আলোর দিশারী
আলোর দিশারী




কালো মেঘে চারিদিক অন্ধকার। বজ্রপাতে কেঁপে উঠছে ধরিত্রী। প্রচণ্ড ঝড়ে গাছগুলি ভেঙে পড়ছে। চারদিকে মানুষের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে উঠছে। বীর দর্পে এগিয়ে যাচ্ছেন আলোর দিশারী। মুখমন্ডলে প্রশান্তি বিরাজ করছে। ভয়ের লেশমাত্র নেই। যেন নিজের সংকল্পে অটল। দেহের নিম্নাঙ্গ একটি ধুতি দিয়ে ঢাকা এবং ওপরের অংশে একটা চাদর। তিনি ঠিকই করে নিয়েছেন হয় মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন। যতই এগোচ্ছেন তত বাধা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও একাগ্রতার দরুণ সেইসব বাধাকে অতিক্রম করে চলেছেন। এই দুর্যোগপূর্ণ পথে একজন যুবক তাঁকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,"মশাই! দুর্যোগে কোথায় যাচ্ছেন?" শুনে আলোর দিশারী শান্তভাবে বলে উঠলেন,"আলোর সাগরে যাচ্ছি।" যুবকটি ভাবলো লোকটির মাথা খারাপ মনে হয়। ঐরকম সাগরের নাম সে বাপের জন্মেও শোনেনি। তারপর যুবকটি বাড়ির দিকে চলে গেল।
আলোর দিশারী মৃদু হেসে আবার চলতে লাগলেন। নেই কোনো ক্লান্তি, নেই কোনো আসক্তি। শুধু জানেন তাঁকে আলো নিয়ে আসতেই হবে। এই আলোই জগতের সমস্ত অন্ধকার দূরীভূত করে নবচেতনার জন্ম দেবে। যেতে যেতে তিনি আলোর সাগরে পৌঁছে এক অদ্ভুত আনন্দ উপলব্ধি করলেন। সেই আলোর কিছু অংশ তিনি নামিয়ে আনলেন জগতে। চারিদিকের ঝড় গেল থেমে, কেটে গেল মানুষের ভয়, যেন নতুন করে জন্ম নিল পৃথিবী। জগৎ হয়ে উঠল আলোময় লাভ করল নতুন চেতনা।
পন্ডিচেরির সমুদ্রতীরে সন্ধ্যা নামল; আলোর দিশারীর কথা শেষ হল।