দায়বদ্ধতা (তিয়াসা হোড়)
দায়বদ্ধতা (তিয়াসা হোড়)
মা, তুমি কেমন আছো?
বহুদিন নেই কোন যোগাযোগ -
তবে কি তুমিও আমায় ভুলে গেছো?
মা, রোজ নিজেকে প্রশ্ন করি জানো?
আসে না কোন উত্তর..
হয় না আর জীবনকে সাজানো!
মা, আজ বহুদিন পর খুশি হয়েছিলাম..
আবেগে চোখে জল আসলেও-
তা সযত্নে লুকিয়েছিলাম!
মা, আজ যেনো নিজেকে মনে হচ্ছে বোঝা।
জানি বাবার বয়স হলো অনেক-
আজও শেষ হয়নি দাদার চাকরি খোঁজা।
মা, রোজ ভাবি তোমাকে বলব একটা কথা-
চায়ের কাপ হাতে কথা তুললেও..
বাকরুদ্ধ করে দেয় তোমার হাঁটু ব্যথা।
মা, নিজেকে প্রশ্ন করি বারবার ,
চাকরিটা আদৌ পাবো তো?
এই নিয়ে ইন্টারভিউ দিলাম চারবার !
মা, জানো রোজ রাতে লুকিয়ে কাঁদতাম
রোজ সকালে ঝগড়া করলেও-
কেবল তোমার কথাই ভাবতাম।
মা, দেখতে দেখতে বয়স হলো পার
বাবার আজ অবসর নেওয়ার দিন..
তাই, আজ আমার বিদায় নেওয়ার বার।
মা, অনেক কথা বলার আছে।
কিন্তু ভয় হয় -
বাবার ব্লাড প্রেসার টা যদি বেড়ে যায় পাছে!
মা, অনেক কষ্টে লিখলাম এই লেখা
জানিনা তুমি পড়বে কিনা!
কিন্তু এটাই হয়তো শেষ দেখা..
মা, আজও দেখি স্বপ্ন তাকিয়ে ,
তোমার কোলে মাথা আমার-
দিচ্ছ সযত্নে হাত বুলিয়ে!
মা, জানি কাঁদছো তুমি ফুঁপিয়ে-
কিন্তু এ যন্ত্রণা অসহনীয়।
তোমার সন্তান যে পড়েছে হাঁপিয়ে ।
মা, তুমি পারলে রেখো এই চিঠি লুকিয়ে ,
যেন কেউ না পাক সন্ধান -
আমি গেছি চিরতরে ঘুমিয়ে ।
মা, শেষবার একটু আদর করে দাও..
আজ যে তোমার বাবানের মুক্তি-
যাকে তুমি রোজ ফিরে পেতে চাও!
