দুই দেশ-দুই কালচার
দুই দেশ-দুই কালচার
ইন্দোর থেকে আসা মিঃ রাজেন্দ্র ভাট এবং মিসেস দীপ্তি ভাট তাদের বিবাহিত জীবনের পঁচিশ বছর পূর্ণ করলেন সেদিন-যেদিন তারা হংকং থেকে ফিরছেন।এই বিদেশ সফরে পঁচানব্বই ভাগ পুরুষ তাদের স্ত্রী কে সঙ্গে আনেনি।কিন্তু রাজেন্দ্র তার স্ত্রী কে এনেছেন।এরা সম্প্রতি তাদের একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।দেশে থাকলে ভাবী-জী একা একা বোর হবেন।
ভাবী-জী তার বিবাহ বার্ষিকী তে খুব সুন্দর করে সেজেছেন।শাড়ি পরেছেন,সিঁথি তে দিয়েছেন সিঁদুর।
হংকং এয়ারপোর্টে সবাইকে চকলেট দিয়ে অনুষ্ঠানটিকে উদযাপন করা হল।
একজন বলল-'' ভাবী আপনার অভিজ্ঞতা বলুন..পঁচিশটা বছর..কমদিন তো নয়।''
দীপ্তি খানিক চুপ করে থেকে বললেন,''-কী আর বলব..ঝগড়া আর মান অভিমান করতে করতেই পঁচিশটা বছর কেটে গেল-''
কেউ একজন টিপ্পনি কাটল-''শুধুই ঝগড়া..মানে প্রেম ট্রেম হয়নি কখনও?''
এবার রাজেন্দ্র ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,''-প্রেম কিনা জানিনা..মানে বাবা পছন্দ করে বিয়ে দিয়েছিলেন,বিয়ের রাতেই প্রথম বউকে দেখি..তবে হ্যাঁ-একটা নির্ভরতা,ওর জন্য দুশ্চিন্তা,বাপের বাড়ি গেলে কষ্ট হওয়া,দুজনে মিলে একসঙ্গে মেয়েকে মানুষ করা-এগুলোকেই কী তোমরা পেয়ার মুহব্বত বলছ?''
হংকং থেকে ব্যাঙ্কক যাচ্ছে দুই যুবক যুবতী।মেয়েটির বাড়ি ব্যাঙ্ককে,ছেলেটির বাড়ি হংকং এ।মেয়েটি কিছুদিনের জন্য হংকং বেড়াতে এসে
ছিল এবং সেখানেই ছেলেটির সঙ্গে আলাপ ও ঘনিষ্ঠতা হয়।ছেলেটি এবার মেয়েটির সঙ্গে ব্যাঙ্কক যাচ্ছে যৌনতার উৎসব পালন করতে।ব্যাঙ্কক নাকি যৌনতার রাজধানী।
এয়ারপোর্ট ভরতি লোকের সামনে দুই যুবকযুবতী পরস্পরকে গাঢ় আলিঙ্গন ও চুম্বন করতে লাগল।চুম্বনের রকমফের আছে।এ একেবারে প্যাশনেট্ চুম্বন।এতক্ষন ওরা পরস্পরের ঠোঁটে আদর করছিল,এবার ছেলেটি তার জিভ ঢুকিয়ে দিয়েছে মেয়েটির মুখের ভিতর এবং মেয়েটি প্রাণপনে ছেলেটির জিভ লেহন করছে।
হংকং এ আসা ভারতীয় দলটি সিনেমার দৃশ্য দেখার মত একমনে এ দৃশ্য উপভোগ করতে লাগল যদিও তারা ছাড়া আর কারো এ দৃশ্য দেখার সময় বা রুচি নেই।
''হোয়াত্ ইস দিস?''
''দিস ইস সিন্দুর।''
''হোয়াই হ্যাভ ইউ পুত অন?''
''দিস ইজ দ্য সিম্বল অফ ম্যারেজ।..টুডে উই হ্যাভ কমপ্লিটেড আওয়ার টুয়েন্টি ফিফথ্ ইয়ার অফ ম্যারেজ-''
''তুয়েন্তি ফিফথ্ ইয়ার উইথ ওয়ান ম্যান..আই মিন ওয়ান হাসব্যান্দ!..হাউ ক্যান ইত বি পস্সিবল..দিস ইজ রিয়্যালি অ্যামেজিং..অ্যামেজিং..অ্যান্দ বোরিং তু-''
দীপ্তি এবার মেয়েটির কাঁধে হাত রেখে বলেন,''-দিজ ইজ আওয়ার কালচার মাই ডিয়ার-।''
হংকং এর আকাশে তখন সূর্যাস্ত হচ্ছে।সারা আকাশ সেজে উঠেছে অদ্ভুত এক সোনালি আলোয়।সেই আলো এসে পড়েছে দীপ্তি র মুখে।দীপ্তি কে লাগছে ঠিক এক রানী র মত।
অয়ন দাস।১৪/৫/২০১৭