ভাইফোঁটা
ভাইফোঁটা
আজ সকাল থেকেই কতবারই না ফোন করেছে প্রিয়া রূপমকে। রূপম তার থেকে সাত বছরের বড়ো দাদা। কর্মসূত্রে থাকে বিদেশে, সেখানকার এক মস্ত বড় কোম্পানির ম্যানেজার বলে কথা। কখন থেকে ফোন করছে আর দাদার দেখ ফোন ধরারই নাম নেই। ঠিকঠাক মত ফ্লাইট পেল তো, অফিসের বস ছুটি দিল তো ওকে এসব নানান প্রশ্ন মাথায় ভিড় করতে থাকল। আজ পাঁচ বছর হল ফোঁটা নেয়নি দাদা কাজের চাপে। প্রিয়া অবশ্য এই কলকাতার দশতলা উচুঁ ফ্ল্যাটটার সেকেন্ড ফ্লোরের বাসিন্দা। গান শেখায় সে।তার অবশ্য দাদার মত কাজের চাপ কখনই ছিলনা। ইতিমধ্যে বন্ধুদের ফেসবুক স্টোরিতে ভাইফোঁটার ছবি দেখে মনটা আরও খারাপ করে তার। দাদা বোধহয় এ বছরও আর আসবে না, মিষ্টি, জামা সব কেনা বেকার হ য়ে গেল। এরপর মনমরা হয়ে বেরিয়ে পড়ল সন্ধ্যায় কালী ঠাকুর বিসর্জনের অনুষ্ঠানের জন্য শাড়ি কিনতে। ভেবেছিল রূপম তাকে তার প্রিয় নীল রঙের একটা শাড়ি কিনে দেবে কিন্তু সেগুড়ে বালি। একা একা বেরিয়েছে যখন আনমনাহয়ে তখন আরেকটু হলেই ধাক্কা খাচ্ছিল একটা ট্যাক্সির সাথে। ট্যাক্সি ড্রাইভারকে কিছু বলতে যাবে এমন সময় গাড়ি থেকে নামে রূপম। হাতে বোনের প্রিয় নীল শাড়ি আর মুখে একগাল হাসি। সম্যক জ্ঞান হারিয়ে রাস্তাতেই জড়িয়ে ধরে দাদাকে। " আমি জানি রে পাগলি তুই আমার জন্য ওয়েট করছিস তাই চাকরি টা ছেড়ে দিয়ে বসের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে একটু দেরি হয়ে গেল। " কথাটা শেষ হতেই কেঁদে ওঠে প্রিয়া তার দাদা তার কাছে ফোঁটা নেবে ফলে চাকরি ছেড়ে দিল। এ যে সত্যিই অন্যরকম ভাইফোঁটা।
