ঝড়
ঝড়
বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে বারবার ঘড়ি দেখছিল চন্দ্রিমা আর মনে মনে বিরক্ত হচ্ছিল। এভাবে দাঁড়িয়ে থাকাটা ওর পোষায় না কিন্তু অর্ণব খুব করে বলেছে বলে খানিকটা বাধ্য হয়ে ও এই মুহূর্তে এখানে দাঁড়িয়ে। বাসস্ট্যান্ডে এখন বেজায় ভিড় অফিস ফেরতাদের। একটা করে বাস আসছে আর বোঝাই হয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। সানগ্লাসের ভেতর দিয়েও ও বুঝতে পারছিলো বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিটা চোখ একবার করে ওকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। ওর পরনে লাল টপ আর প্রিন্টেড লঙ স্কার্ট তার সা্থে মানানসই সাজ, লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতোই। এসব ওকে খুব একটা ভাবায় না। ও জানে ও সুন্দরী না হলেও যথেষ্ট আকর্ষণীয় আর সেটাই ওর বিশেষ যোগ্যতা। শুধু চেহারা নয় বিদ্যেটাও যথেষ্ট আছে কিন্তু সেই বিদ্যে দিয়ে একটা সম্মানীয় চাকরি জুটছে না। ওই বিষয়টা ওর কাছে এক আফসোসের বিষয় বটে তবে ও নিয়ে ভেবে লাভ হচ্ছে না।
হঠাৎই একটা হুণ্ডাই এসে থামলো সামনে। গাড়ির দরজা খুলে চালক গলা বাড়িয়ে বলল ‘মিস হেনা?’ চন্দ্রিমা মাথা হেলাতেই বলল ‘অর্ণব পাঠিয়েছে’ ও চুপচাপ গাড়িতে চালকের পাশে উঠে বসলো। গাড়ি চলা শুরু করলো। ভেতরে এসি চলছে। চন্দ্রিমা বুঝতে পারছিলো গাড়ির মালিকের রেস্ত যেমন অনেক তেমনি রুচিও উঁচু দরের। তবে ওর এসব বেশি ভেবে লাভ নেই ও শুধুমাত্র টাকার বিনিময়ে সঙ্গদান করতে এসেছে সময়ের চুক্তিতে। চালক এবার বলল ‘এবার পরিচয়টা দেওয়া যাক। আমি সাগর’
ও হাসি মুখে হাতটা বাড়িয়ে দিলো হ্যান্ডসেকের জন্য। সাগর হাত মেলাল তারপর একবার সামনের দিকে তাকাল, বলল ‘অর্ণব আপনার বন্ধু?’
‘পরিচিত’
‘হুম’ রাস্তাটা ভালো করে দেখে বলল ‘কিছু বলুন আপনার সম্পর্কে’
‘না ভাবছিলাম আপনিই প্রথমে কিছু বলা শুরু করবেন’
‘যদিও কিছু সময়ের বন্ধুত্ব তবু যদি আপনির দূরত্ব থেকে তুমিতে নামো বেশ হয়’
চন্দ্রিমা হাসল ওর সাথীর কথা শুনে। এভাবে প্রথম কাউকে বলতে শুনল। এই পর্যন্ত যতজনের সাথে ও গেছে সবাই বিনা অনুমতিতেই তুমিতে নেমেছে তারপর সেই পর্যায় নেমে গেছে যার কারণে টাকা খরচ করা।
‘বেশ তাহলে বলো কোথায় যাবে?’
ও উত্তর দিলো ‘তোমার যেখানে ইচ্ছে’
‘বেশ তাহলে চলো লঙ ড্রাইভে যাওয়া যাক’
চন্দ্রিমা অবাক হলেও মুখে কিছু বলল না। শুধু মন একবার প্রশ্ন করলো কেন এবার অন্যরকম হচ্ছে? ওর এক মন বলল হয়তো ওকে ওর পছন্দ হয়েছে তাই কিছুটা সময় ওর সাথে কাটাতে চাইছে। ওর আরেক মন তা নাকচ করে বলল আসলে তা নয় এ বেশী টাকা খরচ করছে তাই যেমন মন চাইছে করছে। শেষটা তো সেই বিছানাতেই। অবশ্য ওর যে খারাপ লাগে তা তো নয় বরং খুব এনজয় করে। শুধু তো শারীরিক সুখ নয় কিছু থোক টাকাও হাতে আসে। বেশ আয়েশে চলে যাচ্ছে জীবন।
‘তোমার বেড়াতে কেমন লাগে’ গাড়ি চালাতেচালাতে প্রশ্ন সাগরের। ‘ভালো’ সংক্ষিপ্ত উত্তর ওর। এই রাস্তায় আসার পর ওকে একটা কথা শিখতেই হয়েছে ক্লায়েন্ট যেমন চাইবে তার মনোভাব বুঝে সেভাবেই উত্তর দিতে হবে।
মানুষ বলে যে যেমন পরিবেশে বড় হয় তার সেরকম স্বভাব গড়ে ওঠে। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে ওর এই স্বভাবের সমর্থনে ওর বাড়ির পরিবেশ মিলবে না। বাবা বেশ ভালো চাকরি করতেন আর মা নৃত্যশিল্পী। বাবার ব্যাপারে অতীত শব্দ ব্যবহার করার কারণ উনি অনেকদিন ওদের সঙ্গে থাকেন না। অনেকদিন পর্যন্ত ওর ধারণা ছিল ওর বাবা মা আলাদা থাকার বাবার কোন ভয়ঙ্কর দোষ যা মা সহ্য করতে পারেনি। তাই মা কষ্ট করে নাচের স্কুল চালিয়ে ওকে মানুষ করছে। এটা ওর কাছে খুব গর্বের বিষয় ছিল এতদিন। এতদিন বলল কারণ...
‘কি হল আবার চুপচাপ হলে যে? মনে হচ্ছে আমার সঙ্গ তোমার পছন্দ হয়নি”
‘না না তা কেন? তুমি গাড়ি চালাচ্ছ তো তাই ভাবলাম কথা বললে যদি অসুবিধা হয়’
‘আমার গাড়ি চালাতে অসুবিধা হচ্ছে না’ এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো সাগরের মুখে।
‘তোমার বোধহয় ঘুরে বেড়ানোটা নেশা, তাই না’
‘হ্যাঁ ছোটবেলা থেকেই। বাবা বাইরে বাইরে চাকরি করেছেন আর তার কারণে আমার ছোটবেলাও ঘুরে ঘুরেই কেটেছে। আজ বছর তিন হল আমি এই শহরে চাকরির কারণে। চাকরিটাও কপাল গুণে পেয়েছি এমন যে কোন জায়গায় দু তিন বছরের বেশি থাকতে হয়নি কখনো। ঘুরে বেরানোর জন্য কলকাতা শহরের অলিগলি পর্যন্ত আমার চেনা হয়ে গেছে তবে এখনো ভালোই লাগে শহরটা তাই ঘুরতে বেরোই যখনই মন করে। যেমন আজ বেরিয়েছি তোমাকে নিয়ে’
‘শহরের বাইরে কোথাও যাওনি কোনদিন?’
‘হ্যাঁ গেছি হাওড়ার দিকে গেছি তার বেশি নয়’
‘তাহলে চল আজ চন্দননগরের দিকে। ওদিকটা আমার সেরকম চেনা নেই কিন্তু দেখতে খুব ইচ্ছে করে’
গাড়ি ঘুরলো চলল চন্দননগরের অভিমুখে।
চন্দ্রিমার মনে পড়ছিল এই চন্দননগরে ও প্রথম এসেছিলো মধুমিতা সস্তিকা অরিন্দম নবারুণ প্রতীক দেবদিত্যর সঙ্গে কলেজ থেকে। ইতিহাসের ছাত্র ছাত্রী ওরা চন্দননগরে ফরাসীদের তৈরী বাড়ি চার্চ বাগান দেখার মূল্য তো অনেক। ঘোরাঘুরির মাঝে খিদে পাওয়াতে ওরা একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলো খেতে। ওখানে ঢোকাটা কাল হয়েছিল বলে আজও মনে হয় চন্দ্রিমার। দরজা দিয়ে অন্তরঙ্গভাবে এক অচেনা পুরুষকে জড়িয়ে ধরে ও বেরোতে দেখেছিল মাকে। চোখাচোখিও হয়েছিল তার সাথে। মুখে রঙের প্রলেপ থাকা সত্ত্বেও ফ্যাকাসে হতে দেখেছিল মুখটাকে। সঙ্গী পুরুষটিকে অবশ্য চিনতে পারেনি। চমকে উঠেছিল ও আর লজ্জায় অধোবদন হয়েছিল যখন বন্ধুরা বলেছিল ওকে খোঁচা মেরে ‘এই তোর মা এখানে? তুই বলিসনি তো! সাথে উনি কে রে?’
পরিস্থিতি সামাল দিতে ও বলেছিল ‘কাকে আমার মা বলছিস। আমার মা তো তার স্কুলে। কাকে দেখতে কাকে দেখছিস তোরা’
মধুর বিশ্বাস হয়নি ‘আরে কাকিমাই তো’
ও একটুও রাগেনি ‘তাহলে তুই জিজ্ঞেস করে আয় আমরা এখানেই দাঁড়াচ্ছি’
ওর অতো দৃঢ়তা দেখে ওরা পিছিয়ে গিয়েছিল, নিজেদের ভুল হয়েছে ভেবে। কিন্তু চন্দ্রিমা তো ভোলেনি। ও বাড়ি ফিরে মাকে সোজাসুজি প্রশ্ন করেছিল। তাতে তার মা যা উত্তর
দিয়েছিলো ও ভুলতে পারেনি। তার বাবা পুরুষ হয়ে যদি বহু নারী সঙ্গ করতে পারে আর তাতে যদি দোষ না থাকে তাহলে তার একজন পুরুষ সঙ্গী থাকলেই দোষ? ও বুঝতে পারেনি এর উত্তর কি হওয়া উচিত। ওর মনে শুধু একটাই প্রশ্ন উঠেছিলো তাহলে ভালোবাসার কি কোন মূল্য নেই? ওর বাবা মায়ের তো ভালোবেসেই বিয়ে হয়েছিল বলে জানে ও।
‘চন্দননগরের কোথায় যেতে চাও তুমি’
‘গঙ্গার ধারে বসবে একটু’
‘চলো’
*****************
গঙ্গার জলে হাল্কা ভাবে পা চুবিয়ে বসে আছে দুজন ঘাটের সিঁড়িতে। সন্ধ্যা নেমে এসে নদীর জল ছুঁয়েছে। সাগর ওর ব্যাগ থেকে বার করেছে বিয়ারের বোতল। ছিপি খুলে চন্দ্রিমার দিকে এগিয়ে দিতে ও বলল ‘এখন না, একটু পরে নেবো। এখন সন্ধ্যার এই সুন্দর আগমন দেখতে খুব ভালো লাগছে’ সাগর এক ঢোঁক খেয়ে প্রশ্ন করলো ‘তুমি ভালবাসো না কাউকে?’
‘না’
‘কেন?’
‘বিশ্বাস করি না বলে। ভালোবাসা বলে কিছু হয় বলে জানি না যা হয় সেটা শুধু শারীরিক সম্পর্ক। সেই শরীর সম্পর্কে আগ্রহ শেষ হয়ে গেলেই সেই সম্পর্কও শেষ হয়’
‘কেন তোমার এরকম ধারণা’
‘পরিস্থিতিই এই অভিজ্ঞতা দিয়েছে’
চন্দ্রিমা তখন থার্ড ইয়ারে। কলেজে কিছুদিনের জন্য একজন গেস্ট লেকচারার এলেন ইতিহাসের। নাম শরতশুভ্র সান্যাল। চেহারায় সাধারণ হলেও ব্যক্তিত্ব দারুণ আর সেই সাথে পড়ান খুব সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে। ও স্যারের কাছে কিছুদিনের জন্য পড়া বুঝতে গিয়েছিল। তার কয়েকদিন আগেই মায়ের ওই রূপ দেখে ওর মন বিধ্বস্ত হয়ে ছিল। স্যারকে ওর সেই মানুষ মনে হয়েছিলো যার কাছে মনের কথা খুলে বলা যায়। স্যার সব শুনেছিলেন মন দিয়ে সান্তনা দিয়েছিলেন তারপর মানুষের বিশ্বাস ভালোবাসা নিয়েও খুব সুন্দর করে বুঝিয়েছিলেন। ভালো লেগেছিল ওর, ভেবেছিলো এমন একজনকে পেয়েছে যে ওকে বোঝে। পড়ানোর ফাঁকেই তিনি প্রেম নিবেদন করে বসলেন চন্দ্রিমার কাছে। ও সাড়া দেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে শারীরিক সম্বন্ধও হল। যখন ও বিয়ের কথা পাড়বে বলে ঠিক করলো জানলো তিনি অন্য জায়গায় বদলি হয়ে গেছেন। ও পাগলের মতো ছুটে গিয়েছিলো কিন্তু দেখা করেননি তিনি। তখন আরেক কঠিন সত্যি জানতে পারে, উনি বিবাহিত, স্ত্রী সন্তান সবই আছে। এতো জোর আঘাত পাওয়ার পর ভেঙ্গে পড়েছিলো ও কিন্তু তারপর আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে পরীক্ষা দিয়েছে পাশও করেছে।
বাড়িতে চন্দ্রিমার ভালো লাগতো না কিন্তু কোথায় বা যাবে। কলেজ ছেড়ে এবার ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হল। প্রথমবার ভালোবেসে ঠকার পরেও ও আবার প্রেমে পড়লো, এবার ওর ইউনিভার্সিটির ক্লাসের এক ছেলের সাথে। বেশ জমে উঠলো প্রেম। বিয়েও করলো ধুমধামের সাথে। মা যেমনই জীবন কাটাক না কেন ভালো খরচ করেই বিয়ে দিলো। কিন্তু নতুন স্বামী তখনও সেভাবে চাকরি জোটাতে পারেনি। এক জায়গায় চাকরি হওয়ার কথা হল কিন্তু খরচ করতে হবে বেশ। টাকা না দিতে পারলে কাজটা হবে না। টাকার সমস্যা জেনে যারা চাকরি দেবে ভেবেছিলো তারা তখন টাকার বদলে আরেকটা জিনিস চেয়ে বসলো। চন্দ্রিমার স্বামী তাকেই তুলে ধরল ওদের সামনে চাকরির জন্য। চাকরি দেওয়ার শর্তে ওরা ওকে ছিঁড়ে ফেলেছিল। স্বামীর মনের ইচ্ছেটা দেখে ও ঘৃণায় মূক হয়ে গিয়েছিলো। ছিটকে সরে এসেছিল সে সেই সম্পর্ক থেকে।
ফিরে যেতে চায়নি আর মায়ের বাড়িতে কিন্তু বেঁচে থাকতে গেলে টাকা লাগে। ভদ্রস্থ চাকরির চেষ্টা করে যখন সেরকম কিছু পেল না সেইসময় অর্ণব খুব সাহায্যে এসেছে। অর্ণব ছিল ওর স্বামীর বন্ধু। ও পরিষ্কার বলেছিল ‘এক সময় তুমি কিছু নেকড়ের সামনে খাদ্য হয়েছ কারোর চাকরির জন্য আজ তাকেই তুমি কাজে লাগাও তোমার ভদ্রস্থ জীবনযাপনের জন্য’
চন্দ্রিমার মনে পড়েছিলো পৃথিবীতে প্রথম যখন মানুষ জোট বেঁধে বসবাস শুরু করে তখন স্বামী বা স্ত্রী বলে আলাদা কিছু ছিল না। যার যাকে ভালো লাগতো সে তার সাথেই থাকতো রাত কাটাত।
‘তুমি কাউকে কোনদিন ভালবেসেছ?’
চন্দ্রিমার প্রশ্নে সাগর হাসলো ‘হ্যাঁ কিন্ত সে সম্পর্ক টেঁকেনি’
‘তারপর বুঝি আর কাউকে মনে ধরেনি?’
‘ধরেনি বললে ভুল হবে সম্প্রতি একজনকে একটু একটু ভালো লাগতে শুরু করেছে তবে সে এখনো জানে না’
চন্দ্রিমার মুখে চিলতে হাসি ফুটে উঠেই মিলিয়ে গেলো। যে মেয়ে ওর নজরে পড়েছে সে সৌভাগ্যবতী না দুর্ভাগ্যবতী কে জানে কারণ সেই পুরুষটার স্বভাব তো নতুন নতুন মেয়ে চেখে দেখা। হঠাৎ ঠাণ্ডা বাতাসের ঝলক গায়ে এসে লাগতে ও ওপরে তাকিয়ে দেখল আকাশে মেঘের আনাগোনা। বৃষ্টি আসবে কি? সম্ভাবনার কথা বলতে সাগর বলল ‘চলো এবার হোটেলে যাওয়া যাক’
চন্দ্রিমা জানে আর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ওর ছুটি। রাত বাড়ছে ফিরে গিয়ে আজ আর কিছু বানাতে ইচ্ছে করবে না। আজ ও কোন হোটেল থেকে রাতের খাবার নিয়ে ঢুকবে। কিন্তু যে কাজের জন্য সাগরের টাকা খরচ করা ও তার ধারপাশ দিয়ে না গিয়ে খাবার অর্ডার দিলো চন্দ্রিমার পছন্দ মতো। খাওয়া শেষ হলে ও সিগারেট ধরিয়ে খানিক জানলার বাইরে আনমনা হয়ে চেয়ে রইলো। চন্দ্রিমা বুঝতে পারছিলো না সাগরের মনের মধ্যে কি চলছে হঠাৎ ও জানলা থেকে ঘুরে ওর দিকে তাকিয়ে বলল ‘হেনা আজ যদি তোমাকে বন্ধু করতে চাই আপত্তি করবে কি?’
চন্দ্রিমা অবাক হয়ে সাগরের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো এ আবার কি ধরণের প্রশ্ন? ও বলল ‘আমি জানি তুমি আমার কথাটা বোঝনি আমিই বুঝিয়ে বলছি। আমি পুরুষ হলেও পুরুষত্বহীন। ডাক্তার দেখিয়েছি উনি বলেই দিয়েছেন আমার এটা সারার নয়। এই কারণেই আমার ভালোবেসে বিয়ে করা স্ত্রী আমার সঙ্গ ত্যাগ করেছে। তাঁকে দোষ দিই না। আমার চাকরিস্থলে বন্ধুমহলে সমাজে প্রতিপত্তি খুব কিন্তু মনের দিক দিয়ে খুব নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। একজন মনের মতো সঙ্গী খুঁজেছি অনেকদিন ধরে যে আমাকে বুঝবে কিন্তু পাইনি, তুমি কি হবে আমার সেইরকম সাথী?’
কড়াৎ করে বাজ পড়লো কোথাও। চন্দ্রিমা চমকে জানলার বাইরে তাকিয়ে দেখল ঝড় শুরু হয়েছে সেই সাথে বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি। আর একই সাথে ওর মনের মাঝেও! কি করবে ও এখন?