সোহাগ জল
সোহাগ জল
আজ চম্পার বিয়ে, " ও চম্পা____কাঁচা লঙ্কা ____"
ছেলে-ছোকরাদের এসব বলার দিন এবারে শেষ!
বিয়ে বাড়ির খাওয়াটা সবারই অবশ্য হবে বেশ।
পেতলের কলসি, ঘড়া নিয়ে, পাড়ার যত বৌ-মেয়ে,
পুকুরে জল সইতে গিয়ে ছিল মাটির এ পথ দিয়ে।
অধিবাসের স্নানের কিছুটা জল রেখেছে বাঁচিয়ে,
মাটির হাঁড়ির ঢাকা সে জল দেখবে শুধু তার মায়ে।
মায়ের মনে থাকে যে অকৃত্রিম ভালোবাসা !
বিদায় দিতে হবে জেনেও, করে মেয়ের সুখের আশা।
পেয়ে গেছে মা যে নতুন একটা মনের মতো কাজ,
জলের ঢাকা খুলে বারে বারে দেখবে আজ।
মাঝে মাঝেই কান্না তো আজ মায়ের পাবেই,
চোখের জল মুছতে আসবে সোহাগ জলের কাছেই।
ঢাকা খুলে এমন স্হির জলটা দেখে,
মেয়ের জীবনের নিস্তরঙ্গ সুখের একটা ছবি এঁকে,
চোখের জলটি মুছে মনে মনে খুশি সে তো হবেই।
চম্পার বরকে দেখে পাড়ায় জেগেছে সাড়া,
হিংসুটেদের চোখ তো এক্কেবারে ট্যারা!
খাওয়ার পরে বলছে তারাও দেঁতো হাসি হেসে,
চম্পাকে যেন ওর বর একটু ভালোবাসে।
কথাগুলো শুনে খুশি হয়ে চম্পার বোন ও ভাই,
ওদের হাতে একটি করে পানের খিলি ধরিয়ে দেয়। সাঁঝো বিয়ের পর বাসর জাগার পালা এবার,
যত ছিলো মেয়ে আত্মীয় এবং পাড়ার যত এয়ো,
সবাই মিলে করছে পালন স্ত্রী আচার।
সোহাগ জলের ওপর এবার ওদের সবার অধিকার!
রসিকা এক মহিলা নিজের হাতে,
দিয়েছে মাটির হাঁড়ির সোহাগের জলটা ঘুরিয়ে,
দুজনের মাথার শোলার মুকুটের ছেঁড়া টুকরো ছেড়ে,
দেখছে সবাই কে যায় কার পেছনে দৌড়ে।
চম্পার মুকুটের টুকরো চলে আগে আগে,
চম্পার বরের মুকুটের টুকরো তার পেছনে ভাগে।
দেখে সবাই খুশিতে জোরে হেসে উঠে দেয় হাততালি,
লজ্জ্বায় খুশিতে চম্পার মুখ নিচু হলেও,
বরের কিন্তু এই মজার খেলা দেখে হাসি পায় খালি।

