জাগরণের ধ্বনি
জাগরণের ধ্বনি
বিশ্ব মেতেছে মারণ খেলায়,
জাতির জীবনে অন্ধকার;
খাঁ খাঁ করছে তপ্ত প্রকৃতি
চারিদিকে শুধুই হাহাকার।
আশা যখন আজ পাইনে দিশা
স্বপ্ন যখন অনাহত;
ফুলের বর্ণ মলিন-ফ্যাকাশে
মানবতা তাই নিপীড়িত।
গাছের পাতা সবুজ নেই আজ,
বিশ্ব গিয়াছে রসাতলে;
বিজ্ঞান যেন রুদ্ররূপী -
ধ্বংসে মত্ত আপন বলে।
দেবতারা যেন ভীত বিহ্বল,
কন্ঠে তাঁদের নেইকো ধ্বনি
বিচার হয়েছে অন্ত আজি
লাঞ্ছিত যেন শান্তির বাণী।
বিশ্ব আজি পদানত
মুষ্টিমেয় মানুষেরই রাজ্য ;
চাষীর ঘরে জোটেনি অন্ন,
শ্রমিকের হাতে নেই কোনাে কাজ।
প্রজাপতি আজ মেলেনি ডানা
অন্ধকারে জ্বলেনি আলাে;
মা তার শিশুকে বুকে তােলেনি,
রামধনু তাই সাদাকালাে।
রক্তে রক্তে রাঙিল আকাশ
পূজার বেদী শােণিত স্নাত;
উদ্বিগ্নতায় বিচলিত মন,
নিশ্চিন্তে কাটেনি একটা রাতও।
জেগে ওঠে ওই মৃত্যুধ্বনি
থাকিতে নারি দেখেগুনে;
বিদীর্ন হিয়ায় গৃহের কোণে
বসিয়া আছি ভাবুক মনে।
কোথায় সেই অগ্ৰদূত
সে কি তবে রণক্লান্ত
আস্তাকুঁড়েই মরছে ধুঁকে
আগামী দিনের যে সুকান্ত।
হয়তাে একদিন উঠবে জেগে
ঝড় তুলবে প্রতিবাদে;
বঞ্চিতদের সকল ব্যথা -
তুলে নেবে আপন কাঁধে।
অপেক্ষায় আছি, সেই দেবদূত
জাতির ভাগ্যে লিখৰে বিধান
হয়তাে সে হবে প্রতাপবেশি
হয়তো বীর বীরেন্দ্র নেপােলিয়ন।
বীণার তারে উঠুক ঝংকার,
উঠুক বেজে বিষের-বাঁশি;
আসমুদ্র-হিমাচল কাঁপিয়া
জেগে উঠুক এ বিশ্ববাসী।
বিপ্লববাদের শুভাগমন,
আনবে সাথে সুখের খনি;
দিবা-রাত্রে, শয়নে স্বপনে
এই আশাতেই দিন গুনি।
রামধনুর রং ফুটবে আবার
পাখিরা ছন্দে উঠবে গেয়ে;
এই আশাতেই থাকিব আমি-
বাঁচিৰ স্মৃতির সরণী বেয়ে।