Aadure Aakhyan
Aadure Aakhyan
ফেব্রুয়ারির আট তারিখ, আজ দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী দিয়োত্তমা, দিয়া'র... সকালে স্নান করে সিথিতে লাল টুকটুকে সিদুর ছুঁইয়ে মাত্র রেডি হয়েছে দিয়া.....ঘরে ঢুকে আসে বিনীতা দেবী ছেলে দিভীত কে নিয়ে, তারা দুজনেই নতুন পোশাক পড়ে কোথাও একটা যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছে, দিয়া জানেনা....
বিনীতা দেবী কড়া গলায় বলে ওঠেন, "শোনো দিয়া, আজ দিভু আমার সঙ্গে মন্দির যাবে... আমাদের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না, ফ্রিজে খাবার রাখা আছে... খেয়ে নেবে.. আমরা ভোগ খেয়ে গুরুদেবের সাথে দেখা করে তবে ফিরবো...ফিরতে দেরি হবে....".... চুপ করে মাথা নাড়ে দিয়া... একবার অর্থপূর্ন কাতর চোখে তাকায় দিভীতের দিকে..... মায়ের ওপর কথা বলার ক্ষমতা নেই মায়ের দিভুর, তাই বাধ্য ছেলের মতো চুপ করে বেরিয়ে যায় মায়ের পেছন পেছন.....
চোখের জল মুছে রোজকার নিয়মে ঘর গোছাতে গিয়ে খাটের বালিশ তুলতেই দিয়ার চোখে পড়ে, রঙিন মোড়োকে মোড়া আয়তাকার চ্যাপ্টা বাক্স...
অবাক হয়ে খুলে দেখে ওর পছন্দের সেই শাড়িটা, যেটা ও flipkart এর wishlist এ রেখে দিয়েছিলো.... হাসি মুখে তুলে নেয় পাশে পড়ে থাকা কাগজটা.....
"তুমি খুশি থাকলে রোজই স্পেশাল দিন দিতি...শুধু এক টুকরো হাসি দেখতে চাই তোমার মুখে সবসময়...সকালটা মাকে দিলাম, সন্ধ্যেটা না হয় আমাদের জন্য থাক....মাকে তোমার বান্ধবীর বাড়িতে invitation এর কথা বলবো... তুমিও মা জিজ্ঞেস করলে তাই বলো,কেমন?.... শাড়ীটা পড়ে ready থেকো... And happy 2nd marriage anniversary দিতি.... এভাবেই আদুরে ভালোবাসায় ভরিয়ে রেখো আমাকে সারাটাজীবন.... ভালোবাসি তোমাকে... না না, তোমাকেই ভালোবাসি.....!".....শখের শাড়ীটা দেখে নিয়ে বাক্স বন্ধ করার সময় বালিশের পাশ থেকে এতক্ষণে উকি দেয় আধ খাওয়া লালচে কমলালেবুটা....
আনন্দে হেসে উজ্জ্বল মুখে সেটা হাতে তুলে নেয় দিয়া... ওই অর্ধেক কমলালেবুর থেকে একটা লাল টুকটুকে কোয়া নিয়ে মুখে দেয়..... ভীষণ মিষ্টি লাগে এই লেবুর স্বাদ, দিতীভের nostalgic স্পর্শ লেগে আছে যে..... সুখের স্মৃতিতে বিভোর হয়ে যায় দিয়া.....
হবে নাই বা কেনো! এই কমলালেবুই যে ওদের শীতের এক দুপুরে কাছাকাছি নিয়ে এসেছিলো, যেদিন প্রথমবার ছাদ থেকে দিয়ার আনমনে ছোড়া কমলালেবুর বীজ সোজা গিয়ে পড়েছিলো দিতীভের ঘর লাগোয়া ছোট্ট সুন্দর ব্যালকনিটায়......!
সমাপ্ত

