Those Days Part Six
Those Days Part Six


কলেজে আজ আরুষি একটু আগে ভাগেই ঢুকে গেল। শুরুতেই সেই খিটকেল মার্কা স্যারটার ক্লাস। আজ আর রিস্ক নিল না। পিউ আজ একটু দেরি করে আসবে বলেইছিল, ফার্স্ট ক্লাসটা করবেনা। বন্ধু ছাড়া মনটা খুব একটা ভাললাগছিল না ওর, তাই আগে এসেও লাস্ট বেঞ্চে গিয়েই বসল। আনমনা ভাবে খাতার পিছনে হিজিবিজি কাটছিল, এমন সময়ে একটা কন্ঠস্বর বলে উঠল....
"অমন অন্যমনস্ক হয়ে থাকলে এই স্যার কিন্তু এক্ষুনি ক্লাস থেকে বাইরে বের করে দেবে!!"
আরুষি তাকিয়ে দেখল একটা নীল জামা পড়ে বেশ গোলগাল পড়ুয়া পড়ুয়া ধরনের ছেলে চার চোখ দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
হেসে ফেলল সে। মুখটা তো চেনা, কিন্তু নামটা জানে না.. সম্ভবত এই শেষের দিকেই বসে। তার মন কতোকটা পড়তে পড়েই ছেলেটি বলল..
"হাই, আমি অর্ণব.. ম্যাডাম বোধহয় ঠিকই ভাবছো, হ্যাঁ আমি লাস্ট বেঞ্চারই বটে। আসলে ব্যাক বেঞ্চে বসে ক্লাসের মজা নেওয়ার চার্মটাই আলাদা, কি বলো?"
আরুষি কিছু না বলে হাসল। ছেলেটির কথাবার্তা বেশ ভাল, স্বচ্ছন্দ ও সাবলীল।
পরের ক্লাস দোতলায় অন্য রুমে হিস্ট্রির ছিল। আরুষি আর পিউ দুজনেরই এই সাবজেক্ট পাস হিসেবে আছে। পিউ চলে আসে এই ক্লাসটার সময়। আরুষি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। এসেই অনেক রোহিতের বাড়ির গল্প করতে লাগলো.. কতো বিশাল সুন্দর সাজানো বাড়ি, দিদির সাথে আলাপ হয়েছে গান শুনিয়েছে.. আর অনেক্ষণ ধরে তাদের প্র্যাকটিস হয়েছে।
আরুষির মনে পড়ল এই রবিবার রোহিতদের বাড়িতে আড্ডা আছে, তাকেও আসতে বলেছে। তার আগের দিনই ফেস্ট তাদের কলেজের।
ফেস্টের কথা মনে হতেই কেমন একটা উত্তেজনা বোধ করল সে। বেশ নামী কয়েকটা ব
্যান্ড আসছে শুনেছে। আবার তাদের গ্রুপের পারফরম্যান্স ও আছে। সব মিলিয়ে দারুণ মজা হবে। তার কলেজ লাইফে এই প্রথম।
ক্লাসের পর খাওয়াদাওয়া করে তিনটে নাগাদ আবার তারা সেই গ্যারেজে উপস্থিত হল রিহার্সালের জন্য। আজ গিয়েই দেখল বাকি সকলে সেখানে আগে থেকেই আছে। মোট আটটা গান আছে তাদের ডুয়েটে, আর রোহিতের সোলো একটা আছে। বৈচিত্র্য আনার জন্য তারা সবরকম গানই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে গাইছে। হিন্দি গানও দু তিনটে আছে।
রোহিত আর স্যাম হাই করল দেখে তাদের। যথারীতি জিনি আর জিকোর কোনো ভাবোদয় নেই! সত্যিই অদ্ভুত দুই ভাই বোনই, ভাবে আরুষি। জমে উঠল গানের রিহার্সাল।
"নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে রয়েছ নয়নে নয়নে" তে মেতে উঠেছে আরুষি তখন রোহিত আর পিউএর যুগলবন্দীতে.. দারুণ সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলছে দুজনে গানটিকে একটু অন্যরকম ভাবে..
হঠাৎ স্যাম তার ঠিক পাশে এসে দাঁড়ালো। এই গানটায় ড্রামের কোনো প্রয়োজন নেই.. তাই কখন যেন তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ওর হাতটা আরুষির হাত ছুঁতেই চমকে উঠল সে। তাকাতেই দেখে কিরকম যেন জ্বলন্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে! একদম ভালোলাগেনা তার এই ছেলেটাকে। ভ্রু তুলতেই স্যাম ইশারা করল..
"একটু বাইরে আসবে, তোমার সাথে একটু কথা ছিল"
অনিচ্ছা স্বত্বেও আরুষি বাইরে এল।
জিকোর কথাঃ পুরো নাম জিতেন্দ্রিয় সেন। নামের সাথে পুরো উল্টো দিকে ধাবিত তার চরিত্র। কোনো পার্সোনালিটি নেই, অন্যের কথায় নাচাই তার স্বভাব। বাবা বিলাস সেন আর মায়ের অতিরিক্ত আদরে এখনো সেই ছোটোদের মতোই হয়ে আছে সে। জিনির সাথে খুবই ভাব, একই বয়সী তারা। কয়েক মাসের ছোট বড়ো, কিন্তু তার মেজাজকে বড়ো ভয় পায়।।