Unveiling the Enchanting Journey of a 14-Year-Old & Discover Life's Secrets Through 'My Slice of Life'. Grab it NOW!!
Unveiling the Enchanting Journey of a 14-Year-Old & Discover Life's Secrets Through 'My Slice of Life'. Grab it NOW!!

Darshan Sahoo

Horror

3.0  

Darshan Sahoo

Horror

বিজয় প্রতাপের প্রেতাত্মা

বিজয় প্রতাপের প্রেতাত্মা

4 mins
933


সকাল দশটা নাগাদ পাণ্ডুগড় এসে পৌঁছেছি, বাল্যবন্ধু অতুল রায়-এর বাড়ি। বেশ কয়েকটা বছর দুজনের কোনো যোগাযোগ ছিলনা, কাল বিকালে হঠাৎই অতুলের ফোন পেলাম। স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি চলছে, তেমন কোনো কাজের চাপও নেই, তাই অতুলের প্রস্তাবে কোনো আপত্তি না জানিয়ে চলেই এলাম।


এখানে পৌঁচ্ছে দেখি আমাদের কলেজ লাইফের আর এক বন্ধু সঞ্জু'ও আমন্ত্রিত হয়েছে। তিন বন্ধুতে অনেক ঘোরাঘুরি হলো, এখানে ঘুরে দেখার মতো অনেক কিছু রয়েছে। সন্ধ্যার কিছু আগে আমরা মহীপুর রাজবাড়ীর সিঁড়ির সামনে এসে হাজির হলাম, বিশ-তিরিশটা সিঁড়ি ভেঙে রাজবাড়ির চৌকাঠে পা রাখতেই গার্ড ভোম্বল সিং আমাদের সাথ দিলো।


তারই মুখ থেকে শুনলাম গাঁজাখুরি কিছু গল্প। এই সিংহ বংশীয় এক রাজা বিজয়প্রতাপ মারা গেছে প্রায় একশো বছর আগে, কিন্তু আজও নাকি তার আত্মা এবাড়ির আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ায়। আমি গার্ডকে জিজ্ঞাসা করলাম,-



― আচ্ছা, রাজার পরিবারের কেউ এখানে থাকে না?


― পরিবার! আজ যে এই রাজবংশের কেউ বেঁচে নেই, দূর সম্পর্কের যারা আছেন তারাও আসতে সাহস পায় না।

― সাহস পায় না মানে?

― ঐযে বললাম রাজার প্রেতাত্মা।

বিজয় প্রতাপের মৃত্যুর পরই শুরু হয় এই বংশের বিপর্যয়। রাজার একমাত্র ছেলে অজয় প্রতাপ ছিলেন যাকে বলে নষ্ট পুরুষ। মদ আর মেয়েমানুষ নিয়ে বিভোর হয়ে থাকতেন,আর ওদিকে বন্ধুরা মজা লুটেতো। রাজকোষ দিন দিন শূন্য হতে থাকে, রাজবাড়িটা একটা নোংরামির ঘাঁটিতে পরিণত হলো, বাজারে অনেক বদনামও করে ফেললো অজয় প্রতাপ। অবশেষে হঠাৎই একদিন তিনি খুন হলেন। খুনি ধরা পড়েনি বটে তবে লোকে বলে সিংহ বংশের অবশিষ্ট সম্মানটুকু বজায় রাখার জন্য বিজয় প্রতাপের আত্মা'ই নাকি তার ছেলেকে খতম করেছে। আমি হেসে মন্তব্য করলাম,-

― রাজার প্রেতাত্মা! ওসব কিছু নয়। সম্পত্তি গ্রাসের লোভে বন্ধুরাই কেউ মেরে ফেলেছে বিকারগ্রস্ত বিজয় প্রতাপকে।



আমার কথা শুনে গার্ড কেমন এক ব্যঙ্গহাসি হেসেছিল। এদিক ওদিক ঘুরে রাত নটা নাগাদ আমরা অতুলের বাড়ি ফিরে খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমাতে গেলাম, আমার আর সঞ্জুর শোয়ার ব্যবস্থা হয়েছে এক ঘরে। রাতে সঞ্জু আমাকে একটা মোটা সোনার হার বের করে দেখালো, আমি চিনতে পারলাম, এটা তো রাজা বিজয় প্রতাপের মোমের মুর্তিটার গলায় দেখা সেই চেনটা। আমি চিৎকার করে বলে উঠলাম,-


― এই সঞ্জু! এটা তুই রাজবাড়ী থেকে চুরি করে এনেছিস?


― হ্যাঁ... তো কি হয়েছে। মরা মুর্তিটার গলায় বেকার পরে ছিল তাই ঝেড়ে দিলাম, এটা এবার আমার গলায় ঝুলবে।

― দেখ ভাই আমার কিন্তু খুব ভয় করছে, বিজয় প্রতাপের আত্মার ব্যাপারটা যদি সত্যি হয়.....

― ধুর বাদ দে তো যত্ত ছেলেভুলানো গল্প... 

― তা হোক গে, তোর চুরি করাটা তো অন্যায়। কাল আমরা দুজন রাজবাড়িতে আবার যাবো, তুই চুপিচুপি যেথাকার জিনিস সেখানেই রেখে আসবি, ওকে...

― আবে... কালকের চিন্তা কাল হবে, ঘুমা তো। এত দামি একটা চেন ফালতু ফালতু হাতছাড়া করবো, পাগল নাকি....



সকালে বাইরে থেকে অতুলের হাঁকাহাকি শুনে ঘুম ভাঙতেই দেখি আমি বিছানার পাশে মেঝেতে শুয়ে আছি। ধীরপির করে উঠে পড়ে আমি হতবাক হয়ে গেলাম, সঞ্জু ঘরে নেই। মনে পড়লো রাতের স্বপ্নটার কথা। একটা বৃহৎ কালো বাদুড় জানালা দিয়ে ঢুকে হার ঝোলানো সঞ্জুর গলা কামড়ে ধরলো আর আমি ভয়ে বিছানা থেকে গড়িয়ে পড়লাম। তবে কি এ স্বপ্ন নয়? কিন্তু বন্ধ ঘর থেকে সঞ্জু গেল কোথায় ? তবে কি প্রেত বাদুড়টা তাকে নিয়ে গেছে?


অতুল আসে পাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সঞ্জুর খোঁজ পেলো না, আমিও সঞ্জুর চেন চুরি আর রাতে দেখা স্বপ্নটার কথা এড়িয়ে গেলাম। রহস্যটা কাটিয়ে তোলার জন্য আমি অবশেষে সঞ্জুর মোবাইলে কল করলাম। কয়েক বার রিং হওয়ার পর অবশেষে ফোনটা রিসিভ করা হলো। আমি ভুল পরিচয় দিয়ে বললাম,-


― হ্যালো সঞ্জু,আমি তীর্থাঙ্কর বলছি রে, চিনতে পারছিস? আরে হাওড়ার তীর্থাঙ্কর।

কান্না গলায় উত্তর এলো,-

― আমি সঞ্জু নই, ওর বাবা কইছি, সঞ্জু আর নেই...

― নেই মানে! কি হলো ওর?

― জানিনা বাবা। কাল সকালে পাণ্ডুগড় গেছিল বন্ধুর বাড়ি, রাত প্রায় সাড়ে তিনটেয় বাড়ি ফিরে ঘুমোতে গিয়েছিল আর উঠে নাই, অনেক ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে দেখি এই অবস্থা।


আমি বললাম,-

― সেকি! অদ্ভুত ব্যাপার। ডাক্তার ডাকেননি? ডাক্তারবাবু কি বললেন?


ফোনের ওপাশ থেকে আসা উত্তরটা শুনে আমার সব জলের মতো পরিষ্কার হয়ে গেল, আর ভয়ে সারা শরীর ঝাকুনি দিয়ে উঠলো। সঞ্জুর বাবা কান্নায় ফেটে পড়ে বললেন,-


― ডাক্তারবাবু এসেছিলেন। উনি কইলেন কোনো এক বীভৎস ভয়ে নাকি সঞ্জুর হার্ট এট্যাক হয়ে গেছে।



  অতুলের বাড়িতে আর থাকতে মন করছিলোনা, এই বীভৎস অভিজ্ঞতার শিকার হয়ে হৃৎস্পন্দন বহুগুণ বেড়ে গেছে। ব্যাগপত্র গুছিয়ে দশটা নাগাদ অতুলের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম। পথে পড়লো সেই রাজপ্রাসাদ, একবার ভেতর থেকে ঘুরে আসতে মন করলো, প্রাসাদে ঢুকে পড়লাম। আর সেখানে গিয়েই আরো একবার উন্মোত্তের মতো শিউরে উঠলাম, দেখলাম বিজয় প্রতাপের মোমের মুর্তিটার গলায় ঝুলছে দামি চকচকে সোনার সেই চেনটা।



Rate this content
Log in

More bengali story from Darshan Sahoo

Similar bengali story from Horror