ভালো অভ্যাস:-
ভালো অভ্যাস:-
তিতির খুব মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছে টি.ভির স্ক্রীনে। টি.ভি তে তখন দেখানো হচ্ছে কিভাবে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে আমাদের সঠিক ভাবে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া প্রয়োজন। তিতির সেটাই দেখছে। কিন্তু তিতিরের মনোযোগ ভঙ্গ হয়ে যায়
তার ছোট বোন ঝিন্টির চেঁচামেচি তে। ঝিন্টি চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে দিদি তিতির কে ডাকছে তার সঙ্গে খেলতে আসার জন্যে। ঝিন্টির চিল্লাচিল্লি তে একটু খাপ্পা হয়েই টি.ভির স্ক্রীন থেকে মনোযোগ সরিয়ে তিতির উপস্থিত ঝিন্টির কাছে। ঝিন্টি দুটো কাগজের নৌকা আর একটা কাগজের প্লেন বানিয়ে উড়াচ্ছে বাড়ির উঠানে। সারা গায়ে ধুলো বালি মেখে ভূত হওয়ার মতন দশা করে রেখেছে ঝিন্টি। তিতির দেখেই একটু শাসন করার কায়দায় ঝিন্টি কে বললো,
- কি করে রেখেছিস রে তুই এসব?
- কেনো কি হলো রে দিভাই?
- এত্ত এত্ত ধুলো বালি মেখে ভূত সেজেছিস কেনো?
তিতিরের কথা শুনে ঝিন্টি এক চোট হেসে নিলো, তারপর হাসি থামিয়ে বললো
- খেলছিলাম তো দিভাই, আর খেলতে গেলে তো ধুলো মাখামাখি হয়েই যাবে, তাই না?
- চল অনেক খেলা হয়েছে, চল ভেতরে যাবি চল
- খেল না দিদি আমার সঙ্গে আরো কিছুক্ষন।
ঝিন্টির আবদার করার কায়দায় আনন্দ পায় তিতিরও। হেসে ওঠে ছোট বোনটির কথায়।
বেশ কিছুক্ষন খেলা ধুলো করে এসে ধুপধাপ করে ঘরের ভেতরে ঢোকে ঝিন্টি। তিতির চিৎকার করে বাধা দিয়ে বলে
- এই পাজি মেয়ে হাত পা না ধুয়ে, এই ধুলো বলি নিয়েই সোফায় চরবি না।
- দিদি তুই বড্ডো বাজে। এতো কেনো শাসন করিস?
- গাধি, এই দেখ...
বলে খবরের কাগজ টা মেলে ধরে তিতির ঝিন্টির সামনে।
খবরের কাগজে সুন্দর ভাবে বর্ণনা দেওয়া আছে ডায়াগ্রাম সহ কি করে করোনা ভাইরাসের এই সংকটকালীন মুহূর্তে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যায়! ঝিন্টি তার ছোট ছোট চোখ গুলো কে আরো বৃহৎ আকার করে বেশ কিছুক্ষন গম্ভীর ভাবে চেয়ে পত্রিকা টা দেখে।
- দিদি চল।
- কোথায়?
- কেনো? বাথরুমে। ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে, কত্ত ধুলো বালি লেগে আছে বল। চল, বাথরুমে।
একটু হেসে তিতির বললো
- চল। আমরা এখন বেশ কিছুক্ষন পর পর হাত ধবো, আর ঘরে থাকবো তাহলেই দেখবি করোনা আমাদের কিছু করতে পারবে না। আর হাত পা ধুয়ে পরিচ্ছন্ন থাকা টা তো ভালো অভ্যাস তাই না? মা তো সব সময় বলে এটা করতে। চল, হাত ধুয়ে আসি।