Bhaswati Ghosh

Romance Fantasy

3  

Bhaswati Ghosh

Romance Fantasy

একটুকরো সবুজ জমি

একটুকরো সবুজ জমি

8 mins
9.8K


আমি অদিতি,অদিতি রয়।হাইট পাঁচ ফুট ছয়, বাঙালী মেয়েদের গড়পড়তা উচ্চতা থেকে একটু বেশিই।আমার মেদহীন হিলহিলে শরীরের প্রতিটা খাঁজ বহু পুরুষের রাতের ঘুম উড়িয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট।তারসাথে মানানসই টানাটানা চোখ,ইষত্‍ কোঁকড়ানো চুল আর করাতে কাটা নিখুঁত পানপাতার মত মুখের গড়ন.হালকা গোলাপী পাতলা ঠোঁট, তার সাথে মানানসই গায়ের রঙ।মা বলে আমার গায়ের রঙ নাকি কাঁচ কাঁচ।সেটা কি জানি না তবে ফ্যাটফ্যাটে ফরসা নয় উজ্বল চটকদার।আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বহু পুরুষের হৃদয়ে কাঁপন লাগে। আমার রূপ আশপাশের নারীদের কাছে ঈর্ষনীয়, সেটা কেউ না বললেও আমার বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না।এক কথায় আমি হলাম রূপের আগুন, যে আগুনে বহু পতঙ্গ ঝাঁপ দিয়ে মরবার জন্য ডানা ঝাপটায়।তিলতিল করে পুড়ে মরে।আর আমি তৃপ্ততার আগুনে আরাম করে গা সেঁকি।আমার মাও ছিলেন অসামান্য সুন্দরী বরং বলা যায় আমার থেকে এককাঠি ওপরে।এখন মাজা ঘসার অভাবে তাতে জং ধরেছে।আমি তাই সচেতন নিজের রূপ সম্পর্কে।মোটামুটি শৈশব পরোনোর পর থেকেই বুঝে গেছি আমি ঠিক খেঁদি.পেঁচি সাধারণ আর পাঁচটা মেয়ের দলে পড়িনা।আমাকে দেখে পাশের বাড়ির দাদুর মনে অকাল যৌবন এসে হাঁকুপাঁকু করে.শান্তশিষ্ট ভদ্রনিষ্ট সুদেব কাকু সমাজ- সেবক হিসাবে যার নাকি বিশাল সুখ্যাতি রয়েছে, অকারণেই সকলের অগোচরে দামী ইম্পোর্টেড পারফিউমের শিশি হাতে গুঁজে দিয়ে যায়।পাশের বাড়ির সুলেখা আমার সাথে স্কুলে যেতে অনিচ্ছুক কারন,পাড়ার উঠতি যুবকেরা তাদের নতুন কেনা বাইকে চড়াতে বা স্কুলের ঐ পথটুকু আমাকে সঙ্গ দিতে আকুল থাকে।আমিও যে উপভোগ করিনা সেটা বললে ডাহা মিথ্যে- বাদী বলা হবে আমাকে।যতই পাড়ায় আমি নষ্ট,ঢলানী ইত্যাদি ইত্যাদি ভাষায় ভূষিত হই, মিথ্যেবাদী যে আমি নই তা আমার পরম শত্রু মাসীমা পিসিমা ও স্বীকার করবেন।শৈশব আমার দশেই অতিক্রান্ত । ঐ সব মিষ্টি পুতুপুতু শৈশবে আবদ্ধ থাকলে আমার চলবে না সেটা দশ বত্‍সর বয়সেই বুঝে গিয়েছিলাম।পাঁড় মাতাল,জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত আমার বাবা অচিরেই টিকিট কেটে ওপারের ট্রেন ধরেছিলেন।এরপর আমার সর্বংসহা মা কিভাবে সংসার চালায় তা আমি নিজের চোখেই দেখেছি।যদিও আমাদের পাড়াপ্রতিবেশীর কাছে আমার মা ছিল ছেলেধরা।যা রটে তার কিছুটা ঘটে, কিন্তু আমি দেখেছি এক্ষেত্রে রটনার অনেকটাই ভুল।বড়,ছোট কোন ছেলেই মা ধরেনি।বাবার মৃত্যুর পর সেলসের চাকরিতে ঢোকে মা,বাবারই এক বন্ধু-র বদান্যতায়।হঠাত্‍ করেই কেন জানি না বাবার মৃত্যুর পর বাবার ঐ বন্ধুটির আমাদের মা মেয়ের প্রতি টানটা বেড়ে গিয়েছিল।সেই সময় দেখেছি মায়ের শাড়ির আঁচলটা চা সার্ভ করবার সময়ে একটু সরে যেত।ইচ্ছাবশত না অনিচ্ছাবশত এখনও জিজ্ঞাসা করা হয়নি।যাই হোক ঐ টুকুতেই সেলসের চাকরিটা জুটে যায়।তারপর পাকা ব্যাটসমানের মত মা আমার সোজা ওভার বাউন্ডারী কষিয়ে কাকুটিকে দোরগোড়ার ওপারে পাঠায়।না, তারপর থেকে আর কোনদিন ঘরের এপারে পা রাখার সুযোগ আমার ঐ কাকুটি পাননি।এরপর থেকে মায়ের ব্লাউজে কাপড়ের পরিমান কমে গেলেও শাড়ির আঁচল যে সরাতে হয়নি তা আমি হলফ্ করে বলতে পারি।তবে ঐ সময়টাই আমাকে শৈশব থেকে অচিরেই এনে ফেলে কঠোর বাস্তবের সামনে ।হয়ে উঠলাম মেয়েটা থেকে নারী। আমার মা একটা কথা বার বার বলেন,'' নিজের যা সম্পদ সেটাকে নষ্ট করিস না।''এছাড়া পুরুষের চোখের তারায় আমি বারবার দেখি আমার অতুল সম্পদের প্রতিচ্ছবি।তাই শৈশব পার করার পর থেকেই নিজের সম্পদ সর্ম্পকে সচেতন হয়ে উঠলাম।পড়াশোনা টেনেটুনে বি.এ পাশ।এর জন্য তবে আমার কতটা দোষ দেওয়া যায় সেটা বিবেচ্য বিষয়।বহু দরকারী কাজের ভিড়ে পড়াশোনা করার সময়টাই কোথায়?যোগ ব্যায়াম,রূপ চর্চা,ডায়েট চার্ট মিলিয়ে খাওয়া দাওয়া, তার মাঝে আমার স্তাবকদের লিস্ট করা,তাদের মেসেজের এ্যানসার দেয়া,বয়ফ্রেন্ডের সাথে ফোনে কথা বলা, এগুলো তো আছেই।আমার আবার দুমাস অন্তর বয়ফেন্ড চেঞ্জ না হলে ঠিক পোষায় না।কিভাবে পোষাবে বলুন একজন দুমাসের বেশি আবার আমার আব্দার টানতে পারে না।তবে এবারে মায়ের হুকুম হয়েছে একজনকে পার্মানেন্ট বাছতে।কিন্তু কোনটাকে যে বাছি?রাহুলকে?ডাক্তার ছেলে টাকা পয়সা ভালোই, তবে মালটার আবার ছোঁকছোঁকানি বড্ড।বিয়ের আগেই একটু টেস্ট করতে চায়।লোকে যতই বলুক আমি নাকি নষ্ট মেয়ে। কিন্তু হলফ্ করে বলতে পারি আজ পর্যন্ত লিপ-কিসের পর আর কোন বয়ফ্রেন্ড এগুতে পারেনি।নাঃ রাহুল ক্যানসেল।দূর্, ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের ভিড়ে আমি হাঁকুপাঁকু খাচ্ছি এর মধ্যে অমল দা কলিং!অমল দা আমায় ফোন করছে!

এই বোধহয় প্রথম অমলদা আজ বিকালে আসবে আমাদের বাড়ি।আমার জ্বালা আমার যন্ত্রনা যে অমলদা, সেই অমলদা নিজে আসবে আমাদের বাড়ি?তবে কি আমার এতদিনের চাওয়াটা পূর্ণ হবে?তবে তো আমার খুশি হওয়ার কথা কিন্তু, আমার গলার টনসিলটা এত টনটন করছে কেন?চোখটা এত জ্বালা করছে কেন?কেন মনে হচ্ছে অমলদা কিছুতেই যেন হেরে না যায় ।অমলদা আমার শৈশবের ডানা মেলার একমাত্র আকাশ।মাতাল বাবার হাতে মার খেয়ে মায়ের যন্ত্রনার গোঙানী।সারা ঘরটা একটা নরককুন্ড ।যে নরকে আমার প্রতিটা শৈশবের দিন পচে গলে আমায় বড় করে তুলেছে।আজ মায়ের খোলা পিঠ দেখে সবাই ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেয় কিন্তু, সেদিন তো কেউ আসেনি মায়ের পিঠের কালসিটে দাগ গুলো গুনতে।কতদিন অজ্ঞান মায়ের বুকের উপরেই কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়ে পড়েছি, কেউ তুলে এক মুঠো মুড়ি মুখে দেয়নি।পরের কেচ্ছা কেলেঙ্কারীতে কে আর জড়াতে চায়?তখন আমি এই অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পড়া দেখতে ছুটে যেতাম অমলদার কাছে।যদিও অমলদা বোর্ডিং-এ থাকত তবু বাড়ি এলেই আমার মত আরো ছেলে মেয়েকে নিয়ে অমলদা গড়ে তুলেছিল বিনা পয়সার কোচিং ক্লাস।প্রথম দিকে যেতাম বাড়ি থেকে পালাতে, পরে যেতাম অমলদার টানে।কিন্তু যেখানে সকল পুরুষের চোখ ঝলসে যেত আমার রুপের আগুনে,সেখানে অমলদা সেই ছোট্ট বেলার মতই নির্বিকার।যেন সেই ছোট্ট অদিতিই আছি আমি।

ভালবাসা,মুগ্ধতা না হোক, নিদেনপক্ষে যদি ঘৃণাও আবিষ্কার করতাম অমলদার ঐচোখে ।কিন্তু ঐ উদাসীনতা আমাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিত।তাই বারবার কারণে অকারণে হানা দিতাম অমলদার ঘরে।কিন্তু বিরক্তি বা ভাললাগা কোন ছাপই থাকতো না ঐ চোখে।এত মানুষের স্তাবকতা , এত মানুষের ঘৃণা,ঈর্ষা্‌,সব যেন মিথ্যে মনে হোত । তাই বার বার ছুটে গিয়ে ভালবাসা না পারি, ঘৃণাটুকু অন্তত জাগাবার চেষ্টা করতাম। অমলদা গল্প লেখেন।নামকরা একজন লেখক।আমি একবার অমলদাকে বলেছিলাম ,''একটা নষ্ট মেয়ের গল্প লেখ না?''অমলদা বলেছিল,'' সে যে বড় কঠিন লেখা । শেষখানে গিয়ে দেখি কোন মেয়েই নষ্ট হয় না।এক টুকরো সবুজ জমি মনের কোনে ঠিক ওঁত পেতে থাকে।আর যারা ভাবে নিজেদের নষ্ট, তারা যে মোটেই নষ্ট হতে পারে নারে।''এই অদিতি নামের এই মেয়েটাকে সেদিন আশ্রয় খুঁজতে হয়েছিল ওয়াশরুমের আড়ালে।এক টুকরো সবুজ জমি!সেটা কোথায় থাকে?কেন যে ধরা -বাঁধা হিসেব কে গুলিয়ে দেয় অমলদা।তবে অমল ঘোষ তুমিও তো রক্ত মাংসেরই মানুষ।তোমাকেও হার স্বীকার করতে হবে অদিতি রয় এর কাছে, আমি নিশ্চিত আজ তোমার ফোন পাওয়ার পর থেকেই।এর বীজ আমি রোপন করে এসেছিলাম সপ্তাহ খানেক আগেই। -

সেদিনও হঠাত্‍ করে হানা দিয়েছিলাম অমলদার ঘরে।কিন্তু ঘরে ঢুকেই দেখি একজন মধ্য বয়স্ক ভদ্রলোক সোফায় বসে।আমি কি করব বুঝতে না পেরে ফিরেই আসছিলাম।কিন্তু ভদ্রলোকটিই হঠাত্‍ পেছন থেকে ডাকলেন,''-আরে ম্যাডাম্ চলে যাচ্ছেন কেন?আমি এখনি উঠবো।''অমলদা দেখলাম কি বলবে বুঝতে পারছিল না।শুধু হালকা করে জিজ্ঞাসা করলো,'' কিছু দরকার?''আমি কিছু না বলেই অন্য খেলায় মেতে উঠলাম।মনে মনে একচোট হেসে নিলাম,অমল ঘোষ এবার মনে হচ্ছে তোমায় ফাঁদে ফেলতে পারব।কিছু না বলে আমি সোজা ভদ্রলোকটির দিকে এগিয়ে গিয়ে ডান হাতটা বাড়িয়ে দিলাম।ভদ্রলোকটি হ্যান্ডশেক করে নিজের সম্বন্ধে যা জানালেন,-উনি হলেন সিনেমার প্রযোজক।দু একটা কথার পর-ই উনি ওনার প্রযোজিত সিনেমায় অভিনয় করবার জন্য আমায় অফার করে বসলেন।আমি অমলদার গম্ভীর মুখের দিকে তাকিয়ে হেসে হেসে ওনার নাম্বারটা আগ্রহভরে সেভ্ করে রাখলাম।উনি এরপর কয়েকটা কথা মিটিয়ে নিলেন অমলদার সাথে ,আর আমাদের বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে গেলেন।সেই প্রথম আমি নির্বিকার অমলদার থমথমে মুখ দেখে জিতে যাওয়ার আনন্দে মনে মনে একচোট হেসে নিলাম।এরপর একসপ্তাহ হয়ে গেছে।প্রযোজক মহাশয় আমায় দেখা করতে বলেছেন ফোন করে।যদিও জানি দেখা আমি করব না্‌,ওসব সিনেমা টিনেমায় কোন আগ্রহ আমার নেই ।তবু হ্যাঁ বলেছি শুধু অমলদার ঐ নির্বিকার মুখোশটাকে ছিঁড়ে ফেলতে।                                                            

রেজিস্ট্রী পেপারে সই করবার সময় অমলদার হাতে হাতটা একবার ছুঁয়ে গেল।অকারনেই একটু দেরী করে হাতটা সরালাম।হয়ত এই শেষ ছোঁয়া।আমাদের বিয়ের রেজিস্ট্রী তে শুধু সাক্ষী দেবার জন্যই আজ দুমাস অপেক্ষা করে আছেন অমলদা।এখান থেকে বেরিয়েই সোজা ট্রেন ধরে পাড়ি দেবে ঋষি অরবিন্দের আশ্রমের উদ্দেশ্য পন্ডিচেরীতে।আমি আর সুজয় দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিলাম অমলদাকে। সুজয় হল অমলদার বন্ধু আর জুঁই- দি'র দাদা।জুঁইদি হল সেই ভাগ্যবতী যে অমলদার একমাত্র ভালবাসা।না, কোন হিংসা,রাগ,ক্লেশ আজ স্পর্শ করছে না আমায় আজ । বোর্ডিং এ থাকার সময়ই জুঁই দির সাথে অনুচ্চারিত মন দেওয়া নেওয়া অমলদার।কিন্তু তার দুমাস পরেই একটি এডুকেশনাল ট্যুরে গিয়ে এক বাস এ্যাক্সিডেন্টে পাহাড়ি ধ্বসের নীচে চিরকালের জন্যে ঘুমিয়ে পড়ে অমলদার জুঁই । এরপর শুধু জুঁই দি'র স্মৃতিটুকুই অমলদার চিরকালের আশ্রয় হয়ে ওঠে।জুঁইদির দাদা সুজয় একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক। সেদিন বিকালে আমার বাড়ি এসে অমলদা প্রথম তার জীবনের বন্ধ থাকা পাতা গুলো আমার সামনে খুলে ধরেন।বাচাল এই অদিতি আমি কেন জানি না বোবা হয়ে গিয়েছিলাম।নিজের প্রতি ঘৃণায় কুঁকড়ে উঠেছিলাম।অমলদা সরাসরি বলেন আমায়,আমি কেন সিনেমায় আগ্রহী তা তার অগোচর নয়।কিন্তু অমল দা নিরুপায়।দুহাত জোড় করে আমাকে অনুরোধ করেন এই ভুল পথে আমি যেন পা না বাড়াই কারন,ঐ প্রযোজকের মেয়েদের সিনেমায় টোপ দিয়ে ফাঁসানোর বহু রেকর্ড রয়েছে।অমলদার চোখে আমি এই প্রথম জল দেখলাম।না আমি চুপ করে থাকতে পারিনি ,আমার জীবনের এইটুকু সবুজকে ধূসর হয়ে যেতে আমি দিতে পারিনি। তাই অকারণেই মিথ্যে বলেছিলাম,-"দুর্ আমার জন্যে মা ছেলে খুঁজছে, সিনেমা কে করবে?বরং ছেলে থাকলে মাকে খোঁজ দেবে।" কিছুক্ষণ অমলদা অবাক দৃষ্টি মেলে চেয়ে থাকে আমার দিকে।তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার সময় শুধু মাথায় হাত রেখে বলেন,-"কত বড় হয়ে গেছিস রে তুই ?'' এর কিছুদিন পরে সুজয়ের সাথে সম্বন্ধটা আনে অমলদা।অমলদার বাড়িতে সুজয়কে বহুবার দেখেছি।ভাললাগা আমার প্রতি ছিল বুঝতাম।কিন্তু শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করে কাছে আসবার শিক্ষা ওর ছিল না।তাই বন্ধুর পরিচিতার সাথে গায়ে পড়ে আলাপ করার স্পর্ধা দেখায়নি।কিন্তু অমলদার প্রস্তাবের পর ও আর ওর বাড়ির লোক এক কথায় রাজী হয়ে যায়।সুজয়ের জন্যে সেই সময় মেয়েও খুঁজছিলেন ওর বাবা-মা । আমারো সুজয়কে বেশ ভাল লেগে গেল, ওর চোখের দৃষ্টি আমার শরীরের খাঁজ খুঁজে ফেরেনা। ফোনের ওপারে আমাদের আলাপচারিতা শুধু বউভাতের রাতের আলোচনায় সীমাবদ্ধ থাকেনা । সুজয় জানতে চায় আমার প্রিয় খাবার,প্রিয় সখ,প্রিয় জায়গার নাম।রূপের বাইরে আমার মধ্যে আর একটা আমির খোঁজ করেছে সুজয়।যে মেয়েটা ঝগড়া করে, খুনসুটি করে,ভালবাসে,অকারনে ঘর সাজায়।পড়াশোনাটা যাতে আবার শুরু করি তার জন্যে শাসনের নির্দেশ এসেছে।তবু আমি জানি, এতসবের মাঝে সুজয় অমলদা নয়।আসলে অমলদা তো আমার একটুকরো সবুজ জমি। যে জমিকে আজীবন লালন করব মনের গভীরে।

দৃঢ় মানুষটা হেঁটে চলেছে তার কর্মের আহ্বানে।জানি অমল দা তোমার এই শক্তি যে জুঁই'দি।সুজয়ের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলাম।কথা দিলাম অমলদা ,সুজয়কে খুব ভালবাসবো।খুব ভালবাসবো খুব। ওকে আমি ভাল রাখবো, তোমার বিশ্বাসের মর্যাদা দেব আমি আজীবন।তোমার কর্ম বাইরে আমার কর্ম ঘরে। আমার শক্তি যে তুমি অমলদা।তুমি যে আমার একটুকরো সবুজ জমি।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance