Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Sutanu Sinha

Tragedy

3  

Sutanu Sinha

Tragedy

ট্রেন দুর্ঘটনা

ট্রেন দুর্ঘটনা

10 mins
3.8K


ঘটনা টা বলতে গেলে এখনোও আমার গা শিউরে ওঠে । নিজের চোখের সামনে দেখা এরকম একটি দুর্ঘটনা আমি কখনোই ভুলতে পারবো না । তখন আমার কলেজে দ্বিতীয় বছর । আমরাই কলেজ এর প্রথম ব্যাচ ছিলাম, তাই হোস্টেল এ আমরাই ছিলাম সর্বেসর্বা । আমাদের উপর হোস্টেল এর কর্মকর্তারা ও কিছুই বলতো না । কলেজ লাইফ তাও আবার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, আমরা অন্তত ৪০ জন ছেলেরা এক সাথে কোথাও গেলে সেই জায়গাটা আমরা ই শাসন করতাম । সব ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রদের মত আমাদের সবার তখন একটা সাধারণ অভ্যাস ছিল সিনেমা দেখতে যাওয়া ।প্রত্যেক এর এ নিজেদের প্রিয় হিরো দের সিনেমার খোঁজ সব থেকে বেশি রাখতো । আমরা ৪০ জন সবাই এক এক টা হিরো কে নির্দিষ্ট করে ভাগ হয়ে গেছিলাম । শাহরুখ খান এর দল টা ছিল সব থেকে ভারী । আমাদের দলের অন্তত ১৫ জন ছিল এই দলে । আমির খান ছিল ১০ জন মতো । ৫ জন ছিল সলমান খান । বাকি ১০ জন ছিল হৃত্বিক রোশন এর । আর শর্ত ছিল যে হিরোর সিনেমা বেরোবে সেটা খরচ করে দেখানোর দায়িত্ব থাকবে সেই হিরোর ফ্যানদের । তাই সারা বছর ই আমাদের সিনেমা দেখার ধুম লেগেই থাকতো । সব সময়টা দেখার জন্য নিজের গ্যাঁটের পয়সা খরচ করতে হতো না , এটা বেশি আনন্দের ছিল । তবে আমরা যে শুধু মাত্র এই ৪ জন হিরোর এ সিনেমা দেখতাম তা নয় ,অন্য দের সিনেমা ও দেখা হতো তবে সেক্ষেত্রে নিজের পকেট থেকেই নিজের টা দিতে হতো । সময়টা ছিল ২০০৬ সালের জুন মাসের শেষ সপ্তাহ । সবে রিলিজ করেছে হৃত্বিক রোশন এর ক্র্রিশ । পুরো হোস্টেল কে আমরা কজন মিলে ক্র্রিশ দেখাতে গেছিলাম বারাকপুর এর অতীন্দ্র হল এ । কারণ আমি ছিলাম হৃত্বিক রোশন এর ফ্যান , তাই টিকিট এর খরচ এর দায়িত্বআমাদের ১০ জন কেই বহন করতে হচ্ছিলো । তখন সবে এক মাস হল নতুন একটা ব্যাচ যোগ দিয়েছে আমাদের কলেজে । দিন টা ছিল রবিবার । অনেক এই বাড়ি চলে গেছিলো । তাই আমরা অন্তত ৩০ জন মিলে বারাকপুর রওনা হলাম । যথারীতি কলেজ এর ছাত্র ট্রেনে র টিকিট আমরা কখনোই কাটতাম না । ৩০ জন এর মধ্যে প্রায় ১০জন মতো জুনিয়র ছেলে ছিল , যারা প্রথম বার ঘরের বাইরে সে ভাবে কোনো গার্জেন ছাড়াই সিনেমা দেখতে যাচ্ছে । আমরা বড় হলেও আমাদের সাথে ছেলে গুলো দারুন ভাবে মিশে গেছিলো । যাবার সময় ট্রেন এ যথেষ্ট ভিড় ছিল । তাই এনজয় করাটা সে ভাবে হয়নি ।

অতীন্দ্র হলে গিয়ে টিকিট কেটে ক্র্রিশ দেখে যখন আমরা ফিরছি রাত প্রায় ১১টা । প্রত্যেক এ নিজের নিজের ঘোর এ ছিলাম , কারণ সবার ই অসাধারণ লেগেছিলো সিনেমা টা । সবাই যখন সিনেমার গল্প নিয়ে মসগুল থাকতে থাকতে বারাকপুর স্টেশন পৌঁছে গেলাম ।যতদূর মনে হয় লাস্ট ট্রেন এর আগের ট্রেন বা তার আগের ট্রেন হবে । আমরা সবাই মিলে একটা কম্পার্টমেন্ট এ উঠলাম । পুরো কম্পার্টমেন্ট টা ফাঁকা ছিল , তাই আমরা সবাই মিলে রাজ করতে শুরু করলাম । প্রত্যেক এ নিজের নিজের কেলিবর দেখাতে শুরু করলো । ট্রেন এর হাতল ধরে ঝোলা , মাথা উল্টে পা দিয়ে নিজেকে ঝুলিয়ে রাখা, সমস্ত রকম কলাকুশলী যেন সবার থেকে বেরিয়ে আসতে লাগলো । যে কজন জুনিয়র ছেলে ছিল তাদের মধ্যেই যেন স্কিল দেখানোর ঝোঁক বেশি করে পরে গেছিলো । প্রথম বার এরকম সফর এর অনুভূতি কে তারা ভীষণ তাড়িয়ে অনুভব করছিলো । এদের মধ্যে একটি ছেলে ছিল , যে ত্রিপুরা থেকে এসেছিলো । নাম ছিল রাজু । সেই ছেলেটি এ সব থেকে বেশি আনন্দ করছিলো । প্রথমবার সে কোনো লোকাল ট্রেন এ উঠেছে । তাই সীমাছাড়া ছটফট করছিলো সে । আমি আর আমাদের ব্যাচ এর আরো ৩ জন বন্ধু গেট এর সামনেই দাঁড়িয়ে পুরো ব্যাপার টা এনজয় করছিলাম । কারণ আমাদের এরকম কোনো কলাকুশলী দেখাবার মতো স্কিল সত্যি এ ছিল না । তাই বাচ্ছা গুলোর অতিরিক্ত ছটফটানি সামলানো ছাড়া আমরা বিশেষ কিছুই করছিলাম না । এর মধ্যে আমার আর তীর্থের শাহরুখ আর হৃত্বিক নিয়েএকটা ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়ে গেলো । তীর্থের মতে হৃত্বিক তো সবে এসেছে তার আগে আমি কার ফ্যান ছিলাম । আমি যত বলছি সে রকম ভাবে কারোর নয় ,কিন্ত তীর্থ বার বার এটাই বলতে লাগলো তার মানে এর আগে তুই শাহরুখ এর ফ্যান ছিলি । এই নিয়ে কথোপকথন চলতে চলতে কখন যেন রাজু বলে ছেলে টা ট্রেন এর গেট এর খুব কাছে এসে গেছিলো । খোরদা স্টেশন পেরিয়ে ট্রেন তখন বেশ দ্রুত বেগ এ দৌড়োচ্ছিলো ,এর পরের স্টেশন সোদপুর আমরা সবাই নামবো । হঠাৎ আমার নজর এ এলো রাজু বলে ছেলে টা ট্রেন যেদিকে যাচ্ছে ঠিক তার উল্টো দিকে মুখ বাড়িয়ে থুতু ফেলছিলো । আমি সবে বলতে যাবো রাজু ভিতরে ঢুকে আয় ,তখন এ একটা ভীষণ জোরে শব্দ , পিছন থেকে আসা পোস্ট এ ভীষণ জোরে ধাক্কা খেলো রাজু । সাথে সাথে ছিটকে পরে গেলো সে ট্রেন এর বাইরে । ঠক ঠক করে কাঁপতে লাগলাম আমি আর তীর্থ । পুরো ব্যাপার টা এত দ্রুত হয়ে গেছে আমাদের কিছু বুঝতেই দেয়নি ।যখন একটু ধাতস্থ হলাম , বাইরের দিকে চেয়ে দেখলাম ছেলেটার নিথর দেহ পরে আছে, কেউ যেন বললো একটু নড়লো মনে হলো । সাথে সাথে কজন মিলে ট্রেন এর চেন টেনে ধরলাম । সে দিন এ প্রথম অনুভব করলাম লোকাল ট্রেন এর চেন শুধু দেখানোর জন্য এ থাকে । ট্রেন থামা তো দূরের কথা , চেন টানাই যেন ট্রেন এর স্পিড আরো বেড়ে গেলো ।অসহায় এর মতো দাঁড়িয়ে থাকলাম আমরা ট্রেন টা পরের স্টেশন পৌঁছনো অব্দি । সোদপুর স্টেশন ঢোকার জন্য ট্রেন টা স্লো করতেই প্রত্যেকেই প্রায় লাফিয়ে স্টেশন এ নেমে লাইন ধরে দৌড়োতে শুরু করলাম । অনেক টা দৌড়ে গিয়ে যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছলাম , প্রচুর লোক ঘিরে আছে সেখানে । আমরা ভালো করে কথা ও বলতে পারছিলাম না , এতো হাঁফাছিল্লাম , শুধু বলতে পারলাম ছেলে টি আমাদের বন্ধু । কিন্তু ওখানকার লোক রা কেউ এ আমাদের কাছে যেতে দিলো না , বললো এটা এখন পুলিশ কেস হয়ে গেছে তোমরা কেউ কাছেই যেয়োনা । আমাদের মধ্যে কেউ এক জন বলে উঠলো ছেলে টার শরীর টা যেন নড়ে উঠেছিল মনে হয়েছিল ট্রেন থেকে । ভিড় থেকেই কেউ এক জন বললো না না ছেলেটি আর বেঁচে নেই । সত্যি যেন পারছিলাম না , মাত্র কিছুক্ষন আগেই যে ছেলেটি এতো মজা করছিলো , তার শরীর এ এখন কোনো প্রাণ নেই , কোনো দিন কোনো ভাবেই ছেলে টিকে আর দেখতে পাবো না । আমরা সবাই কি রকম যেন বিমর্ষ হয়ে গেলাম , ছোটবেলায় একটা শব্দ খুব শুনতাম , কিংকর্তব্যবিমূড় , এই শব্দ টির সঠিক অর্থ যেন সবাই এক লহমায় বুঝে গেলাম । কি করবো , কি ভাববো , বা কাকে জানাবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না । চুপ চাপ লাইন এ বসে পড়লাম আমরা যে যার মতো । কিছুক্ষন পর পুলিশ চলে এলো , ঘিরে থাকা ওই জায়গাটা মুহূর্তের মধ্যে খালি হয়ে গেলো । ভাবটা এমন ছিল কেউ দায়ভার নিতে চাইছে না । পুলিশ এসে জিজ্ঞেস করলো কে প্রথম দেখেছে লাশ টিকে । কথা টা শুনে মনের কোন এক কিনারায় যেন ভীষণ আঘাত করলো , আমাদের সাথে পড়তে আসা ওই মিষ্টি ছেলে টি, রাজু , যে মুহূর্তের মধ্যে একটা বেওয়ারিশ লাশ বোনে গেলো । ভিড়ের মধ্যে থেকে পুলিশ কে কেউ কোনো উত্তর দিলো না । হয়তো ভয় এ । এবার প্রশ্ন এলো লাশ টা দেখে কে প্রথম ফোন করেছিল ? এবার ও কোনো উত্তর এলো না । কিন্তু আমাদের ভীষণ খারাপ লাগা থেকেই আমি এ প্রথম বলে উঠলাম , দয়া করে ওকে লাশ বলবেন না , ওর নাম রাজু । এবার পুলিশ এর লোকটি আমাদের দিকে ঘুরে গেলো । আপনি চেনেন ছেলেটিকে । এবার ভিড়ের মধ্যে থেকে কেউ বললো , ওদের দল টাই তো ছুটতে ছুটতে এলো । এবার আমাদের সবার সাথে পুলিশ গুলো এসে কথা বলতে শুরু করলো । অদ্ভুত অদ্ভুত চাখা প্রশ্ন তে জর্জরিত হয়ে আমরা শুধু এটুকুই জানাতে পারলাম আমরা কোন কলেজ এর ছাত্র । পুলিশ জানালো আমাদের সবাই কে থানায় যেতে হবে । এতক্ষন ব্যাপার টা ছিল ভীষণ কষ্টের , কেমন ভাবে তার ব্যাখ্যা দেব বুঝতে পারছিলাম না , এবার আমরা ঘোরতর বাস্তবের মুখমুখী হতে চললাম । ১ ঘন্টা শুধু শুধু থানায় বসিয়ে রাখলো পুলিশ ।

অনেক এর লাল চক্ষু দেখে মনে হচ্ছিলো আমরা ছেলে টিকে বোধহয় খুন করেছি । কিছুক্ষন পর আমাদের কলেজ এর হোস্টেল রেজিস্টার এসে হাজির হলেন । ভিতরে গিয়ে পুলিশ এর সাথে কি সব কথা বলে বাইরে এলেন । আমাদের ডেকে বললেন , তোরা তো ভীষণ বোকা , আমাকে একটা খবর দিয়ে ওই জায়গা থেকে চলে যাসনি কেন? বললাম আমাদের সামনে এরকম একটা ঘটনা দেখার পর , আমরা কি করে যাবো ? রেজিস্টার খুব বকাবকি করতে থাকলো , কি সব বোকা বোকা কথা বলেছিস , পরে যাবার পর তোরা নড়তে দেখেছিস, আবার কেউ কেউ নাকি বলেছিস , ওকে ধরতে গেছিলি হাত থেকে ফস্কে গেছে । আমরা চুপ করে রইলাম , আসলে পুলিশ এর চরম রূপ আমরা কেউ এ কখনো দেখিনি , তাই কি প্রশ্নের কি উত্তর দেয়া উচিত তার কোনো সত্তর ধারণা আমাদের ছিল না । আর প্রচন্ড টেনশন আর অনুভূতি মিশিয়ে আমরা অনেক কিছুই বলে দিয়েছি ,যা হয়তো কোনো ভাবে আমাদের বিপক্ষে গেছে । আমরা বোকার মতো রেজিস্টার এর দিকে তাকিয়ে থাকলাম । রেজিস্টার কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললো , ছেলিটির পোস্টমর্টেম না হলে তোদের কে ছাড়বেনা বলছে । ছেলেটির বাবা মা কে খবর দেয়া হয়েছে,যতক্ষণ না আসবে কিছু হবে না । আমি প্রশ্ন করলাম , তার মানে যতক্ষণ না বাবা মা আসবে ওটা বেওয়ারিশ লাশ হয়ে পরে থকবে ? রেজিস্টার তাকিয়ে বললো, কে দায়িত্ব নেবে বল ? এসব পুলিশ কেস । আমরা প্রায় সবাই বলে উঠলাম আমরা নেবো । তুমি বোলো আমাদের কি করতে হবে । সে দিন সত্যি আমরা এগিয়ে এসেছিলাম, রাজু র বাবা মা আসতে পরের দিন সকাল হয়ে যেত, আমরা সবাই মিলে একটি খাতায় সই করলাম , তারপর পুলিশ এর গাড়ি করে রাজু এর নিথর শরীর টাকে নিয়ে হাসপাতাল এর উদ্দেশে রওনা হলাম । প্রায় ৩ঘন্টা ধরে রাজুর পোস্ট মটেম হয় ।তারপর যখন দেহ টা ছারে তখন ও ওর বাবা রা কেউ এ পৌঁছতে পারেনি । হাসপাতাল থেকে সবে আমরা এ সই করে নিতে যাবো , রাজু র নিজের বোন এসে পৌঁছলো , যে কাছাকাছি হাওড়াএর কোনো কলেজ এ পড়াশোনা করে । ওই বাচ্ছা মেয়েটি নিজের দাদার মৃতদেহ সই করে নিলো । সত্যি খুব মর্মান্তিক দৃশ্য । মেয়েটি খুব কাঁদছিলো , আমরা ওকে ভরসা দেবার খুব চেষ্টা করছিলাম । কিন্ত জানি কোনো ভাষা মনে হয় যথেষ্ট ছিল না । খবর পেলাম , রাজুর খবর টি পাবার পর তার মা নাকি শুধু অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে । বেশ অনেকক্ষন বাদে ওর বাবা আর কাকা এসে পৌঁছলো । ওর বাবা আর কাকা কে সব ঘটনা বলার সময় আমরা নিজেরাই নিজেদের কান্না চেপে রাখতে পারছিলাম না । এরপর রেজিস্টার আসতে করে আমাদের ওখান থেকে সরিয়ে নিলো , একটা গাড়িতে তুলে দিয়ে বললো তোরা এবার হোস্টেল এ ফিরে যা । সে দিন এর মতো আমরা হোস্টেল ফিরে এসেছিলাম । কিন্ত ঠিক তার ২ দিন পর হোস্টেল এ পুলিশ আসে , রাজুর কাকা পুলিশ এর কাছে ডায়েরি করেছিল, যে হতে পারে আমরা রেগিং করে ছেলে টিকে মেরেছি । কারণ সেই মুহূর্তে আমরা ক জন ছাড়া সেখানে কেউ ছিল না , আর ছেলে টি যে আমাদের জুনিয়রএ ছিল । আমরা আমাদের কথার সমর্থনে কিছুই প্রমান পত্র জমা করতে পারলাম না । কারণ অতীন্দ্র হল এর টিকিট ফেলে দিয়েছিলাম ,আর ট্রেন এর টিকেট আমরা কাটেনি । শুধু কিছু সাধাসিধে ছেলের সত্য কথা কে পুলিশ যেন কিছুতেই মানতে চাইছিলো না । এরপর আবার এক দিন আমাদের থানায় যেতে হয় ।তবে কলেজ থেকে আমাদের সবাই কে যেতে দেয়নি । যে ৫ টি ছেলে কে যেতে বলা হয়েছিল তার মধ্যে আমি ও ছিলাম । আমাদের কে ওর কাকা আর বাবার সামনে বসানো হলো ।

কলেজ হোস্টেল রেজিস্টার ও আমাদের সাথেই ছিল , তিনি রাজুর বাবা আর কাকা কে অনুরোধ করলেন কেস টা তুলে নেবার জন্য । বললো এই ছেলে গুলো নির্দোষ , সে দিন এই ছেলে গুলোই আপনার ছেলে কে বেওয়ারিশ লাশ হতে দেয়নি , নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে হাসপাতাল এ গেছিলো । বোন কে ও সবরকম সাহায্য করেছে । এরা কিন্ত কেউ পালিয়ে যায়নি ।তাছাড়া ছেলেগুলোর ভবিষৎতে র কথা ভেবে যদি কেস টা তুলে নেন । তাতে রাজুর কাকা খুব একটা প্রভাবিত না হলে ও , তার বাবা জানালো ছেলে কে তো হারিয়েছি, আর এদের বিরুদ্ধে কেস করে কি হবে , আপনারা কেস টা তুলে নিন । বলে নিজের মেয়েটিকে জড়িয়ে খুব কাঁদতে লাগলো । ভদ্রলোকের এহেন অনুভূতির জন্য সে দিন আমরা বেঁচে ফিরে এসেছিলাম । বেরিয়ে আসার সময় নিজেকে ভীষণ নিচ মনে হচ্ছিলো । এই ভদ্রলোক এর একটা জলজ্যান্ত ছেলে মারা গেলো আমাদের সামনে , আমরা কিছু করতে তো পারলাম না , উল্টে নিজেদের কে বাঁচানোর জন্য তার কাছেই অনুরোধ করতে এলাম । আমরা সবাই তথথাকতিত শাস্তি পাবার হাত থেকে মুক্তি পেলাম বটে ওই ভদ্রলোকের মহানুভবতায় ,কিন্ত বাকিদের কথা বলতে পারবো না , তবে আমি এখনও মনে করি আমি অপরাধী ছিলাম , সে দিন উচিত ছিল ছেলে টিকে বাঁচানোর , চাইলে ও গেট এর ধারে দাঁড়িয়ে থেকে ও ছেলেটিকে বাঁচাতে পারিনি আমি । এর পর ও আমরা হোস্টেল থেকে সিনেমা দেখতে গেছি , কিন্ত আমাদের ওই হিরো কে ভিত্তি করে করে নিয়মটা আর বলবৎ রইলো না , আর আমরা কখনোই যে কোনো কারণ এ হোক এক সাথে এতো জন মিলে সিনেমা দেখতে যায়নি ।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy