সেই নীরার মতো (১০)
সেই নীরার মতো (১০)
কাটফাঁটা রোদ, পানির তেস্টা, জলের অভাবে ক্ষেত চৌঁচির,
হাটুজল পুকুরে মানুষের ডুবসাতার,
রৌদ্রতাপে মগজ ফুটন্ত অস্থির।
কাছে এসে কানে কানে বল্লাম,
নিচু স্বরে, বাসরের রাতে নববধু
ফিসফিস করে যেভাবে বলে,
নীরা, চল নদীতে সাতরাতে যাই।
হো হো করে হেসে উঠে নীরা,
চোখে মুখে তাকায় আমার,
প্রলাপ শুনে, পাগলের সংশয়।
একি বল তুমি?
বালুচর ধুধুময়, সাতরাবে কোন জলের মোহনায়?
নীরা বোকা চিরকাল।
নীরা কি জানে?
তার পায়ের নুপুরের শব্দে জেগে উঠে জল,
মাটি ফুটে জলের স্রোতধারা ভাসায় দুকুল?
ঘুমন্ত সব জলছানা, চোখ কচলাতে কচলাতে,
তাকাবে নীরার দিকে ।
নীরার জন্য তারা বড় উদগ্রীব, অপেক্ষায় রত,
নীরাকে দেখেই বলবে,
এতকাল কেন আসোনি?
তোমার জন্য নিদ্রায় মগ্ন সকল।
নীরার জন্য নদীতে শুষ্ক মরুভূমি,
বহুকাল উথলে উঠেনি জল।
নীরার জন্য ডুবেনি দু কুল।
নদী পারাবার নৌকাগুলো শুটকি মাছের মতো,
রোদে পুড়ে একাকার, শ্যাওলার পোনা জন্মেছে বুকে।
চল নীরা চল ,
কতকাল দেখিনি তোমার ভেজা শরীর, ভেজা চুল,
বুকে শুধু জড়িয়ে রাখ শুভ্র পাতলা আচ্ছাদন,
আমি মুগ্ধতায় ভরে যেতে চাই, আবিষ্ট হয়ে দেখব তোমায়।
নীরা তোমার নুপুরের শব্দে জলের কোলাহল।
