বিয়ের কার্ড
বিয়ের কার্ড


অরুণিমা আর রাহুল অনেকদিনের বন্ধু। একটা সময় বন্ধুত্বটা হয়ত শুধুই বন্ধুত্ব ছিল দুজনের জন্য কিন্তু কয়েকদিন হল অরুণিমার মনে হচ্ছে সে নিজের অজান্তেই বোধহয় রাহুলকে ভালবাসতে শুরু করেছে। কিন্তু রাহুল ও কি তাকে ভালবাসে? আজকাল মাঝে মাঝেই এই প্রশ্ন তাকে অস্থির করে তোলে। তার ঘুমের শত্রু হয়ে ওঠে অনেক রাতেই।
তবে রাতে জেগে থাকলেও পড়াশোনাটা বিশেষ কিছুই হয়না। প্রতিরাতে ঘুমানোর অভ্যাসটাও প্রায় যেতেই বসেছে। বইয়ের খোলা পাতার সামনে বসে রাহুলের কথা চিন্তা করা ছাড়া বিশেষ কিছু করে ওঠা হয়না অরুণিমার। আর শেষ রাতে যখন ঘুম আসে তখন সঙ্গে নিয়ে আসে রাহুলের স্বপ্ন।তবে প্রেমে পড়লে কি মানুষের নিজের বশে কিছুই থাকেনা! এমনকি মনটাও! মাঝে মাঝে ভাবে কি করেই বা জানবে সে আগে তো কখনো কারো প্রেমে পড়া হয়নি তার।
সেদিন সকাল থেকেই শরতের উড়ো মেঘে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। কলেজ থেকে ফেরার সময় রাহুল বলল ‘মা বলেছে কলেজস্ট্রীট থেকে বিয়ের কার্ডের কিছু স্যাম্পেল নিয়ে যেতে দাদার বিয়ের জন্য, যাবি অরুণিমা?’ অরুণিমাও সম্মতি জািনয়ে তার সাথে গেল। দোকানে বেশ কিছু কার্ড পছন্দ করার পর রাহুল বলল ‘ভাবছি আমার বিয়ের কার্ডটাও পছন্দ করে ফেলি।’ অরুণিমা বলল ‘আগে পাত্রীটা তো ঠিক কর।’ রাহুল বলল ‘আমার বিয়ের কার্ডে যে পাত্রীর জায়গায় শুধু তোরই নাম লেখা থাকতে পারে সেটা কি তুই এতদিনেও বুঝিসনি?’ কোন উত্তর না দিয়ে দুচোখ ভরা জল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল অরুণিমা। সে বাড়ী থেকে বেরোনোর সময় একবারও ভাবেনি তার সব প্রশ্নের উত্তর এভাবে পেয়ে যাবে আর তার জীবনে পদার্পণ করবে তার বহু আকাঙ্ক্ষিত ভালবাসা।