Black Panther পর্ব ৮
Black Panther পর্ব ৮
একদিন বাড়িতে সরস্বতী পুজোর সময়, দিশা, Panther আর ওর বোন তিথিকে ডাকে।
Panther কে সবাই ভালোবাসত ।
তিথিকে দেখে রোহন দৌড়ে এসে হাসি মুখে বলে--" আন্টি ।"
সেটা দেখে , দিশার দাদা রঞ্জিত অবাক হয়ে যায়।
রঞ্জিত--" আন্টিকে তুমি খুব ভালোবাস?"
রোহন--" হমম্ । ঠাম্মা তো আমায় স্কুল থেকে নিয়ে আনে। ঠাম্মার আসতে দেরি হলে, আন্টি গল্প শোনায়, আনন্দ দেয় ।
আন্টি বকেও না আমায়।"
রঞ্জিত--" কি বলবো আমি আপনাকে বুঝতে ও পারছিনা । Thank you ।"
তিথি--" Thank you বলার ও দরকার ছিল না।
একটা ছোট বাচ্ছাকে আনন্দ দিতে পারলে, আমারই আনন্দ লাগে ।"
রঞ্জিত--" সত্যি, আপনি খুবই ভালো ।"
তিথি রোহনকে বলে--" পড়েছ ??"
রোহন--" হমম্ ।"
তিথি--" আর আঁকাটা?"
রোহন--" এইজে আন্টি ।"
রঞ্জিতবাবু দেখেন, তার ছেলে কি সুন্দর এঁকেছে ।
ওনার কাছে সত্যিই কোন শব্দ নেই আর কিছু বলার। ওনার মনে হলো, যে রোহনের সাথে সবসময়ই কেউ না কেউ আছে, যেটা ওনাকে শান্তি দিল।
রোহন একদিন বায়না করে তিথি আন্টির কাছেই ও পড়াশোনা করবে ।
রঞ্জিতবাবু--" তিথি আন্টি তোমায় ভালোবাসে বলে, তিথি আন্টিকে তুমি বিরক্ত করতে পার না।
তোমায় তো একজন আন্টি পড়াচ্ছেন।"
রচনাদেবী--" কি হয়েছে? ও একটু পড়তে চেয়েছে।
এমন করছিস, যেন তোর সব সম্পত্তি চেয়েছে ।"
রঞ্জিত--" মা, তুমি রোহনকে মাথায় তুলছ জানো।
ও কাল যা চাইবে তাই দেবে??
আমি কোনদিন্ও গিয়ে বলতে পারি, আপনি আমার সন্তানকে পড়ান??
উনি যদি টিউশনি করতেন, তাহলে বলা যেতো।"
দিশা--" আসলে, তোর দারা কিছু হবেনা জানিস দাদা। আমি তিথিকে ফোন করলেই ও চলে আসবে। "
রঞ্জিত--" তোরা না তিথিকে সাধারণ, বেকার ভেবে ফেলছিস ।
যেহেতু ওকে ডাকলেই পাওয়া যাবে, সেইজন্য ওকে use করি । Like that ।"
দিশা--" মোটেও না । তিথি বাচ্ছাদের ভালোবাসে।"
তিথিকে, দিশা ডাকতেই, তিথি চলে আসে ।
তিথি--" আমাকে রোহনের জন্য ডাকতে ভাবনার কি ছিল?? আমি ওকে ভালোবাসি ।
সবসময়ই পাশে থাকব ।"
দিশা--" দেখ। তোর যতো ভুল ভাবনা ।"
তিথি একদিন রোহনকে গান গাইতে দেখে বলে-" ওমা, তুই তো কি সুন্দর গান গাইতে পারিস।
গান শিখবি?"
রোহন--" হ্যা । কিন্তু আমি সা, রে, গা, মা, পা শিখব না।"
তিথি--" দুষ্টুমি করছিস । সা, রে, গা, মা, পা, না শিখলে, গান হয়না ।"
রোহন--" ওটা আমার গাইতে ইচ্ছে করেনা আন্টি ।"
রঞ্জিতবাবু--" আন্টি ভালো বলে, আন্টির সাথে বদমাইশি করছ । এটা কি? যাও sorry বল আন্টিকে । আর বায়না নয়। শিখতে হলে seriously শেখ। নইলে শিখতে হবেনা ।"
তিথি--" না বকবার মতন ও কোন কাজ করেনি। আপনি ওকে বকেই দিলেন।
রোহন এখানে এস।"
রোহন আসছেনা দেখে, তিথিই রোহনের কাছে গিয়ে বলে--" বাবার কথায় অতো রাগতে হয়? বাবা তো তোমায়, যা চাও তাই দেয় , হাসি মুখে ।
হাসো ।"
রোহন--" sorry আন্টি ।"
তিথি--" না, আমায় sorry বলার দরকার নেই ।"
রঞ্জিতবাবু হাসিমুখে এসে রোহনকে বলে--" sorry শোনা, বকে দিয়েছি, কিন্তু এরম কোরোনা আর।"
রোহন--" না বাবা ।"
রঞ্জিতবাবু,, রোহনকে আদর করে চলে যান।
একদিন তিথি রোহনকে কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখাচ্ছিল । নিজের ছেলেকে গান গাইতে শুনে উনি রোহনের ঘরে আসেন।
তিথি প্রথমে খেয়াল করেনি । তারপর রঞ্জিতবাবুকে দেখে বলে--" আরে আপনি,,,,, ওখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?? এখানে বসুন না।"
রঞ্জিতবাবু--" না, ওই শুনতে এসছিলাম রোহনের গান । খুব ভালো লাগছিল ।"
তিথি--" হ্যা, আমি ওকে রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখায়ি, আর ও গায়ও খুব সুন্দর ।"
রঞ্জিতবাবু--" আপনি ওকে সত্যি খুব ভালোবাসেন। আমি যে কতো টাকা দেব আপনাকে,, আমার মাথায় আসছেনা ।
আপনিই বলুন ।"
তিথি--" রোহনকে আমি ভালোবেসে সবকিছু শেখাই । টাকার জন্য নয়।"
রঞ্জিতবাবু--" জানি আমি । তাও একবার বলুন।"
তিথি--" আপনি তো ২০০০ টাকা দিচ্ছেন। এর বেশি, আমি আর কিছু চাই না ।"
রঞ্জিতবাবু--" ২০০০ টাকা দিয়ে পড়াশোনা, আঁকা, গান কেউ শেখাবে না, জানেন ।
আমি ৪০০০ টাকা দিতে চাই। "
তিথি--" এইভাবে আমি টাকা চাইতে পারবো না। কারণ ভালোবাসা,, টাকা দিয়ে আসেনা।"
রঞ্জিতবাবু--" তবে আমি আজ আপনাকে ৪০০০, টাকাই দিলাম ।"
তিথি--" কিন্তু কেন??"
রঞ্জিতবাবু--" প্লিজ । Panther আর কতো ইনকাম করে। আমি চাই আপনারা ভালো থাকুন।"
তিথি আর কি বলবে বুঝতে পারছেনা ।
তিথি রঞ্জিতবাবুকে বলল--" ধন্যবাদ ।"
রঞ্জিতবাবু--" ধন্যবাদ, আমার আপনাকে দেওয়া উচিত, যে আপনি আমার সন্তানের এতো খেয়াল রাখেন ।"
তিথি--" এরম বলবেন না।
আমি আশি ।"
দিশা--" কিরে দাদা,, আর কতো লুকোবি??"
রঞ্জিতবাবু-" কি লুকচ্ছি??"
দিশা--" তাই?? তুই একদম জানিস না?? নাটক করাটা একটু থামা।"
রঞ্জিতবাবু--" মানে, তুই কি বলতে কি চাইছিস??"
দিশা--" মা,, একটু এস তো। দাদা না,, আজকাল কিছুই বুঝতে পারেনা।"
রচনাদেবী--" তুই তিথিকে পছন্দ করিস,,, আমরা জানি । লুকচ্ছিস কেন, এটা।"
রঞ্জিতবাবু--" মা, এসব কি বলছ।"
রচনাদেবী--" জানি,,, অনামিকা মারা গেছে বলে, তুই আর কাউকে সাথি মানতে চাসনা ।
তা,,, অনামিকা যদি দেখে,, রোহনের নতুন আর খুব ভালো মা হয়েছে, যে রোহনকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসে। অনামিকা খুসি হবে না দুঃখিত হবে বলতো??"
রঞ্জিতবাবুর স্ত্রীয়ের নাম ছিল অনামিকা ।
রঞ্জিতবাবু--" না, মা । এ হয়না ।"
দিশা--" কতোদিন ধরে মনের ভালোবাসাটা লুকিয়ে রাখবি?? তুই তিথির কাছে যাচ্ছিস, ওকে দেখছিস, তাও বলছিসনা । বারবার এইভাবে দূর থেকে না দেখে,, ওকে সারাজীবনের সাথীই করেনে না।"
পরের দিন
দিশা--" Panther তোমরা বাড়িতে এসোনা ।"
Panther--" এখন?? কেন??"
দিশা--" আহ্ । এসোনা ।"
Panther, তিথি আর Panther এর মা ও আসে ।
রচনাদেবী রঞ্জিতবাবুকে বলে--" বল না।"
রঞ্জিতবাবু --" মা তুমি বলো না ।"
দিশা--" সত্যি, তোমরা না,, কি।"
তিথি,, একটু এই ঘরে আসবে?"
তিথি--" হমম্ ।"
দিশা--" তিথি,,,,,,, আমি একটা কথা বলবো,,, তুমি কিছু মনে করবে না তো??
তোমার যদি কথাটা খারাপ লাগে,,, আমায় ক্ষমা করে দিয় ।"
তিথি--" এইভাবে বোলো না । বলো, কি বলতে চাও।"
দিশা--" তিথি,,,, আমার দাদা তোমাকে খুবই পছন্দ করে । তুমি কি দাদাকে আপন করে নিতে পারবে??"
যদি,,, তুমি না বলোতো,,, না ই হবে । তবে তুমি রেগে গিয়ে ছেড়ে দিয়না আমাদের। রোহন তোমায় খুবই ভালোবাসে ।
কিন্তু আমি তোমার ওপর জোর ও করবো না ।"
তিথি আসতে আসতে বলে --" ঠিক আছে ।"
দিশা--" ঠিক আছে??
তুমি আমার দিকে তাকিয়ে বল , ঠিক আছে ।"
তিথি লজ্জায় হেসে বলল--" ঠিক আছে ।"
দিশা--" মা, full and final । আয়োজন শুরু কর বিয়ের।"
Panther--" তুমি জানো দিশা,, তিথি আমার বোন নয়,, তাও ওকে আপন করে নিচ্ছ।"
দিশা--" তিথি তোমার বোন হোক,, কি না হোক,,, দাদা ওকে ভালোবাসে ।
ভালোবাসা মোছা যায় না ।"
(ক্রমশ...)

