বনদুর্গা
বনদুর্গা
"শাখোটবৃক্ষবাসিনিম ত্রিতরাম্বিতাম..........
দুর্গাং সর্বত্র শুভকারিণাম"
আমি কতটা ভালো! সোনা বা মনা কিনা জানা নেই,
তবে আর যাই হোক, শ্যাওড়া গাছের পেত্নী তো নই ।
সোনা হই বা না হই, আঙুলে আমি মানিক নাচাই।
হতে পারে সে মানিক একটু খুঁতো, তাতেই কাজ হয়,
জমাট রক্তের রঙের ভেতর দিয়েও তো আলো যায়!
বাজারে এমন মানিকের দাম কম, তবু মন ভরায়,
আমার কাছে তত ভদ্র ব্যবহার কি আশা করা যায়!
হয়তো একটু রদ্দা মারি, কারো ঘাড় কি মটকাই?
কোনো কারণে রাগ হলে, মারতে যে একটু ইচ্ছে হয়,
আস্তে করেই তো মারি, মোটেও জোরে একটুও নয়।
আবার বিপদে পড়লে, সবার আগে আমিই ঝাঁপাই,
তাইতো বিপদের আগেই আমাকে স্মরণ করা চাই ।
আমি যে বনদুর্গা ! একটু জংলী স্বভাব তো আছেই,
আমি যে তোর অতি আপন, একদম নিজের সই !
অল্পেই সন্তুষ্ট আমি, আমার খুব বেশী দাবী তো নেই।
বাজারের ফলমূল, ক্ষীর-সন্দেশ, মিষ্টির নেই কোনও প্রয়োজন,
টাকা খরচ করার নেই তো দরকার ।
জানি তো, তোদের জমিতে বেশ ভালো ধান হয়।
আর একমাত্র ফসল ধান থেকেই তৈরী হয় চাটখই,
তার সাথে চিঁড়ে ভাজার গুঁড়ো, ভাজা চিঁড়ে, দই,
চিঁড়েভাজা ঝাঁই ঝাঁই, আর চাই একটু চিঁড়ের ছাই।
খুশী হয়ে যাই সাথে একটু গুড়/লাল বাতাসা পেলেই!
মন ভরে আশীর্বাদ করি, যারা আমায় ভালবেসে,
আহ্লাদ করে সোনা মুখে, এই সামান্য প্রসাদ খায়।
এখন আর মানুষ শ্যাওড়া গাছ সহজে পায় কোথায়!
তবে কথাটা ফুলওয়ালাদের মন খুলে বলতে পারলে,
শ্যাওড়া গাছের ডাল বাজারে কিনতেও পাওয়া যায়।
মাটির উঠোনে তখন ঐ ডাল পুঁতে পূজোটা করা হয়,
সংস্কৃত ভাষায় মন্ত্র বলার তো কোনো দরকার নেই।
এখানে পুরোহিত মশাইয়ের কোনো কারবার নেই !
ভক্ত আর ভগবান তো বন্ধু, তাই বাংলাতেই কথা হয়।
বাড়ির যে কোনো শুভ কাজে আমি তো পূজো পাই।
