Riya Roy

Romance

2.5  

Riya Roy

Romance

ভালোবাসা

ভালোবাসা

3 mins
3.5K


জয়িতা সাধারণ পরিবারের মেয়ে। কলেজের ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা হয়ে যাবার পর ,ও ঠিক করলো কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার এ ভর্তি হবে। জয়িতার দিদি পুষ্পিতা বললো, "তুই ভালো ডিসিশন নিয়েছিস। আজকাল তো চাকরি পেতে কম্পিউটার জানলে সুবিধা বেশি। আমি ও চেয়েছিলাম কিন্তু বিয়েই হয়ে গেল কলেজ পাশের পর"। জয়িতা তখন বললো, "তুই এখনোও তো শিখতে পারিস রে"। পুষ্পিতা বললো, "ধুর সংসারের হাজার একটা ঝামেলা আর ভালো লাগে না। তুই ভালোভাবে শেখ।"


জয়িতা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার এ ভর্তি হয়ে গেল। সপ্তাহে তিন দিন ক্লাস বিকেলের দিকে। এই ক্লাস করার সময় জয়িতার সাথে আলাপ হলো শমীকের। শমীক স্কুল টিচার, স্কুলের ছুটির পর এখানে এসে কম্পিউটার শেখে। শমীক এর সাথে জয়িতার আলাপ ধীরে ধীরে গভীর হলো। ফোনে ও কথোপকথন বাড়লো। সম্পর্কটা প্রেমে পরিণত হলো। শমীক এর জয়িতার প্রতি কেয়ারিং এবং রোমান্টিক আচরন জয়িতাকে এইটাই ভাবালো যে শমীকই তার যোগ্য জীবন সঙ্গী। জয়িতা শমীকের কথা দিদিকে জানালো। পুষ্পিতা বললো, "জয় .. আমি খুব খুশি যে তুই একটা প্রেম করছিস। জাস্ট চালিয়ে যা আমি বাবা-মাকে ম্যানেজ করবো। জয়িতা বললো, "থ্যাংকিউ রে", বলেই দিদিকে জড়িয়ে ধরলো।


দুবছর পর....

কম্পিউটার শেখা অনেক দিন হলো শেষ হয়েছে। এদিকে জয়িতার বাড়িতে বিয়ের কথাবার্তা শুরু হয়েছে। জয়িতা শমীককে বলে তাদের বিয়েটা নিয়ে ভাবতে। শমীক তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। জয়িতা একদিন দেখা করে শমীক-এর সাথে। শমীক তখন জানায় সে জয়িতাকে বিয়ে করতে পারবে না। জয়িতার সাথে তার স্ট্যাটাসে মেলে না। জয়িতাকে তার বাবা মা মেনেও নেবে না। তাই এই বিয়েটা হতে পারে না। জয়িতা সবটা শুনে আপসেট হয়ে পড়ে । জয়িতা বলে, "সম্পর্ক টা করার আগে এটা ভাবা উচিত ছিল তোমার। তুমি আমায় এভাবে ঠকালে কেন? আমার ভালোবাসা ,বিশ্বাস ভাঙলে কেন?" কিছুক্ষন কথা কাটাকাটির পর শমীক জয়িতাকে অপমান করে। জয়িতাকে চলে যেতে বলে।


পুষ্পিতা সবটা শুনে জয়িতাকে সান্ত্বনা দেয়। এদিকে জয়িতার বাবা একটি ছেলের সাথে জয়িতার বিয়ে স্থির করে। জয়িতার মতামত জানতে চায়। জয়িতা রাজি হয়ে যায়। পুষ্পিতা বলে, তুই একবার ছেলে টার সাথে কথা বলতে পারতিস , তারপর রাজি হতিস। জয়িতা বলে উঠে, "আমার আর কিচ্ছু জানার নেই কিচ্ছু দেখার নেই। আমার গোটা জীবনটাই এলোমেলো হয়ে গেছে আজ।"


কয়েক মাস পর জয়িতার বিয়ে হয়ে গেল। ছেলেটির নাম অনীশ, চাকরি করে, অসুস্থ বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। বিয়ের পর থেকেই জয়িতা অস্বস্তিতে ভুগতে থাকে। অনীশকে তার বিরক্ত লাগতে শুরু করে। তার মনে হতে থাকে অনীশ কখনোই শমীক-এর মতো কেয়ারিং বা রোমান্টিক নয়। কেমন যেন সারাদিন অফিস আর বাড়ি। অনীশ-এর অসুস্থ বাবা মাকে সেবা করা আর অনীশদের বাড়ির কাজ ,এসব করেই নিজেকে চালোনোর রাখার চেষ্টা করে জয়িতা। অনীশ বহুদিন ধরেই জয়িতার এসবই লক্ষ্য করতে থাকে । সে এও খেয়াল করে জয়িতা কেমন যেন মনমরা থাকে সবসময়। একদিন জয়িতা কে ডেকে জানতে চায় , "আচ্ছা তুমি কি এই বিয়েতে অসুখি। তোমার কি আমাকে ভালো লাগেনি। তোমার কি কোনো অসুবিধে হচ্ছে, প্লিজ জয়িতা আমাকে সবটা বলো। আমাকে তোমার বন্ধু ভেবে বলো।" অনীশ আবার জয়িতার হাতে হাত রেখে বলে, "তুমি আমায় বন্ধু ভেবে তোমার সমস্যার কথা একবার বলো।" জয়িতা অবাক হয়ে তাকায় অনীশ-এর দিকে। আর এটা বুঝতে পারে সে ভুল ভেবেছিলো অনীশ-এর সম্পর্কে।


কেটে গেলো একটা বছর আজ জয়িতার অ্যনির্ভারসরি। পুষ্পিতা বিকেলে কল করে উইস করলো। আর বললো, "কেমন আছিস রে জয়ি..।" জয়িতা খুশি গলায় বললো, "ভালো আছি আমি।" দিদির ফোন রাখার পর পরই বেজে উঠল আবার মোবাইলটা জয়িতা ধরার জন্য এলো আর নম্বরটা দেখে অবাক হলো। শমীক এর নম্বর । জয়িতা ওদের ঘরের লাগোয়া বারান্দায় গেলো। ফোনটা ধরলো ওদিক থেকে শমীক জয়িতার কাছে ক্ষমা চাইলো আর বললো সে জয়িতাকে ফিরে পেতে চায়। ওদিকে তখন অনীশ একগোছা সাদা গোলাপ নিয়ে ঘরে ঢুকলো আর "জয়ি..." বলে ডেকে উঠলো। জয়িতা বারান্দা থেকে দেখতে পেলো। ওদিকে ফোনে শমীক তাকে বার বার ফিরে পেতে চায় এমনটাই বলতে লাগলো। জয়িতা তখন বললো, "শমীক তুমি অনেক দেরি করে ফেলেছো। আমার পক্ষে আর সম্ভব নয়।" শমীক বলে উঠলো, "আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি তুমি যেদিন চাইবে সেদিনই এসো।" জয়িতা বললো, "শমীক আমার জন্য আমার হাজব্যান্ড অপেক্ষা করছে এখন আর আমায় তার কাছে যেতে হবে, আমি ফোন রাখছি", বলেই জয়িতা ফোনটা কেটে দেয়।


তারপর বারান্দা থেকে ঘরে ঢোকে। অনীশ কাছে আসে আর জয়িতা কে কাছে টেনে নিয়ে গোলাপগুলো কে সামনে ধরে বলে, "জয়িতা ...ভালোবাসো আমায়?" জয়িতা লাজুক হয়ে ফিসফিস করে অনীশর দিকে তাকিয়ে বলে উঠে, "ভালোবাসি....'


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance