বন্ধুত্ব আর নারী
বন্ধুত্ব আর নারী
একটা মেয়ে খুব বিশ্বাস করতো তার বন্ধুকে,
সেই কোন ছোট্টবেলার বন্ধু তারা,
যখন নাকটাও ঠিক করে মুছতে পারতো না,
তখন থেকে তারা বন্ধু-
মেয়েটি যখন নিজের সাথে তার বন্ধুর পার্থক্য বুঝতো না, তখন থেকেই তারা একে অপরের হাত ধরে ঘোরে।
মা-বাবা পরিবারের হাজারো শাসন উপেক্ষা করে তারা অমিল বন্ধু।
কিশোর বয়েসে দুইজনের মাঝে অনেক শারিরীক মানসিক পরিবর্তন ঘটে গেলেও, তারা তখন একই ভাবে রয়ে গিয়েছে বন্ধু হয়ে।
মেয়েটির বাড়িতে বেড়ে গেল আরও শাসনের বেড়াজাল,
তবুও সব শাসন, চোখ রাঙ্গানী উপেক্ষা করে গ্রীষ্মের দুপুরে আম পারতে যাবার সময় কিংবা চৈত্রে ঝড়ের পরে আম কুড়াতে সবসময়ই লুকিয়ে ঠিক সঙ্গী হয়েছে মেয়েটি,
আবার মাঝে মাঝে বন্ধুর জন্য কুলের আচার সেটাও মেয়েটি আনতো লুকিয়ে।
মারামারি, মনকষাকষি সেও হয়েছে ঢের,
তবুও ঘুরে ফিরে এসে আবার বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে।
তারপর ছেলেটা চলে গেল পড়তে শহরে,
মেয়েটা রয়ে গেল গ্রামটিতেই, কিছুতেই যেন মন বসেনা ওর, #বন্ধুত্ব
পথপানে চেয়ে রয় বন্ধুর ফেরার অপেক্ষায়।
এরপরে ছেলেটা গ্রামে এসেছে যতবার দেখা হয়েছে তাদের,
মেয়েটির মাঝে এখনো সেরকম আত্মীয়তা রয়ে গেলেও, ছেলেটার তরফ থেকে কোথায় যেন কেটে গিয়েছে ছন্দ।
তবুও চলছিলো ভালো, এমন করে চলে গেলেই ভালো হতো।
কিন্তু তা হলো কই!!!
একদিন ছেলেটা এলো কিছু বন্ধুদের সাথে নিয়ে এলো গ্রামে,
মেয়েটিও এলো বন্ধুর সাথে দেখা করতে,
ছেলেটার বন্ধুদের চোখে কেমন একটা দৃষ্টি,
মুখের কথায়ও প্রকাশ হয়ে গেল..." খাসা মাল"..
ছেলেটির চোখে প্রথমবার মেয়েটি বস্তু হয়ে উঠলো।
বন্ধুত্ব শব্দটা হয়ে গেল সুযোগের একটা নাম।
ছেলেটার বন্ধুরা চলে গেল, কিন্তু নিয়ে গেল বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, বিশ্বাস।
দিয়ে গেল লোভ, লালসা,কাম আর সুযোগ সন্ধানী মনোভাব।
একদিন এই বন্ধুত্বের বিশ্বাসের উপর নারীত্বের মর্যাদার কবর পড়ে গেল,
ভুলুন্ঠিত হয়ে পড়ে রইলো একটা নারী, কেবলমাত্র নারী, যার কেউ বন্ধু নয়, কেউ সখা নয়, তার পরিচয় সে কেবলমাত্র নারী, যার কেবলমাত্র পোড়া শরীরটাই রয়েছে...
