।। কমলা ।। ( দ্বিতীয় দিন)
।। কমলা ।। ( দ্বিতীয় দিন)


কমলা মাছের মুড়ো পায় না ,
ভাই খায় । কমলা ইস্কুলে যায় না ,
ভাই যায় ... মূর্ত হয় আবেগের প্রকাশ।
কমলা তবু কালে, দিনে বেড়ে ওঠে ।
সুন্দরী কমলা
লাল রঙের শাড়ীতে যেন
নটী লক্ষ হীরা, কিংবা
নীল শহরের অন্ধ গলিমুখে,
দাঁড়িয়ে থাকে হাতে বাতি যারা, তাদের কথা বলে
কমলা। .... বাঙ্ময় হয় রাগের অভিব্যক্তি।
রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে যারা আড্ডা দেয়,
তাদের কেউ
কমলা স্কুল কলেজে গেলে
পেছনে লাগে ফেউ ।
কমলা অফিসে খাটে, ঘরে খাটে
কমলা আকাশে হাঁটে, তবু
সে যথেষ্ট স্মার্ট নয়, জবুথবু
কিংবা কালো। কিন্তু
তার জন্যে জগতের আলো
মিথ্যে হয়ে যায় ।.... জন্ম দেয় প্রতিবাদের।
কমলা রাম্পে হাঁটলে 'ছপাক্'! নয় গ্রহণ, নয়
প্রত্যাখ্যান । আর নাহলে অ্যাসিড ।
পুড়ে যায় কমলা।
কমলা জন্মালে 'পুন্নাম'
নরক দর্শায়, আবারও
পণপ্রথার আগুনে কমলা ঝলসে যায় !
হয় একখণ্ড ঝল্-সানো কালো জীবন্ত অঙ্গার ..
আবারো প্রতিবাদের পাল্লা ভারী হয়।
বাবা বলেন, বিশ্বাস করো,
মেয়েটা ফর্সা ছিলো !
মা বলেন বিচার করো, জলজ্যান্ত মেয়েটাকে আমার মেরে ফেললো ওরা,
বিশ্বাস, অবিশ্বাসের দ্বন্দ্বে কমলা বলি হয় ।
লাল রঙের শাড়ীতে মোড়ানো শরীরটা
সমাজকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি দেয়।
কমলা কিংবা রাধা তো প্রেমের আঁচেই পোড়া,
তাই বিচার হয় না ..
আশি পার্সেন্ট, পঁচানব্বই পার্সেন্ট , শতকরা
একশো ভাগ পোড়া কমলা
বুকের আগুন আঁকড়িয়ে,
বেঁচে থাকে, তবু বেঁচে থাকে ,
হাসপাতালে নার্স দেখে বলে,
এতেও মরে নি ?!
হায় রে মাইয়া ছাতা,
..মেয়েছেলে যে, কই মাছের প্রাণ !!
(কলমে -পিয়ালী মুখোপাধ্যায়)
----------------