অনুশোচনার শহর
অনুশোচনার শহর
অনুশোচনার শহর
এই শহরে অনুশোচনা থাকে
খবরের কাগজের শেষ পাতায়—
ছোট্ট হরফে,
যেন ক্ষমা চাওয়াটাও
এখন লজ্জার বিষয়।
এখানে মানুষ মরলে
ফেসবুক স্ট্যাটাস ওঠে,
দু’দিন পর নাম বদলায় ট্রেন্ড—
আর বেঁচে থাকা ভুলগুলো
ফাইলবন্দি হয়
“পরবর্তী আলোচ্য” নামে।
আমরা তখন বলি—
“খুব দুঃখজনক”
“নিন্দনীয়”
“আর যেন না হয়”—
এই তিনটি বাক্যেই
আমাদের সামাজিক অনুশোচনা সম্পূর্ণ।
কিন্তু যে মেয়েটা চিৎকার করেছিল
সাহায্যের জন্য,
আমরা হেডফোন পরেছিলাম।
যে বৃদ্ধ হাত বাড়িয়েছিল,
আমরা শুধু ঘড়ির কাঁটা দেখেছিলাম।
যে শিশুটি ভয় পেয়েছিল,
আমরা বলেছিলাম—
“এই বয়সে এসব এতো ভাবিস না।”
অনুশোচনা তখন জন্মায়—
রক্ত শুকিয়ে গেলে,
আগুন নিভে গেলে,
লাশ ঠান্ডা হলে।
এই সমাজে
ভুল করার অধিকার সবার,
কিন্তু দায় নেওয়ার সাহস
কারও নয়।
আমরা ক্ষমা চাই না—
আমরা পরিস্থিতিকে দোষ দিই।
আমরা লড়াই করি না—
আমরা পোস্ট শেয়ার করি।
আর রাতে ঘুমোবার আগে
একটু অস্বস্তি হয় বটে—
তাকের কোণে রাখা বিবেকটা
ফিসফিস করে বলে ওঠে,
“তুমি চুপ ছিলে কেন ?”
আমরা তখন আলো নিভিয়ে দিই।
কারণ অন্ধকারে
অনুশোচনা কম দেখা যায়।
কিন্তু মনে রেখো—
যে সমাজ
অনুশোচনাকে অভ্যাস বানায়,
সে সমাজ একদিন
নিজেই ক্ষমা পাওয়ার ভাষা হারায়।
****************************
