Debasmita Ray Das

Romance

4.0  

Debasmita Ray Das

Romance

#দোস #ডেস পার্ট ফোর

#দোস #ডেস পার্ট ফোর

3 mins
282



      আরুষি আর পিউ ভিতরে গিয়ে বসল একটা বেঞ্চে। একটু পরেই স্যাম আর রোহিত ঢুকল। আরুষিকে দেখে স্যামের চোখদুটো আবার জ্বলে উঠল। আরুষির চোখ তখন রোহিতের দিকে। একটা ডেনিম ব্লু টি আর জিন্সেই তাকে যা দেখতে লাগছে, বলাই বাহুল্য।


শুরু হল তাদের রিহার্সাল। আজ তাদের একটি বিখ্যাত বাউলাঙ্গের গান "দেখেছি রূপসাগরে মনের মানুষ কাঁচা সোনা" গানটাকেই একটু অন্যরকম করে ফিউসান গানের মতোন গাওয়া হচ্ছিল। গীটার ড্রামের সাথে। পিউএর গলা একদম দরাজ এই গানের উপযুক্ত। রোহিতও দারুণ। দুজনের যুগলবন্দী একদম জমে উঠেছিল। জিনিও গীটারটা বেশ ভালই বাজায়। 


বেশ কিছুক্ষণ রিহার্সালের পর পাঁচটা নাগাদ রোহিত একটা ব্রেক দিল। দশ মিনিটের গ্যাপ দিয়ে আবার চলবে কিছুক্ষণ রিহার্সাল। জিনি বাইরে এসে একটা সিগারেট ধরালো। এই নেশা তার অনেকদিন থেকেই।

স্যাম ও এল তার পাশে। রোহিতের এসব নেশা নেই। 


এরপরে আরো ঘন্টাখানেক রিহার্সালের পর যখন তারা বাইরে এসে দাঁড়ালো, তখন বাজে সাড়ে ছটা। আরুষির বাড়িই খালি একটু দূরে, বাকি সবাই মোটামুটি কাছাকাছি থাকে। তাই রোহিত যখন বলল, যে সে গাড়িতে আরুষিকে ছেড়ে দেবে বাড়িতে, জিনির মুখটা জানি কেমন হয়ে গেল। 


সকলে বেরিয়ে যাওয়ার পর রোহিতের সাথে এই রাইডটা দারুণ লাগলো তার। রোহিত ভালই মিশুকে, তাদের গ্রুপের ব্যাপারে, গানের গ্রুপটার ব্যাপারে বিভিন্ন গল্প করতে লাগলো তার সাথে। আরুষি খেয়াল করল তার বাড়ির গল্প কিন্তু খুব একটা নিজের থেকে করছে না। সেই জিগ্যেস করল ওর বাড়িতে কে কে আছে? কথাটায় রোহিত যেন কেমন একটু অন্যমনস্ক হয়ে গেল। তারপর কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল..


"মা আমার থেকেও নেই আরুষি, মানে অনেকদিন আগেই আমায় আর দিভাইকে ছেড়ে চলে গেছে.. মাই পেরেন্টস আর ডিভোর্সড। বাবা একটা নামী সফটওয়্যার কোম্পানির কর্ণধার, সারাদিন কাজেই ব্যস্ত থাকেন। যদিও খুবই ভালবাসেন আমায় আর দিভাইকে, তাও আমার সবকিছু আমার দিভাই। দিভাইয়ের কাছ থেকেই যতো ভাল কিছু শিখেছি, সবসময়"।


আরুষি একটু অবাক হয়ে তাকায় রোহিতের দিকে। এই বয়সে একটা এতো সুন্দর পরিণতমনস্ক একটা ছেলে সে কমই দেখেছে! তার তাকিয়ে থাকা দেখে রোহিত একটু হাসল..


"কি ভাবছো? খুব বোর করছি না!"


"এমা না, না.. একজন পেরেন্ট না থাকা যে কি জিনিস তা আমিও জানি.. কিন্তু তুমি সেটাকে কতোটা পসিটিভ ভাবে নিয়েছো সেটা দেখেই অবাক হয়ে যাচ্ছি। আমরা সবাই তো সেটা পারি না।"


"থ্যাংক ইউ ম্যাডাম, আই টেক ইট এস আ কমপ্লিমেন্ট!"


বলে তার সেই ভুবনমোহিনী হাসিতে তাকালো আরুষির দিকে। আরুষির আবার পেটটা গুরগুর করে উঠল। সে বলল..


"কিন্তু তোমাদের গ্রুপের কেউ কেউ কিন্তু খুব বেশি উগ্র!!"


রোহিত একটু অবাক হয়ে তাকালো..


"তুমি কি জিনির কথা বলছো?"


"হ্যাঁ!"


"আরে ধুর ও একটা বদ্ধ পাগল! আসলে কি জানোতো আন্টিকে ছোটোবেলাতেই হারিয়ে ও না একটু কেমন জানি হয়ে গেছে! ওর ভাইটা আর একটা কার্টুন! ওদের ফ্যামিলিটাই কেমন যেন অদ্ভুত। বাট বিলিভ মি, জিনি স্কুলেও আমার সাথেই ছিল, শি ইস আ ভেরি গুড ফ্রেন্ড.. ওর মনটা কিন্তু খুব ভাল, সেটা তুমি উপর থেকে বুঝতে পারবেনা!!"


'ঈশশ আ ভেরি গুড ফ্রেন্ড' আরুষির যেন একটু জেলাস ফিল হল। তবে জিনির মা নেই, এই তথ্যটা কিন্তু তার কাছে নতুন। বাকি রাস্তাটা আবার তারা গল্প গল্প করতে করতেই বাড়ি পৌঁছে গেল। এই উইকএন্ডে তার বাড়িতে একটা জমায়েত হবে, আড্ডা গান সবই চলবে.. তাকেও ইনভাইট করল রোহিত। আরুষি অবশই আসবে বলে খুশি মনে হাত নেড়ে ঘরে ঢুকে গেল।।


পিউএর কথাঃ পুরো নাম পল্লবী আইয়ার। সাউথ ইন্ডিয়ার মেয়ে। অনেকদিন হল এখানেই আছে। খুব রক্ষনশীল পরিবার। বাবা মধুসূদন আইয়ার ব্যাংকে কাজ করেন, মা মীনাক্ষী আইয়ার ক্লাসিকাল গান করেন। ফাংশান কিছু করেন, আবার একটি গানের স্কুলও আছে। অনেকদিন এখানেই, আর প্রচুর বাঙালি বন্ধু থাকার কারণে ঝরঝরে বাংলা বলে পিউ। পিউএর গানের তালিম তার মায়ের কাছেই। বাবা মায়ের কড়া শাসনে বড়ো হওয়ার জন্যই হয়তো তার মনটা এখনো অমলিন আছে। সকলকে সরল মনেই সে এক্সেপ্ট করে নেয়।।


ক্রমশ


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance