মাতৃহারা
মাতৃহারা
"পান্তা ভাতে লঙ্কা মরিচ, গরম ভাতে ভর্তা"
বাঙালী যে অল্পেই সন্তুষ্ট, জানে সকলেই তা।
তবে পাতে যদি থাকে কই-মাগুর, রুই-কাতলা,
বোয়াল মৃগেল রাইখোর বাটা অথবা চেলা-চাঁপিলা!
আহ্লাদে আটখানা হয় পেলে পুঁটি কিংবা মৌরলা।
সকলেই জানে মাছে ভাতে বাঙালী থাকে তুষ্ট,
তবু পাঁঠার মাংসের নামে যেন একটু বেশীই সন্তুষ্ট।
খোঁজ করে মা মা বলে ডাকা পাঁঠাকেই দিতো বলি,
দেবীর নামে এমন কাজ করে কি তোরা শুদ্ধ হলি ?
অবলা জীবের উপরে বীরত্ব না ফলিয়ে,
দে দেখি নিজেদের পশুত্ব বলি!
মাংস খাওয়া অপরাধ, একথা বলার নেই অধিকার,
আপ রুচি খানা, একথাটা তো শুনেছি অনেক বার।
কিন্তু একটা প্রাণীকে যেভাবেই হোক হত্যা করা,
যতো ধীরে হয় প্রক্রিয়াটা তত বেশি কষ্ট পায় ওরা।
আর সারা শরীরে সেই কষ্ট ছড়িয়ে যাওয়া মাংসটা,
যতো সুস্বাদু করেই রাঁধা হোক, একরকমের বিষ তা।
নানা রোগ - ব্যাধি, মানসিক কষ্ট ঘিরে ধরে যখন,
মনে কি পড়ে ? খাসি বা পাঠার কষ্টের কথা তখন !
বাঁচার জন্য খাওয়া হলে মানুষ খায় যতটুকু দরকার,
খাওয়ার জন্য বাঁচলে, ফাঁদ পাতা আছে লোভের।
"লোভ মোহো মহাপাপ, শেষে হয় অনুতাপ"
কথাটা যদিও সকলেই জানে, কিন্তু কজন মানে !
মা মা বলে ওরা যে কেঁদে হয় সারা,
মানুষের লোভের জন্যেই , ওরা যে আজ মাতৃহারা।
কিন্তু বাঙালী বাড়িতে রবিবারের রেসিপিতে,
মাংস এমন ভাবে জড়িত সকলের পাতে।
দু এক পিস কষানোর স্বাদ নেওয়া!
রসুন,দুটো আলু,একটু মাংসের ঝোল পাতে দেওয়া।
এটাকে ঠিক লোভ বলা চলেনা, এ যে ভালোবাসা !