STORYMIRROR

Ajay Shaw

Tragedy

1  

Ajay Shaw

Tragedy

স্ত্রী

স্ত্রী

7 mins
1.0K


অফিসের কাজ শেষ করে বিকেলে বাড়ি ফিরছিলাম। আমার অফিসের পাশেই একটা শিশু পার্ক। আমার অবশ্য এই শব্দে ঘোর আপত্তি। কারণ নামে শিশু পার্ক হলেও সংখ্যায় ছোট শিশুদের চেয়ে বরাবরই বড় শিশুদের ভীড় এখানে বেশি দেখা যায়। জোড়ায় জোড়ায় সেইসব বড় শিশুদের দেখে আমার এটাকে আর শিশুপার্ক বলে ভাবতে ইচ্ছে করে না।

অফিস থেকে বের হয়ে পার্ক সংলগ্ন রাস্তা ধরে দু'মিনিট হাঁটলেই বাস স্টপেজ। প্রতিদিনের মতো আজও ক্লান্ত শরীরটাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলাম স্টপেজের দিকে। আর প্রতিদিনের মতো আজও সেই একই ব্যাপার ঘটছে, জোড়ায় জোড়ায় কপোত-কপোতি নামছে রিক্সা থেকে।

কিন্তু হঠাৎ এমন একজোড়া কপোত- কপোতীর দিকে আমার দৃষ্টি গেলো যে, চোখ কচলে তাঁদের দিকে দ্বিতীয়বার তাকাতে বাধ্য হলাম। 'ভুল দেখছি কিনা' -এটা ভেবে নিজের উপর নিজেরই সন্দেহ হতে লাগলো। একবার নিজের গায়ে চিমটিও কাটলাম। না, এটা স্বপ্ন ছিলোনা!

আমার কলেজ জীবনের এবং এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো বন্ধু 'মিলির' স্বামী রাহুলের সাথে একটা অপরিচিত মেয়ে। খুবই অন্তরঙ্গ ভাবে একজন আরেকজনের হাত ধরে আমার চোখের সামনে দিয়েই হনহন করে তাঁরা পার্কের ভেতর ঢুকে গেলো।

কি করবো কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে চিন্তা করতে লাগলাম।

মিলিকে ফোন করবো?

নাকি সরাসরি গিয়ে ওর স্বামীর সাথে কথা বলবো?

কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর এর কোনটাই করলাম না। তাঁদের দু'জনের পিছু নিয়ে আমিও পার্কে ঢুকে পড়লাম। পার্কে ঢুকে তাঁরা মোটামুটি একটা নির্জন জায়গা দেখে খুবই আপত্তিকর ভাবে একজন আরেকজনের গায়ে হেলান দিয়ে বসে পড়লো। আমার পায়ের রক্ত ততক্ষনে মাথায় উঠে গেছে।

রাহুলকে অনেকদিন ধরেই জানি। বিয়ের পর মিলিই আমাকে ওনার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো। অনেকবারই তাঁদের বাড়ি আসা যাওয়া হয়েছে। আমার ওনাকে খুবই ভালো মানুষ বলেই মনে হয়েছে। তাছাড়াও বিয়ের পর উনি মিলির জন্য এমন কিছু সেক্রিফাইস করেছেন যেগুলো সাধারণত আর আট দশটা ছেলে করে না। আমি জানতাম তিনি মিলিকে খুবই ভালবাসেন। গত সাত বছরের দাম্পত্য জীবনে তাঁদের দুটো সন্তান‌ও আছে। সন্তানদেরও তিনি অনেক স্নেহ করেন। অন্তত মিলির মুখে সবসময় এমনটাই শুনে এসেছি।

কিন্তু আজ এসব কি দেখছি! তবে কি এতদিন ভুল জেনেছিলাম! চোখের সামনে নিজের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুর এমন সর্বনাশ আমাকে কিছুতেই স্বাভাবিক থাকতে দিচ্ছিলো না। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়ে কিছুক্ষণ তাঁদের ভিডিও রেকর্ড করলাম। তারপর দ্রুত পার্ক থেকে বেরিয়ে মিলিকে ফোন করলাম।

- হ্যালো, মিলি?

- হ্যাঁ বর, বলো কি খবর?

মিলি আমাকে বর বলেই ডাকে। আমাদের বন্ধু মহল, ওর পরিবার এবং আমার পরিবারের মোটামুটি সবাই এটা জানে। এমনকি আমার স্ত্রীরও এটা অজানা নয়। বিয়ের পর আমি অবশ্য আমার স্ত্রীর দিক থেকে এটা নিয়ে বেশ ভয়ে ছিলাম। কিন্তু স্ত্রীকে সব ঘটনা বলার পর ও তো হেসেই শেষ। এবং এখনও এটা নিয়ে মাঝেমধ্যে হাসাহাসি করে। হয়তো দেখা গেলো আমি বাথরুমে স্নান করছি আর এমন সময় মিলি আমার নাম্বারে ফোন করেছে, আমার স্ত্রী ফোনটা হাতে নিয়ে আমাকে ডেকে ডেকে বলবে, "কইগো তাড়াতাড়ি বের হও, তোমার প্রথম স্ত্রী ফোন করেছে।"

কলেজ লাইফে আমাদের বন্ধুত্বের ঘনিষ্ঠতায় আমাদের দুই পরিবারের প্রায় প্রতিটি সদস্যই আমাদের সম্পর্কটাকে আর স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনি। আমাদেরকে না জানিয়েই তাঁরা আমাদের বিয়ে ঠিক করে ফেলে। কিন্তু পরে তাদের ভুল ভাঙ্গে যখন তাঁরা জানতে পারে যে, আমি বা মিলি দু'জনের কেউই এই বিয়েতে রাজি ন‌ই। সেদিনের পর থেকে মিলি আমাকে দুষ্টুমি করে বর বলে ডাকে।

- মিলি, তুই এখুনি রাহুলকে একটা ফোন কর।

- কেন! কোন সমস্যা?

- সেটা পরে বলছি, তুই এখন শুধু একটা ফোন দিয়ে ওনাকে জিজ্ঞেস কর ওনি কোথায় আছে।

- আচ্ছা তা না হয় করলাম, তারপর কি বলবো?

- তারপর কোন একটা কারণ দেখিয়ে ওনাকে এখনই বাড়ি ফিরতে বল।

- কি পাগলামো করছিস? তুই কি আমার সাথে মজা করছিস নাকি?

- মজা নয় মিলি, এটা সিরিয়াস ব্যাপার। বাকিটা আমি তোকে পরে বলছি।

একটু পর আবার মিলির ফোন,

- হ্যাঁ মিলি, কথা বলেছিস?

- বলেছি।

- কি বললো?

- বললো একটা জরুরী কাজে আছে।

- তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে বলিস নি?

- হ্যাঁ বলেছি তো, আমাকে বললো একটু পরই বাড়ি ফিরবে।

- তাঁর জরুরি কাজের নমুনা আমি তোকে ইনবক্সে পাঠাচ্ছি, ভিডিওটা একটু দেখ।

ভিডিওটা সেন্ড করার পর মিলি আমাকে আর কোন ফোন করলো না। বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কয়েকবার ট্রাই করলাম, আমার ফোন‌ও ধরলো না। হঠাৎ রাত দশটার দিকে ওর ফোন,

- কি ব্যাপার মিলি? ফোন ধরছিস না কেন? সব ঠিক আছে তো?

- হ্যাঁ সব ঠিক আছে।

- তোর হাজবেন্ড বাসায় ফিরেছে?

- হ্যাঁ, ও সন্ধ্যার আগেই বাড়ি ফিরে এসেছে, আর ওর সাথে আমার ঝগড়া হয়েছে। আমি এখন বাবার বাড়িতে।

- কি বলছিস? বাচ্চারা কোথায়?

- ওরা ঠিক আছে, ওরা আমার সাথেই আছে।

- তোর হাজবেন্ডের সাথে কি কথা হলো?

- অনেক কথাই হয়েছে, ও সব স্বীকার করেছে। আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছে, বলেছে আমি যেন ওকে একটা সুযোগ দিই। মেয়েটা ওর কলিগ, সেও বিবাহিত। তাঁর হাজবেন্ডের সাথে কিছুদিন আগেই তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়েছে। বিয়ের আগে তাঁর একটা ছেলের সাথে রিলেশন ছিলো। বিয়ের পরও সেটা কন্টিনিউ করেছে। এটা জানার পর তাঁর হাসবেন্ড তাকে শোধরানোর অনেক চেষ্টা করেছে। শেষ পর্যন্ত ডিভোর্স।

- কি খারাপ মেয়ে! নিজের সংসারটা তো ভেঙেছেই এখন আরেকজনের সংসারও ভাঙ্গবে! আচ্ছা, এখন কি করবি ভেবেছিস?

- ভাবাভাবির কিছুই নেই। ওকে ডিভোর্স দেবো, সিদ্ধান্ত ফাইনাল। ওর মতো লম্পটের সাথে আর সংসার করবো না।

>

- আর একটু ভেবে দেখলে হয় না?

- না, অনেক ভেবেছি। আচ্ছা কাল তো ছুটির দিন, তুই সকালে একটু আসবি? তোর সাথে একটু কথা বলবো।

- তোদের বাড়ি আসবো?

- হ্যাঁ।

- ঠিক আছে, আমি সকালে আসছি।

পরদিন সকাল দশটার দিকে মিলিদের বাড়ি পৌঁছালাম, আর মিলি আমাকে উপহার দিলো একরাশ বিস্ময়! মিলিকে দেখে আমি সত্যিই ভীষণ চমকে উঠলাম! আমি আশা করেছিলাম সকালে ওদের বাড়ি পৌঁছে সোফায় বসে থাকা এক 'বিধ্বস্ত মিলির' চেহারা দেখবো। কিন্তু হলো তাঁর উল্টোটা।

আমি বাড়ি ঢুকতেই ভীষণ হাসিখুশি এক মিলি আমাকে অভ্যর্থনা জানালো,

- কি ব্যাপার বর? এত দেরি কেনো?

আমি থতমত খেয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি।

- কি ব্যাপার? হ্যাবলার মতো এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?

- তুই ঠিক আছিস তো?

- হ্যাঁ আমি একদম ঠিক আছি।

- ব্যাগ গুছিয়ে বসে আছিস? কোথাও যাবি নাকি?

- হ্যাঁ যাবো, নিজের ঘরেই যাবো। রাহুল নিতে আসছে।

- মানে কি? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা!

- ও কাল আমাকে অনেক অনুনয়-বিনয় করে বলেছে, "মেয়েটা নাকি ওকে কিভাবে কিভাবে যেন ফাঁদে ফেলে দিয়েছিলো। সে তাঁর নিজের ভুলের জন্য যথেষ্ট অনুতপ্ত।" আমি এখানে চলে আসার পর রাতে অন্তত আমাকে শ'খানেক বার ফোন করেছে। মেসেজ পাঠিয়েছে অন্তত আরো শ'খানেক।

- ব্যস! এতেই তুই গলে গেলি?

- না, এতেও গলিনি। তারপর রাতে গাড়ি নিয়ে আমাদের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়ে ছিলো প্রায় দুই ঘণ্টার মতো। আমি ভেতরে ঢুকতে দিনি। পরে তাকে বলেছি, সে যদি এখান থেকে চলে না যায় তাহলে আমি সুইসাইড করবো।

- তারপর?

- তারপর সে চলে গেছে। সে চলে যাওয়ার পর আমি বিষয়টা নিয়ে ঠান্ডা মাথায় অনেকক্ষণ ভেবেছি।

- কি ভেবেছিস?

- তোর মনে আছে- বিয়ের পর টানা এক বছর আমি অসুস্থ ছিলাম? আমি রান্না-বান্না করতে পারতাম না। কাজের বৌয়ের রান্নাও আমার পছন্দ নয়। প্রতিদিন অফিস শেষ করে এসে রাতে নিজ হাতে আমার জন্য রান্না করতো। নিজ হাতে আমাকে খাইয়ে দিতো।

- হ্যাঁ সে সব জানি, তুই বলেছিস।

- তাঁর ছোটখাটো আরো অনেক সেক্রিফাইস ছিল আমার জন্য যার সবটা হয়তো তুই জানিস না, বা তোকে বলা হয়নি।

- তো?

- মানুষটা আমাকে আগে যেমন ভালোবাসতো এখনো তেমনি ভালোবাসে। কিন্তু গত এক বছর যাবত আমার কাছে জীবনটা বড্ডো একঘেয়ে লাগছিলো। কারণে অকারণে হুটহাট তাঁর উপর রেগে যেতাম। এজন্যই তাঁর সাথে আমার কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আর এর সুযোগটাই নিয়েছে সেই মেয়েটা।

- কি বলছিস এসব? ঘরে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হলে বাইরে গিয়ে আর একটা মেয়ের সাথে প্রেম করতে হবে? এটা কোন লজিক হলো?

- হ্যাঁ, এটাই লজিক। পুরুষ নারীর কাছ থেকে প্রেম চায়, ভালোবাসা চায়। অফিস থেকে ফেরার পর সে চায় তাঁর স্ত্রী তাঁর হাতের ব্যাগটা টেনে নিয়ে হাসিমুখে তাকে অভ্যর্থনা জানাক। চায়ের কাপটা এগিয়ে দেওয়ার আগে সে চায় তার স্ত্রী সেটাতে একটা চুমুক দিয়ে দেখুক। সকালে অফিসে যাওয়ার আগে সে চায় তার স্ত্রী তাঁর টাই'য়ে হাত রাখুক। রাতে ঘুমানোর আগে সে তার স্ত্রীর এই হাতটাই আবার নিজের মাথার চুলের মধ্যে পেতে চায়। খুবই ছোট ছোট কিছু বিষয়, কিন্তু সংসারে যখন এগুলোর অভাব ঘটবে তখন সেখানে একটা ফাটল সৃষ্টি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকবেই। বিগত এক বছর যাবত আমার দিক থেকে সে এগুলোর‌ই অভাববোধ করছিলো।

- তাই বলে...

- দেখ, আমার স্বামী কোন মহাপুরুষ নয়। সে রক্তে মাংসের একজন সাধারন মানুষ। আমার দিক থেকে অবহেলা পেলে আর ঠিক একই সময়ে অন্য একজন নারীর থেকে ভালোবাসা ফেলে আবেগের বশবর্তি হয়ে সে তাঁর দিকে আকৃষ্ট হবে, একটা ভুল করে বসবে, এটাই স্বাভাবিক। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, এই মুহূর্তে আমার একটা সিদ্ধান্তের উপর আমাদের বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। তাছাড়াও গত সাত বছরে যেই মানুষটা আমার জন্য এত এত সেক্রিফাইস করেছে, আমার অনেকগুলো ছোট ছোট ভুল আর অপরাধ হাসিমুখে ক্ষমা করে দিয়েছে, আজ তার একটা অপরাধ যদি আমি ক্ষমা করতে না পারি তাহলে কিভাবে আমি নিজেকে তার ভালোবাসার মানুষ বলে দাবী করতে পারি? জেনেশুনে তাকে ডিভোর্স দেওয়ার মতো এত বড় বোকামি আমি কিভাবে করতে পারি?

- তো, এখন?

- এখন সে আসলে তাঁর সাথে ফিরে যাবো। তাকে ক্ষমা করে দেবো। আর আমার ভালোবাসায় ঘাটতি ছিলো বলেই আজ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাই এখন থেকে তাকে আগের চেয়েও আরো অনেক অনেক বেশি ভালোবাসবো।

মিলির সিদ্ধান্তে আমি দারুণ খুশি। আমি এমন কিছুই চেয়েছিলাম। একটু পর মিলির স্বামী এসে তাঁদেরকে নিয়ে গেলো।

মিলিদের বাড়ি থেকে ফিরছি আর ভাবছি আমার স্ত্রীর কথা,

অন্য মেয়ে তার স্বামীকে "বর" ডাকার ব্যাপারটা কত সহজেই না সে মেনে নিয়েছিলো!

ভাবছি মিলির কথা, অন্য একটা মেয়ের সাথে নিজের স্বামীকে এভাবে অন্তরঙ্গভাবে সময় কাটাতে দেখার পরও কত অবলীলায় মানুষটাকে ক্ষমা করে দিতে পারলো!

এইসব ভালো স্ত্রীদের কারণেই আমাদের মত খারাপ স্বামীদের ঘর‌ও স্বর্গ হয়ে ওঠে। এইসব মমতাময়ী মহান স্ত্রীদের ত্যাগের কারণেই আমাদের মত উশৃঙ্খল পুরুষদের সংসারটাও দারুন গুছিয়ে ওঠে। এই ক্ষমতা শুধুমাত্র স্ত্রীদের-ই থাকে। সৃষ্টিকর্তা শুধুমাত্র স্ত্রী লোকদেরই এই ক্ষমতাটা দিয়েছেন।

আর ভাবছি সেই মেয়েটার কথাও। না, তাঁর জন্য আমার মনে কোন ঘৃণা নেই। বরং তাঁর জন্য আমার এক বুক হাহাকার আর আফসোস। সৃষ্টিকর্তা তাকেও ওই মেয়ে গুলোর মত একই ক্ষমতা দিয়েছেন অথচ সে এটার সদ্ব্যবহার করতে পারলো না! সে তাঁর নিজের ঘরটাকে ওইসব স্ত্রীদের ঘরের মতো করতে পারলো না! বাকি জীবনেও সে হয়তো বুঝতে পারবেনা যে, সৃষ্টিকর্তা তাকে কত অসাধারণ একটা ক্ষমতা দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy