COCKROACHDR GAUTAM MANNA
COCKROACHDR GAUTAM MANNA
COCKROACH
DR GAUTAM MANNA
সকাল বিকাল সন্ধ্যা সারা দিন চলতে থাকে লেখা পড়ার চিৎকার। মায়ের কথা শুনলে মাম্পীর মাথা যেন আগুনের মতো গরম হয়ে যায় ! কেন না সারাক্ষণ বই আর বই ,বইয়ের পাতা খুলে লেখাপড়া করলে মাম্পীর মা খুব একটা কিছু বলতেন না । তিনি বুঝতে পারলেন যে মেয়ে আপাতত মনযোগ সহকারে পড়ার প্রতি মনোনিবেশ করেছেন। হঠাৎ দেখি দেওয়ালের পাশে একটি আরশোলা । আরশোলা দেখে মাম্পী এদিক ওদিক তাকিয়ে দৌড়াতে শুরু করে দিয়েছে! কোনো কারণে প্রমিলা দেবী মাম্পীর ঘরে ঢুকে দেখে মেয়ে পড়াশোনা বাদ দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে কোথায় গিয়েছে। এই ভেবে বাড়ীর বাইরে এসে মাম্পীর মা মাম্পী…. মাম্পী…. বলে চেঁচাতে শুরু করে দিয়েছেন । মাম্পীতো ক্ষেপে লাল হয়ে গিয়েছে। সে তখন গম্ভীর ভাবে উত্তর দিতে শুরু করলো যে তুমি ষাঁড়ের মতো এতো চড়া গলায় চিল্লিয়ে বেড়াছচ্ছো কেন? বুঝেছি…? কী বুঝেছো মা ? পড়ার ফাঁকিবাজী দেওয়া ছাড়া আবার কী ? আরে বাবা ওখান "COCKROACH"…! এর মানেটা কি প্রমিলা দেবীর অজানা ! তার মানে আমাকে বোকা বানিয়ে পালাতে পারবে না । এই বলে দিলুম। কিন্তু প্রমিলা দেবীর এতোটাই বোধগম্য ছিল না । কারণ তিনি যে লেখাপড়া বেশি জানেন না। তাই প্রমিলা দেবী এই কথাটির মানে জানতেন না । এর পর প্রমিলা দেবী যেই মাত্র রুমের মধ্যে প্রবেশ করতে গিয়ে দেখতে পেলেন একটি আরশোলা উড়ে বেড়াচ্ছে । তখন তার বোধগম্য হলো।
ও…আচ্ছা এই ব্যাপার । বুঝেছি, বলে তিনি আরশোলাটিকে ধরে নিয়ে মেয়ের দিকে এগিয়ে এসে বললো এটা তাহলে …. । কী যেন বলেছিলি? আরে বাবা যাচ্ছে….. আর আসছে……। আচ্ছা সে যাই হোক কিছু একটা হবে । এটাকে দেখে এতো ভয় পাওয়ার কী আছে বুঝি? এটা কি "বাঘ না ভাল্লুক "যে, তোমাকে খেয়ে ফেলবে। একটু ভেঙ্গচানি শুরে প্রমিলা দেবী বললেন। প্রমিলা দেবী চলে যাওয়ার পর মাম্পী বাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করলেন। মাম্পীর বাঘ ভাল্লুকের প্রতি যত না ভয় পেয়ে থাকে, তার চেয়ে বেশী ভয়ের কারণ ওই আরশোলাতে! কিন্তু প্রমিলা দেবীর স্বামী ঠান্ডা মাথার মানুষ। বেশী কথা তিনি বলেন না,কাজ করে দেখান এটাই তার বিশেষতঃ। আর তিনি ছোট্ট বেলা থেকে ছেলেমেয়েদের মুখে বা হাতে ছড়ি নিয়ে কখনো শাশ্বন করতেন না । তিনি বিকল্প পথ হিসেবে এক দিন দেখলেন যে, এই আরশোলা দেখে বেশ ভয় পেয়ে তিনার সমস্ত কাজ বা কথা শুনে কাজগুলো তাড়াতাড়ি করে থাকে। কিন্তু প্রমিলা দেবী এই বিষয়ে জানতেন না। আর তিনার জানার মতো সময় কোথায়, সংসারে ছেলেমেয়েদের রান্না ,বান্না থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজকর্ম করতে হয় । সময় না থাকার কারণে প্রমিলা দেবী বেশিরভাগ ওদের কে জব্দ করে রাখার জন্য এতো চেঁচামেচি করে থাকেন। আর সে কারণে ছেলে মেয়েরা বেশি প্রাধান্য না দিয়ে থাকেন। মনোতোষ বাবু মানে মাম্পীর বাবা বাড়ীতে আসছে শুনে ওরা যে যার মতো পড়াশোনা বা কোন কাজ বাকি ফলে রাখেন না । মনোতোষ বাবু ওদের কে জব্দ করার পথটি ভালো করে জানেন, সেই কারনেই ছেলেমেয়েরা বাবার কথার অমান্য কখনো হয় না । ।।নমস্কার।।

