Bhaswati Ghosh

tragedy

2  

Bhaswati Ghosh

tragedy

চিরসখা

চিরসখা

7 mins
4.5K


[ প্রথম পর্ব ]

ক্ষমা করবেন এই দিনটা আমি কোনো প্রোগাম করি না ভাই।এরপর তোমরা শুধু এই দিন বাদে আগে থাকতে কিছুটা যোগাযোগ করো আমি কথা দিচ্ছি তোমাদের ওখানে প্রোগাম করবো।

বিরস মুখে তিনটি ছেলে নমস্কার করে বেরিয়ে গেল।তাদের দেখে স্পষ্টতঃ মনে হল বিশেষ হতাশ হয়েছে তারা।

ওরা চলে যেতেই সরমা দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে সোফায় এসে বসল।একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল।খুব খারাপ লাগছে এইভাবে ফিরিয়ে দিতে কিন্তু ঐ দিনটার জন্য নিরুপায় সরমা।

এক কাপ কফি নিয়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো সরমা।শেষ বিকেলের আলো লাল আভায় ভরিয়ে তুলেছে সীমান্তের আকাশটাকে।যেন একমুঠো আবীর কেউ ছড়িয়ে দিয়েছে।একটা সাদা বকের সারি মাথার উপর দিয়ে দ্রুত উড়ে গেল ঘরে ফেরার তারায়। বস্তির ঘর গুলো থেকে একটা ধোঁয়ার কুন্ডলি আকাশে মিশে যাচ্ছে।বারান্দা থেকেই একটা মাঠ দেখা যায় কিছুটা দূরে।ওখান থেকে মাঠ টাকে দেখলেই মনে হয় একটা সবুজের গালচে পাতা।খুব ভাল লাগে দেখতে সরমার।কোনো দিনই তো সবুজ মাঠে গড়াগড়ি খেয়ে বন্ধুদের সাথে হুটোপাটি করে মাটির গন্ধ নেওয়া ওর হলনা।চিরকাল শুধু দূর থেকে সবাই এর খেলাই দেখে গেল।ছোট বেলায় খুব ইচ্ছা করতো ওদের সাথে ও দৌড়াবে মাঠে।কিন্তু ওর মত হাঁদা বোকা অ্যাবনর্মাল বাচ্ছাকে কেউ খেলার সাথী করে ডাকত না।উলটে দূর থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলা দেখলে সবাই মাটি এনে গায়ে ছুঁড়ে দিত।চুল ধরে টানত,পায়ে ল্যাঙ মেরে ফেলে দিত যেন ও একটা মজার বস্তু।তবু ও যেত আশায় যদি ওরা খেলতে নেয়।কিন্তু একদিন ওদের ক্লাসের একটা তারই বয়সি বাচ্ছা মাঠে বসে পিয়ারা খাচ্ছিল।হয়তো আনমনে দু একবার চেয়েছিল।সাথে সাথে অন্য বন্ধুদের জড়ো করে ওকে হ্যাঙলা নজর দিচ্ছিস কেন?চোখ গেলে দেব বলে ঘা কতক বসিয়ে দেয়।সেদিন ওর ছোট্ট বুকটায় প্রথম আত্মসন্মানে মোচড় দিয়ে উঠেছিল।ও তো পিয়ারার দিকে এক বারো তাকায় নি।ও তো শুধু খেলা দেখতেই আসে।ও তো বোকা কিন্তু কারো তো ক্ষতি করে না।তবু ওরা ওকে হ্যাঙলা বললো!আর দাঁড়াতে পারেনি ও এক ছুটে বাড়ি চলে আসে।সেদিনের পর থেকে আর কোনো দিনই খেলার মাঠে সরমা যায়নি।ঘরের কোনে আরো একা আরো চুপচাপ হয়ে ওঠে।

অনেকক্ষণ থেকে বেল বাজছে।পুরানো স্মৃতি থেকে ফিরে আসে সরমা।দ্রুত গিয়ে দরজা খুলে দেয়।কাজের মেয়ে ঝিনুক।ওকে সরমা রাতের জন্য কিছু আজ বানাতে না করে।ওবেলার খাবার টাই গরম করে নেবে বলে।ঝিনুক তাই চলে যায়।অনেকক্ষণ অন্ধকার হয়ে এসেছে।অন্ধকারে ছাদে গিয়ে একটু দাঁড়ায় সরমা।ভীষণ অস্থির লাগছে আজ।আকাশে ঘন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে চাঁদটাও মেঘের আড়ালে মুখ লুকিয়েছে।একটা বাদল হাওয়া বয়ে আসছে।বেশ শীত শীত লাগে সরমার।নীচে নেমে আসে।কিছুক্ষণের মধ্যেই ঝম্ ঝম্ করে বৃষ্টি শুরু হয়।এক কাপ কফি করে নিয়ে সরমা রবীশঙ্করের সেতার এর ক্যাসেট টা চালিয়ে দেয়।মেঘমল্লার রাগে সেতার এর ঝংকার ছড়িয়ে পড়ে ঘরের প্রতিটা কোনায়।সরমা ঘর অন্ধকার করে চোখ বুজে সেতার টা শুনতে থাকে।মনের অস্থিরতা অনেকটা কমে আসে।আজ হঠাত করে অনেকদিন পর স্মৃতির ঝাঁপিটা খুলে দেখে দিচ্ছে 20 বছর আগের দিনগুলো।

ক্লাসের প্রথম বেঞ্চে সরমা। হঠাত্‍ এক স্যার উঠতে বললেন।কিছুক্ষণ আগেই কি বোঝালেন জিজ্ঞেস করলো।সরমা কিছুটা বুঝলেও ভয়েতে কথা হাড়িয়ে ফেললো।আসলে এই ভয়টাই ওর সমস্ত চেতনাকে গ্রাস করে রাখে।পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত ছোট্ট সরমা ছিল বুদ্ধিমতী,ছটফটে আর পাঁচটা বাচ্ছার মতই।ওর যখন পাঁচ বয়স দাদা,বাবা,মার সাথে মন্দিরে পূজা দিতে যাচ্ছিল হঠাত্‍ বাসে বাসে আক্সিডেন্ট।সরমা ছিটকে পড়ে যায় মায়ের কোল থেকে।আর দাদা সম্পূর্ণ পঙ্গু হয়ে যায়।দৃষ্টি শক্তি ও হারায়।পুরানো স্মৃতি ও লোপ পেয়ে যায়।মা বাবা অল্প আহত হয়।সরমাকে এর পর থেকে একটা ভয় আতজ্ঞ গ্রাস করে ওর চেতনাকে।অল্প চিন্তা ভাবনাতেই শ্বাস কষ্ট শুরু হত।বাইরে বেরোতে ভয় পেত।একমাত্র সঙ্গী হয়ে ওঠে ওর দাদা।দাদার কাছে বসেই ওর যত গল্প।দাদাও অল্প স্মৃতি ফিরে পেয়েছে চিকিত্‍সায়।দাদার চিকিত্‍সার বিপুল ব্যায় ভার বহন করতে করতে সরমার বাবা মা নিঃস্ব হয়ে ওঠে।এরপর থেকে আর পাঁচজন বাচ্ছার মত স্বাভাবিক আর হয়ে উঠতে পারে না সরমা।মাঝে মাঝে বাবা মায়ের তুমুল অশান্তী ওকে আরো এক গভীর অবসাদে ডুবিয়ে তোলে।

ওর ছোট্ট বুকটাতে অনেক চিন্তা অনেক কথা জমিয়ে রাখতো কিন্তু কাউকে প্রকাশ করার জায়গা ও খুঁজে পেত না।যেটুকু ওকে বুঝতো ওর দাদা।দাদার সব হারানোর কষ্ট ওকে আরো কষ্ট দিত।তাই সব সময় খেলা আনন্দ সব কিছু ভাগ করে নেওয়া ছিল ঐ দুটি ছোট্ট প্রাণের মধ্যে।

সেদিন ক্লাসে পড়া না পাড়ায় স্যার সকলের সামনে যাচ্ছেতাই অপমান করে সরমাকে।আর বলে দেন ও যেন প্রথম বেঞ্চে না বসে।শুধু ঐ ক্লাসেই না প্রত্যেকটি ক্লাসেই ওকে হেনস্তার স্বীকার হতে হত।কেউ কোনো দিন ওর মানসিক অবস্থা টা বোঝার চেষ্টা করেনি।এক কোনে চুপ করে বসে বসেই ওর দিন কেটে যেত।ক্লাসের ভাল ছেলেমেয়েরা ওর মত পড়াশোনায় খারাপ বাচ্ছাকে নিজেদের দলে ঠাঁই দিত না।ঘেন্না করুণা মিশ্রিত চোখে দেখতো।আর পড়াশোনায় পিছিয়ে থাকা বাচ্ছারা নিজেদের মধ্যে হুটোপাটি করতো।ক্লাসের মধ্যে গোলমাল করতো যেখানেও নিজেকে সরমা মেলাতে পারতো না।তাই সে স্কুলেতে একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত হয়ে যায়।যা তার মানসিক একাকীত্ত্ব নিঃসঙ্গতাকে আরো বাড়িয়ে তোলে।তার প্রভাব চরমভাবে পড়াশোনায় পড়ে।মাধ্যমিকে অকৃতকার্য হয়। যেদিন রেজাল্ট বেরোয় খুব বৃষ্টি হচ্ছিল সেদিন।সরমার চোখের জল আকাশের জলের সাথে মিশে গিয়েছিল।যা দেখার সময় স্যার ম্যাম দের বা ক্লাস-মেট দের ছিল না।একা একাই বিপর্যস্ত মন নিয়ে দেহটাকে টানতে টানতে আসছিল সরমা।হঠাত্‍ মাথাটা ঘুরে সব অন্ধকার হয়ে যায় সরমার।

[শেষ পর্ব]

দুদিন পর বিছানায় শুয়ে ছিল সরমা।জানালা দিয়ে দেখছিল তাদের কাঁঠাল গাছে একটা পাখি দোল খাচ্ছে।হঠাত্‍ সেটা উড়ে গিয়ে দূর দিগন্তে মিলিয়ে গেল।ওর ও ভীষণ ইচ্ছা লাগলো এইভাবে ঔ ও মিলিয়ে যাবে।এই পৃথিবীতে তো ওর কোন প্রয়োজন নেই শুধুই একটা বোঝা।নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়েছে ওর বুকে জমে থাকা হাজার কষ্ট।ওর আর একটা স্বভাব কারো সামনে চোখের জল ফেলতে পারে না।যার ফলে স্বঃহানুভুতি ও ওর কপালে আরো জোটে না।হঠাত্‍ ওর গালে একটা হাতের স্পর্শ।চেয়ে দেখলো একটা অচেনা ভদ্রমহিলা।ওর পাশে বসলো।ইনিই সেদিন ওকে তুলে বাড়ি দিয়ে যান।আজ দেখতে এসেছেন।উনি খুব মজা করে সরমার সাথে কথা বলতে থাকেন।আর সরমার বাবাকে বলে যান সামনের রবিবার যেন সরমাকে ওনার বাড়ি নিয়ে যান।

আজো সেই রবিবারের সকালটা সরমার মনে পড়ে।ওনার বাড়ি গিয়ে সরমারা ড্রয়িং রুমে বসে।কত বাজনা চারিদিকে সাজানো রয়েছে।সরমার খুব ইচ্ছা করছিল বাজনা গুলো ছুঁয়ে দেখতে।মানুষটা ঘরে ঢুকলেন।সদ্য স্নান করে এসেছেন।শুভ্র কেশ সদ‍্য স্নান শেষে কোমড় ছাপিয়ে তখনও জল ঝড়ে পরছে।পড়নে সাদা খোলের লাল পাড় শাড়ি ।যেন এক শান্তীর আবেশ ছড়িয়ে দেওয়া উপস্থিতি।চোখে মুখে নির্মল প্রশান্তী।স্বয়ং মা সরস্বতীর যেন প্রবেশ।উনি সরমাকে কাছে ডাকলেন।যেন এক নিমেষে সরমার মনটা পড়ে নিলেন।বললেন-তোমার কোনো ভয় নেই মা এখানে সব বাজনা তুমি হাত দিয়ে দেখতে পার।তুমি আমার হারিয়ে যাওয়া সোম মা।

পরে সরমা জানতে পারেন সোম বলে ওনার এক মেয়ে ছিল।জন্মগত ত্রুটির কারণে ব্রেনের সঠীক বিকাশ ঘটে না মেয়েটির।পাঁচ বছর আগে সে মারা গেছে।

সেই সকালেই সরমার শুরু হয় তার গানের গুরুমার কাছে সরোদের তালিম।নতুন এক আলোর পথের সন্ধান পায় সরমা।পুনর্জন্ম ঘটে তার।

সরমাকে বাড়ি দিতে গিয়েই উনি সরমার দাদার থেকে সরমার ব্যাপারে সব জানেন।তখন থেকেই উনি ঠিক করেন সরমাকে কিছুতেই জীবনযুদ্ধে হরিয়ে যেতে উনি দেবেন না।একটা মানুষের কিছু না কিছু গুন থাকবেই সরমারো নিশ্চই আছে।আর সেটা থেকেই সরমার জীবনে আলোর পথ খুঁজে দেবেন উনি।উনি সরমার দাদার থেকে জানতে পারেন সরমা অসাধারণ সুরকে নকল করতে পারে।তা একবার শুনে হলেও।কিন্তু হায়রে আমাদের সমাজ পড়াশোনায় ভাল না হওয়ায় সরমার যেআর কিছু গুন থাকতে পারে তা খুঁজে দেখবার চেষ্টাও কেউ করেনি তার আশেপাশের মানুষ জন।শুধু তাদের থেকে তিক্ত ,কটু,ঘেন্না ভরা ভাষাই জুটেছে তাদের থেকে সরমার কপালে।

আজ বিদূষী সরমা ঘোষ একজন প্রখ্যাত সরোদ বাজিয়ে।যার হাতের ঝংকারে ডোভারলেনের হাজার হাজার দর্শকের চলত্‍শক্তি কেড়ে নেয়।যে মানুষ একদিন ঘৃণার চোখে দেখতো আজ তারাই তার সাথে দুটো কথা বলতে পারলে বর্তে যায়।প্রতিমূহুর্তে হেনস্থা করা সরমার ক্লাসমেটরা আজ সরমাকে বন্ধু বলে পরিচয় দিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে কৃতার্থ বোধ করে।সরমা সব কিছু থেকে আজও দূরে নির্লিপ্ত।ওর শুধু একটাই ধ্যান গ্যান সরোদের সুর যা ওর খেলার মাঠের ঘাসের গন্ধ বয়ে আনে।ক্লাসরুমের একবুক টাটকা বাতাস।বন্ধু দের সাহচার্য,স্যার ম্যাম দের ভালোভাসা।সবকিছু না পাওয়া ওর তৃষীত হৃদয়টাকে ভড়িয়ে তোলে।আর একটা কাজ হল সরমার ওর মত হারিয়ে যেতে বসা বাচ্ছা গুলো কে জীবনের পথে ফিরিয়ে নিয়ে আসা।এই সমাজ এ কম বোঝা মানসিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া বাচ্ছাদের স্থান আজ ও গড়ে ওঠে নি।চিরকাল অবহেলার করুণার,ঘৃণার পাত্র-পাত্রি হয়েই তাদের দিন কাটে।শুধু একটু ধৈর্য্য,সহমর্মিতা আর ভালভাসা তাদের জীবনের সজ্ঞা টাকেই বদলে দিতে পারে।কিন্তু যেটা সমাজের সুস্থ মানুষেরা করে না।বিরক্তী কটাক্ষ দিয়ে প্রতি মূহুর্তে বিদ্ধ করা হয়।কিন্তু এই মানুষিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া বাচ্ছা গুলোর থেকে সমাজের ক্ষতি কিছু হয় না।যা ক্ষতি হয় সুস্থ মানুষের দ্বারাই।এদের প্রতি অবহেলা এদের আরো মানুষিক অবনতি ডেকে আনে।আর আমাদের সমাজ ব্যবস্থা টা এমন ছোট থেকেই একটা সুস্থ বাচ্ছা এই ধরণের বাচ্ছা কে অবহেলা হেনস্থার চোখে দেখতে শুরু করে।ক্লাসের মধ্যে এই ধরণের বাচ্ছা থাকলে তাকে মেনে নিতে না পারে ক্লাসমেট রা না মেনে নিতে পারে স্যার ম্যাম রা।স্যার ম্যামদের শিক্ষা সংক্রান্ত জ্ঞান পুঁথিতেই থেকে যায়।সরমা জানে সেও হয়তো হারিয়ে যেত এই ভগবানটি তার জীবনে উদয় না হলে।সরমা তাই তার গুরুমাকে কথা দিয়েছে তার মত সরমাদের ও আলোর পথে নিয়ে যাবে ওর সাধ্য মত।

কাল শিক্ষক দিবস ইতিমধ্যে ছটি জায়গা থেকে ওকে নিয়ে যাবার জন্য সাধাসাধি শুরু হয়েছে।কিছুক্ষণ আগে আসা ছেলেগুলো ফোনে রাজি করাতে না পেরে বাড়িতেই চলে এসেছিল।কিন্তু এই একটা দিন সরমা কোথাও প্রোগাম রাখে না।এটা ওর একান্ত ভাবে গুরুমার কাছে নিবেদন করার নিজস্ব দিন।

পরের দিন খুব ভোরে ওঠে সরমা।অল্প অল্প আলো ছড়াচ্ছে পূর্ব আকাশে।দাদাকে খুব মিস করে সরমা।এই প্রথমবার দাদাকে ছাড়া শিক্ষক দিবস পালন করবে ও।দাদাকে নিয়ে পুরি গেছে মা বাবা।সঙ্গে লোক দিয়ে দিয়েছে সরমা।কিন্তু সরমার প্রচুর প্রোগাম থাকায় ও যেতে পারে না।স্নান করে নেয় সরমা।একটা লাল পাড় শাড়ি পড়ে সরমা।গুরুমা খুব ভালোবাসতেন এই শাড়িতে সরমাকে দেখলে।বলতেন আমার মা সরস্বতী।গুরুমার ছবিতে একটা সুন্দর রজনীগন্ধার মালা দেয় সরমা।সুন্দর করে আলপনা দেয়।চন্দনদিয়ে সাজায় ফটো টা।সরোদটা পেড়ে নিচে সতরঞ্জী্র উপড় বসে ধ্যানমগ্ন হয়ে 15 মিনিট।সরমার বড় ভয় লাগে যদি সুর ওকে ছেড়ে যায়।অনেকদিন আগে এই কথাটা সরমা গুরুমাকে একবার বলেছিল।শুনে উনি হাসেন।বলেন-পাগলি এতো চিরসখা,চিরকালের,চিরদিনের।সরমার সরোদ ঝংকার দিয়ে উঠলো-"চিরসখা হে ছেড়ো না....."

দুচোখে তার একবুক কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসা বয়ে চলেছে।আর তার সরোদের ঝংকার থামিয়ে দিয়েছে বোধায় বয়ে চলা বাতাসকেও।অদূরে গাছের ডালে বসা পাখিটার কূহুতান কে।


Rate this content
Log in