Ajay Shaw

Tragedy

2  

Ajay Shaw

Tragedy

অসমাপ্ত প্রেম

অসমাপ্ত প্রেম

2 mins
1.0K


-চুমু খেতে চাই

-কোথায়?

-ঠোঁটে

-এটাই তোর আসল রূপ।বদমাশ।

রুপা রাগে, অনুরাগে হনহন করে চলে গেলো, সাথে কি নিয়ে গেল আমার এক বছরের প্রেমও

মাঝে মাঝে নিজেকে ছোটো মনে হয়, খুব। এক বছেরর প্রেমে একটা চুমু খেতে পারিনি!কতজনকে বলতে শুনি মাত্র কদিনের প্রেমেই কতকিছু, মাথা নিচু করে চুপচাপ থাকি সে সময়।বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে রুপার সাথে আমার প্রথম বছরে বন্ধুত্ব, দ্বিতীয় বছরে প্রেম। এখন থার্ড ইয়ার চলছে।

এক বছরই তো হলো?রুপার অভিমান ভাঙ্গে তিনদিন পরে।

তিনদিনের বিরহে আমিই আবার অভিমান করি, কেটে যায় আবার তিনদিন। সাত দিনের মাথায় রুপা ফোন করে।

-কাল ক্যাম্পাসে আয়, প্লিজ।

-তবে, চুমু খেতে দিবি? ,,,(যেনো অবোধ শিশুর বায়না)

-আগে আয়! খাওয়াচ্ছি তোর চুমু!

পরদিন রুপা আমাকে টেনে ধরে নিয়ে যায় মন্দিরে। আমিও বাইরে পালিয়ে আসি,,,

- বেরিয়ে এসে রুপা বলে, বিয়ে করার দম নেই। উনার চুমু খাওয়া চাই! আহা!

-পকেটে পয়সা নেই বলে একটা চুমু খেতেও পারব না?

এই প্রেম করে লাভ কি?

অভিমান করে চলে আসি। আবার তিন দিন যায়।

ফোন করে রুপা।

-বেশ! একটা চুমুই তো?

-হু।

-কাল আয়।

অনেক সুযোগ খুঁজে দুজনেই লিফটে উঠি, লবনাক্ত স্বাদে আমার সারা শরীরে মাদকতা ছড়িয়ে যায়!

আমি বলি

- , চাই?

-কি?

-আরো কিছু, এর চেয়েও বেশি কিছু।

লিফট খুলে যায়, ডিপার্টমেন্টে এসে। রুপা আমাকে ধাওয়া করে, আমি দৌড়ে পালাই।রুপা পিছু নেয়, পুরো ডিপার্টমেন্টে শুরু হয় ছুটোছুটি!শিক্ষক, কমর্চারী আমাদেরকে আড় চোখে দেখেন! নিজেদের ফেলে আসা দিনগুলোও হয়তো রোমন্থন করেন।

মধ্য দুপুরে রুপা বায়না ধরে ফুচকা খাবে! বাচ্চাদের একটি স্কুলের সামনে গিয়ে দাঁড়াই, ফুঁচকা খেতে। কোন এক বাচ্চার মায়ের অসতর্কতাবশত, ওড়না যথাস্থান থেকে সরে যায়।

ভুলবশত আমার চোখ আটকে যায় সেখানেই, রুপার দৃষ্টিতে এড়ায় না আমার সামাণ্য এই ভুলটুকুও।রিকশার হুড উঠিয়ে দাঁত মুখ খিঁচিয়ে কি মারটাই না দিলো আমাকে!রাগে ক্রোধে আমি বলে ফেলি,

- দেখবই তো! তুই দেখাস না কেন?

মুহূর্তেই রুপার চোখে জল চলে আসে, আমি মুছে দি পরম মমতায়!গালে আলতো করে ছুঁয়ে দিয়ে বলি,

- টুকটুকি!

রুপা খুশিতে গদগদ হয়ে যায়!

সুযোগ বুঝে আমিও বলে ফেলি,

- চাই?

-কি?

-অনেক কিছু, সেদিন লিফটের বাকি অংশ।

আবার খেতে হয় মার, কি নরাধম আমি!

প্রেমিক জাতটার কলঙ্ক যেন।

সেদিন বইমেলাতে, আমি আর রুপা হাটছি, বই দেখছি।

রুপার দেখা হলো ওর এক স্কুলের বন্ধুর সাথে, ছেলে।

সেই থেকে ছেলেটা আঠার মত লেগে রইল আমাদের সাথে। আমার যেন বিরক্তির শেষ নেই, চুপিচুপি রুপাকে বললাম

- তোমার লুচ্চা বন্ধুটা দিনটাই মাটি করে দিলো।

সন্ধে নাগাদ বাড়ি ফিরব। রিকশায় রাজ্যের অভিমান নিয়ে বসে আছি, আমি। রুপা জড়িয়ে ধরে বলল,

- আমি তো তোর সারাজীবনের জন্যে, একটি বিকেল নষ্ট হওয়াতে এত মন খারাপ করতে আছে বুঝি?

আমার সেই বিকেলটা গেছে, সেই দিনগুলোও।

আর ফিরে পাবোনা কোনদিন।

প্রায় দশ বছর পর সেদিন ডিপার্টমেন্টের পুনর্মিলনীতে রুপার সাথে দেখা। মজা করে বললাম,

-মুটি হয়ে গেছিস ।

-তোর চুলেও পাক ধরেছে যে।

-হু, একসাথে বুড়ো হতে পারলাম না রে।

রুপা সাদা টিস্যু পেপার দিয়ে চোখের কাজল ঠিক করলো।

আমি তাকিয়ে রইলাম, অন্যদিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে!


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy