আমি ঢাকাইয়া মাইয়া
আমি ঢাকাইয়া মাইয়া
""""'কাগজ নিয়ে আয় ফুল বানিয়ে দেব। খুব সুন্দর ফুল বানাতে জানি আমি।দেখে কেউ এটা আন্দাজ করতে পারবে না এটা কাগজের নাকি সত্যিকারে,,,,,
তার কোথা শুনে চাচাতো বোনরা প্রশ্ন করে বসলো,,,,,
'''তুমি এসব দিয়ে ফুল বানাতে জানো আপু....? উত্তর আসলো
.. ওমা পারবো না কে,? আমি ঢাকইয়া মাইয়া। ঢাকাইয়া মাইয়ারা কি না করতে পারে.....? তার উত্তর শুনে চাচাতো বোনেরা বেশ অখুশি হল। কারণ তারা সত্যিটা জানে। রিয়ানার মুখে এ কথাটা কয়েকবার শুনা হয়ে গেছে তাদের। রিয়ানার ভাই ও বাবার ব্যবসার সুবাদে চার মাস হলো রিয়ানা ঢাকা গেছে। আগে ঢাকা থেকে ভাই ও বাবা ব্যবসা করত আর তারা তার মায়ের সাথে বাড়িতে থাকতো। সম্পূর্ণভাবে গ্রামেই বেড়ে ওঠা। গ্রামের হাই স্কুলে গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে এমনকি কলেজ ও গ্রামে ভর্তি হয়েছে।চার মাস হলো তারা পুরো পরিবার ঢাকা সেটেল হয়ে গেছে । তবুও এই কথাটা চার মাসে তার মুখে চিপকে গেছে। কোন কিছু বললেই বলে উঠে আমরা ঢাকাইয়া মাইয়া কি না করতে পারি। যদি বলা হয়। """তুমিতো ঢাকাইয়া মাইয়া না। তুমি তো গ্রামে বড় হইছো।
কিন্তু কে শুনে কার কথা। রিয়ানার চাপার জুড়ে তার চাচাতো বোনেরা টিকতে পারে না।
বিকেলবেলা চাচাতো বোনদের সাথে ঘুরতে বের হয়।
কথা বলার সময় হঠাৎ বলে ফেললো......
..ওখানে গাতা, পরে যাবি সাবধানে যা, সামনে পেক আছে। জামাকাপড় ভইরা গেলে তোর মা মারবে,,,,,
তার কোথায় একটা চাচাতো বোন বলে ওঠে
"" আপু এসব কোন ধরনের শুদ্ধ ভাষা.....?
কথাটার রীতিমতো এড়িয়ে যায় রিয়ানা। তার কথা শুনে বুঝা যাচ্ছে যে, গ্রামে আঞ্চলিক ভাষাগুলো থেকে সে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। তবে দীর্ঘদিন ব্যবহৃত ভাষা গুলো তার পিছু ছাড়ছে না। রিয়ানা এসেছিল তার ফুফাতো ভাইয়ের বিয়ে খেতে। আর দুদিন পরেই বিয়ে। বিয়ের কেনাকাটা তারা ঢাকা থেকেই করে নিয়ে এসেছে। জামাকাপড় গুলো সবাইকে দেখাচ্ছে আর বলছে.....
""""দেখ তো আমাকে কেমন লাগবে এই জামাগুলোতে ....?
ভালোই লাগবে বল,, ঢাকাইয়া মেয়েদের কিনা ভালো লাগে। সবকিছুই একবারে মানায় যায়। হাহাহাহা....
সবাই তাকিয়ে থাকে তার দিকে। বিয়ের দিন সবাই সুন্দর জামা কাপড় পরে ইচ্ছে মতো সেজেগুজে বরযাত্রী হয়ে রওয়ানা দিল। তবে রিয়ানার মুখে সেই কথাটা আছেই
....আমি ভাইয়ার সাথে বসে যাব..,আমি বসবো, আমিই বসবো, দেখিস বসেই ছাড়বো।" ঢাকাইয়া মেয়েরা কি না পারে...? ওর এই কথাটা রীতিমতো সবাই বিরক্ত। কথাটা তার মুখ থেকে কিছুতেই সরানো যাচ্ছে না। যদি সরানোই না যায় কি আর করার...? অবশেষে বরযাত্রীরা সাত আটটা গাড়ি নিয়ে কনে পক্ষে বাড়িতে গিয়ে হাজির। বাড়িতে ঢুকতে গিয়েই সম্মুখীন হতে হলো দিনে দুপুরে ডাকাতি করা এক দল মেয়ে ডাকাতের সম্মুক্ষে। অবশেষে চাপার জোরে ডাকাতরা বরপক্ষকে একদম খালি করে দিল। তারপর ঢুকতে দিলো। কিন্তু না, তারা তো আরো কিছু চায়। ওই সময়ের ডাকাতিতে নাকি তাদের এখনো পোষায়নি। তাই তারা আবারও হাত ধুয়াতে চলে আসলো। তাদের পোল্লায় পরে বেচারা বরের বারোটা বেজে গেল। ডাকাদদের মধ্যে থাকা একটা মেয়ে বলতে থাকলো টাকা
""""না দিলে হাত ধুতে দেব না। দুলাভাইকে আজ সারাদিন এটু হাতে রাখবো। হা হা হা....
তখনই হঠাৎ আমাদের ঢাকাইয়া মেইয়া বলে ওঠে....আপনারা যা বলবেন তা হইব নাকি....?আমি থাকতে তো আপনারা একটা আনাও পাইবেন না। আমি যেখানে থাকি সেখানে টাকা তো দূরের কথা পয়সা ও না। আমরা ঢাকাইয়া মাইয়া, ঢাকাইয়া মাইয়া কি না করতে পারে.........
এ কথাটা সে একবার নয় আরো কয়েকবার বলেছে। কথাটা শুনে হয়তো ওদেরও বিরক্ত লেগে গেছে। হঠাৎ ওই মেয়েটা বলে উঠলো......
"""ঢাকাইয়া মাইয়ারা সত্যি সবকিছু করতে পারেন.....?
রিয়ানা বলে....
""কেন পারব না। কি করতে হবে বলে দেখ দেখুন?
মেয়েটা বলে উঠে
..... এখানে দাঁড়ান। একটা ঝুরি নিয়ে আসি। ঝুরি টাতে বেশি না, শুধু একটা ডিম পেড়ে দেখান। তারাতাড়ি করুন " ঢাকাইয়া মাইয়া বলে কথা.....