উমার পুজো দ্যাখা - শারদ সংখ্যা
উমার পুজো দ্যাখা - শারদ সংখ্যা
ঐ যে উমা, ওর চুলগুলো
একটু এলোমেলো
কালো চুলে ঘন লালের ছোপ
বড্ডো খসখসে l
সারাদিন বটগাছটার নিচে
সে বসে থাকে
খড় কাঠামো কুমোরটুলির
ঐ রাস্তাটার পাশে l
আজ তার খাওয়া জোটেনি
বসে আছে সারাদিন
মা হয়তো অন্যের বাসন মাজছে
ভুলে খেতে ডাকেনি l
পাল দাদু সারাদিন চোখ আঁকে
সে অবাক হয়ে দ্যাখে
রাতের অন্ধকারে মোমবাতি ধরে
নিপুন সেই তুলির টান l
ভ্রু, চোখের পাতা, মায়াময় চোখ,
চোখের কাজলা মনি l
ওর মধ্যে তার পৃথিবী ঘুরছে
তার আলো চাঁদ সূর্য তারা l
ওর বস্তিতে কোনো কোনো দিন
সবার খাবার জোটেনা
সে বসে থাকে রাস্তাটার পাশে
তাই বলেছে তার মা l
পরনের জামাটা শত শত ছিদ্র
ওটা সমাজের মতন
মুখে, জামায় ধুলোয় ধুলোময়
সমাজটা গান্ধারী যেমন
l
ঐযে চারচাকা চেপে লোকগুলো
কেক পেস্ট্রি গোগ্রাসে খায়
সে চাইলে, তাকে তাড়িয়ে দেয়
এত কৃপ্টা ওরা সবাই ?
সে কখনো কিছু খাওয়ার পেলে
পিঁপড়েদের খেতে দেয়
ওরা তাতে বড্ডো আনন্দ পায়
সেও তা বুঝতে পারে l
যারা লেখাপড়া করে এত জ্ঞানী,
অজ্ঞানে ভরা বৈষম্য তার
সমাজের এই জ্ঞানী মূর্তিগুলোর
অর্থের নীতি কেন নির্মমতার?
এই তো যেদিন মূর্তিগুলো তাকে ধরলো
জোর করে তুলে নিলো গাড়িতে
তার সর্বনাশ করে মুখে আদলা ইট মেরে
ফেলে দিলো নালীতে l
পরদিন কিছু জ্ঞানীরা জড়ো হলো
তার নিথর দেহটা ঘিরে
মা খুব কাঁদছিলো বাবা ছিল স্তব্ধ
জ্ঞানীগুলোর ভাষণ শুধু লোকদেখানো ভিড়ে l
কিছুদিন পর ওরা সব ভুলে যাবে
কত পার্বতীর স্বপ্ন মুছে যাবে
নির্মম এই জ্ঞানীরা চেনে শুধু টাকা
মিথ্যে তাদের পুঁথির যত শব্দলেখা l
আজ সে মুক্ত, স্বাধীন মনের আনন্দে
দেখবে দূর্গা মায়ের পুজো
ধনী গরীবের নগ্নতা আর ছোঁবেনা তাকে
আজ সে মায়ের কাছে যাবে l