STORYMIRROR

Sayani Saga

Inspirational

4  

Sayani Saga

Inspirational

The Mask

The Mask

5 mins
11





যান্ত্রিক আওয়াজ হতে মিলি pause করে দেয় computer টা...


সামনে computer table এ রাখা মোবাইলটা জ্বলে উঠেছে, মিলি তাকিয়ে দেখে প্রতিলিপির notification....


মাত্র শেষ হওয়া ধারাবাহিক এর শেষ পর্বের রিভিউ, হালকা হাসি নিয়ে উৎসাহী হয়ে আঙুল ছুয়ে দেয়....


"*****"
"প্রতিমা সাহা:You're unbelievable!"...


দেখে চোখ দুটো চকচক করে ওঠে মিলির.... যত্ন করে Type করে....


"তিলোত্তমার ইতিকথা(লেখক) :thank you so much dear, really..."....


প্রায় সাথে সাথেই প্রত্যুত্তর আসে,দেখে মিলির মুখের হাসি মিলিয়ে যায়, কান গরম হয়ে যায়... ভেতরটা জ্বালা করে ওঠে.....


"প্রতিমা সাহা:তা কোথা থেকে টুকেছেন? দাদা/দিদি?"..


রাগে, উত্তেজনার বশে মিলির হাত কাঁপছে এখন সামান্য, কিন্তু কাঁপা হাতেই সাথে সাথে ও type করে আবার.....


"তিলোত্তমার ইতিকথা(লেখক):আপনার কি আমার গল্পটা টোকা বলে মনে হচ্ছে?আর যদি মনে হয় তাহলে ভুল মনে হচ্ছে কারণ আমি টুকে গল্প লিখি না... অনেক ধন্যবাদ, আপনি আসতে পারেন.... "...


খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয় না ওকে, এবার জোরালো প্রত্যুত্তর আসে...


"প্রতিমা সাহা: আচ্ছা টোকেননি.. তবে ছেপেছেন বলি?..এবার পছন্দ হয়েছে..? আপনি পুরোটাই ছেপেছেন তাও আবার সাগর পেরিয়ে সেই সুদূর বিদেশের প্রথম সারির সিনেমা থেকে ,তা সিনেমার নামটা না হয় নাই নিলাম... তবে বুদ্ধি করে কিন্তু দারুণ সামলেছেন সবটা, এলেম আছে বলতে হবে... যাই হোক এলাম তবে, ভালো থাকবেন...."...


মিলি দাঁতে দাঁত চেপে অস্থির হাতে ভদ্রস্থ প্রত্যুত্তর type করে আবার.....


"তিলোত্তমার ইতিকথা(লেখক):sorry...বিদেশী সিনেমা আমি দেখি না, কিন্তু আপনি যখন বললেন তখন এরকম কোনো সিনেমা হয়ে থাকলেও থাকতে পারে, কিন্তু আমার অন্তত তা একেবারেই জানা নেই, আপনি নামটা বললে আমিও দেখতাম আর কি... সে যাই হোক, জানিয়ে রাখি যে সিনেমার সাথে আমার গল্পের মিল থাকাটা সম্পূর্ণ কাকতালীয় ব্যাপার... কারণ টোকাটুকি বা ছাপাছাপির কোনো বদ অভ্যেস আমার অন্তত নেই... আর হ্যা, আপনিও ভালো থাকবেন..."...


Typing শেষে আর উত্তরের অপেক্ষা না করে বিরক্ত হাতে Off করে দেয় comment section টা মিলি...বেরিয়ে আসে প্রতিলিপি থেকে, টেবিলের ওপর স্বল্প আওয়াজ করে সামনেই ছুড়ে ফেলে মোবাইলটা ...
"তিলোত্তমার ইতিকথা" নামে মিলিই লেখে প্রতিলিপিতে, আজ প্রায় দু বছর হলো........


একটানা মনোযোগ দিয়ে কম্পিউটার স্ক্রিনে মুখ গুঁজে বসেছিলো মিলি, তার মধ্যে এই বিশ্রী গা জ্বালানো উপদ্রবে ভীষণ বিরক্ত হয় মিলি...
মুখ বেঁকে যায় ওর, দাঁতে দাঁত ঘষে বলে," যত্তসব bogus লোকজন!... কে না কে নিজের তো এক line লেখারও ক্ষমতা নেই! এসেছেন সমালোচনা করতে..! অসহ্য... প্রতিলিপি পড়বে.. Enjoy করবে আবার শেষে এসে খোঁচাটাও দিতে ছাড়বে না...! শুধু এর তার পেছনে লেগে বেড়ানো.... এরা এক একটা negativityর আতুড় ঘর!.. আচ্ছা প্রতিলিপি যে পড়ে.. এরা এই শব্দটার মানে জানে? জানলে বোধ হয় এসব বলে সময় নষ্ট করতো না... ফালতু যতো...! "... গজগজ করতে করতে আবার play button এ চাপ দেয় ও...


মিলির মা যেন তৈরিই ছিলো.....
Play button press করায় ঘরটা গম গম করে ওঠার সাথে সাথে, এক হাতে খুন্তি নিয়ে রণচন্ডি মূর্তি ধারণ করে দরজার সামনে এসে দাঁড়ায় ওর মা, ঝাঝিয়ে বলে "এই কি রে? আবার sound বাড়িয়েছিস?? এ বাড়িতে তো তোর জন্য টেকা দায়! সারাটাক্ষণ ঘরের মধ্যে দিন নেই রাত নেই গাক গাক করে ছাইপাশ চলছে! এগুলোর মাথা মুন্ডুও তো ছাই বুঝি না..! এসব কি ভাষা!! কিসব যে দেখিস আজকাল! Sound কমা! আর যেন আমাকে আসতে না হয়.. ওদিকে আবার মাছটা না পুড়ে যায়...!"....দ্রুত পায়ে আবার রান্নাঘরের দিকে চলে যায় মিলির মা...


বাধ্য হয়ে এতক্ষণ সবটাই মুখ বুজে হজম করছিলো মিলি, নাহলে আবার তারস্বরে ভাষণ শুরু হবে....সাথে আবার বোনাস হিসেবে পিঠে, গালে দু একটা কিল চড় জুটে যাওয়াও অসম্ভব কিছু নয়....


কিন্তু মা চলে যেতেই মিলি তিরিক্ষি চোখে দরজার দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করতে করতে বলে, "রান্নাঘরে মাছ পুড়ে গেলেও তোমার ভয়ঙ্কর মুখের গুনে আমি, বাবা সব মুখ বুজে খেয়ে নেবো! কিন্তু প্রতিলিপির পোড় খাওয়া readers দের তো চেনো না! Solid হাতের গুণেও তাদের সব খাওয়ানো যায় না...! এদের Bollywood, Hollywood already সব গুলে খাওয়া...! এই lock down এর জন্য korean, চীনা, Japanese ও গোগ্রাসে গিলেছে... আপাতত তাই এই জার্মানই ভরসা, নয়তো এই free time এ মিমি, নুসরতের film না দেখে, এসব অং বং চং দেখি কি আর সাধে....!"...অনিচ্ছা সত্ত্বেও volume কম করে দেয় মিলি...


Screen এ তাকায় আবার, scene অনেকটা এগিয়ে গেছে... মা এসে যাওয়াতে miss হয়ে গেছে বেশকিছুটা.... ও বিরক্ত মুখে বলে ওঠে ," ধুর ভাল্লাগে না! দিলো গণ্ডগোল পাকিয়ে...! আবার rewind করতে হবে...!"... বলে দ্রুত rewind button এর দিকে হাত বাড়ায় মিলি....


....................................


Last রিভিউটা দিয়েই 'প্রতিমা সাহা' প্রোফাইল এর sign out button এ হাত ছোঁয়ায় কিশোরী আঙুল.... Option এ গিয়ে choose করে 'ঐশিকা মুখার্জি' ... খুলে যায় শৌখিন সাজানো প্রোফাইল...


"ঐশিকার স্বপ্নতরী "
খুচরো লেখারা বয়ে যায়
স্বপ্নের সন্ধানে...
অলস আলোয় সে তরী বায়
আলগোছে আনমনে....
(আর একটা কথা, fake people আর fake profiles, এই দুটোতেই আমার বিশেষ allergy আছে)।


ঠোঁটের কোণে ফুটে ওঠে হাসি.... চোখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে...
শেষ post করা পর্বের অগণিত রিভিউ এসেছে এর মধ্যেই.....নতুন কয়েক জন আবার follow করেছে.... যদিও, already বহু followers এখন তা পনের হাজার ছুঁই ছুঁই..... দেখতে দেখতে Scroll down করে নিচে তাকাতেই নিজের ধারাবাহিকের নির্দিষ্ট রিভিউটা চোখে পড়ে ঐশিকার.... আলতো আঙুল ছোয়ায়.....


Screen এ চোখের সামনে ভেসে ওঠে....


"*......"
"তিলোত্তমার ইতিকথা(লেখক): জঘন্য...! বুঝলাম হিন্দী সিনেমা copy paste করেছেন... তাই বলে এত বানান ভুল আর বাঁধন ছাড়া লেখা? সেটুকুও নিজের বুদ্ধিতে কুলোলো না বুঝি?"


"ঐশিকার স্বপ্নতরী(লেখক): sorry 😕"....


ঐশিকার মুখের হাসি ক্রমে চওড়া হতে থাকে, মিশে থাকে তৃপ্তি....





*সমাপ্ত*



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Inspirational