Mitali Chakraborty

Inspirational Others

2  

Mitali Chakraborty

Inspirational Others

বুদ্ধিমত্তা:-

বুদ্ধিমত্তা:-

2 mins
356


করোনার কারণে যখন সকলে আমরা গৃহবন্দী, বাড়িতে থাকছি সর্বক্ষণ আর অতি সামান্য কিছু কিনতে যেতে হলেও বেশ চিন্তা করতে হয় এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন আমার দিদিমা। আমার দিদিমা আগের দিনের মানুষ, বয়স প্রায় ৮৫ ছুঁই ছুঁই। এই অবস্থাতেও চোখের দৃষ্টি অমলিন। আস্তে ধীরে নিজের সকল কাজই প্রায় করে নিতে পারেন। লকডাউনের কথা শোনার পর থেকেই দিদিমাকে চিন্তান্বিত লাগতো। আমি যখনই ফোন করে খোঁজ নিতাম মামা মামীরা বলতো তোর দিদিমা তো খুব চিন্তা করছে রে মামনি। এত বড় পরিবার আমাদের, বাইরে যেতে না পারলে জিনিস পত্রের জোগাড় হবে কি করে? ভাঁড়ার যে খালি হয়ে যাবে। আমি দিদিমা কে আশ্বস্ত করতাম যে কিচ্ছু খালি হবে না। মামারা প্রয়োজনীয় সামগ্রী সব নিয়ে আসতে পারবে দরকার অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করে আর বেশির ভাগ জিনিস পত্র তো কেনে মজুত করা থাকেই ভাঁড়ারে।


দিদিমার আশঙ্কা বুঝতে পারতাম, অনেক দাঙ্গা কারফিউ দেখেছেন তো এক সময়ে, ওই সব বিভীষিকাময় সময়ের কথা মনে করে শিউরে ওঠেন তিনি, জল সংকট, খাদ্য সংকট এসব প্রত্যক্ষ করেছেন কারফিউয়েয় সময়ে। আমি বোঝালেও কতটা বুঝতেন কে জানে, শুধু হুম হুম বলে প্রত্যুত্তর করতেন। 

সেদিন সকালে যথারীতি ফোন করি মামা বাড়িতে। মামী বলছেন তোর দিদিমার কাণ্ড শোন। সকাল বেলায় মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে মাটির উনুন বানিয়েছেন। আমার মামাতো ভাই বোন গুলোতো আহ্লাদে আটখানা, দিদিমা মাটি খোঁড়া থেকে মাটির উনুন বানানো অব্দি এই বাচ্চা গুলোর অনেক সাহায্য নিয়েছেন কিনা! মাটির উনুন বানানো হলে পরে এবার জোগাড় যন্ত্র শুরু হলো বাড়ির বাগান থেকে শুকনো ডাল পালা কুরাবার, এতেও বাচ্চা পার্টি উৎসাহের সহিত যোগদান করেছিল। মামারা যদিও বলছিলেন কেনো এসব করছে? কি প্রয়োজন? কিন্তু দিদিমা নাকি শুধু বলেছেন জানবি জানবি, কিছু সময় পরেই জানতে পারবি। 


হ্যাঁ, সময় যখন এলো তখন আমরা জানতে পারলাম বৈকি। দেশ ব্যাপী যখন রান্নার ইন্ধন বা রান্নার জন্য গ্যাস সিলিন্ডারের ডেলিভারি তে ক্রমশ দেরি হচ্ছিল তখন দিদিমা তার নিজের হাতে তৈরী মাটির উনানে সকলের জন্য ভাত, ডাল রান্না করে নিতেন। মামীরা তখন হিসেব করে রান্নার গ্যাসের ব্যবহার করতে লাগলেন যার ফলে গ্যাস সঞ্চয়ও যেমন হলো তেমনি লক ডাউনে সিলিন্ডারের ডেলিভারিতে দেরি হওয়া নিয়ে সংশয়ও কমে গেলো।

সত্যি, দিদিমা এত বয়সেও যে এত সুক্ষ ভাবে বিচার বিবেচনা করে এই কাজ টি করতে পারবেন সেটা শিক্ষনীয় এবং প্রশংসনীয় তো বটেই। 




Rate this content
Log in

Similar bengali story from Inspirational