যোগ কুমারী
যোগ কুমারী


২১ শে জুন, বিশ্ব যোগা দিবস। সব জায়গাতেই বিশেষ করে যোগাপ্রেমীরা বেশ আয়োজন করেই এই দিবস উদযাপন করেছে। কিন্তু আমি এই যোগা দিবস সম্পর্কিতই একটি বিষয় সর্বসন্মুখে তুলে ধরতে চাই,যা কিনা সকলের অগোচরেই থেকে যাচ্ছে। ১৯৬৬ সালে জলপাইগুড়ি জেলার সেন পাড়াতে জন্মেছিল মেয়েটি,নাম চিনু দেবনাথ। মেয়েটির ছোট থেকেই কিছু করে দেখানোর ইচ্ছে ছিল। হয়তো পেরেও ছিল কিছু করতে, কিন্তু তখনকার সময়ে না ছিল সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচলন না ছিল এখনকার মত এত প্রচার। তার শিক্ষাজীবনে স্কুল তো বটেই, জলপাইগুড়ি জেলা এমনকি রাজ্যস্তর পর্যন্ত খেলেছিলেন। তিনি একজন দক্ষ অ্যাথলিট ছিলেন(১০০ মিটার ও ২০০মিটার দৌড়, হাই জাম্প) বহু পুরষ্কার তিনি এনে দিয়েছেন এই উত্তরবঙ্গকে। তৎকালীন সময়ে যে সমস্ত পত্র পত্রিকা ছিল সেখানে আজও খুজলে জ্বল জ্বল করবে চিনু দেবনাথের নাম।এছাড়াও মেয়েটির আর একটি বিষয়ে প্রতিভা ছিল যেটা তার নেশায় পরিণত হয়েছিল। সেটা হোল যোগা। সমস্ত রকম যোগাসন তুড়ি মেরে সে করে ফেলতো। বিভিন্ন স্তরে যোগাসনে পুরস্কৃতও হয়েছে সে। ১৯৮২ সালে যোগাসনের জন্য তিনি পান "যোগ কুমারী" উপাধি। এখন হয়তো কেউ কে জিজ্ঞেস করলে বলতেও পারবে না, উত্তরবঙ্গে কে প্রথম "যোগ কুমারী" উপাধি পান। যোগার জন্য তিনি বিভিন্ন পুরস্কারেও সন্মানিত হয়েছিলেন। সেই প্রতিভাবান মানুষটি কে আজ আর কেউ মনে রাখেনি, পাননি কোন সন্মান পাননি কোন স্থান। আজও কেউ কে কোথাও যোগাসন করতে দেখলেই ভুল ধরিয়ে দেন তিনি। অভ্যাসবশত, আজও কচি কাঁচাদের খেলতে দেখলে ছুট্টে যান তাদের পরিচালনা করতে। স্বপ্ন ছিল একটি যোগা স্কুল খুলবেন, কিন্তু যেহেতু তিনি মহিলা ছিলেন তাই পরিবারের বিভিন্ন বিধিনিষেধ তাকে আর ডানা মেলে উড়তে দেয়নি এছাড়াও ছিল আর্থিক টানাপোড়েন আর সংসার সামলে তিনি পেরে উঠতে পারেননি। তিনি এই জেলা আর রাজ্য কে শুধুই দিয়ে গেছেন পাননি কিছুই। এই দুঃখ বুকে চাপা দিয়ে চোখের কোনটা মাঝে মাঝে ছল ছল করে ওঠে তার। যার হিসেব আমরা কেউ রাখি না।
শ্রীমতি যোগ কুমারী চিনু দেবনাথকে ও তার প্রতিভা কে কুর্নিশ জানাই।।