Krishna Banerjee

Romance Classics Others

3  

Krishna Banerjee

Romance Classics Others

আর কত নিচে

আর কত নিচে

4 mins
20


                          আর কত নিচে ?

                18 ( প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্যে )

                              (পর্ব -৩ )

                     কলমে - কৃষ্ণ ব্যানার্জী

                  কাল যে নারীকে পোশাকের অন্তরালে দেখেছিলাম আজ তাকে দেখলাম পর্দার অন্তরালে। পর্দার অন্তরালে যে নারী উপস্থিত ছিলেন আজ আর তার দেহে পোশাকের বিন্দু মাত্র ছিলনা । আজকের আগে কোন নারীকে আমি অমন অবস্থাতে দেখিনি । পর্দা এতটাই মসৃণ ছিলো যে তার অপর ওপর পরিষ্কার পরিলক্ষিত হচ্ছিল। কয়েক মুহূর্তে আমি যা উপলব্ধি করলাম তা আমার কল্পনার অতীত । গাড়িতে বসে সারাটা রাস্তা সেই অপরূপা নারির মনমোহিনী রূপ ভেসে বেড়াচ্ছিল। আমি যেনো আজ একটা নতুন পৃথিবীর সন্ধান পেলাম , যে পৃথিবীটা এতটাই রঙিন যে আখানে হয়তো জীবনের সবকটা রং বর্তমান । এই ধরনের সাতপাঁচ ভাবছি এমনসময় গাড়িটা থিমগালো , ড্রাইভার জানালেন বাবু আপকা বাড়ি আ গেয়া । আমি তৎক্ষণাৎ একটা ঘোর থেকে বেরিয়ে আসলাম , নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম কিতনা হুয়া ? লোকটি জানালো পচাস রুপেয়া। আমি গাড়ি থেকে নেমে পকেট থেকে মানিব্যাগটা বারকরে তারথেকে একটা 100 টাকার নোট তারদিকে বাড়িয়ে দিলাম। লোকটা বলল স্যার আপ মারা পহেলা প্যাসেঞ্জার আছেন , হামার কাছে ছুটটা না আছে । আমি একবারই তাকে বললাম সরুপেয়া ছুটটা নেহি হয়ে ? লোকটা আবার বলল নেহি স্যার। আমার হৃদয়ে তখন অফুরন্ত আনন্দ তাই তাকে বললাম রাখলো । লোকটার মুখে একটা হাঁসির রেখা উপলব্ধি করলাম , তারপর লোকটি বলল thank you স্যার। বুঝলাম লোকটা কমবেশি এই ভাষাটা বোঝে অথবা কয়েকটা শব্দ সে বলতে পারে । লোকটা আমাকে একটা প্রণাম ঠুকে গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।

                             আজ মনের মধ্যে যেনো একটা আলাদা উদ্বেগ , না কোন ভয় নয়……একটা আলাদা আনন্দ , তাই একটা হিন্দি রোমান্টিক গান গুন গুন করতে করতে এগিয়ে গেলাম আমার বাসা বাড়ির ঠিক উল্টো দিকে একটা হিন্দু হোটেল রয়েছে , হোটেলের মালিককে সকলে পটকাদা বলেই ডাকেন , আমিও ওনার ওই নামটাই জানি । হয়তো কোন ভালোনাম আছে ওনার , তবে আমার বিশ্বাস সারাদিনে লোকটি পটকাদা নামটা এতো বার শোনেন যে হয়তো আজ তিনি নিজেও বলতে পারবেন না তার ভালো নামটা আসলে কি ? আমিও গিয়ে পটকাদাকে বললাম ‘ পটকা দা আমার রুমে একটা চিকেন ভাত হবে । পটকা দা বললেন আপনি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি। আমি আবার মনের আনন্দে গুন গুন করে ওই দুটি লাইন আওড়াতে আওড়াতে ঘরে ঢুকে পড়লাম । ঘরের ফ্যানটা চালিয়ে সোফায় নিজেকে আলিয়ে দিয়ে আরো একটিবার ঐ মনরাম শোভা উপলব্ধি করবার চেষ্টা করলাম । কিন্তু কয়েক মুহূর্ত পর আমার নিজেরই মনে হল আমি কিসব বোকার মত ভেবে চলেছি । একটা দুর্ঘটনা আমার চোখটা ওদিকে চলে গিয়েছিল কিন্তু আদপে ওই মহিলা ওই লোকটির স্ত্রী । সাথে সাথে লোকটির সেই কথাটি আমার কানে বেজে উঠলো , “ টাকা থাকলে কোন কিছুই অসম্ভব নয় “ । আমি বাথরুমে গিয়ে চোখ মুখে ভালোকরে জলের ঝাপটা দিয়ে নিলাম যাতে ওই মুহূর্ত টাকে যাতে মুছে ফেলা যায় । হয়তো সেদিন যদি ওই মুহূর্ত টাকে মুছে ফেলতে পারতাম তাহলে হয়তো এই বয়সে এসে এতো কিছু ভাবতেই হতনা , হয়তো ভাবতে হতনা আমি নামতে নামতে ঠিক কতটা নিচে নেমেছি ? তবে এই নিচে নামার জন্যে কি আমি একাই দায়ী ? নাকি এর দায়ভার সমাজের আরো কিছু মানুষের উপর বর্তায় । হয়তো বর্তায় কিন্তু আজ ঠিক যেখানে আমি দাড়িয়ে আছি সেখানে আমার কাছে কোটি কোটি টাকা রয়েছে , আর আমি একা হারিয়ে যাচ্ছি ওই টাকার ভিড়ে , হাত বাড়িয়ে আমাকে বার করে অনার মত একটিও মানুষ নেই আমার চারপাশে , এমনকি আমার এই পরিণতির দায়ভার নিতে চাইছেনা আমার পরিবারের লোকজনরাও।

                              যাইহোক আমি ফ্রেশ হয়ে আসতে না আসতে দরজার বেলটা বেজে ওঠে, পটকা দা খাবার পাঠিয়ে দিয়েছেন । আমি দরজা খুলে খবরটা নিয়ে ভিতরে চলে আসলাম , ছেলেটি খাবার দিয়ে চলে গেলো । আমি ভিতর দিয়ে দরজা আটকে খেতে বসেছি হঠাৎ আমার ফোনটা বেজে ওঠে , ফোনের স্কিনে বারের মালিকের নাম্বার। ফোনটা রিসিভ করতেই ওপর প্রান্ত থেকে উনি বলেন দেবব্রত বাবু একটু দেখেনিন আপনার একাউন্টে এ মাসের টাকাটা ঢুকেছে কিনা ? আমি ওনাকে বলি মাসজে এখনো শেষ হয় নি ? উনি বললেন আগে দেখে জানান বাকিটা পড়ে বলছি । আমি ওনার কাছথেকে একমিনিট সময় চেয়ে নিয়ে বেসিন থেকে হাতটা ধুয়ে ফোন থেকেই একাউন্টের বালেনস্টা চেক করে দেখলাম টাকাটা চলে এসেছে । আমি আবার বললাম স্যার এতটা আগে টাকাটা পাঠিয়ে দিলেন । আমার মালিক বললেন আপনার কপাল ফিরে গিয়েছে , আজ থেকে আর এখানে আসতে হবেনা অনার স্ত্রীর আপনাকে খুব পছন্দ হয়েছে তাই ওনার কাছে আপনার চাকরিটা পাকা । আমি বললাম স্যার আমিতো ওনাকে কোন সিদ্ধান্ত জানাইনি এখনো । উনি বললেন অনার স্ত্রী যখন আপনাকে পছন্দ করেছেন তখন আপনার ইচ্ছে যাই হোকনা কেন কাজ যে আপনাকে করতেই হবে । আমি আবার বললাম তাবলে আমার ইচ্ছার কোন মূল্য নেই । উনি বললেন এমন বোকামি করবেন না দয়াকরে , ওনার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাবেন নইলে বেঘরে প্রাণটা চলেজেতে পারে । আর কথা না বাড়িয়ে উল্টো দিক থেকে ফোনটা কেটে যায় । ওনার কথাগুলো আমার মাথার উপর দিয়ে চলে যায় শুধু এটুকুই বুঝলাম আমার চাকরিটা আর নেই ।

                                              ……………………


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance