও

ওর স্বামী জানতে চেয়েছিল ও কেমন আছে তো সেটা জানিয়ে স্বামীর উদ্দেশ্যে চিঠি লিখল। প্রায় তিন মাস হয়ে গেছে ওর স্বামী ড্যানিয়েল এখনো আমেরিকায় কাজে ব্যস্ত। একদিন সে নিজের রুমে বসে মন দিয়ে ডিটেকটিভ নোবেল পড়ছিল তখনই মার্গারেটের মনে হল কেউ যেন কলিং বেল বাজাচ্ছে।সে উঠে গিয়ে খুলতেই দেখল কেউ নেই বাইরে। দরজাটা বন্ধ করে দিতে গিয়ে মনে হল মার্গারেটের দরজাটা কিসে যেন আটকাচ্ছে সে নিচে তাকাতেই দেখল একটা চিঠি রাখা আছে। সেই চিঠিটা খুলে দেখল চিঠিটা তার স্বামী ড্যানিয়েলের। মার্গারেট দরজাটা বন্ধ করে ড্রইংরুমে এসে বসে। চিঠিটা খুলল এবারের চিঠিটার গায়ে ওর স্বামীর পারফিউমের গন্ধ পেল না বরং তার থেকে অনেকটা আলাদা গন্ধ বলে মনে হচ্ছে মার্গারেটের। মার্গারেটের মনে হল যে এই গন্ধটা কোন ফিমেল 

পারফিউমের না তো। ফিমেল পারফিউমের গন্ধটা পেয়ে খানিকটা অবাক হয়েছিল মার্গারেট। ড্যানিয়েল সাধারণত এরকম হালকা ধরনের পারফিউম পছন্দ করে না সে খুব কড়া ধরনের পারফিউম পছন্দ করে।যাই হোক সে ব্যাপারটায় অত মাথা ঘামালো না। মার্গারেট আবার মন দিয়ে চিঠিটা পড়তে লাগলো।চিঠিতে লেখা আছে যে ও খুব শীঘ্রই দেশে ফিরতে চলেছে এটা পড়ে মার্গারেট এতটাই খুশি হল যে সব ভুলে গেল। মার্গারেট ব্যস্ত হয়ে পরলো ঘর সাজানোর জন্যে। কারণ ওর স্বামী ড্যানিয়েল বাড়িতে ফিরছে পুরো বাড়িটাকে নতুনভাবে সাজিয়ে তুলল মার্গারেট নতুন পর্দা, নতুন চাদর,নতুন বিছানার কভার, সবকিছুই নতুন শুধু মার্গারেট ছাড়া। যেদিন ড‍্যানিয়েল বাড়িতে ফিরল সেই সারাদিন মার্গারেটের খুব মজায় কেটেছে। কারণ অনেকদিন বাদ ড‍্যানিয়েল তার কাছে ফিরেছে। ডিনার শেষ করে যখন মার্গারেট নিজের হাতে পায়ে নাইময়েশ্চারাইজার মাখ ছিল এমন সময় মার্গারেটের মনে হল ড‍্যানিয়েলের ফিরে আসার পর থেকে তাকে সে একবারও জাপ্তে জরিয়ে ধরেনি।ড‍্রেসিং টেবিলের সামনে রাখা সোফা থেকে উঠে র্মাগারেট সোজা উওরের দিকের বারান্দায় গেল।র্মাগারেটের মনে হল এত দিন ঘরের বাইরে থেকে ড‍্যানিয়েলের নিশ্চয়ই চিরকালের অভ‍্যাস পালটায়নি।র্মাগারেট বারান্দায় গিয়ে দেখে ড‍্যানিয়েল দাঁড়িয়ে স্মোক করছিল। সে পিছন থেকে জাপ্টে জড়িয়ে ধরতেই ড‍্যানিয়েল থতমত খেয়ে গেল। তাকে থতমত খেতে দেখে র্মাগারেট জিজ্ঞেস করল 

"হোয়াট হ্যাপেন্ড ডিয়ার "?

ড্যানিয়েল বলো না না কিছু হয়নি ওই আমি একটু অন্যমনস্ক ছিলাম তো তাই।র্মাগারেট বলল ও তাই তাহলে ঠিক আছে।র্মাগারেট বলল ভেতরে চলনা ডিয়ার অনেকদিন তো আমরা একসঙ্গে কথা বলিনি।একে অপরকে একটু সময়ে নিয়ে ভালোবাসিনী। আজ থাক র্মাগারেট আমার মাথাটা একটু ধরেছে। র্মাগারেট বলল ঠিক আছে তাহলে আমি তোমার মাথাটা একটু টিপে দি।না তার দরকার নেই র্মাগারেট। সরি হানি,আমি তোমায় এতদিন পরে হার্ট করতে চাইনি কিন্তু এত কাজের প্রেসার গেছে না এই ক'মাস তাই আমি একটু চেঁচিয়ে উঠলাম। ড‍্যানিয়েল কথা বলতে বলতেই র্মাগারেটকে জড়িয়ে ধরল।র্মাগারেটকে জড়িয়ে ধরে খুব ভালোবাস ছিল তখনই র্মাগারেটের নজরে পড়ল ড‍্যানিয়েলের ডান দিকের গলার একটু উপরে কিসের একটা চিহ্ন মনে হচ্ছে। মার্গারেট আঙুল দিয়ে ছুঁয়ে দেখতে বুঝতে পারল যে এই চিহ্নটা একটু অন্যরকমের মানে ইংলিশে বলে বাইট।মার্গারেটের মনে হল যেন ড্যানিয়েল কে কি কিছু কামড়ে দিয়েছে । এই চিহ্নটার কথা ড্যানিয়েলকে জিজ্ঞেস করতে ড্যানিয়েল কথাটা ঘুরিয়ে দিয়ে বললো চলো সোনা আমি এখন অনেকটা ফ্রেশফিল করছি চলো।আমরা দুজন একটু কথা বলি। মার্গারেট আর কোনো কথা তুলল না। মার্গারেটকে নিয়ে ড্যানিয়েল ঘরে চলে গেল।এরকম করেই তিন চার মাস কেটে গেল। হঠাৎ করে একটা ফোন এসে মার্গারেটের জীবনকে পুরো উল্টোপাল্টা করে দিল। সে ফোনটা ছিলো 


ড্যানিয়েলের গার্লফ্রেন্ড এমা । এমা হলো ড‍্যানিয়েলের বন্ধু র্জজের বউ।আমেরিকায় থাকাকালীন এমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় ড্যানিয়েলের। এমা মার্গারেটকে এ কথাও বললো সে জানে আর এর সঙ্গে তার আগেও সম্পর্ক ছিল তারা আগেও একই কলেজে পড়েছেন কিন্তু ড্যানিয়েলের বাবা অন্য একটা জায়গায় বদলি হওয়ার জন্য তাদের এই প্রেমের সম্পর্কটা আগে বাড়ার সুযোগ পায়নি।কিন্তু এখন যখন তারা একসঙ্গে কাজ করতে চলেছে তাই তারা এই সম্পর্কে র নতুন এক ভবিষ্যৎ দেখবার কথা ভেবেছে।মার্গারেটের মাথায় তখন আকাশ ভেঙে পড়েছে যেখানে তার সঙ্গে ড্যানিয়েল মার্গারেটের সাথে এতদিন প্রেমের নাটক করেছে। যেমন স‍্যামুয়েল করেছিল তারপর একদিন তার মনে হয় যে সে ভুল করতে চলেছে তাহলে কি আমার জীবনের পুরনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো না। না না সেটা হতে পারে না কেন ড্যানিয়েল আমায় প্রচন্ড ভালোবাসে।এমা আমি একথা মানতে পারছি না,না।এমা র্মাগারেটকে বলল ঠিক আছে তুমি যদি এই কথার সত্যতা যাচাই করতে চাও তাহলে তুমি আমার সঙ্গে কাল দেখা করতে পারবে। এমা র্মাগারেটকে বলল


 "আমি এখানে ক'দিন আগেই ঘুরতে এসেছিলাম আর পরশু পযর্ন্ত থাকব"। আমি তোমার জন্য সেন্ট উইলিয়াম পার্কে অপেক্ষা করবো তুমি দুপুর বারোটার সময় চলে এসো।এমার কথামতো র্মাগারেট সেন্ট উইলিয়াম পার্কে বারোটা বেজে পাঁচ মিনিটের অনেক আগেই পৌঁছে যায়।এমা ঠিক বারোটা পাঁচে আসে। মার্গারেট এমার সব কথা সামনে থেকে শুনল। ড্যানিয়েল আর এমার কিছু ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি এমার কাছে তোল ছিল।সেটা সে মার্গারেট দেখাতে মার্গারেটের চোখে মুখে এক অবিশ্বাসের ছায়া আর ভয় ঘনীভূত হতে থাকলো। মার্গারেট নিজে হাতে ছবিগুলোকে কি নিয়ে আবার যাচাই করে দেখল। মার্গারেট বারবার ছবিগুলো উলটেপালটে দেখছিল। ছবিগুলো মার্গারেটের হাত থেকে পড়ে গেল র্পাকের নরম নরম ঘন ঘাসের উপর।মার্গারেট কিছুক্ষণ কিছু কথা বলতে পারলোনা তারপর বলল এমা তুমি ঠিকই বলেছ তাহলে ড্যানিয়েল আমার বিশ্বাসটা ভেঙেই ফেলল।শুধু এই কথাটা বলে মার্গারেট দৌড়ে বেরিয়ে গেল সেন্ট উইলিয়াম পার্কের মেইন গেট দিয়ে।ওদিকে এমা ছলছল চোখে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে রইল। বাড়ি ফিরে মার্গারেট নিজের বেডরুমে গিয়ে তার বিছানা বালিশ আর তার ফেভারিট ব্ল্যাঙ্কেট নিয়ে চলে গেল গেস্টরুমে। সে কাউকে কিছু বল না আর ড্যানিয়েলকেও জানতে দিল না তার মনের মধ্যে কি চলেছে আর সে যে সত্যিটা জেনে গেছে ড্যানিয়েল সেটি টের ও পেল না।মার্গারেট নিজেকে প্রায় এক সপ্তাহ মতো গেস্টরুমে বন্ধ করে রেখেছিল। ঘরবন্ধ খবর জানতে র্ব‍থ‍্য‍ হল মার্গারেটের স্বামী ড্যানিয়েল আর দিনরাতের কাজের লোক জন। তার স্বামী ড্যানিয়েল মার্গারেটের এরকম ব‍্যবহার করার কারণ সে কিছুতেই বুঝতে পারছিল না। তার খুব অবাক লাগছে এটা ভেবে যে ষোলোই জুলাইয়ের দুপুরে এমন কি ঘটনা ঘটল যে মার্গারেট তার সঙ্গে প্রায় এক সপ্তাহ কথা বলেনি না। না খাবার খেয়েছে না অন্য কিছু। সে শুধু নিজেকে একটা ঘরের মধ্যে বন্ধ করে রেখেছে। কি হলো মার্গারেটের। জন কতবার ঘর বন্ধ দরজার কাছে গিয়ে ম্যাডাম ম্যাডাম বলে চেঁচামেচি করেছে কিন্তু ভেতর থেকে কেউ সাড়া দেয় নি।কতবার খাবার রেখে এসেছে জল রেখে এসেছে ওষুধ রেখে এসেছে মার্গারেট না কিছু খেয়েছে না ঘরের বাইরে বেড়িয়েছে। শুধু ঘর বন্ধ করে চুপচাপ বসে আছে।মার্গারেট এখনো বিশ্বাস করতে পারেনি যে ড্যানিয়েলও তাকে ঠকাতে পারে। তাই মার্গারেটের খালি মনে হচ্ছে যে যেটা ঘটছে সেটি একটি স্বপ্ন মাএ আর ঘুম ভাঙলেই সব ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু তার মন জানে এটাই সত্য। এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ ঘরটা থেকে শুধু ড্যানিয়েলের কানে ভেসে আসছিল একটা গোঙানির শব্দ তাহলে কি র্মাগারেটের খুব শরীর খারাপ হয়েছে নাকি সে কাঁদছে।তবে এক সপ্তাহ পর একদিন গভীর রাত্রে সেই ঘর বন্ধ দরজাটা খুলল আর ঘরের ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো নতুন মার্গারেট তার মুখের ভাব অনেকটা পাল্টে গিয়েছে।তার মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে না যে সে খুব কষ্টে আছে দুঃখে আছে না খুব খুশিতে আছে। র্মাগারেট তার ক্লান্ত শরীর টাকে কোনমতেই টেনে নিয়ে বারান্দায় সাদা রেলিংয়ের ওপর তার দুটো হাতের ভর দিয়ে দাঁড়ালো তারপরে উপরে আকাশের দিকে তাকাল। নীল আকাশে লক্ষ লক্ষ ঝিকিমিকি তারা ভেসে বেড়াচ্ছে তাদের দিকে তাকিয়ে 


মার্গারেটের কিছু একটা মনে হলো কিন্তু সে তারপর আবার নিচে তাকালো মার্গারেটের আর ড্যানিয়েল ঘর অনেক উঁচু তলায়। ড্যানিয়েল আর মার্গারেট একটা বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে থাকে ওদের ঘরটা হলো আঠারো তলায়। মার্গারেটের মাথায় অনেক কিছু ভাবনা চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে ইতিমধ্যেই সে বুঝতে পারলো যে কেউ তাকে দেখছে সে মাথা ঘোরাতে দেখতে পারলো যে তার স্বামী ড্যানিয়েল কখন যে তার পাশে এসে দাঁড়িয়ে আছে সে বুঝতে পারেনি । ড্যানিয়েল তার হাতের উপর হাত রাখতেই মার্গারেট হাতটা সরিয়ে নিলো।মার্গারেটের চোখ দেখে হতভম্ব ড্যানিয়েল একটু ইতস্তত পড়ে গেছিল।তৎক্ষণাৎ কিছু বলতে পারলো না কিন্তু যখন দেখল যে মার্গারেট নিজের ঘরের দিকে এগোচ্ছে তখন সে তার পেশীবাহুর বল প্রয়োগ করে মার্গারেটের হাতটা টেনে নিয়ে তার দিকে ঘুরিয়ে মার্গারেটের কোমরটা জাপ্টে ধরলো। মার্গারেট আর নড়তে পারছিল না। তার সচ্ছল চোখটা ড্যানিয়েলের চোখে পড়তেই মার্গারেট নিজের চোখটা নামিয়ে নিল।ড্যানিয়েল তখনই তার বামদিকের হাত দিয়ে মার্গারেটের নিচু হওয়া থুতনিটি ধরে মার্গারেটের মুখটা ওঠালেও মার্গারেট নিজের চোখটা ওপরে করেনি। মার্গারেট চোখটা নিচেই নামিয়েছিল। ড্যানিয়েল তাকে জিজ্ঞেস করল

 "ওয়াট হ‍্যাপেণ্ড মাই ডারলিং"?


 মার্গারেট কিছু বলল না। ড্যানিয়েল আবার করে জিজ্ঞেস করল

 'কি হয়েছে তোমার মার্গারেট?' নাকি তোমার খুব শরীর খারাপ। না কোথাও ব্যথা লেগেছে। কি হয়েছে আমাকে বল। মার্গারেট কিছু না বলে ড্যানিয়েলকে জোরে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেল।এবারের মার্গারেট আর দরজা বন্ধ করলো না। ড্যানিয়েল ঘরে ঢুকতেই খাট থেকে উঠে বলো তুমি আমার সঙ্গে এটা কি করে করতে পারলে।

"হোয়াই ডিড ইউ চিটেড অন মি"?।

"হোয়াই ড্যানিয়েল"?

'হোয়াই'?

"আই হ্যাভ ট্রাস্টেড ইউ অ্যান্ড ইউ ব্রক মাই ট্রাস্ট?"।

আমি তোমায় নিজের থেকেও বিশ্বাস করতাম আর সেই তুমি আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলে।

 আই ওয়ান্ট ডিভোর্স ফ্রম ইউ।

 আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু সি ইওর ফেস ।

আমি তোমার সঙ্গে এক ছাদের নীচে থাকতে চাইছি না ।


 প্লিজ তুমি আমায় ছেড়ে দাও। মার্গারেট আমার কথাটা শোন ডার্লিং,আমি তোমার সঙ্গে কোন বিশ্বাসঘাতক করিনি।আমি তোমায় অবশ্যই বলতাম সেই সুযোগটা আমি এখন পর্যন্ত পাইনি বলল ড‍্যানিয়েল তাই বলতে পারিনি। তুমি কবে বলতে ড‍্যানিয়েলকে জিজ্ঞাসা করল মার্গারেট। মার্গারেটের ফট করে সেই ভ্যালেন্টাইন্স ডের কথা মনে পড়ে গেল যেইদিন তার প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড স্যামুয়েল ঠিক একই কাজ করেছিল নিজের গার্লফ্রেন্ড হেলেনাকে নিয়ে এসে তার সামনে বলে ছিল সে আর মার্গারেটের সঙ্গে সম্পর্কটাকে টিকিয়ে রাখতে চায় না। কিন্তু মার্গারেট কোনোভাবে নিজেকে সামলে নিয়ে মার্গারেট আবার ড‍্যানিয়েলকে জিজ্ঞাসা করল সেটা তুমি কবে বলবে ঠিক করেছিলে।ড্যানিয়েল কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো তারপর বলল মার্গারেট আমি তোমায় ভালোবাসি আর এটা বলতেই মার্গারেট ড্যানিয়েলকে থামিয়ে দিয়ে বলে আর বলতে হবেনা ড্যানিয়েল আমি বুঝতে পেরে গেছি বলো তুমি কবে ডিভোর্স চাইছো।আমি ডিভোর্স দিয়ে দেবো ড‍্যানিয়েল চুপ করে রুমের বাইরে বেরিয়ে গেলে মার্গারেট দরজাটা দিয়ে দিল।এক ঘণ্টা বাদে দরজাটা খুলে বেরিয়ে এল মার্গারেট তার সঙ্গে ছিল তার দুটো বড়বড় সুটকেস। মার্গারেট ড্যানিয়েলকে বলে দিল সে এই বাড়ির চাবি সামনে রাখা বুক সেলফ এর নিচের সেলফে রেখে যাচ্ছে। ড‍্যানিয়েল মনে করে যেন নিজের কাছে নিয়ে রেখে দেয়। ড্যানিয়েল ড্রয়িং রুমের মস্ত বড় এলইডি টিভির সামনে রাখা সোফাটায় বসে ছিল আর ড্রিঙ্ক করছিল সে ড্রিংকের গ্লাসটা সামনে রাখা টেবিলের উপর রেখে দিয়ে তাড়াতাড়ি উঠে পড়ে মার্গারেটকে জিজ্ঞেস করল কোথায় যাচ্ছো মার্গারেট?। 

মার্গারেট বলল "আমি আমার নিজের বাড়ি যাচ্ছি "

ভালো থেকো ড‍্যনিয়েল।


এই বলে মার্গারেট জনের র্ভসায় তার নিজের হাতে সাজানো ঘর আর স্বামী ড‍্যানিয়েলকে চিরতরে ছেড়ে দিয়ে চলে গেল। মার্গারেটের বাবা মার্গারেটকে তার জন্মদিন উপলক্ষে একটা বিলাসবহুল বাড়ি দিয়েছিল সেখানে সে কয়েকবার গিয়েছিল সেই বাড়ির চাবি তার কাছেই ছিল তাই সে ঠিক করলো যে সে ড্যানিয়েল এর বাড়ি ছাড়ার পর সেইখানে গিয়ে উঠবে। তারপরে ছ'মাস কেটে গিয়েছে মার্গারেট নতুন বাড়িতে এসেছে। তারমধ্যে তিনমাস লাগলো ড্যানিয়েল আর ডিভোর্সের প্রক্রিয়া হতে।ডির্ভোসের সময় ড‍্যানিয়েল আর মার্গারেট হতে মার্গারেট লাস্ট বারের মতো ড‍্যানিয়েলকে জিজ্ঞাসা করলো তুমি কেনো আমার সঙ্গে এরকম করলে। ড্যানিয়েল বলো আমি তোমার সঙ্গে বিয়েটা রীতিমতো আমার বাবার জোরেই করেছিলাম আমার আর আমার সম্পর্কটা খুব ছোটবেলা থেকেই আমরা স্কুল-কলেজ একসঙ্গে করেছি আমার বাবার ট্রানস্ফেরাবল জব তাই জন্য আমার আর এমার সম্পর্কটা বিয়ে অবদ্ধি গরাতে পারেনি।কিন্তু তোমার সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর যখন তোমাকে আমি বুঝতে পারি আরো বেশিভালোভাবে তোমায় জানতে পারি তখন বুঝতে পারলাম যে আমি তোমার জন্য পারফেক্ট নই কারণ তুমি সুন্দর, তোমার বিরাট একটা হৃদয় এবং তোমার প্রত্যেক কাজে দক্ষতা আছে।তোমার প্রতি আমার হৃদয়ে একটা পছন্দের অনূভুতি গড়ে উঠল। তাই আমি ভয় পাচ্ছিলাম তোমাকে আমার আর এমার সম্পর্কের কথাটা বলতে। ডিভোর্সের কয়েক দিন পরে র্মাগারেটের মনে হলো অনেকদিন হয়ে গেছে তার ডায়েরি নিয়ে বসা হয়নি। তাই র্মাগারেট একটু ডায়েরি নিয়ে বসলো সে ডায়েরি নিয়ে বসে লিখতে শুরু করলো যে সত্যিকারের ভালোবাসা কথায় হয় না যদি কারো ভালোবাসা শুধু গল্পই পাওয়া যায় যদি তাই হতো তাহলে ড্যানিয়েল তাকে ছেড়ে তার বন্ধুর বউ এমার কাছে চলে যেত না আর তাহলে র্মাগারেটের মনের ভেতরের গভীরে থাকা আত্মাকে দু দু বার প্রেমে বিফল হতে হতো না। যাক গে যা হয়েছে সেটা আমি আমার ভাগ্য বলে আমি মেনে নিয়েছি এটা বলে সে ডায়েরিটা বন্ধ করলো।তারপর একদিন একটু মন ভালো করার জন্য সে নিজের গাড়ি নিয়ে লংড্রাইভে বেরিয়ে পড়েছে। এমন সময় সে একটা ফুলের দোকানে সামনে তার গাড়িটা এসে দাঁড়াল। ফুলের বাগান করলে নাকি মন ভালো থাকে র্মাগারেটের মা তাকে একবার বলেছিল । তাই সে ঠিক করল সে ফুলগাছ কিনবে তার বাড়িতে একটা ছোট্ট ফুলের বাগান করবে বলে।সে দোকানের সামনে গাড়িটা রেখে দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে ফুলের দোকানে গেল।সেখানে গিয়ে বলল "আমাকে কটা ড‍্যাফোডিল আর লিলি মিলিয়ে ফুলের বীজ দিন। ফুলের লোকটাকে এই বলে আরো অন্য ফুল গুলো দেখতে লাগল র্মাগারেট। এমন সময় তার কানে খুব একটা চেনা পুরুষ কণ্ঠস্বর কানে এলো পিছনে ফিরে তাকালে দেখতে পেল সে পুরুষ কন্ঠ আসলে তা খুব চেনা কাছের মানুষের সেই কণ্ঠস্বর হলো স্যামুয়েলের।আবার করে স‍্যামুয়েলের সঙ্গে দেখা করতে খুব ইচ্ছে করল র্মাগারেটের। র্মাগারেট স‍্যামুয়েলকে দেখতেই একে অপরকে জিজ্ঞেস করল। তারা একে অপরে কেমন আছে কি করছে তখনই মার্গারেট জানতে পারল যে স‍্যামূৃয়েলের সঙ্গে হেলেনার বিয়ের হওয়ার কথা তো হয়েছিল কিন্তু বিয়ের দিনই হেলেনার একটা রোড এক্সিডেন্টেতে মারা যায়।তারপর থেকে স্যামুয়েল এখনো পর্যন্ত একা আছে হেলেনার মৃত্যুর খবর শুনে র্মাগারেটের খুব কষ্ট পেল সে স‍্যামুয়েলকে আশ্বস্ত দিল যে সে তার পাশে সবসময়ে থাকবে তার যখন কিছু দরকার পড়বে সে যেন মার্গারেটকে খবর দেয়। স‍্যামূয়েল আর র্মাগারেট বিভিন্ন কারণে অত্যন্ত ছোট ছোট ব‍্যাপ‍্যারে একেঅপরের সঙ্গে দেখা করতে লাগলো।আবারও করে তারা নিজেদের পুরনো প্রেমকে আবার করে নতুনভাবে শুরু করলো। তাদের দুজনেরই কষ্ট পেয়েছে তারা দুজনেই নিজেদের কাছের মানুষ তাদেরকে ছেড়ে চলে গেছে। সেই দুঃখ ভোলাতে তারা একে অপরের সঙ্গ বেছে নিল।একদিন প্রচুর বর্ষার কারণে তারা একটা ফাঁকা রাস্তায় গাড়ির মধ্যে আটকে গিয়েছিল। কাউকে ফোন করে তাদের সাহায্যের জন্য বলতে পারছিল না কেননা সামনের পুরো রাস্তায় জল ভর্তি ছিল। তারা সেই সময় পুরোনো সব দুঃখ কষ্টের বিশ্বাসঘাতকতার কথা ভুলে গিয়ে তাদের পুরনো প্রেমকে জাগিয়ে তুলল। স্যামুয়েলের উষ্ণ ঠোঁট যখন মার্গারেটের নরম ঠান্ডা গালে পড়ল তখন তারা সবকিছু ভুলে গিয়ে একে অপরের মধ্যে মিশে গেল।এরাম করে তারা অনেকবারই নিজেদের নিঃসঙ্গতাকে দূর করেছে অনেক ভাবনা চিন্তা করে মার্গারেট একটা সিদ্ধান্ত নিল। সেই সিদ্ধান্তের কথা র্মাগারেট স‍্যামুয়েলকে জানাল যে র্মাগারেট স‍্যামুয়েলকে বিয়ে করতে চায় । স‍্যামুয়েল প্রথমে কিছুক্ষন চুপ করে থাকল তারপরে তার সিদ্ধান্তটা এক দিন বাদে স‍্যামুয়েল মার্গারেটকে ফোনে জানাবে বলে সে জানাল। সে একদিন আর কোনদিনও এলো না মার্গারেট আবার স‍্যামুয়েল মার্গারেটকে ঠকালো আর মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিল। স্যামুয়েলের সঙ্গে আবার বিচ্ছেদের দশ বছর পরে একদিন ভ্যালেন্টাইন্স ডেতে। হঠাৎ একদিনে মার্গারেটের দরজায় কে

কেউ কড়া নাড়লো তখন তার বয়স বাহান্ন বছর সে দরজাটা খুলতেই দেখল তার দরজার সামনে একটি বিশাল বড় আকারের একটি লাল গোলাপের তোড়া রাখা আছে আর তার সঙ্গে একটি বিরাট বড় গ্রিটিংস কার্ড। র্মাগারেট গ্রিটিংস কার্ডটা তুলে পড়ল। কার্ডটায় লেখা আছে।


 "উইল ইউ ম্যারি মি মার্গারেট"

এটা ওই অ্যাপার্টমেন্টেরই কোন কমবয়েসী ছেলের মজা ভেবে উড়িয়ে দিল। মার্গারেট ফুলের তোড়া আর গ্রিটিংস কার্ড ঢুকিয়ে নিল ঘরের ভেতরে।সে ভাবলো যে দিয়েছে তাকে পরে ফিরিয়ে দেবে।আবার বেল বাজল এইবার মার্গারেট দেখল প্রচুর ছোট ছোট ফুলের তোড়া যুক্ত প্লাস্টিকের টব রাখা আছে মেঝেতে। ঔই ছোট ছোট প্লাস্টিকের টবে কাগজ আটকানো আছে। সেই টবগুলোতেও একই লেখা আছে। র্মাগারেট বুঝতে পারলো যে তার সঙ্গে কেউ বিরাট বড় মজা করছে। তাই র্মাগারেট কাউকে কিছু বলল না। কিন্তু র্মাগারেট দরজার বাইরে কেউ লুকিয়ে আছে কিনা সেটা দেখে নিয়ে দরজা বন্ধ করে নিজের রুমে চলে গেল। তারপর আবারো একবার বেল বাজতেই তারাহুরো করে বেরিয়ে আসলো এবার র্মাগারেট দরজা খুলতেই দেখল একটা লোক একটি বিরাট বড় টেডি বিয়ার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেই টেডি বিয়ারের হাতে একটা কার্ড ধরা আছে সেটাতেই লেখা।

 "উইল ইউ ম্যারি মি র্মাগারেট"?

টেডি বিয়ারটা নামাতেই লোকটাকে দেখতে পেয়ে র্মাগারেটের মুখের সব ভাব পাল্টে গেল তার মুখের মধ্যে একটা অদ্ভুত মনের ভাব ধরা পরল রাগ দুঃখ কান্না সব মিশিয়ে র্মাগারেট চেঁচিয়ে উঠলো "স্যামুয়েল "।ওপাশ থেকে টেডি বিয়ার হাতে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটা বলে উঠল

 হ্যাঁ র্মাগারেট।

তুমি এখানে কেন এসেছ স্যামুয়েল যদি তোমার আমার কাছে আসার কথা ছিল তাহলে সেদিনকে পালিয়ে গেলে কেন?। স্যামুয়েল বলল "আমি ঠিক পালিয়ে যাইনি আমি নিজেকে নিজের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলাম"। 


"আমি বুঝতে পারছিলাম না যে আমি যদি তোমাকে করতে রাজি হই তাহলে কি হেলেনর ভালোবাসা সঙ্গে ভুল করা হবে না তো"। 

"আর তোমার স্বামী ড্যানিয়েলের সঙ্গে কোনো ভুল করা হবে না তো"।

 "আমার মনে একটা দর কষাকষি চলছিল সেই দর কষাকষি কাটিয়ে উঠতে আমি তোমার কাছে দৌড়ে চলে এলাম"। 

মার্গারেট বলল কিসের দরকষাকষি ছিল তোমার স্যামুয়েল। আমরা একে অপরকে আগেও ভালোবাসতাম এখনো ভালোবেসেছিলাম তাহলে তোমার একটা হ্যাঁ বলতে এত সময় লাগলো স্যামুয়েল। দশ বছর,দশ বছর কিছু কম সময় না।


র্মাগারেট বলল" আমার যদি কিছু হয়ে যেত আমি যদি মরে যেতাম তাহলে তুমি কার জন্য অপেক্ষা করতে কাকে বিয়ে করতে বলো স্যামুয়েল।আমার উত্তর দাও স্যামুয়েল। মার্গারেট বলল আমি জানি স্যামুয়েল তোমার কাছে কোনো উওর নেই। র্মাগারেট আমি জানি আমি আবার সেই একই ভুল করেছি কিন্তু আমি সেই ভুলটা শুধরাতে চাই র্মাগারেট তাই তোমার কাছে আমি আমার হৃদয় পেতে দিতে এসেছি। র্মাগারেট বলল বারবার একই জিনিস হতে পারে না স্যামুয়েল, তুমি আমাকে বারবার ভালোবাসার জালে ফাঁসাবে আর আমি ভেসে যাব।তারপর সেই ভালোবাসাটা আমার কাছ থেকে কেড়ে নেবে,সেটা আর আমি হতে দেবো না স্যামুয়েল।তুমি ফিরে যাও আমি তোমার এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারব না কারণ আমি তোমার কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করতে ইচ্ছুক নই।সেটা নিশ্চয়ই তুমি বুঝতে পারছ।তাই আশা করি তুমি আর কোনো কিছু জিজ্ঞেস করবে না আর কোন কথা বাড়াবে না।তুমি এসো প্লীজ। র্মাগারেট দরজাটা দিয়ে দিল তারপর ঘরে গিয়ে আবার ডায়েরিটা বের করল সে লিখল "সত্যি কারের ভালোবাসা কোনদিনও সম্পূর্ণ হয় না তাই আজ মার্গারেটের ভালোবাসাটা অসম্পূর্ণ থেকে গেল তাই প্রত্যেকবার মার্গারেট ভালোবাসা পেয়েও সেই ভালোবাসাকে হারাতে হলো। ভালোবাসা যতবার মার্গারেটকে হাতছানি দিয়ে ডাকলো ততবার সে ধরতে গিয়েও ভালোবাসাকে ধরে রাখতে পারল না।তাই হয়তো সত্যি কারের ভালোবাসা একেই বলে। স্যামুয়েল প্রথমে সত্যি কারের ভালোবাসা বুঝতে পারল না আর যখন সে বুঝতে পারলো তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে তাই মার্গারেট স‍্যামূয়েলের প্রস্তাবটা গ্রহণ করতে পারলাম না। "কারণ আমার জীবন তো শেষই হয়ে গেছে শুধুমাএ একটি ধবংস্মাত্নক স্মৃতিস্তম্ভ হিসাবে বেঁচে আছি। মার্গারেট বলল সে শুধু স‍্যামূয়েলকে এটাই বলতে চায় " যে এর পরের জীবনে যদি কোনদিনও তোমার সঙ্গে দেখা হয় তাহলে আশা করি আমাদের ভালবাসাটা সম্পূর্ণ হবে"।

 'গুডবাই স্যামুয়েল'।


 মার্গারেট ডায়েরি বন্ধ করার আগে শেষ পাতায় লিখল,

"যে এই জগতে প্রকৃত মানুষই নেই তো প্রকৃত ভালোবাসা থাকবে কী করে ।"

তাই হয়তো মার্গারেটের ভালোবাসাটা অসম্পূর্ণ থেকে গেল।

এই কথাটি লিখে দাড়ি টেনে দিল। তারপর নিজের বিছানায় এসে বসে পাশের টেবিল ল্যাম্পের উপর রাখা ঘুমের ওষুধের শিশিটা হাতে তুলে নিয়ে শিশিটা খুলে সবকটা ওষুধ খেয়ে নিল। তারপরে টেবিলের পাশে রাখা জাগ ভর্তি জল খেয়ে শুয়ে পরলো।

ইতি,

মার্গারেটের ডায়েরি।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama