গণশত্রু
গণশত্রু
অমায়িক বটে, শত্রু তবে!
হনহনিয়ে আসি
এক গালভরা হাসি,
হাতছানি দেওয়া ডাক,
কানের গোড়ায় হাঁক!
ব্যস্ত প্রশ্নবান,
"অনেকদিন দেখিনা, খবর সব ভালো?
চা-টা হবে নাকি? আমার ঘরে চলো!"
দয়ালু বোধহয়, চরম শত্রু!
পা মচকে পড়ি,
হাতটি টেনে ধরি
সামলে দিলো যে'ই,
গুছিয়ে দিলো সে'ই
সবজির ছড়াছড়ি,
"বেশি লাগেনি তো? খুব ব্যথা করছে কি?
হাঁটতে পারবেন? জল খান তো দেখি!"
বিশ্বাসী সে, শত্রু তবু!
হাজির রিক্সা নিয়ে
হাত বাড়িয়ে দিয়ে
সদর দরজাটাতে।
সীটটা উঁচুতে,
গামছা বুলিয়ে নেয়,
"সাবধানে উঠ্যান, ব্যাগটা আমায় দ্যান,
শাড়িটা দ্যাখেন গো! ভালো কইরা বসেন।"
চিনি বহুকাল, সবার শত্রু!
ঠেলায় সাজানো তাজা
নিপুণ হাতে ভাজা,
গরমাগরম ভেট
ঠোঙায় কাটলেট
গুঁজল বাড়ানো হাতে,
"রেডি সবার আগে, দিদি, তোমার অর্ডার নাও
তোমার তাড়া বলে, খুচরোতে দাম দাও।"
নিরীহ ওরা, তবু শত্রু!
নাকে নাই ঢাকা,
সমাজিকতায় মাখা
খাতিরদারীর রাশ,
ঘাড়েতে নিঃশ্বাস,
দূরত্ব শিকেয় রাখা!
কেউ নিয়েছে টিকা, পায়নি'কো তা কেউ,
ওদের হাতেই তৈরি যে আজ অতিমারীর ঢেউ।
ওরাই এখন গণশত্রু!
নাকে ঢাকাওয়ালা
আমাদের মিছে বলা
"কাণ্ডজ্ঞান নেই?"
দ্বেষে রোষে সবাই
ফুঁসছি ঘরে একলা,
সমাজছিন্ন সাবধানীরা, বুকেতে ত্রাসের দাগ,
অদ্ভুত এই রোগ করেছে 'আমরা-ওরা'র ভাগ!
