ভালোবাসা না ভালোলাগা
ভালোবাসা না ভালোলাগা


হিমগ্ন আর আমি আলাদা হয়েছি প্রায় দু বছর। দুজনের কেউই নতুন কাউকে জীবনে আনিনি। হীমগ্ন অনেকবার আমাকে বলেছিলো ," তোমার আমার সাথে থাকতে না ইচ্ছে হলে আলাদা থাকো কিন্তু এখনই ডিভোর্স এ জেও না,"। সত্যি বলতে কি আমি ই চেয়েছিলাম ডিভোর্স। মনে হয়েছিল যদি এক ছাদের তলায় থাকতেই না পারি তবে এই অর্ধ মৃত সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখার কি দরকার। আমাদের প্রেমের বিয়ে। দুজন দুজনকে পাঁচ বছর ধরে দেখে শুনে তারপর বিয়ে। আসলে হিমোগ্ন হয়তো আমাকে একটু বেশিই সহ্য করতো। আমার হঠাৎ হঠাৎ রাগ, ঘরের জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলা, ওকে খুব কষ্ট দিত। রাগ কমে গেলে সেটা বুঝতে পারতাম। কিন্তু নিজেকে পাল্টাতে পারতাম না, হয়তো চাইতাম ও না।
মাঝে মাঝে হিমগ্ম কে বলতাম "তুমি আমাকে ভালোবাসো না, শুধুমাত্র আমাকে ভালো লাগে তোমার"। হীমোগ্ন সাহিত্য থেকে অনেক দূরে থাকতো আর আমি সাহিত্যের ছাত্রী । ও উত্তর দিত " দেখো তোমার মতো ভাষার কারুকার্য করে আমি কথা বলতে পারি না, তবে এটুকু জানি যার কষ্ট দেখলে আমার কষ্ট হয়, আর যার মুখের হাসি দেখলে আমার আনন্দে বুক ভরে ওঠে, তাকে আমি ভালোবাসি"।
হয়তো তাই। এখন ভাবি আমাদের সম্পর্ককে অটুট রাখার সব দাযিত্ব দিয়েছিলাম হিমগ্নকে, আমি কিছুই নেই নি। একবারের জন্যও ভাবতাম না অফিস থেকে ফেরার পর, আমার মত ও ক্লান্ত। হিমগ্নো খুব ঠাণ্ডা মাথার ছেলে ছিল, কিন্তু একদিন সব সহ্যর সীমা ছাড়িয়ে আমার গায়ে হাত তুলে বসলো। ব্যাস সেটাই ওর সাথে থাকা আমার শেষ দিন। পরে অনেক বুঝিয়েছিল, কিন্তু আমি কিছুতেই আর থাকতে রাজি ছিলাম না।
এখন ভাবি আমি কি হিমোগ্নো কে ভালোবাসি, না ওকে শুধু আমার ভালো লাগে। ভালোলাগাটা জলের বুদবুদের মতো, উঠেই আবার মিলিয়ে যায়, কিন্তু ভালোবাসা থাকে সারাজীবন। এখনও আমার জন্মদিনে হিমোগ্ম কেক নিয়ে আমার অফিস এ হাজির হতে যায়। আমিও তাই। দূরে গিয়ে অনুভব করেছি আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি। কিন্তু যখন কাছে ছিলাম তখন ভালোলাগা আর ভালোবাসায় ভাগ করতেই ব্যস্ত ছিলাম।