ভালো থেকো প্রিয়
ভালো থেকো প্রিয়
অন্য একটি ছেলের বুকৈ মাথারেখে বসে থাকতে দেখে পলাশের মনটা ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। প্রিয়দর্শিনিকে পলাশ নিজের চাইতে অধিক ভালোবাসে তাই তার এইরূপ দৃশ্য দর্শন হেতু যে রূপ আচরণ করা উচিৎ সে তা না করে মনে মনে প্রিয়দর্শিনিকে আশির্বাদ করে বলে ভলো থেকো প্রিয়ে তাহার পশ্চাদ সে উক্ত স্থান পরিত্যাগ করে চলে যায়। প্রিয়দর্শিনি নিজেও তার প্রিয় পলাশের কার্যকলাপের প্রতি দৃষ্টিপাত করে। পলাশ সেই স্থান ত্যাগ করিতেই যে ছেলেটির কোলে মস্তক সমর্পণ করেছিল সেই ছেলেটিকে কিছু অর্থ সম্প্রদান করে বিদায় করে দেয় কিন্তু প্রিয়দর্শিণির এইরূপ আচরণের কারণ বুঝিয়া ওঠা প্রচন্ড কঠিন হইয়া দাঁড়াইল। যে মানুষটিকে প্রিয়দর্শিণি নিজের চাইতে অধিক ভালোবাসে তাহার সহিত এই রূপের আচরণ কেন?
অপরদিকে সমগ্র বিষয়টিই একটি জিঙ্গাসার চিন্হ হয়ে দাঁড়াইল পলাশের নিকট। সপ্তাহ খানেক পূর্বে অফিসের একটি বিশেষ কর্মে সাত দিনের জন্য শহর ত্যাগ করতে হয়েছিল আর এই সাতদিনের মধ্য এমন কি ঘটেগেল যে তাদের সাত বছরের সকল স্বপ্ন মাত্র সাত দিনের মধ্য নাকি সাত সাতটা বছর ধরিয়া আমাকে ব্যবহার করে গিয়াছে সুধুমাত্র সময় অতিবাহিত করবার জন্য। তাহলে সকলটাই ভালোবাসার মায়া রচনা করিয়াছিল প্রিয়দর্শিণি। পলাশে অঙ্ক কোন পদনধতিতে সঠিক উত্তরের অনুসন্ধান দিতে সক্ষম হইলোনা, সঠি কোন উত্তরের সন্ধান মিললো না। কোন মানুষ এতগোলো বৎসব ব্যাপি এইরূপ নিপুণ অভিনয় উপস্থাপন করে চলিতে পারে সবটাই গোলমাল পাকাঈয়া যাইতে লাগিল পলাশের মস্তিষ্কে। সময় অতিবাহিত হয়ে যাইতে লাগিল কিন্তু পলাশ ট্রমার বাঁধন হতে মুক্ত হতে পারছিলনা।
দেখতে দেখতে ছয় ছয়টা মাস অতিবাহিত হয়ে গেল পলাশ আর প্রিয়দর্শিণির মধ্য একটা দৈহিক ব্যবধাণ নিরুপণ হলেও মানষিক ব্যবধান তখনও সম্পূর্ণ রূপে রেখাপাত করেনি। যদিও তাদের মধ্য সাক্ষাৎ বা কথপকথন সম্পূর্ণ রূপে থামিয়া গিয়াছে কিন্তু আজ তারা একে অপরের স্মার্ট ফোনের ডিসপ্লেতে এক অপরের ছবিকেই স্থান দিয়ে রেখেছে। হঠাৎ একটি বিশেষ রোগীর তত্যাবধানের নিমিত্য পলাশের ছোট বেলার বন্ধু প্রতাপ বিলাত হইতে কোলকাতায় উপস্থিত হলেন। রোগীর কেশফাইল পর্যালোচনা করে সে অবাক হলো। তার বিশ বছরের চিকিৎসার অভিঙ্গতায় এই রূপ স্টেজে অবস্থান করা রোগীর বাঁচিয়া থাকার ইতিহাস নেই কারণ এই কর্কট রোগের তৃতীয় স্তরেই সর্বাধীক রোগীর মৃত্যু ঘটে থাকে সেখানে চতুর্থ স্তরের অন্তিম পর্বে অবস্থান করা রোগীটি আজো স্বাভাবিক অবস্থায় চলে ফিরে বেরাচ্ছে। এইরূপ মিরাকেল ঘটনার শাক্ষী হয়ে থাকতেই তার বিলাত থেকে কোলকাতায় এগমন।
শহরে পৌঁছে প্রতাপ সর্বপ্রথম ফোনকল করে পলাশকে। সন্ধায় কিছুটা সময় চেয়ে নেয় তার নিকট থেকে পলাশ হঠাৎ তার আগমনের হেতু জানতে চাইলে প্রতা জানায় শাক্ষাতে সকল হেতে পালাশকে ব্যাক্ত করবে সে। কথামতো একটি কফিহাউসে মিলিত হয় তারা। কফি খেতে খেতে কোলকাতায় আগমনের হেতু বর্ণনা করে প্রতাপ। এমন সময় প্রলাশের ফোনের ডিসপ্লেটা আলোকিত হতেই সেখানে ভেসেওঠে প্রিয়দর্শিণির চিত্র। প্রাথমিক ভাবে একটু চমকে ওঠে প্রতাপ। হঠাৎ করে তার এই রূপ আচরণ পরিলক্ষিত হতে পলাশ তাকে জিঙ্গাসা করে কি হলো তার? প্রতাপ তাকে জিঙ্গাসা করে তোর ফোনে যার ছবি উপস্থিত তার সহিত পলাশের পরিচয় কিরূপ? হঠাৎ এই রূপ প্রশ্ন শুনে পলাশ একটু অবাক হয়ে বলে কেন তুইকি ওকে চিনিস? প্রতাপ জানায় আমি যার চিকিৎসার জন্য সুদুর বিলাত থেকে কোলকাতায় উপস্থিত হলাম সে এই মেয়েটি। এবার বোধহয় পলাশের নিকট অঙ্কের সূত্রটা পরিষ্কার সে প্রতাপকে বলে বন্ধু আজ একটু তাড়া রয়েছে এখন মাঝেমধ্যেই সাক্ষাৎ হবে, এই বলে পলাশ আসন ত্যাগ করে বিল পরিশোধ করতে উদ্যোগী হতে প্রতাপ জানায় ওটা দেওয়া হয়ে গিয়েছে তুই যে কাজে যাচ্ছিলিস সেখানে তাড়াতাড়ি যা। পলাশ ধন্যবাদ জানিয়ে স্থান ত্যাগ করে।
প্রিয়দর্সিণির শরীরটা আজ খুব একটা ভালো নাথাকায় সে গৃহে অবস্থান করছিল এমন সময় পলাশের কন্ঠে তার নাম শুনে একটু বিচলিত এবং উচ্ছসিত হয়ে উঠলো। কয়েকপা এগিয়ে আবার আপন স্থানে ফিরে আসল সে। এবার পলাশ গলাচড়িয়ে বলল পিয় আমি জানি তুমি বাড়িতেই রয়েছো আজ তোমাকে বলতেই হবে এমন এক কঠিন সত্যকে তুমি আমার কাছে লোকলে কেন? আমার ভালোবাসার উপর এতটুকু আস্থা তোমার ছিলোনা? তুমি যদি এই মুহুর্তে আমার সামনে উপস্থিত না হও তহলে তোমাদের দুয়ারে আমি নিজেকে শেষ করে দেব। প্রিয় পলাশের এই কাতর আহবানে সারা না দিয়ে পারলোনা দেহের হাজার বেদনাকে উপেক্ষা করে ছুটে আসলো পলাশের কাছে। প্রিয়দর্শিণির দিকে দুই হাত বাড়িয়ে দিল পলাশ। প্রিয় ছুটে এসে আছড়ে পড়ল পলাশের বুকে। পলাশ তাকে বুকে জড়িয়ে মুখটা কানের নিকট এনে বলল আমি এই দেহটাকে নয় ইহার অভ্যন্তরে অবস্থিত হৃদয়টিকে ভালোবেসেছি তোমার কোন অধিকার নেই তাকে এই দেহে আবদ্ধ করে রাখার।
আমার প্রিয়কে ফিরিয়ে দাও প্রিয়দর্শিণি। প্রিয়দর্শিণি বলে জীবে - মরণে যে তোমারি ছিল প্রিয়ে।
🙏 সমাপ্ত 🙏
[ সুদ্ধ এবং চলিতের সংমিশ্রণে এক অভিনভ প্রয়াস উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম, ভালোলাগলে অবশ্যই জানাবেন। ] ( বানানের ভূলত্রুটি মার্জনা করবেন।)