Chitta Ranjan Chakraborty

Romance Inspirational

3  

Chitta Ranjan Chakraborty

Romance Inspirational

এয়ীর জন্য

এয়ীর জন্য

9 mins
11.7K



পার্কের সেই বেঞ্চটায় বসে আছে সোমু। প্রতিমাসে শেষ রবিবার সোমু আসে, এখানেই বসে। বেঞ্চের পেছনেই দোলনা, ত্রয়ী এসে প্রথমেই দোলনায় বসে দোল খেতে থাকে। আজ একটু আগেই এসেছে। ব্যাগে ত্রয়ীর জন্য তিনটি জামাপ্যান্ট ,চকলেট, ঠিক ওর মত দেখতে গোটাকয়েক পুতুল এনেছে। বারবার সে ঘড়ির দিকে দেখছে, তিনটা বাজতে আর কয়েক মিনিট বাকি। বারবার সে পার্কের গেটের দিকে দেখছে, ত্রয়ী আসার অপেক্ষা করছে। প্রতিবারই ত্রয়ী এসে দূর থেকে বাবা বাবা বলে চিৎকার করতে থাকে, সোমু দৌড়ে গিয়ে ত্রয়ী কে জরিয়ে ধরে চুমু খেয়ে কোলে তুলে নিয়ে আসে। ত্রয়ীও বাবাকে এতদিন পর কাছে পেয়ে বাবাকে আদর করতে থাকে।সোমু ভীষণ কাঁদে।ত্রয়ী বাবার চোখের জলমুছে দিয়ে বলে তোমার ভীষণ কষ্ট হয় বাবা?চোখের জল মুছে ত্রয়ীকে আদর করতে করতে বলে আমার ভীষণ কষ্ট হয় মা।আমার জন্য তোমার কষ্ট হইনা মা?ত্রয়ী বলে হ্যাঁ কষ্ট হয়।মাকে রোজ বলি তুমি বাবার সাথে থাকনা কেনো? আমার বাবাকে ছাড়া ভালো লাগেনা।মা কিছু বলেনা,আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে খেতে বলে তোর বাবা ভীষণ দুষ্টু ,পচা ।আর আমরা ওই বাড়িতে যাবনা।তুমি আমার কাছে থাকবে মাসে একবার করে ওর সাথে দেখা করবে।

জয়ী আর আমার ভালোবাসা করে আমার মা র অমতে আমাদের বিয়ে হয়েছিলো সাত বছর আগে।বিয়ের পর থেকে সামান্য কথা বা জিনিস নিয়ে মা র সাথে ,পরে আমার সাথে ঝগড়া করতে থাকে।আমার ছোট চাকরি আয় কম কিন্তু ওর চাহিদা পূরণ করতে আমাকে প্রায় প্রতি মাসে বন্ধুদের কাছে হাত পাততে হতো।এতে আমি বহু টাকা ঋণ করে ফেলি।ওকে রোজ বোঝাতাম তুমি আমার সব কিছু জেনে শুনেই এসেছ।এটা তোমার সংসার তোমাকে মানিয়ে নিয়ে চলতে হবে।কিন্তু জয়ী ভীষণ এক গুয়ে।মা কে নিয়ে সংসার করতে রাজি নয় সে। আমাকে নিয়ে অন্য জায়গায় গিয়ে ঘর ভাড়া করে থাকতে চায়। আমি বলি তা হয় না, মা এত কষ্ট করে আমাকে মানুষ করেছে আর মায়ের বয়স হয়েছে অনেক কতদিনই বা আর বাঁচবে,তাছাড়া তোমার আমার সম্পর্ক মা মেনে নিয়েছেন। সংসারের প্রায় সব কাজই তো মা করে। তোমাকে তো কখনো কাজের কথা বলে না। তুমি কেন মিছেমিছি মায়ের সাথে এমন ব্যবহার করো এতে আমার ভীষণ কষ্ট হয়। আমাদের তিনজনের সংসার আমি যে টাকা পাই এই টাকায় হিসেব করে আমাদের সংসার চালাতে হবে। কিন্তু জয়ী বলে আমি এত কষ্ট করে সংসার চালাতে পারবো না। আগে জানলে তোমাকে আমি বিয়ে করতাম না। আমি ওকে বলি বিয়ের আগে তো বারবার বলেছো তুমি যেভাবে রাখবে সেভাবেই থাকবো আমাদের সংসার হবে সুখের। সংসার হাসি-খুশিতে ভরে থাকবে তোমার সামান্য টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চলবে। কিন্তু এখন যদি তুমি এভাবে অশান্তি করো, কষ্ট তোমার ও যেমন হয় আমারও হচ্ছে এবং মায়ের হচ্ছে। আমি তো প্রতি মাসে আমার বেতনের টাকা তোমার হাতে তুলে দিই আমি তো কোনদিন তোমার কাছে টাকার হিসেব নেই না। তুমি যে ভাবে সংসার চালাচ্ছো চালাও কিন্তু অশান্তি করোনা।


এভাবে ওকে বহুদিন বোঝানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু জয়ী আবার নিজের পথে চলতে লাগলো। কথায় কথায় আমার মাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে আমার সঙ্গে আরো বেশি খারাপ ব্যবহার করে। এর মধ্যেই জয়ীর কোল আলো করে এলো ত্রয়ী। তখন ভাবলাম জয়ী হয়তো বা এবার ভালো হয়ে যাবে ভালো করে সংসার করবে। সে কিছুদিন ভালো ভাবে চলার পরে, এয়ীর বয়স যখন দু বছর সে একদিন ভীষণ অশান্তি করে বাড়ি থেকে এয়ীকে নিয়ে বেরিয়ে যায়। আমি বাধা দিলে সে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। মা তাকে বারবার আটকানোর চেষ্টা করলেও সে মাকে অপমান করে গালিগালাজ করতে করতে চলে যায়।


এই ঘটনায় আমি এবং আমার মা ভীষণ ভেঙে পরি। এয়ীর জন্য বারবার মনটা আকুল হয়ে যেত ওকে দেখতে না পেয়ে পাগলের মত হয়ে যেতাম। কিন্তু কে বুঝবে আমার মনের কথা। তারপর আমার অনেক আত্মীয়-স্বজন কে ধরে ওকে ফিরিয়ে আনার জন্য বহু চেষ্টা করেছি। কিন্তু কিছুতেই জয়ী আর ফিরে আসেনি।


কিছুদিন পর হঠাৎ আমি ওর পাঠানো ডিভোর্সের নোটিশ পেলাম । সেই চিঠি পেয়ে তো আমার মাথায় পাহাড় ভেঙ্গে পড়ল যেন মনে হলো। আমি কিছুতেই জয়ীর এই সিদ্ধান্তের কথা মেনে নিতে পারলাম না। আমি আমার উকিল মারফত অনেক আপোষের চেষ্টা করলাম। কিন্তু তাতে কোনো ফল হলো না। অবশেষে আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেল। আমি আবেদন রাখলাম মেয়েটাকে যেন আমি সপ্তাহে একদিন করে দেখতে পাই, কিন্তু কোর্ট বলল মাসের শেষ রবিবার করে প্রতিমাসে একবার করে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারব। ঐদিন বিকেলবেলা এয়ী আমার সঙ্গে থাকবে। তাই আমি প্রতি মাসের শেষ রবিবার এয়ীর জন্য অপেক্ষা করি। আমরা নিজেরা ঠিক করেছি এই পার্কে জয়ী এয়ীকে নিয়ে আসবে আমার কাছে রেখে সে চলে যাবে, এবং পাঁচটার সময় এসে ত্রয়ী কে নিয়ে চলে যাবে এই কঠিন শর্তে আমি রাজি হয়েও প্রতি মাসের শেষ রবিবার এয়ী কে দেখার জন্য এই পার্কে অপেক্ষা করি।

সময় পার হলেও কেন ত্রয়ী আসছে না আমার ভীষন চিন্তা হয়। তবে কি ওরা আজকে আসবে না? ওর কি শরীর খারাপ করেছে, না জয়ী ওকে নিয়ে আসছে না? এমনি ভাবনা ভাবতে ভাবতে বোতল থেকে কয়েকবার জল খেয়ে নিলাম বারবার ওর জিনিস গুলোর দিকে তাকালাম। ভাবলাম তবে কি তাহলে ওর শখের জিনিস গুলো ওকে দেওয়া হবে না? না সে কি করে হয় ত্রয়ী আসবেই। বাড়ি থেকে আসছে হয়তো গাড়ির কোন সমস্যা হচ্ছে। এমনি আগোছালো ভাবনার মধ্যে আমি যেন কেমন হয়ে গেলাম বারবার মনটা কেঁদে উঠছে ওর জন্য। একটি মাস যেন কত বছর ওকে দেখি নি ওকে না দেখলে আমি কিছুতেই থাকতে পারবো না। যদিও আমাকে শাস্তি দেবার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ও সুখে থাকুক কিন্তু আমি যেন ত্রয়ীকে যেমন করে প্রতিমাসে একদিনের জন্য ওকে দেখতে পাই এটা যেন ঠিক থাকে।


এমনি ভাবনা ভাবতে ভাবতে গেটের দিকে তাকিয়ে দেখি এয়ী আসছে ওর মা এর হাত ধরে আমি তো অবাক হলাম, হঠাৎ জয়ী কেন আসছে এয়ীকে নিয়ে? কোনদিন তো ও ত্রয়ীর সাথে আমার পাশে আসে না, আজ কেন জয়ী আসছে ঠিক বুঝতে পেলাম না। ওকে দেখে আমার বুকের ভেতরটা ধপ ধপ করে উঠে।, ভয় শঙ্কা অভিমান, অথবা বহুদিন পর ওকে দেখার আনন্দে আমার বুকটা দুরু দুরু করছে। নিজেকে সামলে নিয়ে বসে রইলাম। এয়ী ওর হাত ছেড়ে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, দেখো বাবা আমি কাকে নিয়ে এসেছি। আমি ওকে আদর করে জড়িয়ে ধরে বললাম, কাকে নিয়ে এসেছ? এয়ী বলে, বাড়ে তুমি যেন মাকে আজ চিনতে পারছ না? আমি আজ জোর করে মাকে এখানে নিয়ে এসেছি, বলেছি মা তোমাকে আমার সঙ্গে যেতেই হবে, নইলে আমি যাব না। অনেক বলার পর মা রাজি হয় তোমার কাছে আসতে।

এতক্ষণে জয়ী এসে আমার সামনে দাঁড়াল মাথা নিচু করে। আমি বললাম বসো, আজ হঠাৎ আমার সামনে এলে যে, তোমার শরীর কেমন আছে? আমি একথা বলতেই ত্রয়ী বলে বাবা মা তোমরা দুজনে বসে গল্প করো আমি দোলনা চড়তে যাই। এই বলে এয়ী উঠে দোলনায় গিয়ে বসলো।


আরও কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর আমি জয়ী কে বললাম, তোমার শরীর কেমন আছে? ও বলল, ভালো নেই ক'দিন থেকে জ্বর চলছে। আমি বললাম ডাক্তার দেখাও নি? ও বলল খেয়েছি ওষুধ। আমি বললাম এখন তোমার সময় কেমন কাটছে, কি করছো? ও বলল কিছুই করছি না সময়টাও ভালো কাটছে না। মনটা ভীষণ খারাপ। আমি বললাম কেন মন খারাপ কেন? ও বলল গত ডিসেম্বর মাসে বাবা মারা গেছেন। মার শরীর ভালো নয়। আমি বললাম তোমার দাদা এখন কি করছে? ও বলে দাদা একটি কোম্পানিতে কাজ পেয়েছে ও এখন ব্যাঙ্গালোরে থাকে।

জয়ী বললা, থাক আমার কথা তোমার শরীর কেমন আছে ? আমি বললাম এই চলে যাচ্ছে ইদানিং মায়ের বাতের ব্যাথাটা বেড়ে গেছে। ও আবার বললো, তোমার কেমন চলছে? আর বিয়ে করোনি কেন? আমি বললাম, আমি আর বিয়ে করব না ঠিক করেছি। ও বলে, কেন বিয়ে করবে না? আমি বললাম না আমি আর বিয়ে করব না । বিয়ে করতে আর মন চাইছে না। এভাবেই জীবনটা কাটিয়ে দেবো। জয়ী একটি দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বলে তা কি হয়? আমি বললাম না হলেও হতেই হবে। আমি ওকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বললাম, এখনো কি তুমি আগের মত রাগ করো? আমার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর তুমি নিশ্চয়ই সুখে আছো! তুমি এবার দেখেশুনে নিজের মতো করে বিয়ে করে নাও। মেয়েদের একা একা থাকতে নেই। ও কিছু না বলে একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল। এর মধ্যেই ত্রয়ী এসে কখন যেন আমাদের দুজনের মাঝখানে বসেছে, আমি টের পাইনি। ত্রয়ী আমাদের নীরবতা ভঙ্গ করে বললা, বাবা তুমি আমাদেরকে নিয়ে বাড়ি যাও না কেন? আমি বললাম, একথাটা তোমার মাকে জিজ্ঞাসা করো। ত্রয়ী ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল, মা কেন তুমি বাবার সঙ্গে থাকো না আমাকে বাবার কাছে যেতে দাও না? আমি কিন্তু আজ আর কোন কথা শুনবো না আজ আমরা তিনজনে ঠাকুমার কাছে যাব ওখানে থাকবো। বাবা তুমি আর মা আর কোনদিন ঝগড়া করবে না। আমি বললাম, তোর মাকে জিজ্ঞাসা কর তো আমি কি তোর মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করি? ত্রয়ী মায়ের মুখের দিকে তাকায়। জয়ী কোন কথা বলে না চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে থাকে,। কিছুক্ষণ পর দেখি অঝোরে কাঁদছে জয়ী। ওর কান্না দেখে আমার চোখেও জল আসে। আমি কোন রকমে নিজেকে সামলে নি। ত্রয়ী ওর মার গলা জড়িয়ে ধরে বারবার বলে মা চলোনা আজকে বাবার সঙ্গে বাড়ি চলে যাই। আমি বলে দিচ্ছি কিছুতেই আমি বাবাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। জয়ী ওকে ধমক দিয়ে বলে, তুই চুপ করবি? আমি বললাম এখনো তোমার রাগ কমেনি জয়ী? ত্রয়ী যা জানতে চাইছে তার উত্তর দাও।

জয়ী কাঁদতে কাঁদতে বলে, কী উত্তর দেবো ওকে? উত্তর দেবার সব পথ যে আমি বন্ধ করে দিয়েছি। এখন আর আমার কাছে কোনো উত্তর নেই। ত্রয়ী আবার কাঁদতে কাঁদতে বলে, মা তুমি রাজি হয়ে যাও আমরা আজ ই বাবার সঙ্গে বাড়ি চলে যাব। বাবা তুমি আমাদেরকে নিয়ে বাড়ি যাবে না?

আমি ত্রয়িকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললাম যাব মা তোকে নিয়ে বাড়ি যাবো। ও বলে মাকে নিয়ে যাবে না। আমি বললাম ও তোর মা, কিন্তু আমার তো কেউ নাই। ত্রয়ী বলে কেন তোমার কি কেউ নয়? আমার মা তোমার কেউ নয় কেন? আমি বললাম, এ কথার উত্তর আমি তোকে দিতে পারব না মা। তোর মাকে জিজ্ঞাসা কর। জয়ী ভীষণ কাঁদতে থাকে কোন কথার উত্তর সে দেয় না। আর কি বা উত্তর দিবে ওতো নিজেই সব উত্তর দেবার পথ শেষ করে দিয়েছে। ত্রয়ী কাঁদতে থাকে, একবার আমাকে জড়িয়ে ধরে আরেকবার ওর মাকে জড়িয়ে ধরে বলতে থাকে, বল মা, তুমি চুপ করে আছো কেন? জয়ী কাঁদতে কাঁদতে বলে, আমার কাছে কোন উত্তর যে নেই মা। আমি ভীষণ অপরাধী ভীষণ অন্যায় করেছি অবিচার করেছি তোর বাবার উপর । সব শেষ করে দিয়েছি আমি নিজের হাতে এখন কি কর কি বলবো? কাঁদতে কাঁদতে জয়ী মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। ত্রয়ী বলে, তুমি কিছু বলো বাবা।


আমি নির্বাক নিথর পাথরের মত বসে থাকি। হাজার প্রশ্ন আমার মনের মধ্যে তোলপাড় করে ওঠে ত্রয়ী কে কি কথা বলবে, খুঁজে পায়না।

হঠাৎ সোমু বলে, আজ একটি কথা বলব জয়ী, তুমি রাখবে আমার সে কথা? যদিও বলার অধিকার নেই আমার তবুও বলতে হচ্ছে ত্রয়ীর জন্য, আমরা কি আবার সব ভুলে গিয়ে নতুন করে তৈরীর জন্য নতুন জীবন শুরু করতে পারিনা? জয়ী আমার কোন কথার উত্তর দেয় না.। ত্রয়ী ওর মাকে বলতে থাকে কিছু বলো না, চলো আজি বাবার সঙ্গে বাড়ি চলে যাব। আমি বলে দিচ্ছি আজ কিছুতেই তোমার সঙ্গে মামার বাড়ি ফিরে যাব না।


আমি এবং জয়ী দুজনেই অবাক দৃষ্টিতে এয়ীর দিকে তাকিয়ে থাকি। কিছুক্ষণ পর নীরবতা ভেঙে জয়ী বলে, সোমু তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি যে ভুল আর অন্যায় করেছি জানি তার ক্ষমা নেই। আমি আজ বুঝতে পারছি জীবনে ভীষণ ভুল করেছি। আমাকে আর একটি বার ভুল শুধরে নেবার সুযোগ দাও। এই বলে জয়ী সোমুর হাত ধরে কাঁদতে থাকে। ত্রয়ী বলে, এবার তো হলো বাবা, মা তো সব ভুল স্বীকার করে নিয়েছে। তুমি একবার রাজি হয়ে যাও না বাবা। নইলে আমি বলে দিচ্ছি আমি কিন্তু কিছুতেই ফিরে যাব না।

সোমু বলে, ঠিক আছে মা তোমাদেরকে আমি নিয়ে যাব তবে আজকে নয় কদিন পর।

এয়ী বলে, আজকে নয় কেন, কদিন পরে টরে আর হবে না। আজি আমাকে নিয়ে বাড়ি যেতে হবে।


জয়ী বলে, যাওনা সোমু ত্রয়ী যখন এত করে বলছে আর আমাদের ভাঙ্গা সম্পর্ককে নতুন করে জোড়া লাগিয়ে দিতে চাইছে চলনা, আমরা ওর কথা শুনি।


কখন যে ঘড়িতে ছটা বেজে গেছে কিছুই বুঝতে পারিনি। জামাকাপড়ের প্যাকেটটি এয়ী র হাতে দিয়ে বললাম, আজ চকলেটের কথা ভুলে গেছি । ত্রয়ী বলে, না আজ আর চকলেট খাব না, তুমি আমাদেরকে বাড়ি নিয়ে যাও বাড়িতে গিয়ে আমি চকলেট খাব। ওকে কোলে নিয়ে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। জয়ী যেন কেমন অপরাধীর মতো চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। একটু পরে বলে সন্ধ্যা হয়ে এলো একটি গাড়ি ডেকে আনো, ত্রয়ী কে নিয়ে আজ আমাদের বাড়িতেই যাব।

আমি অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম ভাবলাম এ কি সত্যি না স্বপ্ন দেখছি। জয়ী কে তাহলে আবার নতুন করে ফিরে পাব? এই পাওয়া শুধু ত্রয়ীর জন্য সম্ভব হল। এই ভেবে তিনজনে এগিয়ে যায় রাস্তার দিকে।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance