ইস্কুলেতে পড়ায়সুশান্ত কুমার
ইস্কুলেতে পড়ায়সুশান্ত কুমার
এ আর এমন কঠিন কি কাজ , ইস্কুলেতে পড়ায় !
কাজ তো কেবল আসা যাওয়া
সিলিং ফ্যানের বাতাস খাওয়া
চার দেওয়ালের মধ্যিখানে বুলির বাণী ছড়ায় ,
তাদের তো আর ঘাম ঝড়ে না , ইস্কুলে যে পড়ায় ।
খাটনি কোথায় ? কাজ তো কেবল বইটা দেখে বলা
তাও একা নয় , একটা কাজেই আছে ভাগের পালা ,
মাসের শেষে সইটা করে
মোটা টাকায় পকেট ভরে
সবার চোখে ফাঁকি দিয়ে ব্যাঙ্কে লকার ভরায় ,
কাজটা নাকি নস্যি অতি , ইস্কুলে যে পড়ায় !!
ডিগ্রিটা যে হয়না পাকা ইস্কুলে না গেলে
সেই জন্যেই বাধ্য হয়ে পাঠায় সবাই ছেলে ,
ওদের কাছে হয়না কিছু
ঢালছি টাকা ছাত্র পিছু
ছেলেরা সব ঘরেই শেখে কোচিং আছে পাড়ায় ,
ওদের আবার কাজ কি আছে , ইস্কুলেতে পড়ায় ।
কাজ তো কেবল হাজির খাতায় একটা সই খালি
চাকরি ফুরোয় , ফুরোয়না তার এক কলমের কালি,
হাট বাজারে অফিস ঘরে
বসায় সবাই আদর করে
সবাই নাকি মিছে মিছে দামটা ওদের বাড়ায়!
ওদের আবার কদর কিসের , ইস্কুলেতে পড়ায় !!
বেরোয় যত সোনার ছেলে মস্ত কারিগর
গৌরবে তার ওদের আবার কিসের অধিকার !
মগজটা তো ছেলের মাথায়
ওদের আবার দানটা কোথায়
তবুও ওদের দেখলে সবাই আসন ছেড়ে দাঁড়ায়,
বিনাপনে প্রণাম কুড়োয় , ইস্কুলেতে পড়ায় ।
ভাবো তো ভাই ষোলো আনার কাজটাই যার ফাঁকি
দেশ দুনিয়ার মানুষগুলো গড়ছে তারাই নাকি ,
ওদের আবার প্রদীপ বলে
এক শিখাতেই লক্ষ জ্বালে
ফুলকি থেকেই দেশ দুনিয়া আলোক মালায় ভরায় ,
কোথায় এত তেজ থাকে তার ! ইস্কুলে যে পড়ায় ।
ওরা যে ভাই জগত মাঝে দিব্যজ্যোতির আধার !
ভয় করেনা অবরোধের , বাগ মানেনা বাধার ,
লজ্জা- ঘৃণা- মান – অপমান
তুল্য- মূল্য সমান সমান
যতই কেন মাখাও কালি তবুও আলোক ছড়ায় ,
এমন জ্যোতি তারই আছে ! ইস্কুলে যে পড়ায় !
মরার পরেও হয়না মরণ পুরুষ পুরুষ ধরে
পরিয়ে মালা ফুল ছড়িয়ে সবাই স্মরণ করে ,
জীবন ওদের কত বড় ?
দিব্যি বাঁচে মরার পরও !
জাতির মাঝে যুগে যুগে সামনে এসে দাঁড়ায় !
ওরা যে সব জাতির পিতা , ইস্কুলে যে পড়ায় !
