হলো না আর লেখা এনভেলপে
হলো না আর লেখা এনভেলপে
কত চিঠি দিলাম তোমায় জীবনে। অবশ্য তুমি বলবে ওগুলো চিঠি ছিল না, ছিল না চিরকূট। কিন্তু, ক্লাস করতে করতে এর থেকে আর বেশি কি লেখা সম্ভব ছিল? তাই ওই ছোট কাগজে সংকেতে বলা থাকতো আমার বর্তমান ও ভবিষৎ জীবনে তোমায় নিয়ে পরিকল্পনা।
পড়াশোনা শেষ করে তুমি হলে গৃহবন্দী। তবু, আমাকে দমাতে পারেনি কোন শক্তি। তোমাদের বাড়ির ছোটদের চকলেট ঘুষ দিয়ে তোমায় পাঠিয়েছি আমার নিবেদন। অস্বীকার করবো না তুমিও পাঠিয়েছো তোমার অসহায়তার বার্তা, সাথে সাথে এটাও জানাতে ভুলতে না আমার যদি আমার একটা চাকরি থাকতো তাহলে তুমি আসতে বেরিয়ে সব ছেড়ে আমার হাত ধরে।
কিন্তু, বেকারের গায়ের গন্ধ, আর পঁচা ড্রেনের গন্ধের যে কোন পার্থক্য নেই পৃথিবীতে আমি বুঝতে পারিনি সেদিন। বুঝতে পারতাম যদি তোমার বিরক্তির কারণ হতাম না কোনদিন।
একদিন ছোটদের হাতের চিঠি পড়লো গিয়ে বড়োদের হাতে। তুমি বলে দিলে ও আমায় স্কুল জীবন থেকেই জ্বালাতন করে। জানো তোমার দেওয়া চিঠি গুলো আজও নেতাজীর ফাইল হয়ে আছে আমার বইয়ের থাকে থাকে।
চিঠিকে একমাত্র হাতিয়ার করে যোগাযোগ রেখে ছিলাম তোমার সাথে। সেটাও বন্ধ হয়ে গেল। তুমি চলে গেলে বিয়ে করে অন্যের হাত ধরে। জানি তুমি সুখে সংসার করছো, আর মনে মনে বলছো এটাই তো হওয়ার ছিল, বিধাতা এটাই চেয়েছিল আমি আর কি করবো বলো!
আমি পৃথিবীতে আজ পরিত্যক্ত অকেজো এক মানুষ। বিলাপ যার একমাত্র অস্ত্র। যার নেই কোন অভিযোগ, অনু্যোগ, অভিমান,অনুরাগ কারো প্রতি; এমন কি নিজের প্রতি। ভেবেছিলাম এই কথা গুলো তোমায় একটা চিঠি লিখে জানাবো, কিন্তু অন্যের হাতে পড়ার ভয়ে সেটাও হলো না কোন নীল এনভেলপে লেখা, রইলো তা পড়ে আমার বইয়ের টেবিলে সাদা চিরকূটে।