Aparna Chaudhuri

Romance

3  

Aparna Chaudhuri

Romance

লকডাউনে প্রেম

লকডাউনে প্রেম

2 mins
86


অংশু বহুদিন ধরে ফার্স্ট ইয়ারের অগ্নিমিত্রাকে ঝাড়ি মারছিল। কিন্তু ওর আশপাশে ঘেঁষার সাহস করে উঠতে পারছিলনা। আসলে অংশুমান খুবই ইনট্রোভার্ট । অনেকদিন প্ল্যানিং করে ও ঠিক করেছিল যে অগ্নিমিত্রার জন্মদিনে ওকে প্রপোস করবে। কিন্তু বেচারার ভাগ্যই খারাপ। জন্মদিনের আগেই লকডাউন হয়ে কলেজ বন্ধ হয়ে গেল। কি আর করে? সবাই বাড়ী বন্দী। মন টন খুব খারাপ। একে তো প্রপোস করা হল না তার ওপর অগ্নিমিত্রার পাড়াতেই সেকেন্ড ইয়ারের প্রতীক থাকে । ওরও অগ্নিমিত্রার ওপর নজর আছে।

মাঝে মাঝে ও আর বাবা বাইরের ঘরে বসে টিভি দেখে। কিন্তু সে সুখ খুব বেশীদিন সইল না। ইদানিং কাজের মাসিরা আসছে না। সব কাজ মায়ের ঘাড়ে। মায়ের মাথা তাই সবসময় গরম। ওকে আর ওর বাবাকে বসে টিভি দেখতে দেখলেই কোনও না কোনও কাজ দেয়। আর না করলে বাড়ীতে কুরুক্ষেত্র বেঁধে যায়। কিছুদিন ভেবে অংশু একটা বুদ্ধি বার করলো। নিজের ঘরেই থাকে। পড়াশোনা করে আর ছবি আঁকে।

ছোটবেলায় ও ভালই ছবি আঁকত । কিছুদিন ছবি আঁকা শিখেওছিল । আজকাল ইন্টারনেটে টিউটোরিয়াল দেখে আবার চর্চা শুরু করলো। কয়েকদিনের চর্চায় বেশ ভালই আঁকতে শুরু করলো। একটা রাতের সিনারি এঁকে ও ওর প্রিয় বন্ধু অসীমকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিল। অসীম ও স্কুলের বন্ধু। ওর মনের প্রানের সব কথা ও অসীমকে বলে। এই অগ্নিমিত্রার প্রতি ওর দুর্বলতার কথা ও শুধু অসীমকেই বলেছে।

ছবি পাঠানোর মিনিট পাঁচেকের মধ্যে অসীমের কমেন্ট এলো,” তুই ছবিই আঁক। তোর দ্বারা প্রেম ট্রেম হবে না। আজ সকালেই দেখলাম প্রতীক অগ্নিমিত্রার বাড়ীর সামনে ঘুরঘুর করছে।“

পড়ে ভীষণ মন খারাপ হয়ে গেল অংশুর। কি করবে ভেবে না পেয়ে নিজের আঁকা সব ছবিগুলো বসে বসে ওর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আপলোড করে ফেলল। তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে মায়ের কাছে চলে গেল রান্নাঘরে।

“ কিছু কাজ আছে?” বলল মাকে।

ওর এই প্রস্তাবে মা এতো অবাক হয়ে গেল যে, হাত থেকে যে গ্লাসটা ধুচ্ছিল সেটা পড়ে গেল।

ও এগিয়ে গিয়ে বলল,” যাও আমি বাসন ধুয়ে দিচ্ছি।“

মারা বোধহয় মনের কথা সত্যিই বুঝতে পারেন। ওর মাথায় পিঠে হাত বুলিয়ে মা জিজ্ঞাসা করলেন,” কি হয়েছে বাবা? মন খারাপ?”

কোনও উত্তর না দিয়ে ও নিঃশব্দে বাসন ধুতে লাগলো।

মা হেসে বললেন,” চিন্তা করিস না , সব ঠিক হয়ে যাবে।“

ও রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে বাবা পাশে গিয়ে বসলো। টিভিতে খবর চলছে। খানিকক্ষণ খবর দেখে ও নিজের ঘরে চলে গেল।

খাটের ওপর ল্যাপটপটা খোলা ছিল। অন্যমনস্কভাবে ও একবার চোখ বোলালো। বেশ কিছু কমেন্ট এসেছে। তারমধ্যে একটা কমেন্ট বেশ বড়।

খুলেই ওর মনটা ভালো হয়ে গেল, অগ্নিমিত্রা লিখেছে-

তোমার আঁকা গুলো দেখলাম। নমিতা আমাকে ট্যাগ করেছিল। তুমি যে এতো ভালো ছবি আঁকতে পারো তা তো জানতাম না। তোমায় ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠালাম। একসেপ্ট কোরো প্লিজ।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance