খুশী
খুশী
ওগো খুশির ঝর্না, তুমি কি একটু চুপ করতে পারনা,
কলকল করে বকবক না করলে কি তোমার চলেনা!
মানছি ঐ শান্ত পাহাড়টা তোমাকে ভালোবাসে বলে,
জানিনা রাগে না দুঃখে সমুদ্র সদাই গর্জন করে চলে।
কিছুটা সময় তো চুপ করে থাকো পাহাড়ের কোলে,
ওখানে তোমাকে বেশ মানায়, আমার মন তাই বলে।
তোমার অতিরিক্ত চঞ্চলতায় পাহাড় যে ভয় পায়,
বেশী শব্দে পাহাড় কখনও কেঁপে কেঁপে ওঠে,
তুমি চলে যাচ্ছো বলে কষ্টে যে ওর বুক ফেটে যায়।
ঝর্ণা তুমি ভালো বটে কিন্তু সত্যিই একটু দুষ্টু,
তাই, দুজনকেই যে ভালোবাসো কথাটা বলো স্পষ্ট।
কারো মুখেই তাকিয়ে দেখনা, কে যে পায় বেশী কষ্ট!
লোককে দোষ দিয়ে কি লাভ, তোমায় ওরা বলে নষ্ট।
যতক্ষণ পাহাড়ের বুকে খেলা করো, থাকো নির্মল,
যতো নদী হতে চাও, বয়ে চলো, তত ঘোলা জল।
বাড়ে বোঝা, নুড়ি, পাথর, বালি তোমার সাথে চলে,
তোমার সাথে ওরা সারাক্ষণ অথযা কত কথা বলে।
এটাই তোমার চুপ করে না থাকার কঠিন শাস্তি !
কল কারখানার নোংরা জল লোকেরা নদীতে ফেলে,
সব সহ্য করে বয়ে চলার পথ তুমি নিজে করে নাও।
খুব রেগে গেলে তখন বানের জলে জনপদ ভাসাও!
জানো ওখানে দুঃখ, তবু তোমার সমুদ্রে যাওয়া চাই,
নোনা জলে মুখ পুড়ে গেলেও তোমার পরোয়া নেই।
ওখানে তুমি জব্দ, বন্ধ তোমার মুখের সব রকম শব্দ,
তুমি কি ভেবেছো পাহাড় তোমার জন্যেই নিশব্দ!
তোমার দুর্দশার কথা ভেবে দুঃখে পাথর হয়েছে,
মনে মনে সদাই ভাবে কে আর ওকে মনে রেখেছে !শুধু বলতো , ভালোবেসে কি অন্যায় ওরা করেছে?
সমুদ্র আর পাহাড় দুজনেই তোমাকে ভালোবাসে,
একজন রাগী, চঞ্চল, আরেকজন ধীর, স্থির, গম্ভীর।
দুজনেই ভালোবাসে তোমার গতি আর ঐ স্বচ্ছ নীর!
সমুদ্র যখন তোমাকে পায় বড় দেরী হয়ে যায়,
তখন থাকেনা স্বচ্ছতা, কি করে এই দুঃখ ঘোচায়।
নোনা জলে ভরা সমুদ্রের তৃষ্ণা মেটেনা তো কিছুতেই,
রোদের তাপে শুকিয়ে বাস্প হয়ে আবার বৃষ্টি ঝরায়,
মেঘেদের ভর করে বাতাসের বেগে ছুটে যায়,
মনে মনে পাহাড়ের সাথে মিতালি পাতাতে চায়।
কখনও কখনও মনের ইচ্ছে পূরণ হয়েও যায়,
যেখানে পাহাড় আর সমুদ্র একদম পাশাপাশি,
প্রকৃতিতে আছে এমন কিছু কিছু জায়গা,
যেখানে তোমরা সকলেই থাকো খুব খুশী।