কুয়াশা
কুয়াশা
ধীবরদের রাজা দাশ যমজ ভাইবোনকে কুড়িয়ে পান,
মাছের পেটে দুভাইবোন যেন নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছিলেন।
চেদীরাজ উপরিচর বসু পুত্রকে নিলেন আপন করে,
অদ্রিকার কন্যাটিকে দাশ রাজারে দিলেন দান করে।
কন্যাসন্তান বলেই কি জুটলো কপালে অবহেলা !
তার ওপরে কন্যার গায়ে আবার মাছের গন্ধ মেলা!
যমজ ভাইবোনেরা বড় হলেন দুরকম পরিবেশে,
রাজপুত্তুর মৎসরাজ হলে, লোকে তাঁকে ভালোবাসে।
সত্যবতী যমুনায় নৌকা চালান, দাশরাজের আদেশে,
দুর্গন্ধের কারণে তাঁর কাছে সেধে কেই বা আসে ?
তবে যৌবন ঠিক সময়েই এলো না করতেও আমন্ত্রণ,
কে জানে,দেখে হয়তো অনেকেরই হতো মন উচাটন।
কিন্তু কেউ ঘেঁসতোনা বেশী কাছে, দুর্গন্ধই যে কারণ!
অবহেলিতা নারীর জীবনে ক্ষণিকের ডাক মিলনের,
এলেবেলে নন, ডাকেন বশিষ্ঠের নাতি, মুণি পরাশর!
সত্যবতী ঠিক ই বুঝে যান এবার নিজের কদর,
জানেন এক কথায় রাজি হলেই কমে যায় আদর।
বুদ্ধি করে একে একে একাধিক শর্ত সামনে রাখেন,
প্রথমেই নদীর নৌকো যে খোলা জায়গা তা বলেন।
লজ্জ্বা আভরণ ঘুচাতে তৈরী হলো কুয়াশার চাদর।
তাতেও রাজি না হতে চাইলে এলো কুমারিত্বের বর,
এরপর আশীর্বাদ মৎসগন্ধা হতে পদ্মগন্ধা হবার !
নিমরাজি হয়ে যান অপূর্ব সুন্দরী সত্যবতী এবার।
তার ওপরে ছেলেপুলের দায়িত্ব তাঁকে নিতে হবেনা,
মুণি নিজেই করবেন পালন, পোষন, কেউ জানবেনা।
ভেবে দেখতে গেলে প্রস্তাব গুলো নিতান্ত মন্দ নয়,
পদ্মগন্ধায় পরিনত হবার কথাটা খুব ভালো মনে হয়।
কে জানে কোন মন্ত্রবলে এসব অলৌকিক কান্ড হয়,
সব কথা জানার নেই দরকার, রহস্য ফুরালে কি রয়!
